SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 35]

in hive-129948 •  10 months ago 

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1157.567 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৩


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


বেশ ক'জন চাকর মিলে পাঁঠাগুলোকে পুকুর থেকে স্নান করিয়ে নিয়ে এলো । শেষরাত্রের শীতল পরিবেশে স্নান করানোয় পাঁঠাগুলোর বেশ ঠান্ডা লেগেছে, তারা পরিত্রাহি ব্য়া, ব্যা বিজাতীয় শব্দে চেঁচাচ্ছে আর ঠকঠক করে শীতে কাঁপছে । একজন পুরোহিত এসে একে একে প্রতিটা পাঁঠার কপালে এঁকে দিলেন সিঁদুরের ফোঁটা । আর একজন পুরোহিতের সহকারী জবা ফুলের মালার ঝুড়ি নিয়ে হাঁড়িকাঠের পাশটিতে বসে রইলো । এক একটা পাঁঠাকে হাঁড়িকাঠে চড়ানোর ঠিক আগের মুহূর্তে গলায় রক্তজবার মালা পরানো হবে ।

বলির সব আয়োজন সম্পন্ন । এখন করালী বাবু এসে চেয়ারে বসলেই বলি শুরু হয়ে যাবে । তিনি এখন কালীমূর্তির সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে ব্যস্ত । আর মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত । ঢাকীরা এসে হাঁড়িকাঠকে মাঝখানে রেখে বৃত্তাকারে বসলো । বলির বাজনা শুরু হবে এখুনি । ছেলে ছোকরারা দমবন্ধ করে অধীর আগ্রহে উত্তেজনায় ছটফট করছে । বলি হবে, বলি । ওই দীর্ঘাকার খাঁড়ার এক একটা কোপে নিরীহ ছাগশিশুর মস্তক ছিন্ন হয়ে ধুলায় গড়াগড়ি খাবে । সেই দৃশ্য অবলোকন করার জন্যই সবার এত আগ্রহ ।

আসলে মানুষ আজ সভ্য হলেও তাদের রক্তে আদিম প্রাগৈতিহাসিক প্রবৃত্তি সুপ্ত রয়ে গিয়েছে । সুযোগ পেলেই সেই প্রবৃত্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । মানুষ তাই যুদ্ধ ভালোবাসে, নৃশংসতায় আনন্দ পায়, রক্ত দেখলে উন্মাদনা জাগে ।

শাস্ত্রীয় মতে দেবী কালিকার উদ্দেশ্যে মোট তিন রকমের বলি দেওয়ার বিধান রয়েছে, যথা - বলি, মহাবলি এবং অতিবলি । বলি হলো ছাগ, গো, মহিষ, পক্ষী, মৎস্য, কচ্ছপ, মৃগ (হরিণ) এবং শূকর প্রভৃতি প্রাণীর মস্তক ছেদন করে দেবীর পায়ে উৎসর্গ করা । মহাবলি হলো কৃষ্ণসার মৃগ, গোধিকা (গোসাপ), উট, হস্তিশাবক, সিংহ এবং ব্যাঘ্র উৎসর্গ করা । আর সর্বশেষ অতিবলি হলো নরবলি । এটাই শ্রেষ্ঠ বলি ।

আজ শ্মশানে সেই অতিবলির আয়োজনই চলছে । তবে, চুপিসাড়ে, অতি সংগোপনে । এখানে বলির ঢাক বাজছে না, কোনো আড়ম্বর নেই, আলোক নেই, শুধু আবছায়া আঁধারে কিছু হীন ব্যক্তির নিষ্ঠুর চক্রান্তে একটি তাজা প্রাণের আজ বলি হতে যাচ্ছে ।

শ্মশানের দৃশ্যপটে এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে । চন্ড এখন আর একা নয় । দু'জন শাগরেদ সঙ্গে সে আবার মন্দিরের চাতালে ফিরে এসেছে । তার সঙ্গীদ্বয়ের চেহারা বিশাল লম্বা চওড়া, মাথায় লাল ফেট্টি বাঁধা, খালি গা, খালি পা । পরনের ধুতি মালকোঁচা করে পরা । এক হাতে ধরা লম্বা ভারী একটা বর্শা । মুখে একটা ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতার ছাপ । আবলুশ কাঠের মতো কালো শক্ত পেটানো শরীর ।

বটুকবাবুর সর্দার লেঠেল এরা দু'জন । বটুকবাবুর কত যে পাপকাজের সঙ্গী এই দুই জন তার কোনো লেখা জোকা নেই ।

চোখে চোখে ইশারায় কথা হলো কিছুক্ষণ চন্ড আর তার দুই শাগরেদের মধ্যে । একজন উঠে প্রকান্ড একটা মাটির কলসি নিয়ে চলে গেলো নদীর তীরে । জল আনতে । আরেকজন চলে গেলো মন্দিরের পেছন দিকটাতে । সেখানে একটা মশাল জ্বলছে । তার আলোতে দেখা গেলো একটা মাটির ভাঙা হাঁড়িতে রাখা একটা জবা ফুলের মালা । একটা সরায় রাখা সর্ষের তেলে গোলা সিঁদুর । আর একখানি প্রকান্ড খাঁড়া হেলান দিয়ে রাখা মন্দিরের পেছনের দেয়ালের গায়ে ।

লোকটা এসেই আগে খাঁড়াখানি হাতে নিয়ে তার ধার পরীক্ষা করতে লাগলো ।

[চলবে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

শেষমেষ নিষ্ঠুর সময় চলে এসেছে তাহলে। কমলা দেবীকে বলির বন্দোবস্ত করেছিল এরা। কমলা দেবীর বাঁচার কোন উপায় দেখছি না।

কেনো জানিনা মনে হচ্ছে কোনো কারণে কমলাদেবী বেঁচে যাবে।জানিনা কেনো মনে হচ্ছে,তবে হচ্ছে।

আসলে মানুষ আজ সভ্য হলেও তাদের রক্তে আদিম প্রাগৈতিহাসিক প্রবৃত্তি সুপ্ত রয়ে গিয়েছে । সুযোগ পেলেই সেই প্রবৃত্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । মানুষ তাই যুদ্ধ ভালোবাসে, নৃশংসতায় আনন্দ পায়, রক্ত দেখলে উন্মাদনা জাগে ।

যথার্থ বলেছেন ভাই।

গল্পের শেষের দিকে এসে কমলাদেবীর ব্যাপারটা জেনে আরও খারাপ লাগছে।

Bu çok önemli bir şey. কমলা দরেছিল এরা। Bu çok önemli bir şey.

একদিকে বলি হবে এবং আরেক দিকে অতিবলি হবে। কমলাদেবীর বাঁচার কোনো রাস্তা দেখছি না। চন্ড তো সব আয়োজন করে ফেলছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

আরেক দিকে অতিবলি হবে। কমলাদেবীর বাঁচার কোনো রাস্তা