This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 1157.567 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৩
Copyright Free Image Source : PixaBay
বেশ ক'জন চাকর মিলে পাঁঠাগুলোকে পুকুর থেকে স্নান করিয়ে নিয়ে এলো । শেষরাত্রের শীতল পরিবেশে স্নান করানোয় পাঁঠাগুলোর বেশ ঠান্ডা লেগেছে, তারা পরিত্রাহি ব্য়া, ব্যা বিজাতীয় শব্দে চেঁচাচ্ছে আর ঠকঠক করে শীতে কাঁপছে । একজন পুরোহিত এসে একে একে প্রতিটা পাঁঠার কপালে এঁকে দিলেন সিঁদুরের ফোঁটা । আর একজন পুরোহিতের সহকারী জবা ফুলের মালার ঝুড়ি নিয়ে হাঁড়িকাঠের পাশটিতে বসে রইলো । এক একটা পাঁঠাকে হাঁড়িকাঠে চড়ানোর ঠিক আগের মুহূর্তে গলায় রক্তজবার মালা পরানো হবে ।
বলির সব আয়োজন সম্পন্ন । এখন করালী বাবু এসে চেয়ারে বসলেই বলি শুরু হয়ে যাবে । তিনি এখন কালীমূর্তির সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে ব্যস্ত । আর মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত । ঢাকীরা এসে হাঁড়িকাঠকে মাঝখানে রেখে বৃত্তাকারে বসলো । বলির বাজনা শুরু হবে এখুনি । ছেলে ছোকরারা দমবন্ধ করে অধীর আগ্রহে উত্তেজনায় ছটফট করছে । বলি হবে, বলি । ওই দীর্ঘাকার খাঁড়ার এক একটা কোপে নিরীহ ছাগশিশুর মস্তক ছিন্ন হয়ে ধুলায় গড়াগড়ি খাবে । সেই দৃশ্য অবলোকন করার জন্যই সবার এত আগ্রহ ।
আসলে মানুষ আজ সভ্য হলেও তাদের রক্তে আদিম প্রাগৈতিহাসিক প্রবৃত্তি সুপ্ত রয়ে গিয়েছে । সুযোগ পেলেই সেই প্রবৃত্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । মানুষ তাই যুদ্ধ ভালোবাসে, নৃশংসতায় আনন্দ পায়, রক্ত দেখলে উন্মাদনা জাগে ।
শাস্ত্রীয় মতে দেবী কালিকার উদ্দেশ্যে মোট তিন রকমের বলি দেওয়ার বিধান রয়েছে, যথা - বলি, মহাবলি এবং অতিবলি । বলি হলো ছাগ, গো, মহিষ, পক্ষী, মৎস্য, কচ্ছপ, মৃগ (হরিণ) এবং শূকর প্রভৃতি প্রাণীর মস্তক ছেদন করে দেবীর পায়ে উৎসর্গ করা । মহাবলি হলো কৃষ্ণসার মৃগ, গোধিকা (গোসাপ), উট, হস্তিশাবক, সিংহ এবং ব্যাঘ্র উৎসর্গ করা । আর সর্বশেষ অতিবলি হলো নরবলি । এটাই শ্রেষ্ঠ বলি ।
আজ শ্মশানে সেই অতিবলির আয়োজনই চলছে । তবে, চুপিসাড়ে, অতি সংগোপনে । এখানে বলির ঢাক বাজছে না, কোনো আড়ম্বর নেই, আলোক নেই, শুধু আবছায়া আঁধারে কিছু হীন ব্যক্তির নিষ্ঠুর চক্রান্তে একটি তাজা প্রাণের আজ বলি হতে যাচ্ছে ।
শ্মশানের দৃশ্যপটে এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে । চন্ড এখন আর একা নয় । দু'জন শাগরেদ সঙ্গে সে আবার মন্দিরের চাতালে ফিরে এসেছে । তার সঙ্গীদ্বয়ের চেহারা বিশাল লম্বা চওড়া, মাথায় লাল ফেট্টি বাঁধা, খালি গা, খালি পা । পরনের ধুতি মালকোঁচা করে পরা । এক হাতে ধরা লম্বা ভারী একটা বর্শা । মুখে একটা ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতার ছাপ । আবলুশ কাঠের মতো কালো শক্ত পেটানো শরীর ।
বটুকবাবুর সর্দার লেঠেল এরা দু'জন । বটুকবাবুর কত যে পাপকাজের সঙ্গী এই দুই জন তার কোনো লেখা জোকা নেই ।
চোখে চোখে ইশারায় কথা হলো কিছুক্ষণ চন্ড আর তার দুই শাগরেদের মধ্যে । একজন উঠে প্রকান্ড একটা মাটির কলসি নিয়ে চলে গেলো নদীর তীরে । জল আনতে । আরেকজন চলে গেলো মন্দিরের পেছন দিকটাতে । সেখানে একটা মশাল জ্বলছে । তার আলোতে দেখা গেলো একটা মাটির ভাঙা হাঁড়িতে রাখা একটা জবা ফুলের মালা । একটা সরায় রাখা সর্ষের তেলে গোলা সিঁদুর । আর একখানি প্রকান্ড খাঁড়া হেলান দিয়ে রাখা মন্দিরের পেছনের দেয়ালের গায়ে ।
লোকটা এসেই আগে খাঁড়াখানি হাতে নিয়ে তার ধার পরীক্ষা করতে লাগলো ।
[চলবে]
শেষমেষ নিষ্ঠুর সময় চলে এসেছে তাহলে। কমলা দেবীকে বলির বন্দোবস্ত করেছিল এরা। কমলা দেবীর বাঁচার কোন উপায় দেখছি না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কেনো জানিনা মনে হচ্ছে কোনো কারণে কমলাদেবী বেঁচে যাবে।জানিনা কেনো মনে হচ্ছে,তবে হচ্ছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যথার্থ বলেছেন ভাই।
গল্পের শেষের দিকে এসে কমলাদেবীর ব্যাপারটা জেনে আরও খারাপ লাগছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Bu çok önemli bir şey. কমলা দরেছিল এরা। Bu çok önemli bir şey.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদিকে বলি হবে এবং আরেক দিকে অতিবলি হবে। কমলাদেবীর বাঁচার কোনো রাস্তা দেখছি না। চন্ড তো সব আয়োজন করে ফেলছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আরেক দিকে অতিবলি হবে। কমলাদেবীর বাঁচার কোনো রাস্তা
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit