SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 40]

in hive-129948 •  9 months ago 

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1370.332 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৮


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


তবে ? তবে কী এ অন্য কোনো কাপালিক ? তাঁদের গাঁয়ের শ্মশানের যে কাপালিকের কথা লোকমুখে শুনেছিলেন কমলাদেবী তিনি তো সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী মানুষ, তিনি কখনো ঘড়ি ব্যবহার করেছেন এ কথা গাঁয়ের কারো মুখে কখনো শোনা যায়নি । তবে কে এ ? আর ভাবতে পারলেন না কমলাদেবী । মাথাটায় চক্কর দিচ্ছে যেনো ।

সময় আর বেশি নেই । দ্রুত ফুরিয়ে আসছে ! কমলাদেবী বেশ বুঝতে পারছেন পৃথিবীর মুক্ত বাতাস আর মাত্র অল্পকিছুক্ষণের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তাঁর । আর মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত, তারপরে আর দু'চোখ ভরে দেখতে পাবেন না এই পৃথিবী তিনি, এই ধরার আলো-বাতাসে আর বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন না । এই ধরণী যেমন আছে ঠিক তেমনই থেকে যাবে, শুধু তিনিই হারিয়ে যাবেন । চিরকালের মতো ।

চোখ ফেটে জল আসছে কমলাদেবীর । মানুষ কী নিষ্ঠুর ! তিনি তো চন্ডের কখনোই কোনো ক্ষতি করেননি, বরং উল্টে কত সিধা দিয়েছেন, কত ভেট পাঠিয়েছেন, আজ সেই চন্ডের হাতেই তাঁর মৃত্যু হতে যাচ্ছে । কত সাধ ছিল তাঁর মনে- তাঁর একটি কন্যা সন্তান হবে । কত আদর যত্নে সেই শিশুটিকে লালন-পালন করবেন তিনি । অথচ এই নিষ্ঠুর দুনিয়ার নিষ্ঠুর ভয়ঙ্কর কুটিল মানুষেরা তাঁর শিশুটিকে এ পৃথিবীতে আসতেই দিলো না আর।

চোখ বুজে ইষ্টনাম জপ করতে লাগলেন কমলাদেবী । শেষমুহূর্তে ভূপতিবাবুর মুখটা বড্ড বেশি মনে পড়ছে । তিনি এখন কতদূরে রয়েছেন, জানতেও পারলেন না তাঁর প্রিয় মানুষটির শেষ পরিণতির কথা । ভূপতিবাবুকে ছেড়ে যেতে বুকের মধ্যে বড় বেশি কষ্ট হচ্ছে কমলাদেবীর । গভীরভাবে ভালোবাসেন তিনি মানুষটিকে । ছেড়ে যেতে তাই কষ্ট তো হবেই । দু'চোখের কোল বেয়ে অবিরাম ধারায় অশ্রু গড়াতে লাগলো । হায় রে জীবন ! কত সহজেই যে শেষ হয়ে যায় সাজানো গোছানো একটা সংসার !

কাপালিক মন্ত্র আওড়াচ্ছে এখন । বলির মন্ত্র । ঘাড়ে শাণিত খড়গ নিয়ে, গলায় রক্তজবার মালা পরে ভয়ালদর্শন যমদূতটা এসে দাঁড়ালো একেবারে কমলাদেবীর ডান পাশে । কাঁধ থেকে ধীরে ধীরে ভারী খাঁড়াটা নামালো । বলি দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এখন সে ।

শেষ মুহূর্তে এসে কাপালিকের গলা বার বার কেঁপে যাচ্ছে । জীবনে অনেক পাপ করেছে সে । কিন্তু গর্ভবতী একজন নিরীহ মেয়েমানুষকে এতটা ঠান্ডা মাথায় হত্যা করতে গিয়ে তার মতো দুর্ধর্ষ লোকেরও বুক কেঁপে যাচ্ছে । একটা প্রাণ তো নয়, দু'টো তাজা প্রাণের বিনাশ আজ তারই হাত দিয়ে হতে যাচ্ছে । তা ছাড়া তা ছাড়া, এই বলি তো নিখুঁত নয় ! গর্ভবতী কোনো পশু বা মানুষ কাউকেই বলির জন্য নিখুঁত বলা চলে না । একটা নয়, দুটো নয়, তিন তিনটে মহাপাপ করতে যাচ্ছে সে । এর পরিণাম যে কী ভয়ঙ্কর হতে পারে ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো ।

এতকাল সে শুধু সাধারণ গরিব প্রজাদের নিয়েই যত কারবার করেছে, কিন্তু আজ সাক্ষাৎ শ্মশানের কাঁচাখেগো দেবতা নিয়ে সে যা শুরু করেছে তাতে তার প্রাণ নিয়েই না টানাটানি পড়ে যায় ।

সহসা চেঁচিয়ে উঠলো কাপালিক, "না আ আ আ .... দাঁড়াও । এ মহাপাপ !"

[চলবে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মনে হচ্ছে এবার গল্পের আলো কিছুটা উজ্জ্বল হবে, কাপালিক ফিরে আসবেন পূর্বের সিদ্ধান্ত হতে, নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাবেন কমলাদেবী। শেষটায় এসে বেশ ভালো লাগলো দাদা, পরের পর্বের অপেক্ষায়।

তার মানে কাপালিক তার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে। এতে করে কমলাদেবী বেঁচে যাবেন। কমলাদেবীর জন্য সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগছিল। কমলাদেবী বেঁচে গেলে সত্যিই খুব খুশি হবো। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

কাপালিক কি তার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে তাহলে। কাপালিক পাল্টালেও চন্ড কি মানবে? কাপালিক এর কথায় কমলাদেবী কিছুটা আশা পেলো মনে হয়।

আমি ২ পর্ব আগে ঠিক এটাই প্রেডিক্ট করেছিলাম।যাক মিলে গেলো,গল্পের লেখক শেষমেশ কমলাদেবী কে বাঁচিয়েই ফেললো।

যাক কেউ হয়তো শেষমেশ তাহলে বাঁচানোর জন্য এসেছে, কিছুটা যেন নিজের ভিতরে প্রশান্তি পেলাম। বড্ড ডুবে গিয়েছিলাম গল্পের ভিতরে।