SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 41]

in hive-129948 •  9 months ago 

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1370.332 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৯


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


অর্ধোত্থিত শাণিত খড়গ মাঝপথেই থেমে গেলো । মহা আশ্চর্য হয়ে যমদূতটি বলির কার্য মাঝপথেই থামিয়ে দিয়ে কাপালিকের মুখের পানে তাকালো । চন্ড কিন্তু ভয়ানক ক্ষিপ্ত স্বরে কাপালিককে বলে উঠলো, "কী হলো ঠাকুর ? মাঝপথেই বলি বন্ধ করলেন কেন ? কোনো ক্রিয়া-কান্ড কী বাদ পড়ে গেছে ?"

গভীর বিষাদে মাথা নাড়লো কাপালিক, "নাহ ! এই বলি হবে না । বলি নিখুঁত নয় । গর্ভবতী কোনো নারী বলির জন্য উপযুক্ত নয় ।"

শুনে প্রচন্ড ক্রোধে গর্জন করে উঠলো চন্ড, "কেন ? আপনি কি জানতেন না যে রানীমা গর্ভবতী ? এখন যে ভারী ন্যাকা সাজছেন ! ওসব ন্যাকামো বাদ দিয়ে কষে বলির মন্ত্র আওড়ান দেখি, বলি হয়ে যাক ঝটপট । বলির পরপরই আমাকে এই তল্লাট ছেড়ে সটকে পড়তে হবে, নইলে বেঘোরে মারা পড়বো । এখন শেষ সময়ে এসে এসব ধ্যাষ্টামো আর ভালো লাগছে না । এই নান্টা গলা নামিয়ে ফেল, ঝটপট ঝটপট । আর ঠাকুর বলির মন্ত্র শুরু করুন ।"

নরেন ওরফে নান্টা নামের সেই যমদূতটা আবার খাঁড়া তুললো । কিন্তু, কাপালিক অনড়, গলা দিয়ে কোনো স্বর বের হলো না তার ।

কাঁহাতক আর সহ্য হয় ! চন্ড দারুন ক্রোধে উন্মাদ হয়ে প্রচন্ড এক ঠেলা দিয়ে কাপালিককে ভূপাতিত করে ফেললো । তারপরে কাপালিকের ভূপাতিত শরীরটাকে ডিঙিয়ে এক লাফে চলে এলো হাঁড়িকাঠের কাছে । নান্টাকে চোখের কোণ দিয়ে ইশারা করলো রানীমার মাথাটা কেটে ফেলতে ।

কিন্তু, নান্টা নড়ে না । সহসা সে মাথা নেড়ে হাত থেকে খড়গ ফেলে দিলো । তারপর ভূপাতিত কাপালিকের দিকে আঙুল দেখিয়ে জানালো, "কর্তাবাবুর হুকুম ছাড়া হবে না, পারবো না ।"

"কী ই ই ই ? পারবি না তুই ? তবে তফাৎ যা কাপুরুষের বাচ্চা ! আমি নিজে হাতেই বলি দেব আজ । যা যা , সর ...", বলে সবলে নান্টাকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে নিচু হয়ে মাটি থেকে খড়গ তুলে নিলো চন্ড ।

মাথার উপরে উঁচিয়ে ধরলো চন্ড ভারী সেই খড়গটা । এক কোপে ধড় থেকে মুন্ডুটা নামিয়ে আনতে হবে তাকে । তারপরে আজ শেষ রাতেই সে বসবে শব সাধনায় । ভোর হওয়ার সাথে সাথেই এই এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে । নইলে জীবন বাঁচানো বড় কঠিন হয়ে যাবে তার পক্ষে। তারপর পক্ষকাল ঘুরতে না ঘুরতেই সে হয়ে উঠবে দারুন ক্ষমতাধর এক ব্যক্তি । তখন আর তার গুরু কাপালিককে কিসের ভয় ?

চোখ ধাঁধানো বজ্রের ঝিলিক আর তার পরপরই কড় কড় কড়াৎ !! সহসা সমগ্র শ্মশানভূমি কাঁপিয়ে বাজ পড়লো কাছে কোথাও । সেই বিদ্যুতের আলোয় দেখা গেলো এক দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে মন্দির প্রাঙ্গন থেকে মাত্র পনের-কুড়ি হাত তফাতে । তার মুখ দারুন ক্রোধে রাঙা, চোখ দু'টিতে যেন আগুন জ্বলছে । তীব্র হাওয়ার বেগ এখন প্রায় ঝড়ে রূপান্তরিত হয়েছে । সেই হাওয়ায় তার মাথার দীর্ঘ জটা খুলে গিয়েছে, সাপের ফণার মতো সেগুলো দুলছে তার মাথা থেকে । কপালে রক্ত চন্দনের টীকা, খালি গা, সারা গায়ে ছাই লেপা, পরনে রক্তাম্বর, খালি পা । এক হাতে রয়েছে সুবিশাল একটা ত্রিশূল, আরেক হাতে কমণ্ডলু ।

[চলবে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

চন্ড বলি দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। কেউ রাজি না থাকলে কি হবে সে নিজেই এই কাজ সমাধান করবে মনে হচ্ছে। মাঝে বেশ কয়েকবার ভেবেছিলাম হয়তো রাণীমার মুন্ডু আলাদা করে ফেলেছে। কিন্তু শেষে কে এসে হাজির হলো। জানার আগ্রহ বেড়ে গেল দাদা।

এবার মনে হচ্ছে গল্পটা আরো কিছুটা আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, দারুণ উত্তেজনাময় ছিলো আজকের পর্বটি, মনে হচ্ছিল কেউ একজন আসবেন, বেঁচে ফিরবেন রানীমা। পরের পর্বের অপেক্ষায় দাদা।

চন্ড তো দেখছি কাপালিকের চেয়েও ডেঞ্জারাস। কাপালিকের তো মন বলতে কিছু আছে, কিন্তু চন্ড একেবারে হারামি। কমলাদেবীর মতো এমন গর্ভবতী মহিলাকে কিভাবে বলি দিতে চায়। যাইহোক সেই দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ চন্ডকে অবশ্যই উচিত শিক্ষা দিবে। তবে সেই দীর্ঘাঙ্গ পুরুষটি কে,সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

যাক তার মানে, কেউ একজন কমলাদেবীকে বাঁচানোর জন্য এসেছে। এখন কমলাদেবী বেঁচে ফিরলেই ভালো। দারুণ উপভোগ করলাম এই পর্বটি ভাই।

চন্ড আসলে বলির ব্যবস্থা করেছিলো কমলা দেবীর জন্য। কিন্তু সে একটুও টের পাইনি যে সেদিন হয়তো তার ই বলি হবে।এটাই হবে, অন্তত আমার তো এমনটাই মনে হচ্ছে, দেখা যাক কি হয়। তবে এটা মোটামুটি শিওর যে, লেখক কমলা দেবী কে ঠিকই বাঁচিয়ে রাখবেন।