সবাইকে শুভেচ্ছা।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশাকরি সবকিছু মিলে যে যেখানে আছেন ভালো আছেন, নিরাপদে আছেন। আমিও নিরাপদে আছি, ভালো আছি। আজ ১০ই শ্রাবণ, বর্ষাকাল,১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ২৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। সাত দিন পর আজ হাজির হলাম একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে আর তা হচ্ছে ইন্টারনেট বিহীন সাত দিন। আশাকরি বরাবরের মত সাথেই থাকবেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা কমবেশি সবাই অবগত। এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধের কারণে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সে বিষয়ে কিছু আলোকপাত করার চেষ্টা করবো। গত ছয় দিন আমি অ্যানালগ যুগে ফিরে গিয়েছিলাম। ইন্টারনেট নেই,টিভি নেই। একদম অ্যাানালগ। মানুষ কি রকম অভ্যেসের দাস এই সময়ে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। গত দুই বছর আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত থাকার কারণে, দিনের একটি বড় সময় কাটে আমার বাংলা ব্লগের সাথে। গত কয়েকদিন একটি শুন্যতার মধ্যে ছিলাম। সময় কাটে না। চারপাশের সংবাদ থেকে বিচ্ছিন্নতার কারণে কোন কাজেই মন বসাতে পারছিলাম না। কয়েকটি বই হাতে নিয়েও পড়তে পারেনি। শুধু ভাবনায় কবে স্বাভাবিক হবে সবকিছু! কবে আসবে ইন্টারনেট!!
এই কয়দিনে আমার মনে হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট এমন ভাবে আষ্টেপৃষ্টে আমাদের বেঁধে ফেলেছে এর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবস্থাই অচল করে দিতে পারে সারাবিশ্বকে। আর কারো পক্ষে তা সম্ভব নয়। এই কয়দিনে উপলব্দি হয়েছে শুধু যোগাযোগ,বিনোদন, অবাধ তথ্য প্রবাহ নয়, আমাদের জীবনের নানা প্রয়োজনে ইন্টারনেট এখন শক্তপোক্ত ভাবে জড়িত। প্রিপেইড গ্যাস ও বিদ্যুৎবিল ইন্টারনেট না থাকলে দেওয়া যায় না। গত কয়দিনেই এই নিয়ে কি ভোগান্তিতে পড়েছিল মানুষ! যারা ভুগেছে তারা উপলব্দি করেছে ইন্টারনেট না থাকার বিড়ম্বনা। এই সময়ে এক পরিচিত ফোন দিয়ে জানালো তার বাচ্চার কান্না কিছুতেই থামাতে পারছেন না। কারণ হিসেবে বলল ইউটিউবে সেই বাচ্চা কার্টুন দেখে। এখন দেখতে পারছে না বলে কান্না করছে।আমি সেই পরিচিত কে বললাম, আমরাই পারছি না নিয়ন্ত্রন করতে আর বাচ্চার কি দোষ! তবে একটি কাজ হয়েছে এই কয়দিনে যে সব বড় বাচ্চারা সারাদিন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতো তারা ফুটবল ও ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে রাস্তায় নেমেছে।
ইন্টারনেট বিহীন এই কয়দিনে মনে হয়েছে শুধু প্রয়োজনীয় নয়, ইন্টারনেট এক প্রকার আসক্তিও। আমাদের আপন স্বত্বাকে গ্রাস করে ফেলেছে । মানুষের নিজের বলে আর কিছু থাকছে না।মানুষ এখন ইন্টারনেটের দাসে পরিনত হয়েছে। ইন্টারনেই এখন পরিচালিত করছে মানুষকে। ইন্টারনেট আছে সব আছে, ইন্টারনেট নেই কিছুই নেই এর থেকে বের হয়ে আসার দরকার আছে বলে আমার মনে হয়েছে। ইন্টারনেটের সুফল,কুফল,আসক্তি,নির্ভরতা ও প্রাইভেসি নিয়ে অনেকদিন ধরে কথা হলেও আমাদের দেশে তেমন কথা হয় না। সবকিছু ছাঁপিয়ে ইন্টারনেট নির্ভরতা দিন দিন প্রকট হয়েছে উঠছে। গত কয়েকদিন ইন্টারনেট বিহীন না থাকলে আসলে বুঝতেই পারতামনা। আমি তথ্যপ্রযুক্তিবিদ নই একজন সাধারণ মানুষ। আমার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে আপনার অবস্থা কি? বিষয়টি ভেবেছেন কি?
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
তারিখ | ২৫শে জুলাই ,২০২৪ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের পুনরায় আমার বাংলা ব্লগে দেখতে পেয়ে স্বস্তিও হচ্ছে এবং আনন্দ লাগছে। আপনারা সাবধানে থাকুন এবং ভাল থাকুন। যে ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন সেটি দ্রুত সেরে উঠুক এই কামনাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit