জেনারেল রাইটিংঃ দূর্ণীতি।

in hive-129948 •  4 months ago 

সবাইকে শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন?,আশাকরি সবাই ভালো আছেন।সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি । আজ ৫ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জুন ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।

c1.jfif

source

বিশেষ কারণে এবার ঢাকায় ঈদ করেছি। আমার ও আমার ববের পরিচিত বন্ধু-স্বজন অনেকেই ঢাকায় ঈদ করেছে বলে, ঈদের আনন্দ একাবারে বৃথা যায়নি। বাড়ীর মত আনন্দ না হলেও কোন অংশে কম ছিল না আনন্দের মাত্রা। বরং আনন্দের ভিন্নতা উপভোগ করেছি। ঈদের দিন সন্ধ্যায় আনন্দ আড্ডায় মেতেছিলাম আমরা কয়েকজন। খাই-দাই আর আড্ডা। আড্ডার কোন বিষয় ছিল না।সমাজ,সংসার,রাজনীতি,ধর্মনীতি এমন কোন বিষয় ছিলনা যা আলোচনা হয়নি। তবে সব আলোচলা ছাপিয়ে একটি বিষয় আলোচনার মূখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তা হচ্ছে দূর্ণীতি। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে জেনারেল রাইটিংয়ে সেই দূর্ণীতি নিয়েই আমার উপস্থাপন। আশাকরি, আপনাদের ভালো লাগবে।


সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি,পেপার পত্রিকা ও টকশোতে কয়েকটি মেগা দূর্ণীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।যারা দূর্ণীতির সাথে জড়িত তারা স্ব স্ব পেশায় সর্বোচ্চ পদের অধিকারী ছিলেন। এখন তারা পদে নেই, তাই থলের বিড়াল বের হচ্ছে!!বেহিসাবী -অঢেল ধন সম্পদের মালিক সেজেছেন তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যারা। ক্ষমতার অপব্যবহার করেই গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। কত সম্পদের প্রয়োজন একটি পরিবারের বা একজন মানুষের! যদি সৎ পথে অর্জিত হয় সে সম্পদ, তাহলে প্রশ্ন নেই। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে,ভয়ভীতি দেখিয়ে, চুরি জোচ্চুরি করে অর্জিত যে সম্পদ তার বৈধতা কতটুকু!

অনেকেই বলছেন,হিসাব নিকাশ বা লেনদেনের জটিলতায় এদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের খবর আমরা পাচ্ছি।মামলা হচ্ছে। অন্যদেরটা পাচ্ছি না। কিন্তু আমাদের চারপাশের অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন তা আমরা অনেকেই জানি। জানলেও তাদের প্রভাব ও ক্ষমতার দাপটে সাধারণের মুখ খোলার সাহস নেই। তাদেরটাই আমরা জানতে পারি যেখানে স্বার্থ ও ক্ষমতার হিসেবের গড়মিল হয়।

আমাদের সমাজে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্ণীতি ছেয়ে গেছে। কোন না কোন ভাবে আমিও দূর্ণীতির শিকার হচ্ছি।কিন্তু করার কিছু নেই। যে সমাজে সৎ নিষ্ঠবানদের চেয়ে দূর্ণীতিবাজ টাকাওয়ালাদের কদর বেশী সেখানে আপনার আমার করার আসলেই কিছু থাকে না। আপনার আমার অর্জিত টাকা সৎ না অসৎ সেটা দেখার চেয়ে কে কত দিচ্ছে সেটাই মূখ্য হয়ে উঠছে। যে দিতে পারছে তার কদর হচ্ছে। যে দিতে পারছেনা, সে অপাংতেয়। আমাদের আড্ডায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাঁর কষ্টের কথা বললেন। ঈদে বাড়ীতে না যাওয়ায় কষ্টের কথা। তিনি বললেন, টেনেটুনে পাশ করা তার এক বন্ধু সরকারি চাকুরী করে প্রতি ঈদে লাখ লাখ টাকা বিলি করে গ্রামে, আর এক বন্ধু রাজনীতি ও অবৈধ ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে গ্রামের মানুষের জন্য ঈদে পার্বণে ্তারা উদার হস্ত। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে কিছুই দিতে পারি না।তাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কাছে আমি কিছুই না। এই যদি হয় আমাদের সমাজের চিত্র, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ কি? এ মাসের শুরুতে জাতীয় সংসদে আমাদের বাজেট পেশ হয়েছে। সেখানে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কি আজব! অথচ সভা সেমিনারে সেই কর্তা ব্যক্তিরা দূর্ণীতির বিরুদ্ধে কথা বলে বলে চলছেন অনবরত। ঠাকুর ঘরে কে আমি কলা খাইনি।

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম। যেখানে টাকা মূখ্য ছিল না। জ্ঞানী-গুণির কদর ছিল, সম্মান ছিল। এখন আমাদের সর্বত্র টাকার মূল্যায়ন। কেউ কেউ বলছেন, যারা এত এত অবৈধ উপার্জন করছেন। সেই উপর্জনের দাপট দেখাচ্ছেন-শো অফ করছেনটাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করছেন। তাদের কি আত্নীয়-স্বজন,পরিবার-পরিজন,ছেলে মেয়ে নেই! তাদের কি লজ্জা লাগে না?তাদের অভিধানে লজ্জা-শরম নেই। তাদের আছে টাকা আর ক্ষমতার দাপট।আর আছে একদল পা-চাটা চামচা, তোসামদকারি সহমত ভাই। ঈদে কোরবানির পশু কেনা নিয়ে একটি ভাইরাল নিউজ উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করবো। এক রাজস্ব কর্মকর্তার মাসিক বেতন ৭৮ হাজার টাকা। তার ছেলে ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে জানিয়েছে, ১৫ লাখ টাকার একটি ছাগল সহ মোট ৫০ লাখ টাকার কোরবানির পশু কিনেছে। সে রাজস্ব কর্মকর্তা এখন বলছেন, সে তার ছেলে নয়! কি একটা অবস্থা চারদিকে।বঙ্গবন্ধু তাঁর এক বক্তব্যে বলেছিলেন,"করাপশন আমার বাংলার মজদুর করে না। করাপশন করি আমরা শিক্ষিত সমাজ"। তিনি যর্থাযই বলেছেন। তবে দূর্ণীতিবাজরা সার্টিফিকেটধারী ও স্বার্থপর শিক্ষিত। তারা মানবিক ও দেশপ্রমিক শিক্ষিত শিক্ষত হয়ে উঠতে পারেনি।

পরিশেষে এ কথা বলা যায়,সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে দূর্ণীতির শিকড় গেড়ে বসেছে,,তার মূলোৎপাটন করতে না পারলে এ জাতীর ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আসুন কষ্ট হলেও, ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে দূর্ণীতিকে না বলি।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina 75
তারিখ১৯শে জুন ,২০২৪
লোকেশনঢাকা

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আসলে দুর্নীতি এখন অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষ কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির শিকার অবশ্যই হচ্ছে এখন। আমাদের সবার উচিত দুর্নীতিকে না বলা। কারণ এই দুর্নীতির কারণে অনেক মানুষের জীবনই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি এখন অনেক বড় পর্যায়ে চলে গিয়েছে যেটা মানুষকে ধ্বংস করছে। সমাজ রাষ্ট্র সবকিছুই দুর্নীতির শিকার এখন। আসলে ভয় ভীতি উপেক্ষা করে দুর্নীতিকে অবশ্যই না বলতে হবে। তবেই আমাদের দেশটা সুন্দর হয়ে উঠতে পারবে।

আমাদের সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দুর্নীতিকে না বলা দরকার। তবেই দেশে দুর্নীতি কমবে।মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

সময় যতই যাচ্ছে ততই যেন দুর্নীতি বেড়েই চলে যায়। এই দুর্নীতি সমাজ রাষ্ট্র সব কিছুকেই ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি যদি আমরা বন্ধ করতে না পারি, তাহলে সবকিছু ধ্বংসের মুখে চলে যাবে একেবারে। তাই আমাদেরকে সবসময় দুর্নীতিকে না করতে হবে। আসলে এখন টাকার মূল্যায়নটা সবকিছুতেই অনেক বেশি রয়েছে। আগে সম্মান যেরকম পাওয়া যেতো এখন ওরকম সম্মান পাওয়া যায় না। এই কথাগুলো একেবারেই সত্য এবং বাস্তবিক। আপনার সবগুলো লেখা আমার অনেক ভালো লেগেছে আপু।

ঠিক তাই দিন দিন দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। ধবংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।দেশকে সুন্দর রাখতে দুর্নীতি বন্ধ হওয়া জ্রুরী। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

কেউ অসৎ টাকা বিলিয়ে মহৎ হয় কেউবা নিজের ক্ষুদ্র আয় দিয়ে নিজের জীবন চালায়। আসলে এই দুনিয়ায় দুর্নীতি করে যারা টিকে আছে তারাই মানুষের বাহবা পাচ্ছে। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। অসাধারণ লিখেছেন আপনি।

আজকাল দুর্নীতিবাজদের সমাজে কদর বেশি। আমি চেস্টা করছি সমাজে দুর্নীতির কিছুটা চিত্র তুলে ধরতে। আর আমার লিখাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।