লাইফ স্টাইলঃঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেন ভ্রমণ।

in hive-129948 •  3 months ago  (edited)

সবাইকে শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,আশাকরি সবাই ভালো আছেন।সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি। আজ ৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জুন ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ । বন্ধুরা, আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি একটি ভ্রমণ পোস্ট।

j1.jfif

এবার কোরবানির ঈদ ঢাকায় করেছি অনেকেই জানেন। ঈদে বাড়ীতে না গেলেও মন্দ কাটেনি একেবারে। আনন্দ আড্ডা আর খাই দাই মিলে ভালই কেটেছে। ঈদে যেহেতু বাড়ীতে যাওয়া হয়নি, তাই হুট করে সিদ্ধান্ত নিলাম চট্রগ্রাম থেকে ঘুরে আসি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ট্রেনের টিকেটের জন্য অনলাইনে শরণাপন্ন হলাম। পেয়েও গেলাম। আপনার জানেন ঈদের সময়ে ট্রেনের টিকেট পাওয়া আর সোনার হরিণ পাওয়া একই কথা। ট্রেনের টিকেট পেয়েছি ২১ জুনের। গতকাল ছিল ২১ জুন। গতকালের ট্রেন ভ্রমণ নিয়েই আমার আজকের ব্লগ।

j3.jfif

ঢাকা টু চট্রগ্রাম। ট্রেনের নাম সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। আপনারা যারা আমার ব্লগ ফলো করেন তারা জানেন, ট্রেন জার্ণি আমার প্রথম পছন্দ। আর ননস্টপ ট্রেন জার্ণি হলে তো কথায় নেই। ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম যাওয়া আসা আমার হয়ে থাকে ননস্টপ ট্রেনেই।সূবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেন দুটি ননস্টপ। আমার গতকালের জার্ণি ছিল সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে। ঢাকার কমলাপুর ষ্টেশন থেকে সকাল ৭ টায় চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় তবে ঢাকার বিমান বন্দর ষ্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। বিমানবন্দর টু চট্রগ্রাম এর মাঝে আর যাত্রা বিরতি নেই।

j4.jfif

ট্রেন যেহেতু সকাল ৭ টায় তাই সিদ্ধান্ত নিলাম বিমানবন্দর ষ্টেশন থেকে সকাল ট্রেন উঠবো। আমার বাসা থেকে কমলাপুর ও বিমান বন্দর প্রায় একই দূরত্বে। হাতে বাড়তি কিছু সময় পাওয়া যাবে। আগের দিন রাতেই জার্ণির জন্য সবকিছু গোছগাছ করে রেখেছিলাম। তারপরেও ভোর ৫.৩০ মিনিটে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে বের হতে হতে ৬.৩০ টা। সিএনজি নিয়ে সকাল ৭টার মধ্যে ষ্টেশনে পৌঁছি। ট্রেন ছাড়ার ২৭ মিনিট আগে। বিমানবন্দর ষ্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে সোনার বাংলা ট্রেনটি ছেড়ে যায় সকাল ৭.২৭ মিনিটে।

j2.jfif

বিমানবন্দর ষ্টেশনে পৌঁছে দেখি লোকে লোকারান্ন। এত মানুষ ঈদের পরে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাবে! অধিকাংশই সপরিবারে যাত্রি। মনে মনে ভাবলাম শুধু আমি না আমার মত অসংখ্য মানুষ ঢাকায় ঈদ করছে। ঈদ শেষে প্রিয়জনদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। যেমন আমি যাচ্ছি মা সহ ভাইবোনদের সাথে দেখা করতে। এত মানুষ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম! ট্রেনে উঠতে পারবো তো! যথাসময়ে ট্রেন আসলে নির্বিঘ্নে ট্রেনে উঠে পড়েছি কোন সমস্যা হয়নি। ট্রেনে উঠেই নিজ আসনে বসে পড়ি। তার একটু পরেই ট্রেন হুইশেল বাঁজিয়ে গন্তব্য চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়।

j7.jfif

সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে আগে নাস্তা দিত। নাস্তার টাকা টিকেটের সাথে নিয়ে নিত। এখন নাস্তা আলাদা করে কিনে খেতে হয়। এছাড়া এই ট্রেনে কোন স্ট্যান্ডিং যাত্রি নেয়া হয় না। পরিস্কার ছিমছাম ট্রেন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আরামদায়ক জার্ণির ট্রেন। আমি যে বগিতে বসেছি, একটি সিটও ফাঁকা নেই।সব কানায় কানায় পূর্ণ। শুধু সোনার বাংলায় না, বাংলাদেশের কোন ট্রেনের সিট ফাঁকা থাকেনা। তারপরেও শুনি রেল লস করে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে ট্রেন চালায়। ভর্তুকির অযুহাতে গত দুমাস আগে ট্রেনের ভাড়া আরো বাঁড়িয়েছে। চট্রগ্রাম রুটের ট্রেন গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও যাত্রিসেবা একটু থাকলেও উত্তরবঙ্গসহ অন্যান্য ট্রেনের যাচ্ছেতাই অবস্থা। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত শুধু ভাড়া বাড়ানো নয়,যাত্রিসেবা বাড়ানোতেও তাদের নজর দেওয়া দরকার।

j10.jfif

মাঠের পর মাঠ,গ্রাম,নদী বন্দর,শহর পেরিয়ে ঝিকঝিক আওয়াজ করে ছুটে চলছে ট্রেন গন্তব্যের দিকে। কত অপরুপ আমাদের দেশ ট্রেন কামরা জানলা দিয়ে চোখ রাখলেই বুঝা যায়।ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ননস্টপ ট্রেনে খুব বেশি সময়ের জার্ণি নয়। পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘন্টার জার্ণি।সহযাত্রির সাথে গল্প করে,চা কফি খেয়ে, দেখতে দেখতে বীর চট্রগ্রামে চলে এসেছি। ১২.১০ মিনিটে চট্রগ্রাম ষ্টশনে ট্রেন থেকে নেমে পড়ি। বেশ আনন্দদায়ক ছিল এবারের জার্ণি। বন্ধুরা,সবাই ভালো থাকুন,সুস্থ্য থাকুন। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টলাইফস্টাইল
পোস্ট তৈরিselina 75
ডিভাইসRedmi A-Note
তারিখ২২শে জুন,২০২৪
লোকেশনচট্টগ্রাম

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

ট্রেন ভ্রমণ আমার খুবই প্রিয় এবং খুব স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।
অন্যান্য যানবাহনে উঠলে আমার কোন না কোন সমস্যা হবে বিশেষ করে বমি। কিন্তু আমি যদি একটা না ৭২ ঘন্টা ও ট্রেন ভ্রমণ করি তাও আমার কোন ধরনের সমস্যা হয় না।
আপনি ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেন ভ্রমণের দারুণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
তবে ঈদের সময় বা বিশেষ কোনো দিনে কিন্তু ট্রেনে যখন খুব বেশি ভিড় জমে তখনকার সময়টা আমার কাছে খুব অস্বস্তিকর লাগে।
ধন্যবাদ আপনাকে ট্রেন ভ্রুমানের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য।

আমারও তাই হয়।তাই ট্রেন জার্নিই আমার পছন্দ।ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।

আপনার এই ভ্রমণকাহিনীতে আপনি আমাদের রেলব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আমি চেস্টা করেছি কিছুটা তুলে ধরতে।মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।