ফটোগ্রাফিঃদেয়াল লিখন।

in hive-129948 •  2 months ago 

শুভেচ্ছা সবাইকে।

কেমন আছেন সবাই ? আশাকরি ভালো আছেন।প্রত্যাশা করি সবসময় যেনো ভালো থাকেন। আজ ২রা আশ্বিন, শরৎকাল ১৪৩১বঙ্গাব্দ। ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।

p3.jfif

p8.jfif

(ছবি গুলো আগারগাও মেট্রোরেল ষ্টেশন এলাকা থেকে ধারন করা হয়েছে।)

আজ ঢাকায় আকাশ অনেকটা রোদঝলমলে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপের কারনে দেশ জুরে যে বৃষ্টি হয়েছিল, তা গতকাল থেকে নেই।কিন্তু নিম্ন চাপের প্রভাব আছে মনে হচ্ছে।যাল ফল গতকাল থেকেই একটা ভ্যাপসা গরম। মনে হচ্ছে আরো দু-চার দিন ভোগাবে। বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ হাজির হয়েছি একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট নিয়ে। আজকের ফটোগ্রাফির বিষয় একটু ভিন্ন ধরনের আর তা হলো দেয়াল চিত্র বা দেওয়াল লিখন। এই সব দেওয়াল চিত্র নিয়ে এর আগেও একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সাথে। আশাকরি আজকের ভিন্ন ধর্মী ফটোগ্রাফি পোস্টটিও আপনাদের ভালো লাগবে।

p4.jfif

(ছবি গুলো আগারগাও মেট্রোরেল ষ্টেশন এলাকা থেকে ধারন করা হয়েছে।)

দেওয়াল লিখনের ইতিহাস অনেক পুরোনো। যেকোন আন্দোলনের হাতিয়ার এইসব দেওয়াল লিখন। গত শতাব্দীর ৫০/৬০ এর দশকে পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে আমাদের দেশের ছাত্র সংগঠন গুলো তাদের দাবী-দাওয়া ও স্বাধীকারের কথা দেওয়ালে দেওয়ালে লিখে জানাতো, তৎকালীন পাকিস্তানী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ছাত্ররা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে। দেওয়াল লিখন নিয়ে অনেক গল্প কথিত আছে। তৎকালীন চাত্র নেতাদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও লিখনীর মাধ্যমে আমরা তা জানতে পারি।সবচেয়ে বেশি প্রচলিত হচ্ছে দেওয়াল লিখতে যেয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে, ছাত্ররা পুলিশকে বলতো তারা চিকা মারতে বের হয়েছে।তখন বেশির ভাগ দেওয়াল লিখনেই হতো রাতের বেলা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে। সেই থেকেই বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্তরা দেওয়াল লিখনের ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন এবং দেওয়াল লিখনকে তখন থেকেই চিকা মারাও বলে থাকেন। আমি চিকা মারা শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছি ইউনিভার্সিটিতে পরার সময়।তখন বুঝতে পারতাম না চিকা মারা কি? আমাদের বন্ধু যারা ছাত্র আন্দোলনের যুক্ত তাদের কাছেই প্রথম শুনি এই চিকা মারার কথা।এখনও যারা রাজনীতির সাথে যারা যুক্ত তারা বিষয়টি ভালো করেই জানেন। বিপ্লব বা আন্দোলনে দেওয়াল লিখন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যুগ যুগ ধরে তা চলমান। সেটা জার্মানীর প্রাচীর হোক, তুরস্কের বিপ্লব হোক কিংবা হালের আমাদের দেশের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শাসকের ভীত কাঁপাতে বা আন্দোলনরত মানুষকে সাহস যুগিয়েছে একই ভাবে।

p2.jfif

p1.jfif

p6.jfif

(ছবি গুলো আগারগাও মেট্রোরেল ষ্টেশন এলাকা থেকে ধারন করা হয়েছে।)

দেওয়াল লিখন শুধু প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে নয় হাল সময়ে বিজ্ঞাপন ও সচেতনতা তৈরিতেও ভিষণ কার্যকর টুলস। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া জুলাই আন্দোলন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে দেওয়াল লিখনের জোয়ার বয়ে গেছে। আন্দোনল চলাকালিন ও আন্দোলন পরবর্তি ঢাকা শহরের দেওয়াল গুলি একএকটা ক্যানভাসে পরিনত হয়েছে। এক অন্য ঢাকা ,অন্য বাংলাদেশ।দেশ গড়ার অঙ্গীকার,সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলের অঙ্গীকার, শহীদদের ভুলে না যাওয়ার অঙ্গীকার সহ আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন। প্রতিটি দেওয়াল লিখনেই এক একটি ইতিহাস। রাষ্ট্রের উচিত দেওয়াল লিখনের কথা গুলো স্মরণে নেওয়া। জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস ও অনুপ্রেরনা হয়ে থাকবে এই সব দেয়াল লিখন। নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষকে সাহস যোগাবে অনুপ্রাণীত করবে শিক্ষার্থীদের এই দেওয়াল লিখন বা আর্টওয়ার্ক গুলো। দেওয়াল লিখনকে কেউ কেউ আর্টওয়ার্ক,গ্রাফিতিও বলে থাকেন। এইসব দেওয়াল লিখনের অনেক গুলোই শিল্প মান সম্পূর্ণ।আশাকরি আজকের ফটোগ্রাফি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে।। আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন।নিরাপদে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

p5.jfif

p7.jfif

(ছবি গুলো আগারগাও মেট্রোরেল ষ্টেশন এলাকা থেকে ধারন করা হয়েছে।)

পোস্ট বিবরণ

শ্রেনীফটোগ্রাফি
ক্যামেরাSamsung A-10
পোস্ট তৈরি@selina 75
তারিখ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দারুন কিছু দেওয়াল লিখনের ফটোগ্রাফি করেছেন। এই দেওয়াল লিখন গুলো আমাদের দেশে ইতিহাস হয়ে রবে। স্মৃতি হিসেবে পরবর্তী প্রজন্ম এগুলো দেখতে পাবে। আপনি পোস্ট করে নিজের একাউন্টে সংরক্ষণ করে দিলেন। ধন্যবাদ।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই দেয়াল লিখন আমাদের ইতিহাসের সাক্ষি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনি দেখছি আজকে বেশ কিছু গ্ৰাফিতির ফটোগ্রাফী আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে পুরো ঢাকা শহরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রং ব্যবহার করে খুবই সুন্দর সুন্দর দৃশ্য অংকন করেছে আমাদের দেশের ছাত্র ছাত্রীরা। আপনার শেয়ার করা গ্ৰাফিতির দৃশ্য গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। নতুন রুপে সাজিয়েছে আমাদের ঢাকা শহর।

বেশ নতুন লাগে আমাদের ঢাকা শহর এই দেয়াল আর্ট এর কারনে। মতামতের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

এটা ঠিক বলেছেন আপু আন্দোলনের পর শহরের এই দেওয়াল গুলো ক্যানভাসে পরিণত হয়েছে। রাস্তায় বের হলে দেওয়ালে আন্দোলন বিষয়ক এরকম অনেক আর্ট দেখা যায়। বেশ ভালো লাগে এগুলো দেখতে। তবে মাঝে মাঝে কিছু আর্ট দেখলে আন্দোলনের সেই কালো অধ্যায়গুলোর কথা মনে পড়ে। আপনার আজকের ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনাদের সেদিকের কিছু দেয়াল লিখন দেখতে পারলাম।

এই আর্টগুলো সেই কালো অধ্যায়ের সাক্ষি আপু। মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। আর এই ফটোগ্রাফির লেখাগুলো আসলে আমাদের অনেক শিক্ষা দেয়।আর এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই অবশ্যই আমাদের রাষ্ট্র অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

ঠিক তাই। কিন্তু আমরা কোন কিছু থেকেই শিক্ষা নেই না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।