জেনারেল রাইটিংঃ ফুটপাতে জমজমাট ঈদ মার্কেট।

in hive-129948 •  6 months ago 

সবাইকে শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,কেমন আছেন? আশাকরি এই গরমে অস্বস্তি হলেও, সবাই ভালো আছেন। সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি।আজ ২০ ই চৈত্র, বসন্তকাল, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।

s2.jpg

আর দিন কয়েক পরেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে ঈদের প্রস্তুতি। ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাই সামর্থ অনুযায়ী চেষ্টা করছে প্রিয় জনের ঈদ রাঙিয়ে দিতে-খুশি করতে। বাজারে যেকোনো পণ্যের দাম, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশী।এমনিতেই সংসার চালাতেই অধিকাংশ মানুষের নাভিশ্বাস, তার উপর ঈদ। সমস্যা হলেও মানুষ চেষ্টা করছে সামর্থ অনুযায়ী কেনাকাটা করতে। গতপরশু এক বান্ধবী বলতেছিল, অভিজাত বিপণী বিতানে গেলে মনেহয় মানুষের টাকার অভাব নেই!কিন্তু কত পার্সেন্ট মানুষ কেনাকাটা করে ঐসব বিপণী বিতানে!! মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে অঢেল টাকা। শুধু তারাই বাংলাদেশ না,তারা সংখ্যায় ১০ বা ২০ পার্সেন্ট! আর এই বিপুল সংখ্যক মানুষ, যারা ৮০ বা ৯০ পার্সেন্ট, তারাও ঈদ করবে, আনন্দ পরিবার পরিজনের সাথে ভাগাভাগি করবে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের বড় একটি অংশ নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বন্ধুরা,এইসব নিন্ম আয়ের মানুষরা কষ্ট হলেও পরিবার পরিবার নিয়ে ঈদ করবে-আনন্দ করবে। আর তাদের কেনাকাটা নিয়েই আমার আজকের ব্লগ, ফুটপাতে জমজমাট ঈদ মার্কেট।

s1.jpg

অভিজাত বিপণী বিতান,সাধারণ মার্কেটসহ ফুটপাত জমে উঠছে ঈদের কেনা বেচায়। ফুটপাতে সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষেরা কেনাকাটা করে। কি নেই ফুটপাতে, সবকিছুই পাওয়া যায়। ফুটপাতের এক দোকানদার জানালেন, এখনো সে ভাবে কেনাকাটা জমেনি, তবে দিন দিন বাড়ছে। স্বাভাবিক বিক্রির চেয়ে ৩০/৪০ গুণ বেশী বিক্রি হচ্ছে এখন। ঈদ যত এগিয়ে আসবে বিক্রি তত বাড়বে। সেই দোকানদার জানালেন, অনেক জায়গায় সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ রোজা শুরু থেকেই ঝামেলা করছে, দোকান উঠিয়ে দিচ্ছে। তাতে ক্রেতাদের সমস্যা হচ্ছে, আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। গরীর মানুষ গুলো কোথায় কেনাকাটা করবে? আমারা ফুটপাতের দোকানীরাও গরীব, ব্যবসা করতে না পারলে আমরা কি খেয়ে বাঁচবো? আমার উত্তর নেই! আসলে আমাদের এই এক সমস্যা, যত দোষ নন্দ ঘোষ। গরীবদের জন্য যত নিয়ম, অথচ রাস্তা গুলোর অধিকাংশ দখলে থাকে কনস্ট্রাকশনের মালামাল আর গাড়ি পার্কিংয়ে, সে দিকে তেমন নজর নেই কর্তা ব্যক্তিদের।

s3.jpg

আজ ইফতারের পর শেওড়াপাড়ায় ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় দেখলাম, ফুটপাতের দোকান গুলোতে বেশ ভিড়। একজন বাবা তার মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছে। জিজ্ঞেস করলে জানালো, মেয়ের জন্য জামা কিনতে এসেছে। জামা কেনা শেষ। ১২/১৩ বছরের মেয়েটির মুখে যে হাসি দেখলাম, মনটা ভরে গেল। মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলাম , কেনা শেষ? সে বলল, কসমেটিকস কিনলেই শেষ। বাবা মেয়ে তারা ফুটপাতের কসমিটিকসের দোকানের দিকে এগিয়ে গেল।আমি এগিয়ে চললাম আমার গন্রব্যের দিকে। বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের গানের একটি কলি দিয়ে শেষ করবো আমার আজকের ব্লগ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina 75
ডিভাইসRedmi Note A5
তারিখ৩এপ্রিল,,২০২৪
লোকেশনঢাকা

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আমিও গতকালের পোষ্ট লিখেছিলাম এই টপিক্স নিয়েই। আমার কাছে মনে হলো এবার যেন ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করার মানুষের সং্খা টা আগের থেকে বেশ বেড়েছে। নামী দামি শপিং মল গুলোতে সবকিছুর ই যে পরিমাণ অস্বাভাবিক দাম!! দেশের ৮০-৯০ ভাগ মানুষের জন্যই তা এফোর্ড করা সম্ভব না, যদি আসলেই হালাল আয় হয়ে থাকে।

Posted using SteemPro Mobile

ঠিক তাই আপু নামীদামি শপিং মলগুলোতে ঈদে সব জিনিসের তিনগুল দাম হয়ে যায় । যা মধ্যবিত্তের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়।

আপু ফুটপাতে কিন্তু একদম নিম্নমানের মানুষ কেনাকাটা করে এটা ভুল ধারণা। এখানে সর্বশ্রেণীর মানুষ উপস্থিত হয় সাশ্রয়ী দামে ভালো পোশাক পাওয়ার জন্য। কারণ আমিও লক্ষ্য করে দেখেছি আমাদের এখানে গাংনী অথবা বামুন্দির বাজারের রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে সর্ব শ্রেণীর মানুষ কেনাকাটার ভিড় করছে। একটাই বড় কারণ শপিংয়ের নাগাল ছাড়া দাম নিয়ে কথা কাটাকাটি করতে হয় না তাদের। এদিকে ভালো-মন্দ উভয় প্রকৃতির দামি কম দামি কাপড় এদের মাঝে থাকে। যাই হোক সুন্দর একটি পোস্ট পড়তে পেরে ভালো লাগলো।

ঠিক তাই সব শ্রেনির মানুষই ফুটপাত থেকে জিনিস কিনে।মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

আমি যখন ঢাকাতে থাকতাম তখন আমিও এমন দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছি। রাস্তার পাশে ভ্যানের উপর ঈদের জমজমাট মার্কেট বসে থাকে। সাধারণ মানুষেরা সেখান থেকেই জিনিস ক্রয় করে কেননা সেখানে দামের পরিমাণটা ছিল কম হয়।

ঠিক বলেছেন ভ্যানে জামা কাপড় কম দামে পাওয়া যায়। তাই সব শ্রেনির মানুষই সেখান থেকেই ক্রয় করে।

আপু বর্তমান বাজারের যা অবস্থা। সংসার চালাতেই মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। সেই জাগায় ঈদের মার্কেট করবে কিভাবে। তারপরও মানুষ শপিং করছে। ধনীদের মার্কেটে তেমন জানজট নেই। তারা যায় পোষাক নেয়,পেমেন্ট করে চলে আসে। আমাদের মত যার নিম্ন বিত্ত মানুষ তারাই যায় ফুটপাতের মার্কেটে। যদি দামাদামি করে কিছু কম টাকায় আপন জনকে খুশি করা যায়। এই ধরনের মানুষদের সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। ধন্যবাদ।

বিত্তবানদের কোন সমস্যা নেই সব সমস্যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের।

আপনি ঠিক বলছেন আপু গরিবদের উপরে যত সমস্যা। সবার স্বার্থ থাকে না যে তারা মার্কেটে গিয়ে শপিং করবে।আমাদের মত অনেক মানুষ রয়েছে যারা ফুটপাত থেকে শপিং করে।এবং সেই দোকানদার গুলোরো অনেক ভালো হয় যাতে করে তাদের মাল গুলো সেল হয়। যাইহোক আপনার পোস্ট টি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

ঠিক বলেছেন সকল শ্রেনির মানুষের সামর্থ্য নেই শপিংমল থেকে শপিং করার । তাদের জন্য ফুটপাতই ভরসা।

আসলেই আপু সংসার চালাতে যতই কষ্ট হোক না কেন ঈদে সবাই চায় পরিবারের সবাই মিলে নতুন জামা কাপড় পড়তে। তাই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন কিছু কিনে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত। ফুটপাতের এই দোকানগুলোই তাদের ভরসা। আজ সকালেও একটা ভিডিও দেখলাম বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকান গুলোতে বিক্রি কম। বর্তমানে সব পণ্যের দাম অনেক বেশি তার ওপর রমজান মাস ঈদ সবকিছু মিলিয়ে মানুষজনের এতদিকের খরচ সামলানো একটু কষ্টকর। আপনার লেখাগুলো পড়ে ভালই লাগলো।

নামীদামি শপিং মলগুলোতে আসলেই বিক্রি কম ,সে নিউজ আমিও দেখেছি। দামের জন্য।

আসলে পৃথিবীতে সবাই সমান নয়। সকলেই বড় বড় মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনার সামর্থ নেই৷ এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত। তারা এরকম বড় বড় শোরুমে গিয়ে তাদের পরিবারের জন্য কিছু কিনবে সেরকম সমর্থ্য নেই। তবে সকলের একটি ঈদের আনন্দ রয়েছে৷ সকলেই চায় যে তাদের পরিবারের জন্য কিছু ক্রয় করতে৷ তার জন্য এই শ্রেণীর মানুষগুলো এই ফুটপাত থেকে অনেক কিছু কিনছে এবং এই ফুটপাত থেকেই তারা তাদের সুন্দর ও পছন্দের জিনিসগুলো বেছে নিচ্ছে৷ তাদের ঈদের সময় আনন্দের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷

ঠিক বলেছে সবাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী জিনিস কিনে আপন জনদের জন্য। ঈদে যেনো সবাই নতুন জামা পরতে পারে। ঈদের আনন্দ এক সাথে উপভোগ করতে পারে।

খুব সুন্দর ভাবে আপনি এই পোস্ট এর মাঝে সবকিছু ফুটিয়ে তুলেছেন৷ ধন্যবাদ৷

Posted using SteemPro Mobile