সবাইকে শুভেচ্ছা।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,আশাকরি বৃষ্টিস্নাত দিনে সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি । প্রত্যাশা করি সবসময় ভালো থাকেন সবাই। আজ ১৯ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সারাদেশেই কমবেশী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আজও দুপুরের দিকে একপশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়। মেঘলা আকাশ। কখনও কখনও মেঘ ভেদিয়ে উঁকি মারছে সূর্যিমামা। মেঘ আর সূর্যের যেন লুকোচুরি। এই লুকোচুরিতে সূর্য হেরে যাচ্ছে বারবার। মেঘে ঢেকে রাখছে সূর্যকে।কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে গরমের তীব্রতা নেই।গরম ছাপিয়ে বন্যার পদধবনি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জেলায় এবং উত্তরের তিস্তা অববাহিকা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।ভারী বৃষ্টি,উজানের ঢল ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এই বন্যা পরিস্থিতি। আমাদের দেশের মানুষ বন্যা পরিস্থিতিসহ প্রাকৃতিক যে কোন দুর্যোগ মোবাবিলায় সিদ্ধহস্ত। আশাকরি, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ বরাবরের মত সাহসী পদক্ষেপে এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবেন। বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে সমসাময়িক বিষয়ের উপর একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার চেষ্টা করি। তারই অংশ হিসেবে আমার আজকের উপস্থাপন বর্যাকাল। আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।
আষাঢ়-শ্রাবণ দু"মাস বর্ষাকাল। বর্ষাকাল কারো জন্য আশির্বাদ, কারো জন্য অভিশাপ। প্রকৃতির বিরুপ পরিবর্তনের কারণে কবিগুরুর ভাষায় "নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে"। সেই চিত্র দেখা না গেলেও এবার আষাঢ় গগনে মেঘের ঠাঁই হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে। আষাঢ় মাস কৃষকের আশির্বাদের মাস। কৃষক কর্দমাক্ত জমিতে ফসল লাগাতে ব্যস্ত। বৃষ্টির জলে ধুলো-বালি- আবর্জনা ধুয়ে মুছে অপরুপ সাজে সেজেছে প্রকৃতি। সবুজের সমারোহে সেজেছে চারিদিক। তাঁকিয়ে থাকতে চোখে আরাম বোধ হয়। বর্ষায় কদম,বকুল,শাপলা,পদ্ম,ঘাস্ফুল,দোলনচাঁপা, চন্দ্রপ্রভা,অলকানন্দাসহ কত ফুল জাস্ট বিমোহিত করে। শুধু কি ফুল! দেশী ফলেও ভরপুর এই সময়। আম, কাঁঠাল, জাম,আনারস,ডেউয়া,আমড়া, আতা, লটকন,পেয়ারাসহ কত ফলমূল। মনের অজান্তে বেড়িয়ে আসে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবো নাকো তুমি, সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্ম ভূমি। বর্ষায় শীতল-কোমল-সজীব যে আমার দেশের রুপ তা আসলেই কারো সাথে তুলনা চলে না।
এই বর্ষায় গ্রাম বাংলার চিত্র সবচেয়ে মধুর। কর্দমাক্ত উঠোন-রাস্তা হলেও প্রাণ আছে। গ্রামের চারপাশে পানি আর পানি। খাল,বিল, নদী-নালা যৌবনপ্রান্ত হয়। অনেক এলাকায় চলাচলের বাহন হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। ঘরের নারীরা সেলাই ফোড়াই ও আড্ডায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া খল-বিল -নদী থেকে মাঠে বা রাস্তায় উঠে আসা মাছ ধরার উৎসব। টিনের চালে ঝুম ঝুম বৃষ্টি। দারুণ এক আবহ সৃষ্টি করে। কিছু সমস্যাও আছে। বর্ষায় স্বাভাবিক কাজ কর্মের একটু ব্যতায় ঘটে। দিন আনে দিন খায় মানুষদের সমস্যা হয়। শহরের অফিসমুখি মানুষরা বিড়ম্বনায় পড়ে।বর্ষাকালে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে, সাপসহ পোকামাকড়,মশার উৎপাত বাড়ে, ছিন্নমূল মানুষদের থাকার সমস্যা, গবাদি পশু পাখিদের সমস্যা, পানিতে শিশুদের পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।এই সমস্যা গুলোর দিকে আমাদের সতর্ক নজর রাখা জরুরি।
মানব মনে বর্ষার প্রভাব অপরিসীম।প্রেম ও ভালোবাসার একান্ত অনুভূতি,কামনা-বাসানা কত প্রকাশ ঘটেছে এই বর্ষাকে ঘিরে। তাইতো বর্ষা নিয়ে আমাদের কবি সাহিত্যিকরা অসংখ্য সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। এমন কোন কবি নেই যে বর্ষা নিয়ে কবিতা লেখেননি। সাহিত্যের বড় একটি অংশ দখল করে আছে বর্ষাকাল। লেখকেরা মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্ষার রুপ বর্ণনা করেছেন।পরিশেষে আমাদের দেশের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক,নির্মাতা হুমায়ূন আহমদের একটি গানের লিরিক দিয়ে শেষ করবো আজকের লেখা।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
তারিখ | ৩রা জুলাই ,২০২৪ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/selina_akh/status/1808489517487476921
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটি গান। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্ম ভূমি। আর সকল দেশের রানী দেখেই এ দেশের বৃষ্টিও অনেক অপরুপ। এদেশের কৃষকরা চেয়ে থাকে বৃষ্টির জন্য। আর এই বৃষ্টির জন্য দেশের ফুল ফল ও ফসল হাসে। আবার অনেক সময় অনেক বৃষ্টিতে অনেক রোগ ও মানুষকে পড়তে হয় অনেক বিরম্বনায়। তারপরেও কেন যেন মন চায় বার বার এই বৃষ্টিকে। অনেক ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন বর্ষার কারনে আমাদের দেশটি সবুজে ভরে উঠে। আমার পোস্টটি পড়ে মতামত দেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পৃথিবীর বুকে যখন বৃষ্টির প্রথম ফোটা পড়ে তখনই যেন মানুষের বুকের মধ্যে একটা নতুন আশা এবং ভালোবাসা কাজ করে। বৃষ্টির অনূভুতি টা সত্যি আলাদা। এই বর্ষাকালে প্রকৃতি যেন নতুন এক পরিবেশ সেজে উঠে। দারুণ ছিল আপনার পোস্ট টা আপু। হুমায়ুন আহমেদ এর রচিত এবং শাওন এর গাওয়া এই গানটা আমার অনেক পছন্দের। যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুমায়ুন আহমেদ এর এই গানতি আমারও খুব প্রিয়। আর এই বর্ষায় যেনো প্রকৃতি এক অপরুপ রুপে সেজে উঠে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বর্ষা আসলেই অপরূপ সৌন্দর্যের একটি ঋতু৷ এই সময় অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই এবং এতো সুন্দর পরিবেশ থাকে যে একেবারে বলার বাইরে৷ খুব সুন্দর পরিবেশ আমরা পেয়ে থাকি এবং সেই পরিবেশ উপভোগ করার মাঝে একটি আলাদা ভালোলাগা কাজ করতে থাকে৷ ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit