জেনারেল রাইটিংঃ আসুন পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করি।

in hive-129948 •  2 months ago 

শুভেচ্ছা সবাইকে ।

কেমন আছেন সবাই ? আশাকরি ভালো আছেন।প্রত্যাশা করি সব সময় সবাই ভালো থাকেন। আজ ১৬ই কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা নভেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

g.jpg

source

পলিথিন চিনেনা এমন মানুষ মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না! প্রতিটি বাড়িতেই পলিথিন পাওয়া যাবে। খুঁজতে হবে না! বাজার থেকে কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে অন্যান্য যে কোন নিত্য পণ্য বাসায় নিয়ে আসা হয় পলিথিনের ব্যাগে করে। দোকানদারেরা ফ্রিতে দিয়ে থাকে এই পলিথিন ব্যাগ। বহনে সহজ ও মজবুত বলে এই ব্যাগের ব্যবহার সর্বত্রই দেখা হয়। আর দামে সস্তা বলে ফ্রিতেই দিয়ে দেয় ক্রেতাকে।ছোট, বড় ও মাঝারি বিভিন্ন সাইজের পলিথিন পাওয়া যায়। তাই বিক্রেতা, ক্রেতাকে ৫ টাকার একটি ব্লেড কিনলেও পলিথিনে মুড়িয়ে দিয়ে দেয়।এছাড়া পলিথিনের মোড়ক ছাড়া কোন মোড়কজাত পণ্য আমাদের চিন্তার বাইরে।এসব পলিথিন আবার নানা রঙ বেরঙের এবং দৃষ্টিনন্দনও বটে। মানুষের প্রয়োজনের সাথে পলিথিন এখন একাকার। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে খালি হাতে বাজারে যেয়ে ৮/১০টা পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে ঘরে ফিরছেন। অথচ এই পলিথিন ক্ষতিকর। মানুষের জীবনের জন্য এবং পরিবেশের জন্য মা রাত্মক ক্ষতিকর। যেনে শুনেই আমরা এই ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার করছি।ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, বিশ্বে প্রতি মিনিটে ১০ লাখেরও বেশি এবং বছরে প্রায় ৫ লাখ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে থাকে মানুষ।

ঢাকা শহরেই প্রতিদিন ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি পলিথিন ব্যবহার হয়ে থাকে। এসব ব্যবহৃত পলিথিন মাটি ও পানির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে চলছে।ফেলে দেওয়া পলিথিন পঁচতে সময় লাগে ২০০ থেকে ৪০০ বছর।সে হিসেবে বলা যায়, আমরা মাটি নয় পলিথিনের উপর আছি। পলিথিনের ফলে মাটি উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। নদীনালা ও সমুদ্রে জমা হয়ে পানির ক্ষতি করছে। নদীগুলো নাব্যতা হারাচ্ছে। সমুদ্রের তলদেশে পলিথিনের স্তর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।ভাবতে অবাক লাগে ব্যবহৃত পলিথিনের ১০ শতাংশ সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া পলিথিন তৈরিতে যে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়, তা মানুষসহ যে কোন জীবের জন্য ক্ষতিকর। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।ঢাকা শহরেই দেখতে পাই পলিথিনের ফলে ড্রেন গুলো বন্ধ হয়ে থাকে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ এই পলিথিন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশে পলিথিন কিন্তু নিষিদ্ধ সেই ২০০২ সাল থেকে। পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। বিশ্বে যে কয়েকটি দেশ আইন করে পলিথিনের উৎপাদন ও বাজারজাত প্রথম নিষিদ্ধ করে তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বিশ্বে ৬২টি দেশে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ। আমাদের দেশে আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নেই।২০ বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের দেশে পলিথিন নিষিদ্ধ এটা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে!

বর্তমান সরকার গত ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপ গুলোতে পলিথিন নিষিদ্ধ করে।এবং আজ থেকে কঠোর ভাবে পলিথিন নিষিদ্ধের কার্যকারিতা বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছে। তারেই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধ। সরকারের ঘোষণা অনু্যায়ী পলিথিনের উৎপাদন, বাজারজাত ও ব্যবহার বন্ধে তারা জিরো টলারেন্স।

আমাদের সবার উচিত সরকারের এই উদ্যোগের পাশে থাকা।আমাদের নিজের স্বার্থে,ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে।প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পলিথিন উৎপাদন, বাজারজাত ও ব্যবহার বন্ধে সরকারের এই উদ্যোগের সাথে আছি। আপনিও এগিয়ে আসুন। আমরা সবাইমিলে পলিথিন মুক্ত,পরিবেশ বান্ধব বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেনীজেনারেল রাইটিং
ক্যামেরাRedmi Note A5
পোস্ট তৈরি@selina 75
তারিখ১লা নভেম্বর, ২০২৪ ইং
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

image.png

image.png

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মধ্যে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এটা আসলেই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। কেননা, পলিথিন যদি কোন আবাদি জমির মধ্যে পড়ে যায়, তখন পলিথিন আবাদি জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আপনি দারুন একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে।

মানুষের শরীরেও পাওয়া যাচ্ছে পলিথিন এর কণা। যা ভয়ংকর।

আসলে আমি মনে করি পলিসিনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয় কারণ এগুলো প্রত্যেকদিন আমাদের বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে সঠিক মাথায় ব্যবহার আর সঠিক স্থানে সংরক্ষণ করা বা পরিচ্ছন্ন করা আমাদের পরিবেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়। তবে এ বিষয়টা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নজরে নেওয়া দরকার। শুধু ঢাকা শহর বলে নয় গ্রামগঞ্জে ব্যাপক এর ব্যবহার রয়েছে কিন্তু এগুলো আমরা নিয়মের বাইরে ফেলে রাখি যার জন্য পরিবেশের ক্ষতি। সোনার একটা বিষয় আপনি যখন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে অনেক ভালো লেগেছে আমার।

পলিথিন ছাড়াও আমারা চলেছি আগে। পলিথিন এর বিকল্প ব্যাগ তৈরি হয়েছে। আমরা চাইলেই এই পলিথিন নিষিদ্ধ করতে পারি। কেবল দরকার সদিচ্ছা।

একটা পলিথিন কখনও পঁচে না। এটা পরিবেশের অনেক বড় ক্ষতি করে। আপনি জানলে অবাক হবেন বাংলাদেশে কিন্তু পলিথিন ব‍্যবধার নিষিদ্ধ। তবে এটার কোন প্রয়োগ নেই। আর এটা ব‍্যবহার বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। তবে কেন জানি এখন পযর্ন্ত কোন ভাবেই হয়ে উঠছে না। ভালো একটা বিষয়ে লিখেছেন।

আমি আমার পোস্টে উল্লেখ করছি যে ২০০২ সাল থেকে দেশে পলিথিন নিষিদ্ধ। আমরা ইচ্ছে করলেই হয়।

পলিথিনের অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা থাকলেও আমরা কজনই বা মানি। পলিথিন ছাড়া আমাদের নিত্যদিন যেন চলেই না। এর আগেও একবার সরকার পলিথিন বন্ধ করেছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হয়ে গিয়েছিল। জানিনা এবার কতদিন বন্ধ রাখতে পারবে। এর জন্য সবচেয়ে বেশি আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন। খুব সুন্দরভাবে সেই বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। ভালো লাগলো পড়ে।

ঠিক তাই ।সচেতনতা সেই সাথে এর উৎপাদন ও বাজারজাত করা বন্ধই পারে পলিথিন বন্ধ করতে।

আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।পলিথিন এমনভাবে ব্যবহার হচ্ছে যা বলে শেষ করা যাবে না। তবে এটি ঠিক পলিথিন সস্তার কারণে ফ্রিতে ক্রেতাদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন। এবং এই পলিথিন পরিবেশ এবং পানি হতে সবকিছু নষ্ট করতেছে। এবং পলিথিন আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করলে ভালো হবে। দিন দিন পলিথিন এর কারণে সবকিছু হুমকির মুখে পড়তেছে। সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

জি আপু ।আমরা যদি ব্যবহার না করি। তবেই বন্ধ হবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

প্রকৃতির সৌন্দর্য দিন দিন কমে যাচ্ছে আর এর মূল কারণ হচ্ছে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি প্লাস্টিকের ব্যবহার করছি। আর অতিরিক্ত মাত্রই প্লাস্টিক ব্যবহার করার কারণে প্রকৃতির নানা রকম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের সকলের উচিত একটু সচেতন হওয়া এবং পলিথিন ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া।