সবাইকে শুভেচ্ছা।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশাকরি সবকিছু মিলে যে যেখানে আছেন ভালো আছেন, নিরাপদে আছেন। আমিও নিরাপদে আছি, ভালো আছি। আজ ১১ই শ্রাবণ, বর্ষাকাল,১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ২৬ জুলাই, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। সাত দিন পর আজ হাজির হলাম একটি লাইফস্টাইল পোস্ট নিয়ে। আশাকরি বরাবরের মত সাথেই থাকবেন।
আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ হাজির হয়েছি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট নিয়ে। পোস্টের শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন বন্ধুরা, আজকের লাইফস্টাইলের বিষয়বস্ত। বিগত কয়েকদিন ধরেই প্রিয় বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। স্বাভাবিক অবস্থায় নেই দেশের সাধারণ মানুষ। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে সময় অতিবাহিত করছে। যদিও গত বুধবার থেকে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত বুধবার পর্যন্ত কারফিউ এর মধ্যে ঘরবন্দি সময়ের কথা নিয়েই আমার আজকের লাইফস্টাইল পোস্ট কারফিউ-এ ঘরবন্দি জীবন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য গঠিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারাদেশে "কমপ্লিট শার্টডাইন" এর ফলে দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হলে, ১৯ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও আইনশৃংলা নিয়ন্ত্রনে নিতে সারাদেশে কাউফিউ ঘোষনা করেন সরকার।সরকারের পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আজ ও আগামিকাল পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে ঢাকা ও তার আশপাশের জেলা গুলোর জন্য। যদিও আজ ও আগামিকাল সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল আছে। আপনারা জানের কারফিউ শুরুর আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় সরকার। পরবর্তিতে মোবাইলের ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সহ টোটাল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। শুরু হয় এক ভুতুরে অবস্থা।
কারফিউ চলাকালীন যেহেতু বাইরে যাওয়া নিষেধ পুরো সময়টা তাই ঘরবন্দি কাটিয়েছি। সময় গুলো পার করেছি চরম উদ্বেগ- উৎকণ্ঠার। সব ধরনের খবর থেকে বিচ্ছিন্ন। বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে জানার সুযোগ ছিল খুব কম। মোবাইল ছিল একমাত্র ভরসা। একপর্যায়ে মোবাইলের ব্যালান্স সংকট হয়ে যায়। কোন ভাবেই রিচার্জ করা যাচ্ছিলো না। এর মধ্যে খবর পাই আমার বড় বোন ঢাকা থেকে বন্ধুদের সাথে রাঙামাটি ঘুরতে যেয়ে আটকা পড়েছে। ছোট ভাই মা ও তার বউ বাচ্চা নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে টাংগাইলে গিয়ে আটকা পড়েছে। আপনারা বুঝতেই পারছেন তখন আমার ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মানষিক অবস্থা কি? জীবনের গতবাধা নিয়মের ছন্দপতন। সময় কাটে না। কোন কাজেই মন বসে না। বিভিন্ন বই পড়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারিনি। শুধু বাইরে কি হচ্ছে তার চিন্তা। মা,বোন,ভাই ও ভাইয়ের বউ বাচ্চা নিয়ে চিন্তা।
কারফিউ এর শিথিল এর সময় বাড়তে থাকে। এর মধ্য ভালো খবর পাই কারফিউ এর দ্বিতীয় দিনের দিবাগত রাতে বোন বন্ধুদের নিয়ে রাঙামাটি থেকে নিরাপদে ঢাকায় ফিরেছে। বোন সাংবাদিক হওয়ায় তা সম্ভব হয়েছে। তার পরের দিনও ভালো খবর পাই, টাংগাইল থেকে ভাই সবাইকে নিয়ে ঢাকা এয়ারপোর্টে এসে ফ্লাইটে করে নিরাপদে চট্রগ্রামের বাড়িতে পৌছেছে। তখন একটু স্বস্তি পাই। আস্তে আস্তে কারফিউয়ের শিথিলতা বাড়তে থাকে। ৫ ঘন্টার জন্য অফিস খোলে। এই সময়ে রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। ফোরজি , স্যোশ্যাল মিডিয়া চালু না হলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়। যদিও ইন্টারনেটের গতি অনেক শ্লো। অনেক চেষ্টার পর প্রিয় স্টিমিটে ঢুকতে পারছি তাতেই স্বস্তি। গত কয়েক দিনের বিভিষিকাময় দিনের কথা হয়ত কোনদিন ভুলবো না। ছাত্র আন্দোলনের গতি প্রকৃতি, নির্বিচারে মানুষ হত্যা, সরকারি স্থাপনায় আগুন, হামলা,ভাংচুর,গণগ্রেফতার ও কারফিউ সবকিছু মিলে মানুষের মনে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে যাবে কি? তারপরেও আশাকরি খুব দ্রুত জলপাই রংয়ের গাড়ী তার জায়গায় ফিরে যাবে। প্রিয় বাংলাদেশ তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পারে।সবাই ভালো থাকবেন। নিরাপদে থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | লাইফস্টাইল |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
তারিখ | ২৬শে জুলাই ,২০২৪ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit