শীতের সন্ধ্যায় স্নিগ্ধ শুভেচ্ছা সবাইকে।আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভাল আছি। শীতের শিশির আর কম্বলের উষ্ণতা,দুই মিলে সবার জীবনে বয়ে আনুক পরিপূর্ণতা।
বন্ধুরা আমার আজকের আয়োজনে থাকছে প্রিয় বাবারা তার মেয়ের জন্য কত কি কি করতে পারে,,তার ছোট্ট একটি দৃষ্টান্ত আজ তুলে ধরার চেষ্টা করব।যখন আমার বাবা বেঁচে ছিলেন,তখন প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচবার আমাকে দেখতে আসতেন।এ নিয়ে বহু রচনা আছে।বাবা যেমন আদর করতো, শাসন করেও বলতো -মা এটা করা যাবে না। ওটা করা যাবেনা। এরকম বলা যাবে না। সেরকম করা যাবে না।ইত্যাদি কত রকমের বিধি-নিষেধ। ঠিক তেমনি কখন কি খাব। খেয়েছি কিনা? সব ধরনের খোঁজখবর রাখতেন বাবা।ঠিক তেমনি যখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম আমার মুখের হাসি প্রায় ম্লান হয়ে গেল,তখন আমার বাবা আমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, অনেক চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত আমাকে হারমোনিয়াম কিনে দিয়েছে গান শেখার জন্য।আমার সামনে উল্টাপাল্টা বাজাতো হারমোনিয়াম যেন দেখে আমি হাসি।বাবার সাথে এরকম ছোট ছোট অনেক হাসি বেদনা দুঃখ-কষ্টের আনন্দের মুহূর্ত কাটিয়েছি।পরিশেষে সব বাবা-মা'ই চায় সন্তান সবসময় সুখে থাকো ভালো থাকুক শান্তিতে থাকুক, হাসিখুশি থাকুক। বাবা মারা যাওয়ার প্রায় 17 বছর হয়ে গেল।কিন্তু বাবার অভাব কেউ দূর করতে পারেনি।খুব বেশি মিস করি বাবাকে।মহান বিধাতা যেন আমার বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করান। আমীন। রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।
আল্লাহতালার অশেষ রহমতে এখন আমার দুটো বাবা আছে।একটি সিয়াম আর একটি শিপু।তারা দুজনেই এখন বাবার ভূমিকা পালন করে।কোথায় যাচ্ছি কি করছে কি খাব খেয়েছে কিনা সব ধরনের খোঁজ খবর নেয়।আমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তারা যথেষ্ট বিনোদন দেন আমাকে।এমনকি আমি কষ্ট পাই এরকম কোন কাজ তারা কোনদিন কখনোই করেনা।পৃথিবীতে এরকম লক্ষী বাবা যেন আল্লাহ তায়ালা সবার ঘরেই দেন।এই দুটো বাবাকে ঘিরেই আমার বেঁচে থাকা আমার স্বপ্ন।আজ আমাকে ছেড়ে প্রায় চারশত কিলোমিটার দূরে আছে দুই ভাই।যা আমার জন্য অনেক কষ্টদায়ক হলেও আমার স্বপ্ন পূরণের জন্য, প্রযোজ্য।আপনারা অনেকেই অবগত আছেন যে কিছুদিন আগে শিপুর এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ভর্তি কোচিং করার জন্য।শিপু চলে যাওয়ার পর আমি অনেকটা বিমর্ষ হয়ে পড়ি। কোন কিছুই ভালো লাগে না। কাজ করতে, খেতে, কোন কিছুই না। তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমার বাংলা ব্লগ। এখন আমি সুপার একটিভ এ নেই। কারণ একটাই,, যাইহোক আমার বিষণ্ণতাকে কাটাতেই সিয়াম দৌড় দিয়ে চলে এসেছিল নীলফামারী।ওকে নিয়ে কয়েকটি দিন বেশ ভালো কাটালাম।কিন্তু গতকাল রাতে সে আবারো চলে গেল।যাওয়ার আগে তাঁর ঘর থেকে সাউন্ড বক্স গুলো নিয়ে এসে আমার ঘরে লাগিয়ে দিল বিভিন্ন জায়গায় সেটিং করে।যেন একা একা গান শুনেও কিছুটা সময় ভালো থাকতে পারি। আমার একটু বিনোদনের কথা চিন্তা করে তার নানা আয়োজন। যাবার বেলায় বলে গিয়েছে এবার আসলে সে নিজের হাতে আমার ঘর গুছিয়ে দেবে।
আমি ধন্য, আমি সার্থক এমন বাবার সন্তান হতে পেরে।এখন আমার নিজেকে এতটাই ছোট মনে হয় যে, আমি সবসময় মনে করি সিয়াম এবং শিপু দুজনেই আমার বাবা।কোন জামাটা আমাকে বেশি সুন্দর লাগে। কোন শাড়িটা আমাকে বেশি সুন্দর লাগে। কোন জুতাটা আমাকে মানাবে। সবকিছু ওরা ঠিক করে দেয় এখন। এমনকি কোথাও যাওয়ার জন্য রেডী হলে তারাই আমাকে বলে দেয় মা এখন তোমাকে পার্ফেক্ট লাগছে।এ যেন আমার পরম পাওয়া।এখন শুধু একটাই চাওয়া ওদের কাছ থেকে আমি যেন রত্নগর্ভা মা আওয়ার্ড পেতে পারি। আজ সারাদিন সাউন্ড বক্স গুলোর দিকে ঘরে তাকিয়ে আছি।আর সেই স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভাসছে কাল সিয়াম কত তাড়াহুড়া করে এগুলো সেটিং করে দিচ্ছিল আমার জন্য। আপনারা সকলেই দোয়া করবেন ওরা যেন সত্যিই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
মজার বিষয় হচ্ছে সিয়াম যখন ঢাকায় থাকে তখন আমি ভিডিও কলে ওর বিছানা, ওর পড়ার টেবিল, ওর ঘর কিভাবে গুছিয়ে রেখেছে সেটা দেখতাম।আর গতকাল ও আমাকে বলে গিয়েছে মা সুন্দর করে ঘর গুছিয়ে আমাকে ভিডিও কলে দেখা বে।কোথাও যেন এতোটুকু অগোছালো না থাকে।সত্যিই প্রশান্তিতে আমার বুকটা ভরে উঠেছিল।অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় বাবা।এতদিন আমি যা যা করেছি তোমার জন্য তুমি এখন তাই করার চেষ্টা করছ আমার জন্য। আজ আমাকে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমি সুখি আমি অনেক বেশি সুখী,,,,,
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
আপু আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। বাবারা সত্যি এমনি হয় মেয়েদের প্রতি তাদের আলাদা একটা ভালোবাসা থাকে। আপনার বাবার মতো আমার বাবাও ছিল। আমার বাবাও মারা গিয়েছে আজ প্রায় ১৩ বছর হয়ে গিয়েছে। আপনার বাবার জন্য দোয়া রইল বিধাতা যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। তবে এক বাবার পরিবর্তে আপনি এখন আরও দুই বাবা পেয়েছেন শুনে খুব ভালো লাগলো। সন্তান যদি সন্তানের মতো হয় তাহলে মায়ের গর্ভের শেষ নেই। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি ব্লগ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ, একদম ঠিক বলেছেন আপু। বাবারা এমনই হয়। মেয়েদের কখন কী লাগবে সেটা বাবারা অনেক ভালো বোঝে।পৃথিবীর সকল বাবাদের বুঝার তৌফিক দান করুন,,পরম করুণাময়।♥♥
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আমি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছি না ৷ আসলে প্রতিটি লাইন ছিল মুক্ত ঝিনুকের মতো ৷ আসলে বাবা হলো বিভিন্ন শখ পূরন করতে তার নানা প্রদেক্ষপ ৷ বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ৷ ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা রা ৷ যা হোক আপনার বাবার আত্মার শান্তি কামনা করি তিনি যেন সর্গবাসী হয় ৷
চিন্তা করবেন না ঈশ্বর আপনাকে দুইটি বাবা দিয়েছে ৷ তারাই তো আপনার ভবিষ্যৎ ৷ এভাবেই যেন প্রতিটি পরিবারে এমন বাবা ও মা থেকে ৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি কথা আমি আমার বাবা দের কে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি। আর সেটা আমি আমার আচরণ, আমার কাজে, কর্মে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। যদিও এই ভালোবাসা কোনদিন কখনোই পূর্ণাঙ্গ ভাবে বোঝানো সম্ভব নয়। আপনি সুন্দরভাবে উপমা দিয়ে আমার লেখাটার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছেন। এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।♥♥
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই আপু আজকালকার দিনে এমন সন্তান পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।আপনি অনেক ভাগ্যবতি যে আপনার একটা না দু দুটো বাবা।খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্ট টি পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা সত্য যে আমার দুটো বাবাই শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠতর। তাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।♥♥
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit