🌹অসাধারণ প্রেমের ছোট গল্প 🌹||~~

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু আলাইকুম/আদাব

🌹অসাধারণ প্রেমের ছোট গল্প 🌹||~~


সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সবসময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।

1000014285.jpg


বন্ধুরা আজ আবারও খুবই চমৎকার একটি ছোট গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। ঝাল মিষ্টি টকের মিশ্রণে এই গল্পটি রচনা করা হয়েছে।

আশা রাখছি মিষ্টি প্রেমের এই ছোট গল্পটি আপনাদের মন ছুয়ে যাবে।
আর মুগ্ধতা ছড়াবে হৃদয়ে। ছোটবেলায় এরকম ছোট গল্প অনেক পড়তাম। এখন আর তেমনভাবে পড়া হয়ে উঠে না। তবে সুযোগ পেলেই লিখতে বসি। খুব বেশি লম্বা গল্প আজকাল তো আর কেউ পড়তে চায় না। পাঠকদের কথা ভেবেই ছোট করে লেখা। প্রত্যাশা রাখছি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।
তো বন্ধুরা চলুন আমরা গল্পে ফিরে যাই। গল্প পড়তে পড়তে কিছু স্মৃতিচারণ করে আসি। কারণ গল্পের কিছু কিছু দিক অনেকের সাথে কমন করতে পারে।
সোনালী সেই অতীত স্মৃতিচারণ।

আজকের গল্পের শিরোনাম বৃষ্টি ভেজা রাত


♥ছোট গল্প ♥
♥বৃষ্টি ভেজা রাত ♥

রাত তখন গভীর। আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেছে, মৃদু মৃদু বৃষ্টি পড়ছে। পুরো শহর যেন নিস্তব্ধ। নীলা তার বিছানায় শুয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়াচ্ছে, একাকী মনে কত স্মৃতি ভেসে উঠছে।

নীলা আর রুদ্রের প্রেমের গল্পটা খুবই সুন্দর ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তারা একে অপরকে খুব ভালোবেসেছিল। জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত তারা একসাথে কাটিয়েছে, একে অপরের সুখ-দুঃখের সাথী হয়েছে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তারা আলাদা হয়ে যায়। রুদ্রের পরিবার তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয় উচ্চশিক্ষার জন্য, আর নীলা পড়ে থাকে বাংলাদেশে। যোগাযোগ কমে যেতে থাকে, শেষ পর্যন্ত একদিন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

নীলা অনেক চেষ্টা করেছে রুদ্রকে খুঁজে পেতে, কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ পায়নি। তার জীবনের প্রতিটা রাত, প্রতিটা দিন রুদ্রের স্মৃতিতে ভরপুর। আজও সেই অশ্রু ভেজা রাত, যেখানে বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা তার হৃদয়ের প্রতিটা ব্যথা মুছে দেয়ার চেষ্টা করছে।

বৃষ্টির শব্দে নীলার চোখ ভারী হয়ে আসে। হঠাৎ করেই দরজার কড়া নড়ার শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। এত রাতে কে আসতে পারে? নীলা অবাক হয়ে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতেই দেখল, এক অচেনা যুবক দাঁড়িয়ে আছে।

“আপনি কে?” নীলা জিজ্ঞাসা করল।

“আমি রুদ্রের বন্ধু। আমার নাম আরিফ।” যুবকটি উত্তর দিল।

নীলা অবাক হয়ে বলল, “রুদ্র কোথায়? আপনি কি তার খোঁজ জানেন?”

আরিফ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, “রুদ্র এখন আর নেই। কয়েক বছর আগে একটা দুর্ঘটনায় সে মারা গেছে। কিন্তু তার শেষ ইচ্ছা ছিল, যেন এই চিঠি আপনাকে পৌঁছে দিই।”

নীলার হাত কাঁপতে লাগল। চিঠি খুলল সে, রুদ্রের লেখা। চিঠির প্রতিটা শব্দে যেন তার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।

“প্রিয় নীলা,

যদি কখনও এই চিঠি তোমার হাতে পৌঁছায়, জানবে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। দূরে থাকা সত্ত্বেও আমার হৃদয় সবসময় তোমার জন্য কাঁদে। আমি জানি, আমাদের ভাগ্য এমনই ছিল, কিন্তু ভালোবাসা কখনও শেষ হয় না। তোমার প্রতিটা মুহূর্ত আমি আমার হৃদয়ে ধারণ করেছি। আশা করি, তুমি সুখে থাকবে। বিদায়, প্রিয়তমা।

তোমার,
রুদ্র”

নীলার চোখ থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল। বৃষ্টি আর অশ্রু মিলে যেন একটা নতুন স্রোত তৈরি করল। রুদ্র আর নেই, কিন্তু তার ভালোবাসা সবসময় নীলার হৃদয়ে জীবিত থাকবে। সেই অশ্রু ভেজা রাতে, নীলা প্রতিজ্ঞা করল, রুদ্রের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে, তার জীবনে নতুন করে আলো নিয়ে আসবে। বৃষ্টি থামার সাথে সাথে, নীলার মনে হলো রুদ্র তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, তাকে বলছে, “তুমি সুখে থাকো, নীলা।”

1000014876.jpg

dropshadow_1710776943566.png

আমি ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা।আমার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করি। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই- সাথীর শত কবিতা,অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি' অবরিত নীল সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। আমি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। এছাড়াও ,ওপার বাংলা বঙ্গবন্ধু রিসার্চ এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ভারত বাংলাদেশ। কবিগুরু স্মারক সম্মান ২০২৪ অর্জন করেছি।




New_Benner_ABB.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

গল্পটি পড়ে আসলেই খুব খারাপ লাগলো। নিলা হয়তো এই চিঠিটি না পেলেই ভালো হতো। সে ভাবতো রুদ্র বেঁচে রয়েছে। কিন্তু চিঠিটি হাতে পেয়ে তার শেষ আশাও ম্লান হয়ে গেল। এখন রুদ্রকে পাওয়ার আর কোন সুযোগই থাকলো না। রুদ্রর স্মৃতিগুলোই তার কাছে রয়ে গেল। খুব সুন্দর লিখেছেন গল্পটি আপু। ভালো লাগলো পড়ে।

কিছু কিছু সত্যি এমনি করেই এসে, হঠাৎ করে বুকের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দিয়ে যায়। মানুষ যা কল্পনায় আনতে পারে না বাস্তবে সেই ঘটনাগুলো একদম অনায়াসে ঘটে যায় কারো কারো জীবনে। গল্পটি একটু ব্যতিক্রমভাবেই সাজিয়েছি। পড়ে ভালো লেগেছে জেনে অনেক বেশি খুশি হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।।

আপু আপনার লেখা কবিতাটা অনেক সুন্দর ছিল। তবে কবিতাটা পড়ে অনেক খারাপ লেগেছে। রুদ্র এরকম ভাবে নীলাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে এটা ভাবতেই খারাপ লাগতেছে। আসলে ভালোবাসার মানুষের মৃত্যুর খবর পেলে তার থেকে বড় কষ্ট আর কিসে হতে পারে। সেই মানুষটার লেখা শেষ চিঠি শেষ পর্যন্ত নীলা পেয়েছে। নীলা আর কখনোই রুদ্রকে পাবে না। ভালোবাসার মানুষটাকে নীলা সারা জীবনের জন্যই হারিয়ে ফেলেছে। যাকে চাইলেও ফিরিয়ে আনতে পারবে না। তবে তারা দুজনে অনেক বেশি একে অপরকে ভালোবাসে। সুন্দর করে লিখেছেন দেখে ভালো লাগলো।

আপু আজকের এই কাহিনীটা একটি ছোট গল্প।
আপনি ভুল করে হয়তো কবিতা লিখে ফেলেছেন। যাইহোক সব মিলিয়ে আমার আজকের এই ছোট গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

কিছু কিছু ভালোবাসা এভাবেই নিঃশেষ হয়ে যায়, খুব খারাপ লাগলো। দুজন ভালোবাসার মানুষ আলাদা হয়ে গেল তারপর আবার রুদ্র মারা গেল সেটা এতদিন নীলা জানতো না। রুদ্রের লেখা সেই চিঠি যদি না পেতো হয়তো এখনো তার জানা হতো না রুদ্র আর নেই। যাইহোক আপু গল্পটা দারুন লিখেছেন, আমার খুব ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে আমার কাছে এরকম ছোট গল্প গুলো পড়তে ভালো লাগে। আর আপনার লেখার হাত তো মাশাল্লাহ বেশ ভালো।

এরকম প্রেম ভালোবাসার কাহিনী আমাদের সমাজে অনেক রয়েছে। সেখান থেকেই একটি কাহিনী তুলে ধরলাম। আর তাছাড়া বিরহের গল্প গুলো একটু বেশি ভালো লাগে। আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

অসাধারণ ছোটগল্প লিখলে। শেষে যে বিরহকাতর মুহূর্তের ছবি বুনলে তা বেদনা দিল। দুর্ঘটনায় মৃত্যু খবর আসার সময়টা ভীষণ কঠিন। এমন মুহূর্তে সামলানো কঠিন হয়ে যায় ভালোবাসার মানুষটার জন্য৷ চিঠিটা বিরহের অনুভূতিতে ভরা। দূরত্ব খুব কঠিন জিনিস। ভালোবেসে দূরে থাকার মত কঠিন পরিস্থিতির সাথে প্রচুর লড়াই করতে হয়৷ আর তারপর মৃত্যু খবর হলে তো জীবনই শেষ হতে বসে।

এরকম হাজারো কঠিন কঠিন বাধার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। আর এটাই হলো নিয়তি। অনেক কষ্ট বুকে ধারণ করে, ঠোঁটের কোণে হাসি রেখে অনেক মানুষ আজও বেঁচে আছে দাদা। বেঁচে থাকতে হবে।

সময়ের পরিবর্তনে, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তারা আলাদা হয়ে যায়।

কথাটা শতভাগ সত্য। যোগাযোগ কমে গেলে অনেক ভালোবাসায় ফিকে হয়ে যায়। ভালোবাসার স্বার্থকতা আসলে অপূর্ণতা তেই আপু। সৃষ্টিকর্তা হয়তো ভালোবাসা গুলো অপূর্ণ রাখতেই বেশি পছন্দ করেন। তবে শেষ পরিণতি টা মেনে নেওয়ার মতো না খুবই দুঃখজনক।

এরকম শেষ পরিণতি হাজার মানুষের জীবনে ঘটছে অবিরত। পাহাড় সমান কষ্ট বুকে বেঁধে তবুও মানুষ বেঁচে থাকে। বেঁচে থাকতে হয় স্মৃতিটুকু আকড়ে।

প্রেমের গল্পটি পড়ে নীলার জন্য খারাপ লাগলো আপু।রুদ্রর বেঁচে না থাকার কথাটি জেনে গেল জর জন্য শেষ আশা টুকুও এর থাকলো না।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

কিছু কিছু বাস্তবতা এতটাই নিষ্ঠুর যা এই গল্পের সাথে তবুও মিলে যায়।