পরিবারসহ সাজেক ভ্যালি ভ্রমন।। ২০ জানুয়ারি ২০২৩

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আমার এক মেয়ে এবং একটি পূত্র সন্তান রয়েছে। তাদের নাম যথাক্রমে তাবিয়া তারান্নুম রুশদা এবং আব্দুল্লাহিল আমান। তাদের বয়স যথাক্রমে ৮ এবং ৩ বছর। আমার মেয়ে ১ম শ্রেণিতে পড়ে এবং ছেলেটা হাটি হাটি পা পা করে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে দৌড়ায়।

আমি পেশায় একজন চাকুরীজীবী এবং আমার কর্মস্থল খাগড়াছড়ি। আমার কর্মব্যস্ততার জন্য আমি আমার পরিবারকে কিছুটা বিনোদনের জন্য ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার সময় বের করা খুবই কষ্টসাধ্য।

আমি একদিন আমার পরিবারকে নিয়ে বাহিরে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। কিছু দুর যেতেই আমার অফিস হতে খুবই জরুরী একটা ফোন এসেছে। ঐদিন সারকারী ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও আমার আর ঘোরা হলো না। আমার স্ত্রীর কিছুটা মন খারাপ হলেও নিজেকে শামলিয়ে নিয়েছে কিন্তু আমার সন্তানরা বুঝতে নারাজ। তারপরও আমার কর্মটাই আগে ভেবে ঐ দিন আর ঘুরতে গেলাম না।

খাগড়াছড়িতে থাকাকালীন শুধুমাত্র আমার মেয়েটাই ছিল। ছেলে তখন পৃথিবীর মুখ দেখিনি। আমার মা-বাবা সুদুর খুলনা হতে খাগড়াছড়িতে আসে তার ছেলের পরিবারের সাথে সাক্ষাত করতে এবং সাজেক ভ্যালি ভ্রমন করতে। আমার মেয়ে অনেক খুশি হয়েছে যে, তার দাদা-দাদীর সাথে সাজেক এর মতো যায়গায় ঘুরতে যাবে। যাইহোক, আমি অনেক কষ্টে একটা দিন বের করলাম এবং আমার পরিবারকে সাজেক যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বললাম।

পরের দিন খাগড়াছড়ি থেকে একটা সিএনজি রিজার্ভ করে সোজা সাজেক। এরপর ইতিহাস----- আমার বাবা বয়বৃদ্ধ একজন মানুষ কিন্তু তার ছিল প্রচুর মনোবল। আমার বাবা ছোট বেলায় এতিম হয়ে গিয়েছে। তিনি প্রচুর পরিশ্রমী। তার বয়স ৮০+ হলেও তিনি সাজেক থেকে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দূরে অবস্থিত কংলাক পাহাড়ে উঠতে সখ্যম হয়েছে। সাথে আমার মা, আমার সহধর্মিনী এবং পিচ্ছি মেয়েটাসহ আমরা সবাই কংলাক পাহাড়ে উঠলাম।

52585341_297605170930035_6774985574257262592_n.jpg

52736376_625337454580064_1284080953899089920_n.jpg

52590293_1070326309819510_8590655566685143040_n.jpg

52740055_339283746928465_3887050058348101632_n.jpg

মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ে আমরা অবস্থান করছিলাম। কি সুন্দর মনোমুদ্ধকর পরিবেশ। ভাবছিলাম, সাজেকেই যদি আমার স্থায়ী বাসিন্দা হতো তাহলে ভালোই হতো। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০০ ফুট উচ্চতা সাজেক। মহান আল্লাহ তায়ালা সাজেক ভ্যালিকে যেন এক বিশাল প্রাকৃতিক দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। প্রকৃতি এখানে সকাল-বিকাল রং বদলায়। চারপাশে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো বিস্তীর্ণ পাহাড় সারি, আর তুলোর মতো মেঘ, এরই মধ্যে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে রয়েছে নৈস্বর্গিক সাজেক ভ্যালি। যেখানে আমার পরিবারকে নিয়ে কিছুটা সময় ব্যয় করতে পেরে খুব আনন্দ অনুভব করেছি। সাজেকে ভ্রমন শেষে বাড়ীতে এসে সাভাবিক জীবন শুরু করলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পরিবার সম্পর্কে জানতে পেরে ভাল লেগেছে। আমরা ছেলেরা বিশেষ করে কর্মরত ছেলেরা একদিন ঘুরার জন্য ম্যানেজ করা খুব ডিফিকাল্ট। যাই হোক আপনার আব্বা আম্মা আসার পর একদিন ম্যানেজ করে সাজেক ঘুরতে গিয়েছেন ভাল হয়েছে এতে আপনার স্ত্রী বাচ্চাও খুশি হয়ে গেল। আপনার আব্বা ৮০ বছর বয়সেও কংলাক পাহাড়ে উঠেছে এটা বিশাল বেপার। ধন্যবাদ ভাইয়া।

ধন্যবাদ ভাই