মানুষের হাট,৮শে'শ্রাবন ১৪২৮বঙাব্দ

in hive-129948 •  3 years ago 

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা কেমন আছেন, নিশ্চয়ই ভালো আছেন আমার ও এটাই প্রার্থনা যাতে সবাই ভাল ও সুস্থ থাকেন।
আপনাদের সাথে অন্য রকম ব্লগ শেয়ার করবো,আশা রাখি, একটু হলেও হ্নদয়ে নাড়া দিবে,,,,
আজ একটু দেরিতে ঘুম ভাঙলো, বাসায় সামনে গাছের ডালে বসে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুমিয়ে থাকার উপায় যেন পালিয়ে গেছে। দ্রতু নাস্তা করে বাজারে যাবো,আম্মুর সব সদাই বুঝে রওনা দিলাম বাজারের উদ্দেশ্য,,রাস্তায় অটো না পেয়ে রিকশায় উটে পরলাম,,
IMG_20210907_055740.jpg
বাজারে গিয়ে রিকশা থামলো কিন্তু মানুষের ভির ঠেলে সামনে এগুতে ই কষ্ট হচ্ছে। তো এতো মানুষের ভিড়ে একটি মানুষ কে খুব আনমরা ভাবে বসে আছে দেখতে পাচ্ছি। কোথায় যেন একটু কষ্ট চেপে মালিকের আশায় বসে আছে, যদি কেহ আমায় আজ কাজে নেয় তাহলে মেয়ে টির জন্য একটি জামা কিনবো ঐ টাকা দিয়ে পরে কথা মারফত বিস্তারিত জানতে পারি,, আসতেছি মুল প্রসংগে,,,আমাদের এলাকায় বাজারে পাশে ই মানুষের হাট বসে প্রতিদিন,এই হাটে মানুষ বেচা কিনা হয় একদিনের জন্য, যাদের বাড়ির কাজের জন্য বা অন্য কোন কাজের জন্য লোকবল দরকার পরে তারা এই হাট থেকে মানুষ কিনে নিয়ে যায়, প্রতিদিনের মতো আজ গফুর এখানে এসে বসেছিল কাজের আসায়,কিন্তু কোন ক্রেতা না আসায় চোখ মুখে ভাজ পরে গেছে, হতাশা নেমে আসতেছে, আমি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আপনি এভাবে বসে আছেন কেন,প্রশ্ন করতেই বলে উঠলেন আজ কেহ আমাকে কাজের জন্য নিতে আসতেছেনা,কেহ জিজ্ঞেস ও করছেনা কাজের বিষয়, আমার পঙ্গু ছেলে ফেলে নিয়ে কোথায় যাবো,কি খাবো,সুদের টাকা কিভাবে দিবো,আমি দিন আনি দিন খাই এর মাঝে কিছু টাকা জমিয়ে পাওনা টাকা জমিয়ে সুদ দেই, আজ তো কোন কাজ পাচ্ছি না কি করবো বুঝতেছিনা,গফুরের চোখ মুখে যেন অন্ধকার নেমে আসছে,আমি বললাম সব খুলে বলুন,,গফুর বললো,আমার দুই মেয়ে আর এক ছেলে আর আমারা দুজন,এই নিয়ে আমাদের সংসার, তার মধ্যে একটি মেয়ে প্রবন্ধী ও অন্ধ আর ছেলেটা পুরোই বিকলাঙ্গ, বাচ্চার মা অসুস্থ তার ঔষধ লাগে প্রতি দিন আর অন্য টি মেজো পড়াশোনা করে রোজ ২মাইল হেটে গিয়ে টিউশনি করে মাস শেষে ৭০০পেত কিন্তু এখন তো সব বন্ধ তার মধ্যে আবার আমার মাঝে মাঝে কাজ যদি না পাই কি করি বলেন তো?এলাকার কিছু মানুষ সাহায্য সহযোগিতা করে তা দিয়ে তো চলতে পারিনা,তার মাঝেই আবার আমাদের নিচু এলাকায় বন্যার পানি উঠছে, সব মিলিয়ে দিশেহারা। মেজো মেয়ে টি কত কষ্ট করে দিনে খেতে বদলা যায় এলাকায় আর বিকেলে ঐ খান থেকেই টিউশনি করাতে চলে যায়,কখনো পোশাকে না খেয়ে পায়ে হেঁটে চলে যায় আবার কখনো বদলার টাকা পেলে বাজার করে নিয়ে আসে,কখনো বাজার আসলে কখনো কিছু বাদ পরে যায়, কখনো কখনো মেয়ে টা না খেয়ে ও ঘুমিয়ে যায়। খুব কষ্ট হয় এসব দেখে আর পারছিনা,
IMG_20210907_055723_1.jpg

মেয়ে টার দুটো জামা, একটি ছিরা তালি দিয়ে পরে আর একটা জামা একটু ভালো, সেটাই পরে টিউশনি তে যায় সাথে নিয়ে যায় কজা শেষে বদলে নেয়,,,
আমাদের জীবন টা কি এভাবে যাইবো?এতো কষ্ট আর পারছিনা,কখনো কখনো খেয়ে না খেয়ে ওদের দিন কাটে,আমি এখান থেকে টাকা পাঠালে ওরা খায় আর পাঠালে আশেপাশে থেকে সাহায্য নিয়ে চলে, এভাবেই চলে ওদের জীবন।

IMG_20210907_055906_1.jpg

বড় মেয়ে টা অন্ধো ও বিকলংঙ তাকে নিয়ে আছি আরো টেনশনে, তার পিছনে ই তার মাকে সারাদিন লেগে থাকতে হয় এভাবেই বলছিলো গফুর তার কষ্টের কথা,
আসলে গরীবের যত কষ্ট, আল্লাহ গরীব কে কেন এতো কষ্ট দেয়,আর যে পারছিনা,,,তাই ভাবতেছিলাম যদি আজ কাজ পেতাম ত হলে সে টাকা দিয়ে মেয়ে টা কে একটি জামা কিনে দিতাম,কত মানুষের কাজ হচ্ছে, নিয়ে যাচ্ছে সাথে করে আর আমার ভাগ্যে কি হলো আজ,,,এভাবে শুনতেছিলাম উনার কথা গুলো, শেষ কিছু টাকা উনাকে হাতে দিয়ে আমি বাজারের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম, সাথে ই বাজার, আমি আমার সব সদাই পাতি কিনে রিকশা করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম আর ভাবতে ভাবতে বাড়ি পৌঁছে গেলাম, এর নাম কি জীবন? মানুষের জীবনে কত কষ্ট, কত সমস্যা তবুও বাঁচার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, আর আমরা একটু সমস্যায় আমরা হতাশ হয়ে পরি আর গফুরের মতো মানুষ গুলো কত কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছে,তবুও এগিয়ে যাচ্ছে বাঁচার তাগিদে,,,
যারা একটু সময় নিয়ে আমার লেখা টি পরলেন, একটু সময় দিলেন, তাদের প্রতি রইলো অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা,,,,

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার লেখা ঘটনাটি আমি পড়েছি।।খুবই হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা। এই পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষের জীবন সংগ্রাম তাদের কাছে অসম্ভব হয়ে পড়ে।

তার পিছনে ই তার মাকে সারাদিন লেগে থাকতে হয় এভাবেই বলছিলো গফুর তার কষ্টের কথা,
আসলে গরীবের যত কষ্ট, আল্লাহ গরীব কে কেন এতো কষ্ট দেয়

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন পরীক্ষার মাধ্যমে টিকে থাকার জন্য। আপনার লেখা গুলো অগোছালো ছিল। মার্কডাউন এর সঠিকভাবে ব্যবহার করা উচিৎ ছিল। ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর গল্প শেয়ার করার জন্য।

আসলে একটু তারাহুরো ছিল ভাই, আর মার্কডাউন আর what3word ব্যবহার টা সঠিক ভাবে পারতেছিনা,ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ভাই যদি আপনাদের সহযোগিতা একটু পাই

খুব আবেগীয় একটি পোস্ট ছিল আমার কাছে।এরকম কোন হাট দেখিনি কখনো।ভালো লাগছে আপনার পোস্টটি।

কেহ আমায় আজ কাজে নেয় তাহলে মেয়ে টির জন্য একটি জামা কিনবো

কথাটি যেন আমার হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে😢।

হে ভাই কথাগুলো যখন শুনতেছিলাম তখন বুক টা কেমন জানি করতেছিল

মানুষের হাট বলতে, যেখানে গরীব মানুষেরা একটি কাজ পাওয়ার জন্য এক হয় একটি নির্দিষ্ঠ জায়গায় এবং দর কষাকষি করে মনিবের সাথে কাজে যায়, এ রকম জায়গায় বহু আছে বাংলাদেশর আনাচে-কানাচেতে,,,

আপনার পোষ্টা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বাংলাদেশ এখন ও অনেক মানুস আছে যারা অনেক সংগ্রাম করে তাদের জিবিকা নির্বাহ করে থাকে

আমার পঙ্গু ছেলে ফেলে নিয়ে কোথায় যাবো,কি খাবো,সুদের টাকা কিভাবে দিবো,আমি দিন আনি দিন খাই এর মাঝে কিছু টাকা জমিয়ে পাওনা টাকা জমিয়ে সুদ দেই, আজ তো কোন কাজ পাচ্ছি না কি করবো বুঝতেছিনা

এটা পরে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। আমাদের উচিত তাদের সকলকে সহায়তক করা তাদের পাশে দাঁড়ানো।

জি ভাই, এটাই হলো মানবতা,এটাই হলো মানুষের প্রতি ভালবাসা,, ধন্যবাদ ভাই

গফুর মিয়ার জীবন যুদ্ধের গল্প সুন্দর ভাবে লিখেছেন। পৃথিবীতে বাবারা হয়তো এমনই হয়, পরিবারের মানুষকে দু'মুঠো খাওয়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলে।

মেজো মেয়ে টি কত কষ্ট করে দিনে খেতে বদলা যায় এলাকায় আর বিকেলে ঐ খান থেকেই টিউশনি করাতে চলে যায়,কখনো পোশাকে না খেয়ে পায়ে হেঁটে চলে যায় আবার কখনো বদলার টাকা পেলে বাজার করে নিয়ে আসে,

লেখাগুলো আপনি অবশ্যই শুদ্ধ ভাষায় লিখবেন, যাতে মানুষের বুঝতে কষ্ট না হয়। আর আপনার লেখাগুলো ছিল অগোছালো। আর হা অবশ্যই লেখাগুলো ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ আকারে লেখার চেষ্টা করবেন ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ ভাই, আমাকে আমার ভুলগুলি ধরিয়ে দেবার জন্য আর এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেবার জন্য। ইনশাআল্লাহ এজদিন সব বাঁধা কে জয় করে একজন ভালো ব্লগার তৈরি হবো,,,দোয়া রইলো আপনার জন্য,,

এই ধরনের লোক আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদের দুঃখ-দুর্দশার সীমা নেই। সরকার এবং সমাজের বিত্তবান লোকেরা যদি একটু এগিয়ে আসে। তাহলে এদের কষ্ট অনেক কমে যাবে। আর এনজিও নামধারী এই উচ্চ সুদী প্রতিষ্ঠানগুলি দেশের গরীব মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। আপনার লেখাটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনি চেষ্টা করুন দ্রুত মারকডাউন এর ব্যবহার শিখে নিতে। তাতে আপনার পোষ্টের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে। আপনার রিওয়ার্ড পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে। যেহেতু ছবিগুলি আপনার নিজের তোলা চেষ্টা করবেন what3words লোকেশন কোড দিতে। ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ ভাই, আমাকে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ এবং বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। আপনাদের মতো মানুষ আছে বলেই 'আমার বাংলা ব্লগ 'একদিন ঠিক ই শীর্ষ স্থানে জায়গা করে নিবে,ইনশাআল্লাহ।

আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে, সুন্দর হয়েছে আরো আপনার বর্ণনাগুলো। যাইহোক আপনার জন্য রইল প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ধন্যবাদ ভাইয়া।

ধন্যবাদ আপনা কে, আমার ব্লগ টি পরে একটু সময় ব্যায় করার জন্য,,, আর আমাকে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য, আরো সুন্দর ব্লগ তৈরি করার জন্য,, আশা রাখি আগামী তে ও প্রতিটা ব্লগ সাপোর্ট ও সাজেশন ও উৎসাহ দিয়ে পাশে থাকবেন।

আপনার পোস্টে দাড়ি(।), কমার(,) সঠিক ব্যবহার হয় নাই। এই বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখবেন।

ইনশাআল্লাহ, ঠিক হয়ে যাবে ভাই।