আমার পরিবার ও আমার বাবার সমস্যার জন্য আপনাদের সাহায্য আমার খুবেই প্রয়োজন,,,🙏🙏🙏🙏🙏🙏

in hive-129948 •  2 years ago 

আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের দোয়া ও আল্লাহ তায়ালার রহমতে আমিও ভালো আছি।

জীবনে কখনো ভাবিনি এই রকম একটা পরিস্থিতিতে এসে পড়বো। সময়টা ছিল ১৫ / ০৮/ ২২ ইং। ঘটনাটি হওয়ার কয়েকদিন আগে আমি রংপুরে চলে গেছিলাম। কারণ ওইখানে আমি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখার জন্য গেছিলাম। আমার সাথে ছিল আমার খালাতো ভাই পারভেজ। দুজনে আমরা একই রুমে থেকে কাজ শিখতেছি। কিন্তু সেদিন সকাল বেলা সে আমাকে ঘুম থেকে জাগার পর বলতেছে খালুকে হাসপাতাল নিয়ে গেছে। আমি তার কথা শুনে কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ি। এরপর সে বলে খাওয়া-দাওয়া করে আমাদের তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে। এদিকে ঠিক নয়টার দিকে বাবা কাজে গিয়ে সেখানেই পড়ে যায়। যার বাসায় কাজ করতে গেছিল তার বাসায় বাবাকে তার মাথায় পানি ঢালা এবং হাত পায়ে পরিমাণমতো তেল মাখানো হয়েছিল। তখন আমি রংপুরে থাকার কারণে বাবার সাথে সেদিন হসপিটালে যেতে পারিনি। কিন্তু আমার চাচাতো ভাই সুমন সে আমার বাবাকে হসপিটালে নিয়ে গেছিল। সেও আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড মেম্বার। তার আইডি @kabir21

IMG_20220909_091116.jpg
IMG_20220909_091108.jpg

সেই দিন সে বাবাকে ল্যাম্প হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে বাবাকে কিছু ইনজেকশন দিয়েছিল। সেই ইনজেকশনের কারণে বাবা কিছুটা সুস্থ হয়েছিল। তখন তারা বলেছিল আপনার রোগীকে তাড়াতাড়ি একটি সিটিস্ক্যান করাতে হবে। সিটি স্ক্যান না হলে আমরা কোন ধরনের ঔষধ দিতে পারব না। তারপর তাদের হাতে কোন টাকা না থাকার কারণে তারা বাবাকে বাসায় নিয়ে আসে। আর এদিকে আমি ঠিক দুইটার দিকে বাসায় এসে পৌঁছায়। বাসায় আসার পর দেখি যত সময় যাইতেছে বাবার অবস্থা ততই খুবই খারাপ হইতেছে। তাই আমি রাত্রেবেলা কিছু টাকা ধার করে নিয়ে আসলাম।
পরদিন সকালবেলা সূর্যের আলো ফুটতে না ফুটে বাবাকে নিয়ে গেলাম দিনাজপুর পপুলার এ। সেখানে গিয়ে প্রথম অবস্থায় আমরা সিটি স্ক্যান করে নিলাম। সিটি স্ক্যান করার পর সেখানে আমাদের শুধু স্ক্যান টা দিল। সেটা দিয়ে বলল রিপোর্ট আসতে প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা সময় লাগবে। আপাতর মনে এই রিপোর্ট দিয়ে আপনারা রোগীর চিকিৎসা করতে পারবেন। সেই অনুযায়ী আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম

IMG_20220909_144234.jpg
IMG_20220909_144134.jpg

পার্বতীপুর ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানে আসার পর একটি ডাক্তারকে দেখালাম সেই ডক্টর এই স্ক্যান দেখে কোন প্রকার ঔষধ দিতে চাইলো না। তার সাথে আমরা আরো কিছু রিপোর্ট করে নিলাম। এরপর আমার সাথে আমার দুলাভাই ছিল। সে আবার দিনাজপুর সেই রিপোর্ট নেওয়ার জন্য চলে গেল আর আমি এদিকে বাবাকে নিয়ে অন্য রিপোর্ট গুলো নেওয়ার জন্য সেখানে অপেক্ষা করলাম।

IMG_20220909_145230.jpg
IMG_20220909_145609.jpg
IMG_20220909_145550.jpg
IMG_20220909_145537.jpg

এরপর অবশেষে রাত আটটার দিকে আমার সেই ভাইটা রিপোর্ট নিয়ে আসলো। আর এইদিকে সব রিপোর্ট হয়ে গেল। সব রিপোর্ট দেখার পর ডাক্তার বলল আপনার বাবার ডানদিকে কিছু পরিমাণ রক্ত জমে আছে। তবু আরো কিছু কথা বলল যে আপনাদের ভাগ্য অনেক ভালো কারণ ব্রেন স্টক রোগীর যে কোন কিছু একটা হয়ে যেতে পারে কিন্তু আপনাদের রোগীর কোন কিছুই হয়নি তবু আপনাদের রোগী বিপদমুক্ত নয়। ডাক্তারের সেই কথাগুলো শুনে কিছু ওষুধ নেয়ার পরে আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম। সেখান থেকে আসার পর অনেক চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমাদের পরিবার কেমন করে চলবে আমার বাবাকে আমি কি খাওয়াবো। তখনই মা পাশে থেকে এসে বলল বাসায় কিছু টাকা আছে। আর সে সময় আমার অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আমি কিছু টাকা জমায় রাখছিলাম। সেইসব টাকা দিয়ে বাবাকে ডাক্তার দেখা খাওয়া-দাওয়া সব কিছুই করালাম। এই কয়েকদিন এ আগের টাকাগুলো দিয়ে ঠিকঠাক চালালাম। কিন্তু সব টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন আমি আর আমার পরিবার ও আমার বাবার ঔষধ ডাক্তার কোনোকিছু এ ঠিকঠাক ভাবে চলাতে পারতেছি না। তাছাড়া ১৫ দিন পর পর ডক্টরের কাছে গেলে ডাক্তারেরা নতুন করে রিপোর্ট ছাড়া বাবাকে কোন প্রকার ওষুধ দেয় না। এই কয়েকদিনের মধ্যে তিনবার ডক্টরের কাছে নিয়ে গেলাম তবুও তিনবারে সব সময়

`IMG_20220909_145837.jpg
IMG_20220909_145830.jpg
IMG_20220909_145823.jpg

রক্ত পরীক্ষা পেশাব পরীক্ষা তার সাথে আরো কিছু পরীক্ষা করার পরে সেই রিপোর্টটিকে ওষুধ দেয়। তবে সেগুলো দেখার পর ডাক্তার বলে আপনার বাবাকে কোন প্রকার পেশার,টেনশন এবং কোন কাজকর্ম করতে করতে দেওয়া যাবে না ।

IMG_20220909_150129.jpg

এই সময় এ সবকিছু চিন্তা ভাবনা করার পর আমি অনেক টেনশনে পড়ে গেলাম। আমার নিজের খাওয়া-দাওয়া ঘুম সবকিছু নিমিষে শেষ হয়ে গেল । কিন্তু অনেক চিন্তা ভাবনা করে হঠাৎ করে মনে পড়ল আমার বাংলা ব্লগ এর কথা। এখানেই শুধু আমরা ইনকামের জন্যই কাজ করি না এখানে যেমন আমাদের একটি পরিবার আছে তেমনি আমরা একজন আর একজনের সাহায্য দাঁড়িয়ে যাই । তেমনি আমিও আজকে আপনাদের কাছে আমার পরিবারের কিছু সাহায্যের জন্য আবেদন করলাম।
আমাদের পরিবারকে যদি আমাদের এই বাংলার লোক কমিটি থেকে দুই মাসের খরচ দিত তাহলে আমি নিজের একটা ব্যবস্থা করে পরিবারে হাল ধরতে পারতাম। আমার পরিবারে প্রায় মাসিক খরচ $১০০ এর মত হয়ে থাকে। কিন্তু এখন বাবার পিছনে প্রায় $৫০ এর মতো লাগে তাহলে দুই মাসে আমার পরিবারের আমার বাবার সমস্যা প্লাস আমার পরিবারের সকল খরচ মিলে প্রায় $৩০০ এর মত হবে।

এই অবস্থায় আমি যে কি বলবো বলার মত সেই ভাষাটাও খুঁজে পাই না। পরিবারের সবকিছুর মূল হলো একজন পিতা। আর এই পিতার যদি কোন কিছু হয় তাহলে পরিবারের মেরুদন্ড ভেঙে যায়। ঠিক আমার পরিবারের অবস্থা এখন সেই রকম ।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏

এরকম পরিস্থিতিতে কোনরকম ছবি বা ভিডিও করতে পারিনি। তবে আমার কাছে বাবা রিপোর্ট গুলো ছাড়া আর কোন প্রকার ডকুমেন্ট নেই।
😢😢😢😢😢😢😢😢😢😢😢😢

সবার সাহায্যটা আমার খুবেই দরকার,,🙏🙏🙏🙏
@shahin05

সবার সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

The more you read, the more things you’ll know. 🙏🏽🕯🤸🏽‍♂️🎊🤓📝

আশা করি আপনার বাবা খুব জলদি সুস্থ হয়ে উঠবে ভাইয়া।আপনি অনেক ধৈর্যশীল।এভাবেই শক্ত থাকুন একটা ব্যবস্থা হয়েই যাবে।ভেঙ্গে পড়বেন না।

কি করবো ভাই বলেন,,
পরিবারের তো মেরুদণ্ড টায় পড়ে গেছে।
তাই নিজেকে আর সামলাতে পারতেছি না

কোন একটি উপায় হবেই ভাই।আপনি টিকেট কেটে কথা বলেন এডমিন মহোদয় দের সাথে।আমি আপনার সিচুয়েশন টা ফিল করতে পারছি।

পরিবারের প্রধান হচ্ছে বাবা। বাবা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে পুরো পরিবার একেবারে মেরুদণ্ডহীন হয়ে যায়। ভাইয়া আপনার পরিবারের জন্যই খারাপ লাগলো। আপনার বাবা যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন এই কামনা করি। আসলে আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষদের অনেক কিছুই ভেবে চিন্তে চলতে হয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও হিসাব করে করতে হয়। আপনি যেন আপনার বাবার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেন এই দোয়া করি।

দোয়া করিয়েন আপু

  ·  2 years ago (edited)

দেখুন আপনি টিকিটে যোগাযোগ করুন। তাছাড়াও চ্যারিটিতে আবেদনের পোস্টে শতভাগ পার্সেন্টেজের বেনিফিট চ্যারিটিতে দিতে হয় । তারপরেও বলবো টিকিটে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ ।

বিপদের সময় ধৈর্য্যই সবচেয়ে বড় সম্বল। আপনার বিষয়টি পড়ে খুব কষ্ট পেলাম।আসলে পিতা সবসময় সন্তানকে আগলে রাখে।আর সেই পিতার যখন কিছু হয়ে যায়। তখন সেই কষ্ট আর ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।আপনি ধৈর্য্য দরুন। ধৈর্য্যের ফল কখনও বৃথা যায় না।ইনশাআল্লাহ আমিও আমার সাধ্যমতো কিছু আপনাকে সাহায্য করবো।আশাকরি, মানুষ মানুষের জন্য, সেই আলোকে আপনার পাশে আরও অনেকে এগিয়ে আসবে।সবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সহায়তা হয়তোবা একটা মানুষের সুখের বন্যা বয়ে দিতে পারে।

হুম ভাইয়া আপনি ঠিক এ বলেছেন।
মানুষ মানুষের জন্য,,
একজন মানুষ অন্য আর এক জনের বিপদে এগিয়ে যাওয়াটা অনেক জরুরি। কারণ আপনিও কোনো একদিন বিপদে পড়তে পারেন।

বিষয়টি জেনে খুবই খারাপ লাগল ভাই। আসলেই বিপদ কখনো বলে আসেনা। ধৈর্য ধারণ করুন ইনশাআল্লাহ সৃষ্টিকর্তা পথ দেখাবেন।

ইনশাআল্লাহ ভাইয়া,,