ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে লেভেল টু এর ক্লাসগুলো করেছিলাম। লেভেল ওয়ান থেকে পরীক্ষা দিয়ে সফলভাবে পাশ করে লেভেল টু এর ক্লাসগুলো করেছিলাম। দুইটা ক্লাস থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলাম। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু বিষয় অস্পষ্ট ছিল। এই বিষয়গুলো @abb-school এর লেভেল টু ক্লাস এর লেকচার শিট পড়াশোনা করার পর সম্পূর্ণ বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি এবং সেই বিষয়ের উপর আজকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য লিখতে বসেছি।
লেভেল ২ হতে যা শিখতে পেরেছি:
প্রথমত সিকিউরিটি (security key) কি সম্বন্ধে ধারণা পেয়েছি। সিকিউরিটি বলতো সুরক্ষা বা নিরাপত্তা দেওয়াকে বুঝায়।
স্টিম একাউন্টের সিকিউরিটি কিগুলো কে খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা খুবই দরকারী। কারণ সিকিউরিটি কি একবার হারিয়ে গেলেন বা কারো কাছে গেলে একাউন্টে হারিয়ে যেতে পারে যা খুবই দুঃখজনক।
মূলত কি গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ঃ
১. পাবলিক কি(public key)
২. প্রাইভেট কি(private key)
------------পাবলিক কি--------------
Image Source
পাবলিকে সবার জন্য উন্মুক্ত এজন্য সংরক্ষণ করার দরকার হয় না।
--------------প্রাইভেট কি-------------
প্রাইভেট কি যাদের স্টিমিট অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জন্য অবশ্যই এবং অবশ্যই দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইভেট সিকিউরিটি কি গুলোর নামঃ
১. পোস্টিং কি(Posting key)
২. অ্যাক্টিভ কি(Active key)
৩.মেমো কি(Memo key)
৪.ওনার কি(owner key)
-----------Posting Key---------
www.steemit.com ওয়েবসাইটের ঢুকতে হলে অর্থাৎ একাউন্টে লগইন করতে হলে যে কি ব্যবহার করতে হয় তাকে পোস্টিং কি বলা হয়। এর মাধ্যমে যে সকল কাজ করা যায়:
--------পোস্টিং কি এর কাজ---------
১. যেকোনো কমিউনিটিতে বা গ্রুপে পোস্ট কমেন্ট করা যায় এবং পরবর্তীতে কোন ভুল সংশোধন করার জন্য সহজেই এডিট করা যায়।
২. সহজভাবে আপ ভোট এবং ডাউনভোট দেওয়া যায়
৩. ওয়েবসাইটে কমিউনিটিতে যেকোন পোষ্ট ভাল লাগলে বা গুরুত্বপূর্ণ হলে রী স্টিম করা যায় ফলে পরবর্তীতে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।
৪. বিভিন্ন ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করলে বা নিজের কাছে সুবিধাজনক মনে না হলে সেই একাউন্ট মিউট করে রাখা যায়।
৫. কাউকে ফলো বা আনফলো করতে হলে পোস্ট কি ব্যবহার করতেই হবে।
-------অ্যাক্টিভ কি(Activekey)-----
স্টিমিট ওয়েবসাইটে ওয়ালেট সংক্রান্ত যত কাজ করতে হয় তার জন্য যে কি দরকার হয় তাকে অ্যাক্টিভ কি বলা হয়।
ওয়ালেট সংক্রান্ত কাজগুলো হলোঃ
--------এক্টিভ কি এর কাজ---------
১. স্টিমিট ওয়েবসাইটে এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে স্টিম ট্রান্সফারের কাজ করতে হলে অ্যাক্টিভ কি দরকার হয়।
২. একাউন্টে স্টিম কে পাওয়ার আপ বা পাওয়ার ডাউন করতে হলে অ্যাক্টিভ কি অবশ্যই দরকার হয়।
৩. SBD to STEEM or STEEM TO SBD কনভার্শন করার ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভ কি অবশ্যই লাগবে।
৪. যেকোনো ধরনের এক্সচেঞ্জে কেনা বা বেচার ক্ষেত্রে যে অর্ডার দেয়া হয় সে ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভ কি দরকার হয়।
৫. প্রোফাইলের তথ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও এই কি ব্যবহার করতে হয়।
---------------ওনার কি--------------
ওনার কি বলতে একাউন্টের নিজস্ব মালিকানা কে বোঝায়। এই ওনার কি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী কারণ এই টির মাধ্যমে অন্যান্য যত কি রয়েছে সব গুলো কি রিসেট বা নতুন করে তৈরি করা যায়। সুতরাং এই ওনার কি কে সম্ভব হলে অফলাইনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রাখা উচিত।
-----------ওনার কি এর কাজ--------
১. অ্যাক্টিভ কি এবং পোস্টটিকে সহজেই রিসেট করা যাবে।
২. একাউন্ট এ কোন সমস্যা হলে সহজেই রিকভারি করা যাবে এই কি র মাধ্যমে।
৩. ভোটিং অধিকার কে প্রত্যাখ্যান করা যাবে।
---------------মেমো কি-------------
যদি কোন প্রাইভেট দরকারি মেসেজ পাঠাতে দরকার হয় এবং সেটা কি একটি সংকেতের মাধ্যমে পাঠানো হয় যা পরবর্তীতে দেখলে বোঝা যাবে তাহলে মেমো কি এর দরকার হবে।
-----মেমো কি এর কাজ---------
১. এনক্রিপটেড করা যেকোনো ধরনের মেসেজ পাঠাতে বা কোন মেসেজ দেখতে এই কি দরকার হয়।
-----মাস্টার পাসওয়ার্ড এর কাজ -----
মাস্টার কি খুবই দরকারী কি কারণ শুধুমাত্র স্টিমিট একাউন্ট খোলার সময় পাওয়া যায় অথবা সেই সময় নিজে জেনারেট করা যায়।
মাস্টার পাসওয়ার্ড কাউকে দেওয়া যাবে না কারন বাকি যেসব কি রয়েছে সবগুলো কি তৈরি হয়েছে মাস্টার পাসওয়ার্ড এর উপর ভিত্তি করে।
-----কি এবং পাসওয়ার্ড এর মধ্যে পার্থক্য:---------
প্রাইভেট কি এবং পোস্টিং কি এগুলো হলো বিভিন্ন লেয়ারের চাবি
মাস্টার পাসওয়ার্ড হল পাসওয়ার্ড যার মাধ্যমে সবগুলো লেয়ারকে সহজেই উদ্ধার করা যাবে।
মাস্টার পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের উপায়:
১. সবচেয়ে ভালো হবে প্রিন্ট আউট করে নিজের বাড়ির সুরক্ষিত স্থানে রাখা
২. এছাড়াও গুগোল ড্রাইভ সংরক্ষণ
করা যেতে পারে
৩. নিজস্ব ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে নোটপ্যাডে সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে
৪. এক কথায় যেকোনো মূল্যবান বস্তু আমরা যেভাবে সংরক্ষণ করে থাকি সেইভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যাতে হারিয়ে না যায় বা কেউ বুঝতে না পারে।
------------------------------------ পাওয়ার আপ---------------
পাওয়ার আপ বলতে বোঝানো হয় নিজের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করা। স্টিমিট ওয়েবসাইটের ভাষায় লিকুইড স্টিমকে পাওয়ার আপ করে স্টিম পাওয়ার ট্রান্সফার করা।
কারণ ওয়ালেটে স্টিম এর পরিমাণ বেশি থাকলে রিওয়ার্ড ভ্যালু বেশি পাওয়া যায়।
-----যাদের ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্য:----
যাদের বেশি পরিমাণে অর্থ রয়েছে কিন্তু কোন কাজ করতে পারছে না তারা এই মার্কেট থেকে স্টিম কিনে পাওয়ার আপ করতে পারেন এবং ভালো পরিমাণে মুনাফা অর্জন করতে পারেন।
--------------------পাওয়ার আপ করার উদ্দেশ্য-------------------------
স্টিমিট ওয়েবসাইটে লেখালেখি করার মাধ্যমে একাউন্টে ভালো রিওয়ার্ড আসে এবং সেখান থেকে স্টিম পাওয়া যায়। অর্জিত স্টিমের কিছু অংশ আস্তে আস্তে পাওয়ার আপ করে রাখলে পরবর্তীতে একটা সময় গিয়ে বেশি পাওয়ার তৈরি হয়ে যায় এবং ক্ষমতা বেড়ে যায় ।ফলশ্রুতিতে কাছের কেউ থাকলে তাদেরকে ভোট দিয়ে তাদের উন্নতি করা যাবে এবং নিজেও লাভবান হওয়া যাবে।
---------পাওয়ার ডাউন-----
যুক্তি ছাড়া এবং ইমারজেন্সি কারণ ছাড়া কেউ পাওয়ার ডাউন করলে কমিউনিটির পক্ষ থেকে সাপোর্ট করা উপেক্ষা করা হয় এবং বিষয়টিকে অপছন্দ করে থাকেন।
------পাওয়ার আপ করার নিয়ম:------
______ডেলিগেশন_______
ডেলিগেশন বলতে মূলত নিজের একাউন্টে থাকা স্টিম পাওয়ারকে অন্য আর একজনের ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া কে বুঝায়। স্টিম পাওয়ার যত বেশি হবে ভোটের ভ্যালু তত ভাল হবে কিন্তু স্টিম পাওয়ার যখন কম থাকে তখন ভোটিং ভ্যালু অনেক কম থাকে বিধায় নিজের যখন কম পরিমাণে স্টিম পাওয়ার থাকে তখন অন্য কাউকে নিজের স্টিম পাওয়ার দিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া তাকে ডেলিগেশন দেওয়া বোঝায়। আর যে কোন সময় এই দেওয়া স্টিমের পরিমাণ ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায়।
ডেলিগেশন দেওয়ার কারণঃ
১. ব্যস্ত ব্যক্তি এবং ভালো পরিমাণে স্টিমের পরিমাণে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডেলিগেশন অনেক সুবিধাজনক।
২. দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। শক্তি এক জায়গায় করে কোন কাজ করলে যে কোন কাজ অতি দ্রুত হয়ে যায় এবং ফলপ্রসূ হয়। তেমনি কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে থাকা কম পরিমাণে স্টিম থাকলে সব গুলো একত্রে একজনকে দিয়ে দিলেন তার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে এবং যারা দিবে তাদের উপকার হবে।
৩. বিভিন্ন কমিউনিটি গুলো তাদের নিজস্ব সদস্যদের কে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ডেলিগেশনের ব্যবস্থা করে থাকেন যার মাধ্যমে গুরুপে যারা থাকে প্রত্যেক এই সুবিধা পায়
৪.নিজের স্টিম কেনার মত যদি অর্থ থাকে তাহলে স্টিম ক্রয় করে এখানে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করা যেতে পারে কারণ এখানকার বিনিয়োগ অপেক্ষাকৃত লাভজনক।
৫.ভোটিং সার্ভিস বা কিউরেটরের শক্তি বাড়াইতে চাইলে
------ডেলিগেশন দেওয়ার নিয়ম:----
------------- Question---------+
১.ডেলিগেশন ক্যান্সেল করার কতদিন পর এসপি একাউন্টে আসবে?
---৫ দিন পর আসবে।
২.@Heroism এ ২০০এসপি ডেলিগেশন করেছি।এরপর আরো ১০০ ডেলিগেশন করতে হলে ডেলিগেশনের পরিমাণ লিখতে হলে ৩০০ এসপি লিখতে হবে।
৩.সেভিংস এ থাকা STEEM OR SBD উইথড্র দেওয়ার ৩ দিন পর ট্রান্সফারেবল ব্যালেন্সে যোগ হয়।
------ওয়ালেট(Wallet)----
ওয়ালেট সিস্টেম ব্যাংকিং সিস্টেম এর মত।ব্যাংক থেকে জেভাবে টাকার আদান প্রদান করে থাকি ঠিক সেরকমই একটা ব্যবস্থা।
Wallet ➤Savings এ এসবিডি সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং নিরাপদ কারন এইখানে এসবিডি বা স্টিম উইথড্র হইতে কমপক্ষে ৩ দিন সময় লাগে।
----------------------------------------------------FINISH-----------------------------------------------------------------
আমি মোহাম্মদ সামাউন আলী।পড়াশোনা করছি প্রকৌশলবিদ্যায়।ভাল লাগে লেখালেখি করতে।আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের মূল্যবান সময় নিয়ে আমার এই লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইল।সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী।