আম খাওয়ার স্মৃতিচারণ❤️

in hive-129948 •  2 months ago  (edited)

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।

PhotoCollage_1726210889080.jpg

কাঁচা আম পেরে খাওয়ার সময় মনে পড়ে গেলো ছোটবেলার স্মৃতি। আমি তখন ছোট একেবারে ছোট তা নয় আমার বয়স তখন আট বা নয় বছর হবে।আমি ও আমার ভাই পিঠাপিঠি হওয়াতে মা আমাকে কম সময় দিতো আর আমাদের বাড়ির কাজের লোক বেশি দেখা শুনা করতো আমাকে।দিদি আমার থেকে সাত বছরের বড়ো সে ও আমার দিদুর কাছেই বেশি থাকতো ও বড়ো হয়েছে।আমাদের কাকাও পিসি সব ভালো মন্দ খেয়াল রাখতো।আমাদেরকে শাসনে রাখতো।

আমাদেরকে আমার পিসি বেশি শাসন করতো ও ভালোবাসতো।আমরা খুব ভয় করতাম আমার পিসিকে।কোন খারাপ কাজ করতাম না দুষ্টমি করতাম না।আমার পিসি ও কাকা তখন কলেজে পড়তো। যতোক্ষণ কলেজে থাকতো ততক্ষণ দুষ্টমি করতাম।আমার মা আমাদেরকে পিসির ভয় দেখাতো দুষ্টমি করলে আর আমরা চুপ হয়ে যেতাম তখন।

এর আগের কোন এক পোস্ট করেছিলাম এবং তা থেকে আপনারা জেনেছেন নিশ্চয়ই যে আমার দিদু জমিদার বাড়ির মেয়ে।দিদুর মাঝে মাঝেই বাপের বাড়িতে যেতেন বাপের বাড়ি মানে দিদুর মামার বাড়ি সেখানেই বড়ো হয়েছে সে মা,বাবা মারা গেছে জন্মের পরেই।আর দিদুর মামারা দিদুকে নিজের সন্তানের স্নেহ মমতা দিয়ে বড়ো করে তুলেছেন এবং দিদু মামার বাড়িকেই বাবার বাড়ি বলতো।

মাঝে মাঝেই দিদু গিয়ে থাকতো সেখানে কারণ দিদুর ছোট মা মা ছারা আর কেউ থাকতেন না সেখানে।কাজের লোক রান্না করতেন ও বাকি কাজ করতেন। ১৯৭১ সালে দিদুর বাকি পরিবার ইন্ডিয়া চলে গেছেন এবং ছোট মামার পরিবারও ইন্ডিয়ায় চলে গেছেন।

ছোট মামা মাঝে মাঝেই পরিবারের কাছে যেতেন এবং দিদু তখন সেই জমিদার বাড়িতে গিয়ে থাকতেন। আমাদেরকেও নিয়ে যেতেন এবং আমার পিসি ও দিদুর সাথে থাকতেন সেখানে।
আমার পিসি আমাদের কে শেখাতো পরিস্কার থাকতে নোংড়া না ঘাটতে এবং বাইরের কোন অপরিচ্ছন্ন খাবার এরিয়ে চলতে।

তো বৈশাখ মাসে আম সবে মাত্র একদমই ছোট সাইজের থাকে আর সেসব আম বাচ্চাদের পছন্দের হয় তবে এই ছোট আম গুলো খেতে বাচ্চাদের ভালো লাগলেও ক্ষতিকর।এরকম ছোট গুটি আম খেলে পাতলা পায়খানা ডাইরিয়া হয়ে থাকে।বৈশাখের শুরুতেই দিদু জমিদার বাড়িতে চলে যায় এবং পিসি যাওয়ার আগে আমাদেরকে কঠিন হুসিয়ারি দিয়ে যায় যে একদমই আম মুখে দিবি না।যদি শুনি আম খেয়েছিস তাহলে খুব রাগ করবো।আমি মাথা নেরে বলে দিলাম না আম মুখে দেব না।

পুরা বৈশাখ মাস চলে গেলো ছোটো গুটি গুটি আম বড়ো হয়ে গেলো কিন্তুু কাঁচা আম খাওয়ার সাহস হলো না।কখনো কখনো ঝড়ে পুরা বাড়ি ভর্তি বাড়িতে কাঁচা আম পড়তে গাছ থেকে তা খাওয়া যাবে না জন্য কুড়াতাম না। বাচ্চাদের খাওয়া দেখে লোভ হলেও মনে পড়তো পিশি নিষেধ করেছে সে কথা। তাদেরকেও নিষেধ করতাম কুড়িয়ে কুড়িয়ে কাঁচা আম খেতে।এভাবে চলতে চলতে আম পেকেছে বাড়ি ভর্তি আম গাছ পাঁকা আম ছারা কাঁচা আম আর খাচ্ছি না।

এদিকে বাড়ি ভর্তি আম গাছ কাঁচামিঠা গাছের আম কাঁচায় খেতে অনেক মজা। একদিন নিজের অজান্তেই সেই কাঁচামিঠা আম খাচ্ছিলাম আর হঠাৎ দিদু ও পিসি বাড়িতে চলে এসেছে এবং আমি পিসিকে দেখেই হাত থেকে আম ফেলে দিয়ে তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছি।

পিসি আমাকে প্রশ্ন করলো আম ফেলে দিলি কেন আমটি তো ভালো।তখন আমি বল্লাম একদিনও কাঁচা আম খাইনি আজকেই খাচ্ছি। তখন পিসিকে আমার মা বল্লো তুমি না কি কাঁচা আম খেতে না করেছে সেজন্য আর কাঁচা আম খায় না।তখন পিসি হেসে হেসে আমাকে কাছে নিয়ে বল্লো সেই সময় আম ছিলো একদমই ছোট সেসব আম খেলে অসুস্থ হয় সেজন্য না করেছি তাই বলে কি এখনো আম খাওয়া যাবে না পাগল।

আমি এটা সুনে তো মহাখুশি হয়ে গেলাম আর ভাবলাম কতো আম খাওয়া মিস করে ফেলছি।
তাই কয়েকদিন আগে আম পারে মাখা খাওয়ার সময় সেই ঘটনাটি খুব মনে পড়ে গেলো।মাঝে মাঝেই এই আম খাওয়ার ঘটনাটি মনে পড়ে যায়।বিশেষ করে আমের দিনে কাঁচা আম মাখা খাওয়ার সময় এই কথা খুব মনে পড়ে।

ভাবি আমাদের সময়ে বাচ্চাদের কে যা বলা হতো তাই বিশ্বাস করে নিতো এবং বুড়োদের কে খুব সন্মান করতো এবং মানতো।বর্তমানের বাচ্চাদের ভয় খুব কম। নিষেধ কাজ আরো বেশি বেশি করে করার চেষ্টা করে।

আমি আমার নিজের বাচ্চা কে নিয়েই বুঝি। যদি কোন কিছু নিষেধ করা হয় সে প্রশ্ন করে এটা কেন করা যাবে না কেন কি হবে ইত্যাদি।আসলে এখন বাচ্চারা এডভান্স বেশি।

কাঁচা আম তো আমার মেয়ের প্রিয় একদমই ছোট আম থেকে সে মাখা খাওয়া শুরু করে নিষেধ করলে কান্না জুরে দেয়।কি আর করার নিষেধ করলে নিজেকেই বেকায়দায় পড়তে হয়।

আম মাখা খেতে খেতে গল্পটি করছিলাম আর সবাই মিলে হাসাহাসি করছিলাম আর ভাবছিলাম ছোট বেলায় করতো বোকা ছিলাম।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



GjSEgbUx2JZgz3wnijbGJFkubwFepGBrvBecB8VtLmyVWAzGMPpTgbBsoy5PNzCfX7WhWhJCZSpSo9E9Jc17Tv7KXyNFcqqJPXoy3ujFrp...dbDWqEPE5RMoFRHh524YsdwNtUphbwW7dbTskjmAmr49JXSvBJBUpyCne9QkouGHX1L1ND6rkxHzpQo2cwzT6dF7TeWmT14ZQJvM84NcX1c4NFruD6DuVbQ9U.webp

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সুন্দর স্মৃতিচারণ করেছেন আম খাওয়া নিয়ে। আসলে আমরা যদি এভাবে এককে অন্যের জানা-অজানা বিষয়গুলো উপস্থাপন করি তাহলে কত কিছুই জানা হয়ে যায় খুব সহজে। তবে এ কথা সত্য আমগুলো চোখের সামনে দেখে কিন্তু জীভেতে জল চলে আসলো।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

কথাটা সুন্দর আপু সত্যি এখনকার বাচ্চারা খুবই স্মার্ট। আপনি কোন কিছু নিষেধ করলে এরা তার কারণ জানতে চাইবেই এতটাই কৌতূহলী এরা। তবে আপনার ব‍্যাপার টা বেশ হাস‍্যকর ছিল। আপনি দেখি খুব মান‍্য করতেন বড়দের।

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।