হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
ছোটবেলায় খুব উপভোগ করতাম দিনটিকে।যদিওবা আমাদের গ্রামে কালিপূজা ছিলো না তবে মামার বাড়িতে মামাদের মন্দিরে কালিপূজা হতো অনেক ঘটা করে।
দূর্গা পূজায় সব মেয়েরা বাপের বাড়িতে গেলেও আমার মা দূর্গা পূজায় যেতেন না। যেহেতু মামা বাড়িতে কালীপূজা তাই মামার বাড়িতে কালীপূজায় যেতেন। আমরা দিন গুনতাম কবে কালীপূজা আসবে আর কবে মামা বাড়িতে যাবো।
যখন আমরা বড়ো হলাম তখন আমার মা আর চাইলেও যেতে পারতো না।আমাদের তিনভাইবোনের পড়াশুনার সাথে মায়ের বাপের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।
বাড়িতে খুব মজা করে বাজি ফাটানো প্রদিপ জ্বালানো। গ্রামের অন্য ধর্মাবলম্বীদের বাতি লাগাতো দেখতে আসা ও ঐতিহ্যবাহি ঝালের গুড়া খেতে আসা এসব খুব ভালো লাগতো।সবাইকে ঝালের গুড়া দিতাম আমরা খেতে। পরদিন সকালে গ্রামের মুসলিম পরিবারের বাচ্চারা মাটির প্রদিপ নিতে আসতো। মাটির প্রদিপকে আমাদের এলাকায় দিওর বলে।কালীপূজার ও অমাবস্যার প্রধান আকর্ষণ দিওর।দিওর দিয়ে আমরা খেলা করতাম।দাড়ি পাল্লা বানাতাম।
খুব সকালে গ্রামের বাচ্চাদের মাঝে দিওর বিলি করতে কি যে মজা লাগতে তা বলে শেষ করা যাবে না।
বিয়ের পর শ্বশুড় বাড়িতে অমাবশ্যাতে প্রদিন লাগানো হতো।এবার আমাদের জন্মাস শৌচ তাই প্রদিপ লাগানো হবে না।যেহেতু বাড়িতে প্রদিপ লাগানো নাই সেজন্য ঠিক করলাম বাবার বাড়িতে যাবো কারণ আমার মেয়ে মেনে নিতে পারছে না যে প্রদিপ দিতে পারবে না।মেয়েও বলছিলো চলো মামার বাড়িতে যাই।
আমার বরও এসেছে কালীপূজোর ছুটি নিয়ে আসার পথে অনেক প্রকারের বাজি কিনে এনেছে। আমাদের এলাকায় বাজি তেমন কেউ ফাটায় না।তবে আমাদের বাড়িতে ফাটানো হয় আর গ্রামের সব বাচ্চাদের ভীর আমাদের বাড়িতে থাকে।খুব উপভোগ করে তারা।
বাইকে মা,মেয়ে বরের সাথে চলে গেলাম বাবার বাড়িতে।গিয়ে দেখি তাদের ব্যাস্ততা।বাড়িতেই ডেকি আছে আর সে ডেকিতে ঝালের গুড়া কুটছে এবং অমাবস্যায় পিঠা বানানোর জন্য আটা কুটছে।নিয়ম অমাবস্যায় আটা কুটতে হবে এবং সেই আটা দিয়ে পিঠা বানাতে হবে এবং সেই পিঠা বাড়ির চারদিকে পুতে দিতে হবে ও কিছু পিঠা খেতে হবে।
ছোটবেলায় ভাবতাম পিঠার গাছ বুনছে🙂।
পিঠা মাটির নিচে পুতে দেয়ার পর শুরু হলো বাজি ফাটানো।একের পর এক বাজি ফানোর শব্দে গ্রামের সব বাচ্চারা চলে এসেছে।
বাচ্চাদের আনন্দঘন চিৎকারে আকাশ বাতাস আনন্দে ভরে উঠলো।আতস বাজি,তারাবাজি এরকম নানান রকমের বাজি ফাটানো হলো।
বাড়িতে প্রদীপ লাগানোর আগে আমার বাবা গেলো আমার দাদু ও দিদুর সমাধি স্থলে।আমার দাদু ও দিদুকে কোন শ্বশানে দাহ করা হয়নি।দুজনকেই আমাদের বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে দাহ করা হয়েছে। প্রতিবছর সেই সমাধিস্থানে গিয়ে প্রদীব ও মোমবাতি লাগিয়ে আসে।ফটোগ্রাফি বাড়ির সামন থেকে তুলেছি জন্য তেমন বোঝা যাচ্ছে না তবে ভীষণ সুন্দর লাগে দেখতে এক সাথে অসংখ্য মোম বাতি দেখতে।
এরপর শুরু হলে মাটির প্রদীবে বাতি লাগানো। প্রথমে মাটির প্রদীপ গুলো জল দিয়ে ধুয়ে তুলে নেয়া হয়।মাটির প্রদিপ ধোয়ার সাথে সাথেই শুখিয়ে ওঠে।এখন প্রদীপে তেল সলতা দিয়ে তা ধরিয়ে পাট কাঠি দিয়ে বানানো গাছায় উপরে দেবদেবীর নামে প্রদীপ জ্বালানো হয়।
এরপর উঠানের মাঝে একটা কলাগাছে প্রদিপ লাগানো হয় সাত বংশের সাত পুরুষদের ও মৃতৃ সবার নামে।বাড়ির চারপাশে প্রদীপ জৃবালানো হয় কারণ বিশ্বাস করা হয় বাড়িতে যতো প্রদিপ লাগানো হবে যতোদূর প্রদিপের আলো যাবে ততোদূর পর্যন্ত কোন অশুভ শক্তি আসবে না।বিষাক্ত পোকামাকড় আসবে না।
আমার মেয়ে ও কাকাত ভাই মিলে একটি ওঁৎ বানিয়েছে এবং তা মাটির প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে খুব সুন্দর আকর্ষণীয় লাগছিলো ওম টি।
অনেকদিন পর বাবার বাড়িতে গিয়ে দীপাবলি কাটিয়ে অনেক ভালো লাগলো।একদমই ছোট বেলায় চলে গিয়েছিলাম এমন অনুভুতি হয়েছিলো।
বাতি লাগানো শেষ সবাই রুমে চলে গেলাম এবং একটু পর বের হয়ে এসে সবাই মিলে দুধ রুটি, আলু,পটল ভাজা খেলাম। দুধ রুটি খেলাম কারণ আমরা অমাবশ্যাতে ভাত খাই না।
রাত এগারোটায় মেয়েকে রেখেই বাইকে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।বেশ ঠান্ডা অনুভব হলো বাইরে।এতোটায় কুয়াশা পড়েছে যে অন্ধকার মনে হচ্ছে। এমনি তো অমাবস্যা তার উপরে কুয়াশা দুই মিলে বাইরের পরিবেশ ভয়ংকর।
এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট দিপা বলীতে কাটানো সময় নিয়ে কিছু কথা।আজকের মতে এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
|ডিভাইস |OppoA95
|লোকেশন|বাংলাদেশ
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
শুভ দীপাবলি। আপনারা দেখছি দিপাবলির দিন খুবই সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন। আপনার শেয়ার করা দিপাবলির লাইটিং গুলো খুবই অসাধারণ হয়েছে।আর আপনি দীর্ঘ দিন পর বাবার বাড়ি গিয়ে দিপাবলি কাটিয়েছেন, জেনে বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা নিও শাপলা। ভালোভাবে কালীপুজো কাটিয়েছো জেনে ভালো লাগলো । খুব সুন্দর প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়েছে। আপনার ছোটবেলার স্মৃতিগুলো জেনে বেশ ভালোই লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই দীপাবলীর শুভেচ্ছা।দীপাবলির ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক মজা করেছেন।এই ধরনের অনুষ্ঠানে অনেক আনন্দ করতে পারেন আপনারা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দীপাবলি মানেই আলোয় আলোকিত একটি সন্ধ্যা।আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝলাম বেশ মজা করেছিলেন।খুব সুন্দর লাগছে ফটোগ্রাফি গুলো,ধন্যবাদ ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit