হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই?আশা করছি ভালো আছেন আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো আমার অসুস্থতা এবং অসুস্থতার ভয় এর অনুভুতি নিয়ে।আশা করছি ধৈর্য নিয়ে পোস্ট টি পড়বেন।
বরাবরই আমাকে রোগ কখনোই কাবু করতে পারতো না। বছরে একবার শুধু জ্বর ছারা কোন অসুস্থতা ছিলো না আমার জিবনে।2020 সালে আমি একটা ছোট সমস্যা নিয়ে গাইনি ঢাক্তার দেখাতে যাই ক্লিনিকে। যথারিতি ম্যাডাম একটা আল্ট্রাসনো করতে দেয় এবং আল্ট্রা করার সময় ধরা পড়ে পিত্তথলিতে পাথর। আমার কোন ব্যাথাই ছিলো না যে বুঝতে পারবো। হঠাৎ শুনে তো অবাক তবে গুরুত্ব না দিয়ে ভাবলাম সাধারণ বিষয় এটা ছোট একটা অপারেশন করলেই শেষ। যথারিতি পিত্তথলি অপারেশনের জন্য ভর্তি হলাম বগুড়া সিএম এইসে। আমার বর সেনাবাহিনীতে ট্রেনার হিসেবে কর্মরত আছেন।সেই সুবাদে আমার চিকিৎসা ফ্রী আর সিএমএইস এ অপারেশন করা নিরাপদ ও বটে।আজকাল বাইরের ক্লিনিকগুলোর যে অবস্থা। যাইহোক সিএমএইসেও আল্ট্রা করলো পিত্তথলির অপারেশনের জন্য কিন্তুু তখন আবার ধরা পড়লো রাইট কিডনিতে পাথর।কথাটা শোনার পর একটু ভেঙ্গে পড়ছিলাম একটু সময়ে জন্য। কারণ কিডনি আমাদের জিবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এই অঙ্গটি মূত্র তৈরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন হরমোন তৈরী, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধীক জরুরি কাজ সামলায়। তাই তো কিডনির স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতেই হবে।নচেৎ শরীরের হাল বেহাল হতে সময় লাগবে না। প্রথমে আমি কিডনিতে পাথর কথাটা শুনেই ভেঙ্গে পড়েছিলাম একটু সময়ের জন্য। যখন ডাক্তাররাও সবটা বুঝিয়ে বল্লেন তখন আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলাম।আমার যে দুটা অসুখ ভিতরে বাসা বেধেছে তা কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি কোন উপসর্গ ছিলো না এবং আমাকে দেখলে কখনোই কেউ বুঝতে পারবে না আমি অসুস্থ। কিডনি অপারেশন ঢাকায় হবে তাই ঢাকা সিএম এইস এ যেতে হবে।এর মধ্যে আমার শ্বশুড়ির অসুস্থ অনুভব করছিলে বেশ কিছুদিন ধরেই অনেক ঔষধ ও খাচ্ছিলেন কিন্তুু কিছুতেই সুস্থ হচ্ছিলেন না। এবার ওনাকে নিয়ে গেলাম রংপুর সার্জারী বিশেষজ্ঞ এর কাছে এবং ওনি অনেক পরিক্ষা করলেন, ল্যাপরস্কপি করলেন এবং টেষ্টের জন্য ঢাকায় পাঠালেন এবং এক সপ্তাহ পর রিপোর্ট আসবে আর রিপোর্ট আসলে ওনাকে দেখাতে বললেন। তাই করা হলো এবং দুর্ভাগ্য বশত ওনার ক্যান্সার ধরা পড়লো এবং ডাক্তার বলে দিলেন এটার চিকিৎসা ঢাকা ক্যান্সার হাসপালে করতে হবে কিংবা অন্য কোন হাসপাতালে। যেহেতু আমার বরের চাকুরী সুবাদে, বউ বাচ্চা, বাবা,মা,শ্বশুড়, শ্বশুড়ির চিকিৎসা সিএম এইস এ করা সম্ভব তাই আমরা সবাই মিলে ঠিক করলাম ঢাকা সিএম এইসে ওনাকে নিয়ে যাবো চিকিৎসার জন্য। যথারিতি ঢাকা সিএমএইসে ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। ঢাকায় আমাদের তেমন অসুবিধা হয়নি কারন আমরা গিয়ে উঠেছিলাম আমার কাকা শ্বশুড়ের থানা কোয়াটারে। আর তেজগাঁও কোয়াটারে সামন দিয়েই সিএম এইসের বাস গুলো একটু পরপর যাওয়া আসা করে কিংবা সিএনজিতে যাওয়া যায় একদম খুব অল্প সময়ে ও সহজেই। গেলাম আমি ও @bristychaki কারন পরিবারের সবাই চাকুরিজীবী,ও যেহেতু দীর্ঘ দিন চিকিৎসা চলবে তাই কেউ ছিলো না যাওয়ার মতো তবে আমার ভাই গিয়েছিলো আমাদের সাথে এবং আমার ননদ bristychaki র বর সুয়োগ ও সময় পেলেই চলে আসতেন কারন ওনার কর্মস্থল ঢাকায়। আমাদের সাথে হাসপাতালে যেতেন।যাইহোক শ্বশুড়িকে ডাক্তার দেখানো হলো এবং নানান রকমের টেস্ট করানো হলো। থেরাপির জন্য সব ঠিক করলেন বেশ কয়েকটি থেরাপি দিতে হবে। ওনার কোলন ক্যান্সার ছিলো তাই থেরাপি দেয়ার পর অপারেশন করবে সেই অপেক্ষায় ছিলাম যে ওনার অপারেশনের জন্য ভর্তি করলেই আমিও ভর্তি হয়ে যাবো এবং আমার অপারেশন করবো তাহলে এক সাথেই থাকা যাবে। bristychaki ওআমি প্রতিদিন সকাল ছয়টায় বের হইতাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে শ্বাশুড়িকে নিয়ে আর ফিরতাম কোনদিন দূপুরএ কোনদিন বিকেলে।প্রতিদিন প্রায় টেষ্ট থাকতোই শ্বশুড়ির এভাবে ওনার থেরাপির ডেট চলে আসলো এবং প্রথম থেরাপি হয়ে গেলো ও প্রথম থেরাপিতে ওনি প্রথমে একটু অসুস্থ হলেও পরে একদম পুরাপুরি ঠিক হয়ে গেলেন এবং ওনার উপসর্গ গুলো কমে গেলো।তখন শ্বশুড়িও @bristychaki আমাকে
বল্লেন এখন তুমি ভর্তি হও এবং অপারেশন করে নাও।যথারিতি আমি ভর্তি হলাম এবং অপারেশনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম । হাসপাতালে আমি একাই থাকার সাহস দেখালাম কারণ প্রথমত সিএমএইসএ কাউকে দরকার পড়ে না হেল্পের জন্য আয়ারাই সব করে থাকেন।আর দ্বিতীয়ত শ্বশুড়ি অসুস্থ তার সেবা যত্নের জন্য @bristychaki কে সব
সময় দরকার এবং আমার মেয়েটাও ছোট ওকেও দেখাশুনার জন্য @bristychaki কে দরকার।তবে প্রতি দিন প্রায় একবার করে হাসপাতালে আসতো এবং আমাকে সময় দিতো।
সার্জারী বিল্ডিং এ আমি ভর্তি কারণ আমার অপারেশন হবে।আমি সাত তলায় ছিলাম।কোন অসুবিধা ছিলো না আমার হাসপাতালে।
(চলবে)
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | Oppo A95 |
ফটোগ্রাফার | @shapladatta |
লোকেশন | গাইবান্ধা |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
ঐ সময় গুলো খুবই খারাপ ছিলো।এখনও সবকিছুই দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়।মায়ের অসুস্থতা মৃত্যু তোমার অপারেশন সবমিলিয়ে আমরা অনেক খারাপ সময় পার করেছি।ঈশ্বর যেনো শত্রুদেরও না দেন।অনেক সুন্দর করে মুহূর্ত গুলোর বর্ননা দিয়ছো যা খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুমমম খুব খারাপ মুহুর্ত ছিলো তাই তো এখনো সব চোখের সামনে পরিস্কার ভেসে ওঠে।ঠিক বলেছেন ওমন পরিস্থিতি কোন শত্রুর ও না হোক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit