লাইফ স্টাইল-- 😔 " আব্বু এখন হাসপাতালে ভর্তি "

in hive-129948 •  3 months ago 

শুভ দুপুর সবাইকে


আমার বাংলা ব্লগ এ সবাইকে স্বাগতম।


হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।

বন্ধুরা,আজ আমি শেয়ার করতে চলে এলাম লাইফ স্টাইল পোস্ট।আশাকরি আমার পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকমের কর্মকান্ডের কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আশাকরি আমার শেয়ার করা অনুভূতি গুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগে।চলুন তবে আজকের বিষয়টি তুলে ধরছি।

আব্বু এখন হাসপাতালে ভর্তিঃ


20240625_100628.jpg

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPgGed8pU4cH2rA8Hx16HqG9PMWGnM3gfjBmGCHeMt4UCtucTcrF7jmweXEpit...ZGutiKi7KVTt5nDQoetrgsGgZGNELKiF2LVTivTiw6zUbx3qr8PhoJ4RufavUzR2x51cVwfS9ebHEGz1Yoiz7SSqpLp4z6AD13BwUvTWuACAUcDbvGNfob6NSa.png

বন্ধুরা,প্রতিনিয়ত নানা রকমের চাপের মধ্যে দিয়ে আমাদের কে যেতে হয়।কোন কোন চাপ হয় মানসিক।আবার কোনটা হয় শারীরিক।তবে দুটো চাপ কষ্টকর হলেও মানসিক চাপটা বড্ড বেশী যন্ত্রনা দেয়।আজ হাজির হলাম বাবার অসুস্থতা নিয়ে জানাতে।আসলে ঈদের পর মামাতো দেবরের বিয়ে নিয়ে খুব বেশী ব্যস্ততায় সময় কাটিয়েছি।যার জন্য এবার ঈদের পর বাবার বাসায় আমার যাওয়া হয়নি।আমার বাবার বাসা ঢাকার ওয়ারীতে এটা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন।আব্বু-আম্মু,ভাবীরা যদিও বার বার বলছিলো দু দিনের জন্য যেতে।কিন্তু ছেলের স্কুল খুলে যাবে তাই আর যাইনি।

20240625_100635.jpg

আব্বুর প্রায় অনেক দিন থেকে কিডনির সমস্যা ধরা পরেছিল।আব্বুর ডায়বেটিস আছে।আব্বু ঢাকার মোটামুটি অনেক ডাক্তার ই তখন দেখিয়েছিল।আমরা ভাই-বোনরা তখন আব্বুকে কলকাতা ডাক্তার দেখাতে বললাম।আব্বু-আম্মুর পাসপোর্ট যেহেতু ছিল ই তাই আব্বু-আম্মু দুজন তখন কলকাতা চলে গিয়েছিল ডাক্তার দেখাতে।কলকাতা গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে ৬ মাসের ঔষধ নিয়ে চলে এসেছিল।এভাবে ই কেটে যাচ্ছিল।আব্বু প্রতিনিয়ত ওয়ারীতে ডায়বেটিস হাসপাতালেই (বারডেম শাখা) নিয়মিত চেকআপে ছিলেন।বেশ কয়েক বছর ধরে কিডনির পয়েন্ট কমেই ছিল।আব্বুর পয়েন্ট হয়েছিল ৩ পয়েন্ট এই রমজানে।আম্মু যথেষ্ট সচেতন হয়ে অনেক বাছ বিচার করে আব্বুর দেখাশুনা করে আসছিলো। আব্বু মাঝে মাঝেই বিদ্রোহ করতো নিষেধ করা খাবার খাওয়ার জন্য।কিন্তু আম্মু কঠিন হয়ে সবকিছু হ্যান্ডেল করে আসছিলো।

20240625_100642.jpg

রমজানের পর আব্বুর কাশি হচ্ছিল।অল্পতে ই সর্দি লেগে যাচ্ছিল।এর ফলে আমার ছোট বোন আর আমি আম্মুকে বললাম অনেক দিন ধরে তো শুধু ডায়বেটিস হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়ে আসছো,এবার আব্বুকে কিডনির একজন স্পেশালিষ্ট দেখাও।বড় ভাইয়া ওয়ারি এলাকার বড় হাসপাতাল আজগর আলী হাসপাতালের একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ কে দেখানোর পর উনি তুরষ্কের খুব ভালো একটি ঔষধ দিল আব্বুকে খেতে এক মাসের জন্য তাতে কিডনির পয়েন্ট কমে আসবে তিনি তাই বলেছিলেন।যদিও রমজান মাসে কিডনির পয়েন্ট ৪ এ এসেছিল।তিনি বিদেশী বেশ দামী ঔষধ দিলেন।ডাক্তার সব চেক আপ করলে ও আব্বুর কাশির জন্য বুক এক্সরে করায়নি তখন।ডাক্তার সব কিছু টেস্ট করালে ও কাশির জন্য বুক এক্সরে করাননি।আমরাও তাই আর করাইনি।আমরা ভেবেছিলাম ঔষধের মাধ্যমেই পয়েন্ট কমে আসবে।

20240625_102124.jpg

আব্বু কিডনির জন্য সেই ঔষধ ই খেয়ে আসছিলো দীর্ঘ এক মাস।এক মাস পর ঔষধের ফলাফল জানতে টেস্ট করানো হলে কিডনির পয়েন্ট বেড়ে ১৪ তে এলো।এই রিপোর্ট দেখে তো আম্মু কান্না কান্না ভাব নিয়ে আমাকে ফোন দিল সেই হাসপাতাল থেকেই।ডাক্তার নাকি বলেছে তার লাঞ্চে পানি তাই পয়েন্ট বেড়েছে।ডায়লোসিস করাতে হবে।আজ না করালে স্ট্রোক করতে পারে।যেখানে এতো ভালো বাইরের মেডিসিন খেয়ে ভালো হওয়ার কথা সেখানে আরো খারাপ ই হয়ে গেলো।রোগ নির্নয় করাটা কতো যে জরুরী সেদিন তাই বুঝলাম। আমার বড় ভাইয়া আম্মুকে বলল আব্বুকে বাসায় নিয়ে আসার জন্য।এরপর আমি আমার বোন বাসার গেলাম।আমরা তিন ভাই-বোন পরামর্শ করলাম কি করা যায়।আর ছোট ভাই তো বাইরে আছে, ছোট ভাই ফোনে ছিল।

20240625_100708.jpg

এরপর বড় ভাবীর পরিচিত ডাক্তার ছিলেন তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বসেন।আমরা তার কাছে নিয়ে গেলাম।তিনি দেখে বললেন আপনি ভর্তি হন আগে সব টেস্ট করে দেখি।যদি লাঞ্চে পানি থাকে তবে ডায়লোসিস করতে হবে।নয়তো ঔষধে ই ইনশা আল্লাহ সারবে।এরপরই ভর্তি করলাম আব্বুকে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে।এই হাসপাতাল আমার বাসা থেকে কাছেই।আর এখানে ৭ দিন ধরে আব্বু ভর্তি আছেন।এখানে ডাক্তার টেস্ট করার পরই ধরেছিল আব্বুর লাঞ্চে পানি।

সময়টা খুব খারাপ গেলো।এই প্রথম আব্বুকে হাসপাতালের বেডে দেখছি।কখনও আব্বু-আম্মুকে এভাবে দেখিনি।তাই খারাপ লাগছিলো।হাসপাতালে এসে এতো এতো পেসেন্ট দেখে সত্যি ই খারাপ লাগাটা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।আমরা কেবিন নিয়েছি।কারন আম্মু সাথে থাকবে।আমি বাসা থেকে আব্বুর জন্য মসলা কম আর যেসব খাবার খেতে পারবে তা রান্না করে নিয়ে যাচ্ছি।ছোট বোন বসুন্ধরা থেকে,ভাবী দুজন ওয়ারি থেকে খাবার নিয়ে আসছে।এভাবেই কেটে গেলো ৭ টি দিন।আমি এতোকিছুর মাঝে ও নিজের কাজ ঠিকঠাক মতো করে গিয়েছি।আমি আমার এই কমিউনিটিতে নিজের এক্টিভিটিজ ধরে রাখার চেষ্টা করে গেছি।এজন্যই ডিসকোডে সবাই জানতে চাইলে বলেছি,খুব চাপে আছি।আমি যে খুব চাপে আছি আজ তা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।আপনারা সবাই আমার আব্বুর জন্য অনেক অনেক দোয়া করবেন।আমার আব্বু যেনো সুস্থ ভাবে ভালো থাকতে পারে।

আজ আর নয়।আপনাদের কাছে মনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো।

পোস্ট বিবরন


শ্রেনিলাইফ স্টাইল
প্রয়োজনীয় ডিভাইসSamsung A 20
ফটোগ্রাফার@shimulakter
স্থানগনস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল-ধানমন্ডি,ঢাকা

আমার পরিচয়

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFv2JKCUcMNfCcMEjybGCW7SacrN1cXLYVvtF4WeVsso9rbDYeVDHvs3UwFMnhLNxFpJPxeDARUi4BdrHnKMpzjhwGwx9hNv4rY8pcMC.jpeg

আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

7AzetLrHVAgHwGYdyYhcd6W1ZFmwPuKeayULXZvV74jWJiYdxcTDg2LhEfugT9XQiehdVjbtAbBU1XdRNXiEF84z5xvEBxaDkrUVjrn3AA...Lme7uHzhBsZNhAwjoPuur37mLpdDUuvdg1BAY5TZSuBhbAxCSvbNMhw31WQJNBoEaz5nQZwwfEzvj2CLYAoyJuR7DiEL6442cdxyPvPjEPk4inCxeffnYMCVXL.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WQrQvqP5nhp7XM51LVxoiwvG4n2SMPJqq4jr2WDgyE2QvgqfT2KbJEaeoc2UiMkyE3Lt3BykMds72QZ36oyQ.png

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvQjV74EiQgbJ1bHnuaQtMGJ82DmjK2jvfqXMgqNbyA8bTES8NsicPw9oefRmFaB9aZAvDYQNLHWt1W7g.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxeToZJatrzXJ26wyJvrfyUjWUHbwevxJfcy1wNaX2uYf5yHRjEM6kRmppRUgc...Y4qhGk41e9xshdKq7axZeLWprzfJqgtshHQPZjCGuXiyHFG1XqYcZSdGGLYKKmVtY1zvpEFteA1FrU83LMRPP7BcAne3avpKyGdHz9yne2nakYyhwHTfUardAv.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxgugFkjBFNEHgnHxgjqRLKWnKFTwwKJ9vDEph9jyEpATxyrkzsRxUofieSXvW...XVCPrZEiBQY3DNWnVp6gQMYW4TcQUU4y1uo3Ezg1XbNauP1DnGa1WaLqAP9WHuqV91uPvSqP1kx1PYJ64PVyuWqBr4dV3UwHGUMTVT74SoLbnwqJdiWJhDn669.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপু আপনার আব্বুর অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগছে। দোয়া করছি উনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। বাবার অসুস্থতার সময়ে ভালো থাকাটা কঠিন। এটা খুবই মানসিক কষ্টের ব্যাপার। দোয়া করি আঙ্কেল যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন।

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।

আপনি তো অনেক চাপা স্বভাবের মানুষ। এত বড় ঘটনা একটু জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না। যাই হোক আংকেল এখন কেমন আছেন। আসলে বাবা মা অসুস্থ হলে সবচেয়ে বেশী কষ্ট পায় সন্তানরা। আর আমাদের দেশের ডাক্তারদের কথা নাই বা বললাম। দোয়া রইল আংকেলের জন্য।

আপনার আব্বুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি আপু। আসলে পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকলে খুবই মানসিক চাপ থাকে। রোগ নিরাময় করার আগে আসলে সঠিক রোগ নির্ণয় করাটা খুবই জরুরী। এখন আশা করি সঠিক রোগ নির্ণয়ের ফলে ওনার দ্রুত সুস্থতা দেখা দেবে।এতকিছুর মাঝেও আপনি আপনার এনগেজমেন্ট বজায় রেখেছেন এটাই অনেক।

আপু আজগর আলী হাসপাতালের কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কি দেখে তুরষ্কের দামি ঔষুধ দিলো যে এক মাসে ৪ থেকে ১৪ হয়ে গেলো। কিছু তো বুঝলাম না। আসলে রোগ নির্ণয় না করে ঔষুধ খেলে সমস্যাই হয়। এখন লাঞ্চে পানিই চলে আসলো। মানুষের কখন যে কি হয়ে যায়,কেউ বলতে পারে না। আপনার আম্মার জন্য বেশি দোয়া করি তিনি আপনার আব্বুর সেবা করতে করতে আবার না অসুস্থ হয়ে যায়। যায়হোক আপডেট জানাবেন। ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাইয়া।