লাইফ স্টাইল - "দীর্ঘদিন পর বাসায় ফেরা "

in hive-129948 •  18 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।

আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।আমি বিশ্বাস করি আমার ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকম কর্মকান্ড থেকে কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আজ ও এসেছি এমন একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।

দীর্ঘদিন পর বাসায় ফেরাঃ


20241108_230041.jpg

বন্ধুরা,আজ নতুন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে চলে এলাম।আজকের ব্লগের টাইটেল পড়ে হয়তো ইতিমধ্যে বুঝতে পেরে গেছেন আমি আজকে কোন বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি।হে বন্ধুরা,আমি আজ শেয়ার করবো আমার ফেলে আসা বেশকিছু দিনের কিছু অনুভূতি।আমি গত মাসের ১৮ তারিখে আমার আব্বুকে হাসপাতালে দেখতে যাই।আব্বুকে সেই সময় ধানমন্ডি থেকে মগবাজার আদ দিন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।তখন আমার বাবা ইউ সিউ তে ছিলেন।সেই সময় দুরাত আমি আম্মুর সাথে হাসপাতালে ছিলাম আব্বুর জন্য। এরপর আব্বুকে দুদিন পর বাসায় নিয়ে আসি।

20241108_230031.jpg

আমিও তখন আব্বুর সাথে বাসায় যাই।পরের দু দিন আব্বুকে সুস্থ দেখে আমি আমার নিজের বাসায় চলে আসব ভাবছিলাম।কিন্তু ২২ শে অক্টোবর সকাল থেকেই আব্বুর হঠাৎ জ্বর দেখে আমি আমার বাসায় আর যাইনি।সেদিন সারাদিন দেখার পর আমরা সন্ধ্যায় এম্বুলেন্সে করে আব্বুকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।তখন আব্বুর অক্সিজেন আর প্রেশার নামতে শুরু করেছিল।যদিও আমরা দুপুর থেকেই আব্বুকে বাসায় অক্সিজেন দিচ্ছিলাম।কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছিল না।

20241108_230218.jpg

20241108_230157.jpg

এরপর হাসপাতালে নিলে আই সি ইউ তে নিয়ে সারারাত দেখেন ডাক্তাররা।সেই রাতেই প্রায় ১০ হাজার টাকার মেডিসিন ভাইয়া ডাক্তারদের বলার পর সাথে সাথে এনে দিয়েছিলেন।কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি।পরের দিন সকাল ১২.১৫ মিনিটে আমার বাবা না ফেরার দেশে আমাদেরকে রেখে চলে যান।আমরা এতিম হয়ে গেলাম।আম্মু ভেঙে পরবে তাই আমি আম্মুর পাশে এতোটা দিন ছিলাম।কাল সকালে আম্মু,আমি আর ছোট বোন আবার দ্বিতীয়বারের মতো বাবার কবরের পাশে গিয়ে দোয়া করে এসেছি।এরপর বোন কাল চলে গেলো ওর বাসায়।আমিও দীর্ঘদিন পরে কাল রাতে বাসায় চলে এলাম।যে যায় সেতো চলেই যায়।আর কাঁদিয়ে রেখে যায় সবাইকে।একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে এটা চিরন্তন সত্যি কথা।তারপরেও বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে।স্মৃতিগুলো ক্ষনে ক্ষনে কাঁদায়।

20241108_230329.jpg

20241108_230322.jpg

কাল রাত ১১ টায় বাসায় ফিরে এসে কিছুই ভালো লাগছিলো না আমার।ঘুম ও আসছিলো না দু চোখে।এ কয়টা দিন আম্মুর সাথে শুয়ে ও চোখে ঘুম আসেনি।ভোরের নামাজ পড়ে ৩/৪ ঘন্টা সকালে ঘুমিয়েছিলাম এতোটা দিন।এরপর আমি আম্মুকে ফোন দিয়ে ঘুমিয়ে যেতে বললাম।সবচেয়ে খারাপ লাগবে আমার আম্মুর।কারন আমার আব্বু-আম্মু একজন আরেকজনকে ছেড়ে কখনো কোথাও থাকেনি।আব্বু খুব বেশী আম্মুর উপর নির্ভরশীল ছিল আমরা তা ছোটবেলা থেকে ই দেখেছি।আমার ভাইয়ার মেয়ে ওর দাদা-দাদুকে সব সময় লাভ বার্ড বলে ডাকতো। এতোটা একসাথে ছিল আমার বাবা-মা।তাইতো আম্মুকে নিয়ে খুব বেশী টেনশনে ছিলাম আমরা।এই একাকিত্ব কে কি করে ভুলে যেতে পারবে আম্মু? তাইতো এতোটা দিন আমি আমার আম্মুর পাশেই ছিলাম।আমার বড় চাচা এখনো বেঁচে আছেন।মাঝ থেকে আমার আব্বু অল্প সময়ের মধ্যে আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেলেন।সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছা।এভাবেই একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে।হয়তো সবাই সব ভুলে ও যাবে।সন্তানদের মনে বাবার স্মৃতিগুলো রয়ে যাবে অম্লান হয়ে।পৃথিবীর সকল বাবা-মা ভালো থাকুক,সুস্থ থাকুক।সন্তানদের মাথার তাজ হয়ে সুস্থ,সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকুক পৃথিবীর সকল মা-বাবা।আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে একটাই চাওয়া তিনি আমার বাবাকে যেনো জান্নাতবাসী করেন,আমিন।

আজ আর নয়।আশাকরি আমার অনুভূতি গুলো আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে যাব।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

পোস্ট বিবরন


শ্রেনিলাইফ স্টাইল
প্রয়োজনীয় ডিভাইসSamsung A 20
ফটোগ্রাফার@shimulakter
স্থানঢাকা

আমার পরিচয়

96PguSMiZiG2aJ3NLqePiD2iuR7rncmaN6uroXtVxGaAG1DAYEG3NCh1cGMczkPKfnE9jjtVxP35CYEZU6ZxZFFTSivQa1eh1ot6ZzwCmG...AwoqceF6TSWE4Nav1o7HAitS9PezzvoZEzSUMtfS3J217L9uHsjpx3ms5GbxwEGUAuTWUnSdiYDs2iCoK7nkvuuSpyiN2X6By4EGTxBFxVhS7R8KCXs5ErEmc.jpeg

আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmXA6ginRbBsbKGY2VtVnXzUUJNCrTg8j8t3NuJGgf2KbYWVhU7Jrqyce9L83...PNYeU1ZG126PQwwYwsEMXRPSgTDchsmsthTuCRnsXyUEgYAxXYHvD1KkAgZAv8CLWHJPSdQZmsDDyKM5Ubj9B5mKCqzYYqKNAPfqtYj6eigy9Evp46XYyTvpcv.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHher...f1Dq76pKECV4KekfqyZj18qfc4ziQW3kRYsgW1PMLc47emsksqLgif1cmhk34QEfazWiZ3aAFVCXuC6ZFp39Mc57NeUUL4DNuymUk8Cq7TKhE9BkS9WxCKgszV.gif

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ1VkjUz8HgY93iu9LmdTomBnX3wHwivw1EntvGjs3kaesGG5gEQD45h4WqnW4...kDi15WZZPbANXygF3SVKwZdVkuwRf1htbPVitjLviFeQQ5eKMhH7ZDZC5Zc1bZgHsniavKZa7QvEZdSVX1rP9UhKEvgek6idjzh2X6gci8Zajbp5FqmxK9TKBC.png

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9U7RRG2y2M9YYSM48N5nbcXLb7PqdkYJ9oR9FoA2unvh83eqRV77XS1odgZghsEq4QSkRqvT13kzKTc.jpeg

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siTRM9RiHCBoSjHNuiJNg7JaN1YHkdVF2iL5yXmTwhgdJbBWGqp5o8DReVS38H...Ngs8B1ZxQ71gjBxiqfcH84Q1vPFSBFZmyW1T5WYxF2TL2KthznYPi6aVayXiVmeqrvyCqCmnquJrNciFufjx91GZCbFjkMM65HFSSmzsVSgn2g7Gro7uZrMtgv.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ঠিক তাই আপু একদিন আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে। এটাই চিরন্তন সত্য। কেউ আগে কেউ পরে। পার্থক্য কেবল সময়ের। দোয়া করি আংকেল যেনো ভালো থাকেন ওপাড়ে। আর আন্টিকে যেনো সকল শোক সইবার শক্তি দেন পরম করুণাময় আল্লাহ।

আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই আপু। সবকিছু সামলে উঠেন শুধু এটাই চাইবো। আজকাল স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এত মিল তো দেখাই যায় না যেমনটা আপনি বললেন আপনার বাবা মায়ের ক্ষেত্রে। আন্টিকে আল্লাহতালা অনেক ধৈর্য দিন।