“আমার বাংলা ব্লগ” এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন ? আশাকরি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের ভালবাসা ও শুভকামনায় ভাল আছি ।
আমার আজকের ব্লগের বিষয়বস্তু দেখে , আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ,সামনে ঈদের এমন আনন্দঘন মুহূর্তে , আমি কেন এমন একটা বিষয় নিয়ে লিখছি । সত্যি কথা বলতে স্বাভাবিক আমি যতটা অসহায়, দরিদ্র ও পথশিশুদের কথা ভাবি , তার চাইতেও বেশি ভাবি আমার কোন আনন্দময় সময়ে । কোন আনন্দময় সময়ে এই অসহায় মানুষ গুলোর কথা আমার বেশি মনে পরে। এদের জীবন, খাদ্য , বাসস্থান , চিকিৎসা এসব খুব ভাবনার মধ্যে চলে আসে আমার । সেই থেকেই আজকের এই ব্লগ লেখা ।এই অসহায়, ফুটফুটে বাচ্চাগুলোর মুখটা দেখলে , আসলে নিজের আনন্দের কথা মাথা থেকে চলে যায় । আসুন আমরা সবাই এই ফুটফুটে বাচ্চাগুলোর পাশে দাড়াই ।
বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত । এদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে খ্যাত । বাংলাদেশের জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে,সে হারে জনগনের মাথাপিছু আয় বাড়ছে না । আমাদের দেশের অনেক পরিবার আছে ,যারা তাদের সন্তানদের ভরন পোষণ করার ক্ষমতা রাখে না ,আবার এমন পরিবার ও আছে যে পরিবারে মা-বাবা বেঁচে নেই কিংবা বাবা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত , মাদকাসক্ত এসব পরিবারে ছেলেমেয়েকে পরিচালনার জন্য কেউ থাকে না ,এরাই পথশিশু নামে পরিচিত ।শিশু বলতে আমরা ১২ বছরের নিচে যারা,তাদেরকেই বুঝি ।
বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অনেক পথশিশু দেখা যায় । পথশিশুদের জীবন অনেক কঠিন । এরা খেয়ে না খেয়ে জীবনধারণ করে । সুখ কি জিনিস তারা বুঝতে পারে না । এরা ক্ষুধা নিবারন করতে অনেক অনেক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে । এরা মৌলিক চাহিদা খাদ্য এটার প্রতি সচেষ্ট থাকে । কারন খাদ্য না হলে বাসস্থান,শিক্ষা দিয়ে এরা কি করবে ? বাংলাদেশের এসব পথশিশু কখনও রাস্তায় রাস্তায় ফুল ,পানি ,চা ,পান ইত্যাদি বিক্রি করে তারা তাদের মৌলিক চাহিদা খাদ্যের যোগান দেয় , কেউ কেউ ভিক্ষা করেও জীবন চালায় । অনেক সময় এসব পথশিশুদের মাটি কাটা, কারখানার শ্রমিক,ইটের ভাঁটা ,এমন কি গাড়ি মেরামত করার দোকানেও কাজ করতে দেখা যায়। শুধুমাত্র ক্ষুধা নিবারনের জন্য এরা অনেক কঠিন কাজেও নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে । আমরা অনেক সময় দেখি , অযত্নে অবহেলায় অনেক ফুল রাস্তার পাশে ফুটে আছে । এসব পথের শিশুদের দিকে যদি আপনি ভালভাবে দেখেন, তবে আপনার এমনটিই মনে হবে । এই পথশিশুরাও অযত্নে অবহেলায় এই সমাজের আনাচে কানাচে পরে আছে ।
রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার পথশিশু রয়েছে । তবে দেখতে পাবেন ঢাকার বড় বড় সড়ক গুলোতে ছোট ছোট , মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চা শিশুগুলো ফুল বিক্রি করছে । যখন তাদের মায়ের আঁচলে থেকে লেখাপড়ার কথা তখন তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে বড় বড় রাস্তাগুলোতে বড় বড় গাড়ি পার হয়ে ফুল বিক্রি করছে । এই পথ ই তাদের আপনজন। পথই যাদের আবাসস্থল । জন্মের পর থেকেই যারা জীবন যুদ্ধের সঙ্গে পরিচিত । রোদ,বৃষ্টি,গরম,শীত সবকিছুই যাদের কাছে সমান । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যাদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে নিজেদের বেঁচে থাকাটা নিশ্চিত করতে হয় । দিনশেষে রাতে তাদের বিশ্রাম নেয়ার জায়গা হয় ,পথিকদের হেঁটে যাওয়া পথ টুকু ।
বাংলাদেশেরর বেশির ভাগ পথশিশু রাস্তায় বসবাস করে । তাদের সারাদিনের পরিশ্রমের পর ,ঘুমানোর জন্য কোন নিরাপদ জায়গা নেই । রাস্তার ফুটপাতই তাদের বিছানা । এ কারনে অনেক সময় মেয়ে শিশুদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় ।অনেক শিশু মাদক এর সাথে জড়িয়ে পরে এবং সাথে সাথে তারা বিভিন্ন অপকর্মে নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলে ।এতে করে পথশিশুরা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছে । ফুটপাত কখনো একটি শিশুর বাসস্থান হতে পারে না ।
আমরা মানুষ আমাদের যেমন শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে ,পথশিশুদের ও তেমনি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে ।শিক্ষার দ্বারা একটি জাতির উন্নতি সম্ভব। শিক্ষার প্রভাবেই তারা অন্যায়,জড়তা,হীনতা কুসংস্কার সবকিছু থেকে মুক্ত হয়ে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ।কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই ,পথশিশুদের খাদ্য,বাসস্থান যেখানে নিশ্চিত নেই ,সেখানে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় । তাদের সঠিক শিক্ষা দেয়া গেলে ,দেশকে তারা অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবে ।তবে সবচেয়ে আগে দরকার পথশিশুদের থাকা খাওয়ার নিশ্চয়তা ,তারপর শিক্ষা।
সব মানুষের বেঁচে থাকার আর ভাল ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে । বাংলাদেশের সব অঞ্চলের আনাচে-কানাচে যত পথশিশু আছে ,আমাদের সবার উচিত সব শিশুদের কথা ভাবা ।প্রথমে পথশিশুদের থাকা,খাওয়া আমাদের নিশ্চিত করতে হবে ।এরপর তাদের শিক্ষার দিকে নজর দিতে হবে । কারন এই পথশিশু আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ । এই শিশুদের যদি সঠিক শিক্ষা দেয়া হয় ,এরাই একদিন এই দেশের মানব সম্পদে পরিনত হবে ।শিক্ষার পাশাপাশি এসব পথশিশুদের স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে ।
এসব কাজ আমাদের সকলের করতে হবে । শুধু সরকারের আশায় বসে থাকলে চলবে না । বেসরকারি ভাবেও সবাইকে এই পথশিশুদের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।দেশের যত যুব সমাজ আছে ,এদের এগিয়ে আসতে হবে । এই শিশুদেরকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি কারিগরি ও হাতের কাজের উপর জোর দিতে হবে । দেশের যত ভাল কাজ ,যুবকদের দ্বারাই সম্ভব হয় ।শুধু আমাদের দেশ নয় ,এই পথশিশুদের জন্য অনেক বিদেশী সংস্থা ও এক যোগে কাজ করে গেছেন ।এই পথশিশুদের দিকে আমাদের সকলের যত্নবান হতে হবে ।
পরিশেষে বলা যায় ,দেশের সকল শিশু আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক ।এই শিশুদের দিকে যদি ঠিক মত তাকিয়ে দেখেন , তবে দেখবেন কি মায়া এই মুখ গুলোর। এদেরকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করে ,আমাদের ই সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে ।কারন এরাই একদিন মানব সম্পদ হয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে । তাই এদের প্রতি আমাদের যত্নবান হতে হবে ।
আমি আমার পোস্টের ছবি গুলি নিজে তুলেছি। আমি নিচে ডিভাইসের নাম তুলে ধরছি --
ক্যাটাগরি | ফটোগ্রাফি |
---|---|
ডিভাইস | Samsung20A, Pocox3pro |
ফটোগ্রাফার | @shimulakter |
আমার ব্লগটি কেমন লাগলো জানাবেন । এমন অনেক বিষয় নিয়ে ব্লগ লেখার ইচ্ছা আমার । আপনাদের কাছে যদি ভাল লেগে থাকে , আপনারাও যদি আমার মত এই শিশুদের কথা ভাবেন, তবেই আমার এই ব্লগ এর সার্থকতা ।
আমি শিমুল আক্তার
@shimulakter
আসলে কিছু করার নেই পেটের দায়ে অনেক ছোট বাচ্চারাও এই পথে নেমে যায়, এবং ঘুরে ঘুরে সবার কাছে কড়া নাড়ে শুধুমাত্র পেটের জন্যই। যাই হোক অনেক বাস্তবসম্মুখে একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকেও ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাংলাদেশের অনেক শিশু এরকম কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আপনার এ পোস্টটি পড়ে সত্যিই আমার অনেক অনেক ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
????
আপনি লেভেল ১ পাস করে এসে এমন কাজ কেন করলেন ? আপনি ২ টা ফটো অন্যত্র থেকে কালেক্ট করে আপলোড দিয়েছেন। আপনাকে পুনরায় লেভেল ১ এ পাঠানো হচ্ছে।
নিম্নের ফটো দুটি ডাউনলোড করা :
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit