💞 " বাবাকে নিয়ে ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি রোমন্থন "

in hive-129948 •  10 days ago 

আমার বাংলা ব্লগ এ সবাইকে স্বাগতম

হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।

আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে।প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।আমি বিশ্বাস করি আমার আজকের এই স্মৃতি রোমন্থনের পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

বাবাকে নিয়ে ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি রোমন্থনঃ


sky-8797407_1280.jpg

সোর্স

বন্ধুরা,আজ নতুন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে চলে এলাম।আজ ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি রোমন্থন করবো।বাবাকে নিয়ে ছেলেবেলার অনেক মধুর স্মৃতিই আছে।সব স্মৃতি তো এক পোস্টে শেয়ার করা সম্ভব নয়।তাই সামান্য কিছুই শেয়ার করছি।আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

প্রথমে আমার বাবার কিছু পরিচিতি তুলে ধরছি।আমার বাবার চার ভাই-বোন।তিন ভাইয়ের এক বোন আমার বাবার।আমার বাবা চারজনের মধ্যে তিন নাম্বার।আর ভাইদের মধ্যে মেজো।আমার বাবা ভীষণ সৌখিন মানুষ ছিলেন।আর ছিলেন খুবই অ্যাক্টিভ একজন মানুষ। আমার বাবার বাবা মারা যান যখন আমার বাবার বয়স ৪/৫ বছর।আমার বাবার মনেও নেই তার বাবার স্মৃতি।সেই ছোট বেলা থেকে আমার বাবা অনেক চড়াই-উৎরাই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। লেখাপড়া ও করেছিলেন খুব কষ্ট করে।আমার বাবা খুব কর্মঠ একজন মানুষ ছিলেন।তিনি খুব ভোজন রসিক ও ছিলেন।এক ধারে যেমন খেতে পছন্দ করতেন।ঠিক তেমনি অন্য দিকে মানুষ কে ভীষন খাওয়াতেও ভালোবাসতেন।আমার বাবার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজেই বাজার করে গেছেন।ভাইয়াদের বাজার করা আব্বুর কখন ই পছন্দ ছিল না।

আমার বাবার লেখাপড়ার পেছনে পরবর্তীতে আমার বড় চাচার অবদান ছিল।আমার বাবা কখনো তা ভুলে যায়নি।আমি সব সময় দেখেছি ছেলেবেলায় আমার বাবা জৈষ্ঠ্যমাস এলে তিন ভাই বোনের বাসায় জৈষ্ঠ মাসের নানা রকমের ফল দিয়ে পাঠাতেন সব বছরই।আর শীত এলে সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াতেন।আমি যখন ছোট তখন আমার বাবা লিবিয়া জব করতেন। এরপর জাপান ও গিয়েছিলেন। আর আমি যখন কলেজে পড়ি তখন আব্বু কোরিয়া,থাইল্যান্ড, কলকাতা,মালয়েশিয়া ঘুরতে গিয়েছিলেন।এজন্যই বলেছি আব্বু খুব সৌখিন ছিলেন।আব্বুকে সব সময়ই দেখেছি বাইরে থেকে এলে ভাই ও বোনের বাসায় নানা রকমের জিনিস পাঠিয়ে দিতেন।

আমার এখনো মনে আছে আব্বু যখন লিবিয়া থেকে আসেন তখন আমার জন্য আংটি ঘড়ি ও গলার চেইনে লকেট ঘড়ি নিয়ে এসেছিলেন।যা দেখে সেই সময়ে সবাই অবাক হয়ে দেখেছিল।আমার ও ভীষণ ভালো লেগেছিল।আজ বাবা নেই।কিন্তু স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে এই স্মৃতি গুলো।আমার কখনো মনে পরে না বাবার বকুনি খেয়েছি।আসলে কখনো আব্বু আমাদেরকে গাল-মন্দ করেননি।তবে আমার দুটো ভাই ই ভীষণ দুষ্ট ছিল।তাই আমার আম্মু আব্বু বাসায় এলে বিচার দিত ভাইদের নামে।আর কিভাবে শাসন করবে তাও শিখিয়ে দিতেন আমার আম্মু।কিন্তু আব্বু শাসন করতে এলেই আমি হাসিতে গড়িয়ে পরতাম ভাইদের কাচু-মাচু মুখ দেখে।আমার হাসি দেখে আব্বু ও গম্ভীর মুখটাকে আর গম্ভীর রাখতে পারতো না।ব্যস,শাসন টাসন সব ডিশ মিশ।তখন যে আম্মু রাগ করতো তা আর কে দেখে।আমার এই হাসি রোগটা বিয়ের পরেও ছিল।তবে এখন অনেকটা ই কমেছে।

আমার বাবা ভালো ভালো খাবার খেতে ভীষণ পছন্দ করতেন।আর তাই আমার আম্মু ও পাকা রাধুনি এখন।আম্মুর রান্নার প্রশংসা আমার দাদা বাড়ির সবার মুখেই শুনতে পাই।আমার বাবার কারনে ছেলেবেলায় ফাইনাল এক্সাম শেষ হলে ফ্যামিলি পিকনিকে আমাদের যাওয়া হতো।আমরা দুটো বাস ভাড়া করে পিকনিকে যেতাম পরিবারের সবাই মিলে।কি এক আনন্দ ছিল সেই সময়টাতে। এখনও শীতের সময়টাতে সেই স্মৃতি গুলো মনে পরে।

আমার বাবা ছুটির দিনগুলোতে আমাদের কে নিয়ে ঘুরতে বের হতো।আমরা চার ভাই-বোন আগেই ঠিক করে রাখতাম কে কোন ফ্লেভারের আইসক্রিম খাবো।আইসক্রিম আমার সব সময়ই খুব পছন্দ। ছেলেবেলায় নারিকেলের ফ্লেভারের আইসক্রিম পাওয়া যেতো,যা আমার খুব পছন্দের ছিল।আজকাল আর এই আইসক্রিম দেখা যায় না।বাবার সাথে আমি বাজার করতে ও যেতাম।আমার খুব ভালো লাগতো।বাবার সাথে ঘুরে ঘুরে বাজার করতাম।আর ফেরার সময় বাবা আমাকে নানা রকমের খাবার কিনে দিতো।ওই খাবার গুলো যেনো অমৃত ছিল।আজ এসব শুধু ই স্মৃতি।

আমার বাবা সংস্কৃতিমনা ছিলেন।গান-বাজনা,আনন্দ -হাসিতে সবাইকে নিয়ে থাকতে ভালোবাসতেন।আমাকে গান শেখাতে হারমোনিয়াম ও দিয়েছিলেন।আব্বুর গানের গলা খুব সুন্দর। আব্বু যখন কলেজে পড়তেন তখন গান,নাটকে নাম দিতেন অনেক সময় ই এসব গল্প করতেন।আমাদের চার ভাই-বোন কে বিয়ে দিয়ে আব্বু দায়িত্ব পালন করে আম্মুকে নিয়ে হজ্জ্ব ও করে এসেছিলেন।আব্বু-আম্মু দুজন ই রহমতের সময় উঠে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন।আব্বু খুব সুন্দর মোনাজাত নিতে পারতেন।বাবাকে নিয়ে স্মৃতি এতো অল্পতে শেষ হবার নয়।সামান্য ই শেয়ার করলাম।আশাকরি অনুভূতি গুলো ভালো লেগেছে আপনাদের।

পোস্ট বিবরন


শ্রেণীআমার ছেলেবেলা
ক্যামেরাSamsungA20
পোস্ট তৈরি@shimulakter
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।আমার ছেলেবেলার অনুভূতি গুলো পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

আমার পরিচয়

96PguSMiZiG2aJ3NLqePiD2iuR7rncmaN6uroXtVxGaAG1DAYEG3NCh1cGMczkPKfnE9jjtVxP35CYEZU6ZxZFFTSivQa1eh1ot6ZzwCmG...AwoqceF6TSWE4Nav1o7HAitS9PezzvoZEzSUMtfS3J217L9uHsjpx3ms5GbxwEGUAuTWUnSdiYDs2iCoK7nkvuuSpyiN2X6By4EGTxBFxVhS7R8KCXs5ErEmc.jpeg

আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmXA6ginRbBsbKGY2VtVnXzUUJNCrTg8j8t3NuJGgf2KbYWVhU7Jrqyce9L83...PNYeU1ZG126PQwwYwsEMXRPSgTDchsmsthTuCRnsXyUEgYAxXYHvD1KkAgZAv8CLWHJPSdQZmsDDyKM5Ubj9B5mKCqzYYqKNAPfqtYj6eigy9Evp46XYyTvpcv.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHher...f1Dq76pKECV4KekfqyZj18qfc4ziQW3kRYsgW1PMLc47emsksqLgif1cmhk34QEfazWiZ3aAFVCXuC6ZFp39Mc57NeUUL4DNuymUk8Cq7TKhE9BkS9WxCKgszV.gif

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ1VkjUz8HgY93iu9LmdTomBnX3wHwivw1EntvGjs3kaesGG5gEQD45h4WqnW4...kDi15WZZPbANXygF3SVKwZdVkuwRf1htbPVitjLviFeQQ5eKMhH7ZDZC5Zc1bZgHsniavKZa7QvEZdSVX1rP9UhKEvgek6idjzh2X6gci8Zajbp5FqmxK9TKBC.png

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9U7RRG2y2M9YYSM48N5nbcXLb7PqdkYJ9oR9FoA2unvh83eqRV77XS1odgZghsEq4QSkRqvT13kzKTc.jpeg

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siTRM9RiHCBoSjHNuiJNg7JaN1YHkdVF2iL5yXmTwhgdJbBWGqp5o8DReVS38H...Ngs8B1ZxQ71gjBxiqfcH84Q1vPFSBFZmyW1T5WYxF2TL2KthznYPi6aVayXiVmeqrvyCqCmnquJrNciFufjx91GZCbFjkMM65HFSSmzsVSgn2g7Gro7uZrMtgv.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বাবা অথবা মাকে নিয়ে স্মৃতি কথা লিখে শেষ করা যাবে না। কত শত স্মৃতি রয়েছে তাদেরকে নিয়ে। তবে আপনার লিখায় স্পস্ট যে আপনার বাবা ছিলেন বেশ হাসিখুশি ও দায়িত্ববান একজন মানুষ। সব দিকেই ছিল তার নজর । পরিবারের দায়িত্ব বেশ সুন্দরভাবে পালন করে গেছেন। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন।