লাইফ স্টাইল -- 💞 "জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মা-বাবা "

in hive-129948 •  3 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।

আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।আমি বিশ্বাস করি আমার ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকম কর্মকান্ড থেকে কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আজ ও এসেছি এমন একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।

জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মা-বাবাঃ


জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মা-বাবা 💞💕_20240726_133216_0000.jpg

কানভা দিয়ে বানানো

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPgGed8pU4cH2rA8Hx16HqG9PMWGnM3gfjBmGCHeMt4UCtucTcrF7jmweXEpit...ZGutiKi7KVTt5nDQoetrgsGgZGNELKiF2LVTivTiw6zUbx3qr8PhoJ4RufavUzR2x51cVwfS9ebHEGz1Yoiz7SSqpLp4z6AD13BwUvTWuACAUcDbvGNfob6NSa.png

মা-বাবা হলো সন্তানের জন্য পরম অভয় আশ্রয়।এই মা-বাবাকে বাদ দিয়ে জীবনে কোনকিছু করাই যেনো সম্ভব নয়।এই মা-বাবা কতোই না যত্ন করে আমাদেরকে লালন-পালন করেছেন। সেই মা-বাবাকে আমরা কজনাই বা যত্ন করতে পারি।অথচ এই মা আর বাবা তাদের জীবন কে উৎসর্গ করে দিয়েছেন আমাদের জন্য।আমি আমার জীবনে মা-বাবাকে আমার থেকে কখনও আলাদা করিনি।আমার কাছে আমার মা-বাবা আশীর্বাদ স্বরুপ।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমার আব্বু কিডনির পেসেন্ট। আব্বুর প্রতি সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাসিস চলছে।আব্বু যেহেতু আমার বাসার কাছে এক হাসপাতাল থেকে ডায়ালাসিস নেয়।তাই আমি হাসপাতালে গিয়ে আব্বুকে দেখে আসি।আর আব্বুর পছন্দের কিছু খাবার আমি নিজে তৈরি করে নিতে পছন্দ করি।সত্যি কথা বলতে আমি নিজে বাইরের খাবার খুব একটা খেতে পছন্দ করিনা বলে নিজের হাতে তৈরি করা খাবার খেতে ও কাউকে খাওয়াতে ভীষণ পছন্দ করি। গত সপ্তাহে আম্মু আব্বুকে নিয়ে হাসপাতালে এলেও আমার যাওয়া হয়নি।এক হচ্ছে দেশের অবস্থা আর দুই নিজেও অসুস্থ ছিলাম।তাই গত সপ্তাহে আম্মুই আব্বুকে হাসপাতালে ডায়ালাসিস করতে দিয়ে আমাকে দেখে গিয়েছিল।

20240726_090530.jpg

20240726_090506.jpg

আব্বু যখন বাসায় চলে যায় আম্মু তখন আব্বুকে আমার অসুস্থতার কথা জানায়।আমি আব্বুকে রাতে ফোন দিলে আব্বু আমাকে বলে আম্মু আগে জানালে আব্বু এসে আমাকে দেখে যেতো।এটা শুনে আমিতো অবাক।আব্বু যেখানে এতোটা অসুস্থ সেখানে আমাকে এসে দেখার কথা ও ভেেবেছে বলে অবাক ই হলাম।তখন আমি বললাম আমি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছি।আমাকে দেখতে আসতে হবে না।নিজের যত্ন নিন।আসলে এর নাম ই বাবা।

20240726_092629.jpg

20240726_092557.jpg

আজ আব্বুর ডায়ালাসিস ছিল।আর তাই আব্বুকে ডায়ালাসিস করাতে দিয়ে আম্মুর আমার বাসায় আসার কথা।আর এ কারনে আমি আব্বুর জন্য কিছু খাবার রেডি করছিলাম।আমি বাসমতি চাল দিয়ে জর্দ্দা তৈরি করেছি।ডিমের পুডিং করবো ভেবেছি।আর কিছু রুই মাছ বক্সে দিয়ে দেবো বলে ভাবছিলাম।সবকিছু আগের দিন ই তৈরি হয়ে গেলেও পুডিংটা সকালে করবো বলে ভেবে রেখেছিলাম।

20240726_091151.jpg

20240726_100551.jpg

20240726_100720.jpg

20240726_100653.jpg

আজ সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে আগে পোস্ট শেয়ার করেছি।এরপর আমার পছন্দের চা পান করেছি।এরপর আমি পুডিং বানানোর জন্য সবকিছু তৈরি করছিলাম।পুডিংয়ের সবকিছু ঠিকঠাক মতো করে পুডিং তৈরি করার জন্য পুডিং ভাপে বসালাম।পুডিং প্রায় হয়েও এসেছিল।এর মধ্যে ছোট বোন ফোন দেয় আব্বু নাকি ডায়ালাসিস দেয়ার সময়টাতে হঠাৎ করে খিঁচুনি দিচ্ছিল।আম্মু খুব ঘাবড়ে গিয়ে আমার ছোট বোনকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে।আমাকে জানায়নি আমি অসুস্থ বলে।আমার বোন থাকে বসুন্ধরাতে।সেখান থেকে আসতে গেলেও ওর সময় দরকার।আমার বাসা কাছে তাই আমি ই সবার আগে পৌঁছে যেতে পারবো।কিন্তু মায়ের মন বলে কথা।মেয়ে অসুস্থ তাই তাকে জানায়নি।যাই হোক ততোক্ষনে আমার পুডিং তৈরি করা শেষ।আমি সবকিছু গুছিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।আর পৌঁছে ও গেলাম।শুক্রবার রাস্তা ফাঁকা ই ছিল।আমি গিয়ে দেখি আব্বু ঠিক আছে।আমি রুমের সামনে হাত দিয়ে বোঝালাম আমি আছি।আমাকে দেখে আব্বুও হাত তুলে নাড়ালো।অসুস্থতার সময়ে আপন জন অক্সিজেনের মত কাজ করে।তাই এই সময়ে মা-বাবার পাশে থাকা ভীষণ জরুরী।আমি খবর শুনে আমার যে অসুস্থতা তা যেনো ফিল ই হলো না।আমি ১০ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে নেমে পরলাম পথে।বিপদের সময়গুলোতে আমি কঠিন এক মানুষ হয়ে যাই।আর তখন শক্ত হাতে সবকিছু হ্যান্ডেল করার চেষ্টা করি।তখন কিভাবে যেনো আমি অনেক বেশি শক্তি শরীরে খুঁজে পাই।আজ ও জানা হয়নি কিভাবে পাই।আজ হাসপাতালের কাছে,হাসপাতালের মধ্যে অনেক পুলিশ ও রেব এর গাড়িতে অনেক রেব কে বসে থাকতে দেখলাম।আমি তাদের সামনে দিয়ে হনহন করে ভেতরে চলে যাচ্ছিলাম।আমাকে আজ বাঁধা দিলেও আমি যাব এমন ভাবেই ভেতরে চলে গেলাম।

20240726_100700.jpg

আমি হাসপাতালে যাওয়ার পর আমার মা বার বার বলছিলো নাস্তা কেন করিনি। আমি যে এতো সকালে নাস্তা করিনা তা আম্মু জানে।কিন্তু মায়ের মন বলে কথা।আব্বু এখন সুস্থ আছে বলে আমাকে বার বার বাসায় চলে যেতে বলতে লাগলো আম্মু।আমিতো নাছোড়বান্দা আমি শেষ হলেই যাবো বলে বসে রইলাম।এরপর প্রায় দুই ঘন্টা ছিলাম।আব্বু যখন এলো আব্বু ও আম্মুকে সি এন জি করে সুন্দর ভাবে গাড়িতে তুলে দিয়ে আমি একটা রিকশা নিয়ে বাসায় চলে আসি।এই মা-বাবা জীবনের একটি অংশ আমার। নিজের মতো করেই মা-বাবাকে আমি ভালোবাসি।আমার যতো কিছুই হোক না কেন মা-বাবার কিছু হয়েছে শুনলে ঘরে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয় কিছুতেই।আমি আমার জীবন দিয়েও মা-বাবাকে ভালোবাসি।এই মা-বাবা আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। এই মা-বাবার জন্য একটি কষ্ট আমি আমার নিজের মাঝে সব সময় লালন করছি।সেটা না হয় অন্য কোন একদিন বলবো।আজ এখানেই ইতি টানছি ----

সবাই সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে যাব।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

পোস্ট বিবরন


শ্রেনিলাইফ স্টাইল
প্রয়োজনীয় ডিভাইসSamsung A 20
ফটোগ্রাফার@shimulakter
স্থানধানমন্ডি ,ঢাকা

আমার পরিচয়


আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYwqKrPU89ZQqREEsuPjF4nXAbdefe1QoFzVhH5rdqrXcAR9FriVZ8LQqAvmKQj...DAdJHarfLK6k1QfMwqHQ45sjyVudDzqtbRQkNn3LgLuSwWgviHLEQ5J7nD31xPzGUchgH3nnib15oMofD7qS3ugLBwMVE8G9HfKHhzLhvQ3JcGWBtiNRJgvMWn (1).png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WQrQvqP5nhp7XM51LVxoiwvG4n2SMPJqq4jr2WDgyE2QvgqfT2KbJEaeoc2UiMkyE3Lt3BykMds72QZ36oyQ.png

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvQjV74EiQgbJ1bHnuaQtMGJ82DmjK2jvfqXMgqNbyA8bTES8NsicPw9oefRmFaB9aZAvDYQNLHWt1W7g.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxeToZJatrzXJ26wyJvrfyUjWUHbwevxJfcy1wNaX2uYf5yHRjEM6kRmppRUgc...Y4qhGk41e9xshdKq7axZeLWprzfJqgtshHQPZjCGuXiyHFG1XqYcZSdGGLYKKmVtY1zvpEFteA1FrU83LMRPP7BcAne3avpKyGdHz9yne2nakYyhwHTfUardAv.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxgugFkjBFNEHgnHxgjqRLKWnKFTwwKJ9vDEph9jyEpATxyrkzsRxUofieSXvW...XVCPrZEiBQY3DNWnVp6gQMYW4TcQUU4y1uo3Ezg1XbNauP1DnGa1WaLqAP9WHuqV91uPvSqP1kx1PYJ64PVyuWqBr4dV3UwHGUMTVT74SoLbnwqJdiWJhDn669.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে বাবা মায়ের অসুস্থতায় যেমন সন্তান বসে থাকতে পারে না, তেমনি সন্তানের অসুস্থতা শুনলেও বাবা-মা বসে থাকতে পারে না। এটাই জগতের নিয়ম। আপনার বাবার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। দেশের এই পরিস্থিতিতে বাইরে বের হওয়ার সত্যি ভীষণ সমস্যার ।তারপরেও আপনি বেরিয়েছিলেন এবং নিরাপদে পৌঁছেছেন জেনে ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

মা-বাবা সেই জিনিস যার কোন তুলনা হয় না। নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দেয়ার মত দুনিয়ার বুকে একমাত্র এই দুইজন ব্যক্তি থেকে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত নিজের শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতার প্রতি সবসময় সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাদের সহায়তা প্রদান করা। আমার আম্মার মনটাও ঠিক এমন খেতে একটু দেরি করলে খা খা করতে থাকে। এইজন্যই তো বললাম নিরস্বার্থ ভালোবাসা।

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া।মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই।