আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি।
আমি @shimulakter,আমি একজন বাংলাদেশী।আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।তবে আজকের ব্লগটির মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা আছে।আমি আজ আমার বাংলা ব্লগ এর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলে এলাম।এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে -অনলাইন থেকে আমার প্রথম ইনকামের অনুভূতি।এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা অনেকের অনলাইন থেকে ইনকামের গল্পগুলো জানতে পারছি। আসলে ইনকাম নিয়ে সবার মাঝেই কম বেশি অভিজ্ঞতা আছে।আমিও এসেছি আজ আমার অনুভূতি গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে।আশাকরি অনলাইন থেকে আমার প্রথম ইনকামের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
অনলাইন থেকে আমার প্রথম ইনকামের অভিজ্ঞতাঃ
আমার ইনকামের গল্প যদি করতে হয় তবে আমাকে ২০১৪ সালে ফিরে যেতে হবে।হে বন্ধুরা, আমার ইনকামের গল্পটি ২০১৪ সালের।আমি তখন প্রথম মোবাইল আই ফোন ইউজ করি।আর তখন ই আমি ফেসবুক একাউন্ট করি।যদিও আমার ননদের ছেলেই একাউন্ট করে দেয়।ফেসবুক একাউন্ট করার পর আমি বেশকিছু পেইজে অ্যাড হয়ে যাই।আর এর মধ্যে রান্নার পেইজ ও ২/৩ টা ছিল।এই পেইজ গুলোতে রেসিপি দিতে হয় না।জাস্ট রেসিপির ফটোগ্রাফিটি শো করতে হয়।এরপর যখন সবাই কমেন্ট করে রেসিপি চায় তখন কমেন্টের রিপ্লায় হিসেবে রেসিপি দিয়ে দিতে হয়।
আমিও প্রতিনিয়ত দুপুরবেলা আমার পছন্দের কোন রেসিপি এই সব পেইজে শো করতাম।এভাবে ই চলছিল।তাই সব সময় আমি রান্না করা হলেই পছন্দের রেসিপি গুলোর ফটোগ্রাফি করে রাখতাম।কখন কোন রেসিপি দেই এই আর কি।তো,এভাবেই চলে যাচ্ছিল।কয়েক মাস পরের ঘটনা। অর্থাৎ সামনে ঈদ।এই কারনে পেইজের এডমিন ঘোষনা দেয়, সামনে ঈদ তাই যেকোনো মাংসের রেসিপির প্রতিযোগিতা হবে।সবাই যেনো যে যার পছন্দের কোন মাংসের রেসিপির ফটোগ্রাফি শেয়ার করি।সময় ধরে দেয়া হয় আজ রাত ১২ থেকে কাল রাত ১২ টা।এরপরে আর কোন পোস্ট এ্যালাও নয়।আমিই আগেই বলেছিলাম যখনই আমি কোন রেসিপি বাসায় করতাম তখনই তার ফটোগ্রাফি রেখে দিতাম।
প্রতিযোগিতায় প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানকারী বিজয়ীদের পুরষ্কৃত করা হবে।আমি ফোনের গ্যালারীতে গিয়ে মাংসের রেসিপি খুঁজে পেলাম "চিকেন সিজলিং।"আমি এই রেসিপির ফটোগ্রাফি শেয়ার করে দেই।এভাবে প্রায় রাতেই অনেক সদস্য তাদের নিজ নিজ পোস্ট শেয়ার করে যাচ্ছে।আর শেয়ার করার সাথে সাথে কমেন্টের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।ঈদকে সামনে রেখে আমি পরের দিন ভোরে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার জন্য নিজেদের গাড়িতে রওনা দিয়ে দেই।যদিও আমি ফোনে ডাটা নিয়েই রওনা দিয়েছিলাম।আসলে শ্বশুরবাড়ি যেতে অনেক ঘন্টা সময়ের দরকার। এই সময়ের মধ্যে কার লাইক বেশি হলো এটা দেখার লোভ আমি সামলাতে পারলাম না।তবে আমি যে কোন স্থানেই থাকবো না এটা জানতাম।কারন আমি তখন নতুন।ওই পেইজে তখন খুব তুখোড় তুখোড় রাধুনিদের পোস্ট প্রতিনিয়তই আমি দেখে আসছিলাম।
গাড়িতে রওনা দেই সকাল ৯ টার দিকে।ছেলেটা তখন আমার খুব ছোট।গাড়িতে উঠেই সে ঘুম।আর ঘুম মানে তো বোঝেন ই ঠিক আমার কোলে ঘুম।এতো লং জার্নিতে কোলে রাখা এটা শুধু মায়েরাই পারে।আমি ওকে কোলে নিয়ে বার বার দেখছিলাম কে কতো লাইকে এগিয়ে। পর পর তিনজনকেই দেখতে পেলাম।অল্প কিছুর ব্যবধানে তিনজনকেই বেশী দেখা যাচ্ছে।আর বাকি সদস্যরা লাইক অনুযায়ী নিচের দিকে।আমি আমার পোস্টের কমেন্ট পড়ছিলাম আর রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করছিলাম।কিন্তু অনেকে রেসিপি চাইছিলো।আমি তাদেরকে রিপ্লাই দিয়ে বললাম আমি বাইরে আছি রাতে রেসিপি শেয়ার করে দেবো।কিন্তু এই কমেন্ট অনেকে না দেখেই রেসিপি শেয়ার করার জন্য বলেই যাচ্ছিলো।এরপর বাড়িতে বিকেলে পৌঁছে ছেলেকে ঠিক ঠাক করে।নিজে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে শ্বশুর -শ্বাশুড়ির সাথে গল্প করে এরপর লিখতে বসলাম।
বাড়িতে গেলে একটা সুবিধা আছে ছেলেকে খাওয়ানো আর ঘুম পাড়ানো ছাড়া কোলে রাখার অনেক মানুষ ই আছে।যাই হোক লিখতে বসে রেসিপি লিখে শেয়ার করে দিলাম।এরপর রাত ১২ টায় সময় শেষ।সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি প্রথম স্থান পেয়ে বিজয়ী হয়েছি।বুঝলেন ব্যাপারটা,আমার অনুভূতি তখন কেমন হয়েছিলো? আমি পুরাই অবাক।এতো এতো রেসিপি, এতো এতো পাকা রাধুনির কাছে আমি প্রথম,ভাবা যায়।না, একদমই ভাবা যায় না।যাই হোক এরপর সেদিন তিনজনের রেসিপি একসাথে করে তিনজনের ছবি সহ পোস্ট শেয়ার করা হয়।আমি সেদিন এতো টাই আনন্দিত হয়েছিলাম বলে বোঝাতে পারবো না।
প্রথম তো হলাম।এখন শুরু হলো নতুন যন্ত্রণা। আমার ইনবক্সে এক আপু আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে আমার বিকাশ নাম্বারটি চাইছিলো।কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার তো তখন বিকাশ একাউন্ট ছিল না।বাসায় শুধু আমার শ্বশুরের পরিচিত এক দোকান ছিল তার নাম্বারটাই আমার শ্বশুর আমাকে দিবে বলে তার কাছে ফোন দিয়ে নাম্বার নিলো।এরপর নাম্বার দেয়ার সাথে সাথে সেই আপু ১০০০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিলো। কি আপনারা অবাক হননি?? আমি কিন্তু সেদিন খুব অবাক হয়েছিলাম,খুশি হয়েছিলাম আবার উৎসাহিত ও হয়েছিলাম।সেই ভালো লাগা অনুভূতি গুলো আজও আমাকে কাজ করে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়।সেই থেকে ছুটে চলা।লক্ষ্য আমার এগিয়ে যাওয়ার।চেষ্টা করছি বাকিটা আল্লাহ ভরসা।
আমার জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে, আশাকরি জানাবেন।সেদিন সেই সম্মানের জায়গাটুকু আমার হৃদয়কে স্পর্শ করে গেছে। এতো এতো সদস্যদের মাঝে শিমুল নামের এই মানুষটিকে সবাই সেদিন এক নামেই চিনতে পেরেছে।এটা সেদিন থেকে আজ আমার অনেক বড় পাওয়া।লক্ষ্য ঠিক রেখে চললে আসলে সফলতা আসেই।
আজ এ পর্যন্তই।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো।সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে আর নতুন নতুন রেসিপি করে সবাইকে খাওয়াতে ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার অনলাইন থেকে প্রথম ইনকামের পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি ২০১৪ সালের প্রথম অনলাইনে কাজ করেছেন। যদিও আপনি সে সময় মোবাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে রেসিপি পোস্ট করতেছেন। এবং ঈদের সময় রেসিপি প্রতিযোগিতা সময় আপনি প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করে বিজয় হয়েছেন। এবং প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এবং পুরস্কার হিসেবে আপনি ১০০০ টাকা পেলেন। আসলে আপু টাকা বড় কথা নয় অনলাইনে প্রথম অনুভূতি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি অনেক খুশি হয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি রইল অনেক অনেক শুভকামনা আপু। অনলাইন থেকে আপনার প্রথম ইনকামের অভিজ্ঞতা পড়ে খুব ভালো লাগলো।
আপনি ২০১৪ সালের ইনকামের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যিই আপনার অনলাইন জার্নিটা অনেক সুন্দর ছিল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনলাইন থেকে আপনার প্রথম ইনকামের অভিজ্ঞতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু।আসলে সবার জীবনে প্রথম ইনকাম একধরনের অনুভূতি।আর অনেক আগে থেকেই আপনি অনলাইনের সাথে জড়িত,জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।কনটেস্ট এর জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকে ও পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার প্রথম ইনকামের অনুভূতি গুলো জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো আপু।ফেসবুকে রেসিপির ছবি শেয়ার করার বিষয় টি আমারও খুব ভালো লাগে আমিও কিছু গ্রুপে এ্যাড আছি সেখানে বিভিন্ন রকমের খাবারের ছবি শেয়ার করি।আপু আপনার প্রথম ইনকামের পরিমাণ টা হয়তো কম ছিলো কিন্তু এর অনুভূতি টা যে কত বড় তা আমি বুঝতে পারছি।তার কারন আমরাও জীবনে এরকম অনুভূতি আছে।অনেক সুন্দর করে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।শুভকামনা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit