আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনু গল্প লিখতে খুবই ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝে অনু গল্প লিখি। আজকে আমি যেই অনু গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো সেই অনু গল্পটির নাম দিয়েছি "আহত হৃদয়ের তৃষ্ণা"। তো বন্ধুরা চলুন আমার লেখা অনু গল্প পড়ে নেয়া যাক।
অনু গল্প-আহত হৃদয়ের তৃষ্ণা:
মজুমদার বাড়ির পাশের ছোট্ট কুড়ে ঘরে বাস করে মোহাম্মদ ইয়াসিন। ডাকনাম ইয়াসিন। মজুমদার বাড়ির মানুষগুলোর সাথে তার অনেক তফাৎ। তবুও সেই বাড়ির মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেছিল ইয়াসিন। মেয়েটির নাম ছিল তনিমা। ছোটবেলা থেকেই ইয়াসিন আর তনিমা একসাথে হেসে খেলে বড় হয়েছে। তনিমা ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আর অন্যদিকে ইয়াসিন ছিল মুসলিম পরিবারের ছেলে। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত ইয়াসিনের জীবন। কিন্তু কখন যে তার খেলার সাথীকে ভালোবেসে ফেলেছিল বুঝতে পারেনি।
ইয়াসিনের মনে তৈরি হওয়া ভালোলাগা ধীরে ধীরে ভালোবাসায় পরিণতি হয়। তনিমাও ইয়াসিনকে ভালোবাসতো। তাদের সম্পর্কের পরিণতি পাবে না জেনেও তারা ভালোবেসে ছিলো। দুটি নিষ্পাপ হৃদয় ধনী গরিবের ব্যবধান বুঝেনি। ধর্মের ব্যবধান বুঝেনি। তাদের ভালোবাসা ছিল পবিত্র ভালোবাসা। দুটি নিষ্পাপ হৃদয় থেকে ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল। তনিমা এবং ইয়াসিনের সম্পর্ক সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও ইয়াসিনের মায়ের চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি। ইয়াসিনের মা ইয়াসিনকে বলেছিল আমাদের মত গরিবের ভালোবাসতে নেই। যদি বাঁচতে চাস তাহলে তনিমাকে ভুলে যা। কিন্তু ইয়াসিন তনিমাকে ভুলতে পারছিলো না। কারণ তার ভালোবাসা ছিল পবিত্র। অন্যদিকে ইয়াসিনের মা তনিমার মায়ের কাছে সবকিছু খুলে বলে। তনিমার মা দ্রুত তনিমার বিয়ের ব্যবস্থা করে।
তনিমার মা তনিমাকে কিছুই বলেনি। শুধুমাত্র বিয়েতে রাজি হতে বলেছিল। অবশেষে পাত্রপক্ষ তনিমারকে দেখতে আসে। এই কথা শুনে ইয়াসিন ভেতরে ভেতরে খুবই ভেঙে পরে। কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে যায়। তনিমা শেষবারের মত ইয়াসিনের সাথে দেখা করতে চেয়েছিল। পুকুর ঘাটের পাশে তনিমা এবং ইয়াসিন দেখা করেছিল। সেটাই ছিল তাদের শেষ দেখা। সেদিন দুজনে অনেক কেঁদেছিল। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসে। ইয়াসিন আজ নিরুপায়। কিছু করার নেই তার। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া।
চারপাশের সানাইয়ের শব্দে তনিমার হৃদয় মাঝে যেন রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তার ভালোবাসাকে হারাতে চলেছে তনিমা। ছোটবেলা থেকেই যাকে ভালোবেসে বড় হয়েছে তাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই কথাটি মেনে নিতে পারছে না তনিমা। অবশেষে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় তনিমা। তনিমা আত্মহত্যা করেছিল। বিষ পান করে নিজেকে শেষ করেছিল। তনিমার লেখা শেষ চিঠিটা ইয়াসিনের কাছে পৌঁছেছে ঠিকই কিন্তু সে তার ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেলেছে। তনিমার লেখা শেষ চিঠিটা আজও বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছে ইয়াসিন। তারা আহত হৃদয়ের তৃষ্ণা যেন আরো বেড়ে গেছে। সেও হয়তো মৃত্যুর পথযাত্রী। মৃত্যুই তার সেই তৃষ্ণা শেষ করবে।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার আহত হৃদয়ের তৃষ্ণা অনু গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। তনিমার চরিত্র বেশ দারুণ হয়েছে। আসলে ভালোবাসা এমনই হয় ইয়াসিনের তৃষ্ণা শেষ হবে মৃত্যুর পথযাত্রী হয়ে। এতো সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার লেখা গুলো গল্প আপনার ভালো লেগেছে শুনে অনেক খুশি হলাম এবং অনু গল্প লেখার প্রতি আরো বেশি উৎসাহ পেলাম ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভালোবাসা সত্যি কোনো কিছুই মানে না। ভালোবাসা না মানে ধর্ম, আর না মানে ধনী-গরীব। ভালোবাসা তৈরি হয় মনের গভীর থেকে। কিন্তু এই গল্পের শেষটা এরকম ভাবে হয়েছে, এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। তনিমা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো, আর ইয়াসিন এখনো পর্যন্ত তার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে রয়েছে। ইয়াসিনও চলে যাবে সেই না ফেরার দেশে। আপনার লেখা এই গল্পটা পড়ে চোখে জল চলে এসেছে। খুব সুন্দর করে আপনি পুরোটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভালোবাসা কোন কিছু দেখে হয় না আপু। ধনী-দরিদ্র কিংবা ধর্ম দেখেনা। তবে মাঝে মাঝে ভালোবাসার ভয়ংকর পরিণতি হয়। আর ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে যায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit