অনু গল্প-অভিমানের দেয়াল||

in hive-129948 •  last month 

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।


বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি একটি অনু গল্প শেয়ার করতে আপনাদের মাঝে চলে এসেছি। আর আমার এই অনু গল্পের নাম দিয়েছি "অভিমানের দেয়াল"। তো বন্ধুরা চলুন আমার লেখা অনু গল্পটি পড়ে নেয়া যাক।

অভিমানের দেয়াল:

boy-1835937_1280.jpg
source


রাশেদ ছোটবেলা থেকেই রুপাকে ভালোবাসতো। রাশেদা রুপা একই গ্রামে বেড়ে উঠেছে। একই স্কুলে পড়তো তারা। এরপর একই কলেজে পড়েছে রুপা এবং রাশেদ। ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। রাশেদ রুপাকে ভালোবাসতো ঠিকই কিন্তু কখনো বলেনি। অনেক সময় ভালোবাসার কথা বলতে গিয়েও আর বলা হয়নি রাশেদের। রাশেদ অপেক্ষায় ছিল কোন একদিন সুযোগ পেলে রুপাকে তার মনের কথা জানাবে। কেটে যায় কয়েকটা বছর। দেখতে দেখতে দুজনেই বড় হয়। রাশেদ এবং রুপা দুজনে একই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার পর রুপা ধীরে ধীরে বদলে যেতে শুরু করে। রুপার বদলে যাওয়া রাশেদকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। রাশেদ তখন রুপাকে কিছু বলেনি। এমনকি তার ভালোবাসার কথাও জানায়নি। রাশেদের বন্ধু সব সময় রাশেদের পাশে ছিল। রুপার বদলে যাওয়া দেখে রাশেদ যেমন কষ্ট পেয়েছে তেমনি রাশেদের বন্ধু সবসময় রাশেদকে সান্ত্বনা দিয়েছে। আর বলেছে রুপা যদি সত্যি তোকে ভালোবাসে তাহলে কোন একদিন ফিরে আসবে।

কেটে যায় প্রায় একটি বছর। সময়ের সাথে সাথে রাশেদের মনে অনেক অভিমান জমেছে। রুপা রাশেদের সাথে আগের মত কথা বলে না। রুপা যেমন রাশেদকে এড়িয়ে চলে তেমনি রাশেদ অভিমানে রূপার সাথে কথা বলতে চায় না। রাশেদের খুবই খারাপ লেগেছে। রুপার এই বদলে যাওয়া তাকে অনেক আঘাত দিয়েছে। হঠাৎ একদিন রাশেদ লক্ষ্য করে রুপা তাদের ডিপার্টমেন্টের এক বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলছে। তাদের কথা বলার ধরণ রাশেদের মোটেও ভালো লাগেনা। কারণ রাশেদ জানতে পারে ছেলেটি খুব একটা সুবিধার না। গ্রামের সহজ সরল মেয়েগুলোকে পটানোর চেষ্টা করে সে। এরপর রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। রাশেদ এবার বাধ্য হয়ে রুপার সাথে কথা বলে। রুপাকে বোঝাতে গিয়েও বোঝাতে পারেনা। রুপার ব্যবহারে রাশেদের আরো বেশি খারাপ লাগে। রাশেদ অভিমান করে রুপার সাথে সকল প্রকারের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এখন আর ভুলেও রুপার কথা মনে পড়েনা রাশেদের।

প্রায় দুই বছর পর রুপার স্মৃতিগুলো রাশেদের খুবই মনে পড়ছে। রুপা আর এই পৃথিবীতে নেই। রুপা যাকে ভালোবেসে ছিল সেই ছেলেটি তাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। রাশেদ হয়তো রুপার পরিণতি অনেক আগেই জানতে পেরেছিল। কিন্তু রুপাকে বোঝাতে পারেনি। অভিমানের কারণে রাশেদ আর কখনোই রূপার সাথে যোগাযোগ করেনি। রুপা হাজার বার তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। হয়তো রুপা নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল। রাশেদের জীবনে ফিরে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু রাশেদের মনে অভিমানের দেয়াল তৈরি হয়েছিল। আর সেই অভিমানের কারণেই সে তার ভালোবাসার রূপাকে হারিয়ে ফেলেছে। হয়তো রুপার খারাপ সময়ে যদি রাশেদ তার পাশে থাকতো তাহলে এমনটা হতো না। অভিমান সব সময় ভালো কিছু বয়ে আনে না। রুপার স্মৃতিগুলো আজও রাশেদকে কাঁদায়। আজও রাশেদ নিজেকে দোষারোপ করে। আর মনে মনে ভাবে সে যদি অভিমান করে দূরে সরে না আসতো তাহলে এমনটা হতো না।

🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹


আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20240504_102129.jpg

আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

রুপা রাশেদের সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে অনেক রয়েছে। কারণ মানুষের জীবনি ঘটনা বহুল। একটা বিষয় রয়েছে যখন মানুষের মনে খুব জন্মায় তখনই অবিশ্বাস সৃষ্টি হয় আর যখন প্রিয়জন অবিশ্বাসের এবং সন্দেহের পাত্র হয়ে দাঁড়ায় তখন তাকে আর মেনে নিতে পারে না। তাই ভালোবাসাটা এমন একটা জিনিস প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভালো লাগা জন্মাতে হয় প্রিয়জনের প্রতি এবং পাশে থাকতে হয়, মনের সাথে মন মিশিয়ে রাখতে হয়। এতে টিকে থাকে ভালোবাসা