অনু গল্প-ভালো থেকো প্রিয়||

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।


বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনু গল্প লিখতে খুবই ভালো লাগে। আজকে আমি একটি অনু গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম দিয়েছি "ভালো থেকো প্রিয়"। তো বন্ধুরা চলুন আমার লেখা অনু গল্প পড়ে নেয়া যাক।

অনু গল্প-ভালো থেকো প্রিয়:

people-2603676_1280.jpg

source


কলেজের দিনগুলো কতই না আনন্দে কেটেছে। হইহুল্লোড় আর ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেওয়া নিত্যদিনের ব্যাপার ছিল সকলের। বিদিশা আর সৌরভ ছোটবেলার বন্ধু। ছোটবেলা থেকেই সৌরভ বিদিশাকে পছন্দ করত। কিন্তু কখনো বিদিশাকে নিজের মনের কথা বলতে পারেনি। সৌরভ ভেবেছিল যদি বিদিশা তাকে ফিরিয়ে দেয় তাহলে তার বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যাবে। আর বিদিশাকে সে চিরদিনের মত হারিয়ে ফেলবে। সেই ভাবনা থেকেই সৌরভ তার মনের কথা কখনোই বিদিশাকে বলেনি। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো।

দেখতে দেখতে কলেজের পরীক্ষা চলে আসে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নিতেই যে যার মত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিল। ব্যস্ততার মাঝেও বিদিশাকে সময় দিতে একদম ভুলেনি সৌরভ। সবসময় বিদিশাকে আগলে রাখতো। আর বিদিশা সৌরভকে খুবই ভালো বন্ধু মনে করত। হয়তো বিদিশার মনে ও প্রেম জমা ছিল। কিন্তু কেউ কাউকে ভালোবাসার কথা বলতে পারেনি। বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে এই ভয়ে দুজনেই নিজের মনের ভালোবাসা লুকিয়ে রেখেছিল। ধীরে ধীরে কলেজ জীবনের ইতি ঘটে। দেখতে দেখতে কেটে যায় অনেকদিন। দুজনেই আজ দুই প্রান্তে। আলাদা আলাদা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে তারা।

মাঝে মাঝে সৌরভ বিদিশার কথা হতো। কথার মাঝে হঠাৎ একদিন সৌরভ জানতে পারে বিদিশার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বিদিশা সৌরভকে এই কথাটি বলেছিল কারণ বিদিশা চেয়েছিল সৌরভ তার নিজের মনে কথা বলুক। কিন্তু সৌরভ সাহস করতে পারেনি। কারণ বিদিশার সাথে যার বিয়ে ঠিক হয়েছিল সে ছিল ভালো চাকুরিজীবী। একজন চাকরিজীবী মানুষের সাথে যেখানে বিদিশার ফ্যামিলি বিদিশার বিয়ে ঠিক করেছে সেখানে সৌরভ কোন মুখ নিয়ে বিদিশার সামনে দাঁড়াবে। পড়াশোনা শেষ করেছে ঠিকই কিন্তু বেকারত্ব তার জীবনটাকে গ্রাস করে নিয়েছে। এই বেকারত্বের জীবনে তার ভালোবাসার মানুষটিকে জড়াতে চায় না সৌরভ।

বিদিশা সৌরভের কথা শোনার জন্য অপেক্ষায় ছিল। মনে প্রাণে চেয়েছিল সৌরভ যেন নিজের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করে। কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গেল। বিদিশার বিয়ে হয়ে গেছে। সৌরভ বিদিশার বিয়েতে এসেছিল ঠিকই কিন্তু অপেক্ষা করেনি। একটি গিফট বক্স দিয়ে চলে গিয়েছিল সৌরভ। বিদিশা সেই গিফট বক্সটি আড়ালে রেখে দিয়েছিল। গিফট বক্সের মাঝে একটি চিঠি ছিল। চিঠিটি পড়ার পর বিদিশার দুচোখে পানি চলে এসেছিল। সৌরভ নিজের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছে ঠিকই কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবশেষে সৌরভ একটি কথাই লিখেছে "ভালো থেকো প্রিয়"।

🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹


আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। বাংলা আমার মাতৃভাষা। তাই আমি বাংলায় লেখালেখি করতে ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ক্রাফটিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। অবসর সময়ে গান শুনতেও অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বাগান করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে রান্না করতেও অনেক ভালো লাগে। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

সত্যি আপু বেকারত্ব মানুষকে গ্রাস করে ফেলে। সত্যি সৌরভ তার ভালোবাসার কথা বলেছি ঠিক কিন্তু অনেক দেরি হয়েছে। বিদিশা তার ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলেছে। সৌভর তার ভালোবাসার মানুষকে সত্যি অনেক ভালো বাসে।

বেকারত্বের কারণে অনেক ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। আর ভালোবাসার মানুষটি হারিয়ে যায়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আজ আপনি অনেক সুন্দর একটা গল্প আমাদের মাঝে লিখে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা গল্পটা অনেক সুন্দর হয়েছে। তবে তাদের দুজনের ভালোবাসার শেষ পরিণতি এরকম হয়েছে এটা দেখে অনেক খারাপ লাগলো। বিদিশা এবং সৌরভ দুজনে একে অপরকে ভালোবাসতো। তবে খুব দেরি হয়ে গিয়েছে সৌরভ নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে। যদি তারা একে অপরের ভালোবাসা আগে প্রকাশ করতো, তাহলে হয়তো এতদিনে দুজনের মিলন ঘটতো। কিন্তু এখন তো ওর আরেকটা জায়গায় বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

আমার লেখা গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে ভালোবাসার পূর্ণতা পায়না আপু।

কলেজ লাইফের সময়টা খুবই মধুর ছিল। তবে সেই জীবনটা আমরা পার করে এসেছি। এখনো মনে পড়ে সেই দিনগুলো। বেশ আফসোস লাগে সে দিনগুলোর কথা ভেবে। তবে সৌরভ বিদিশার বিষয়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। তবে অনেকের জীবনে এমন প্রেমকাহিনী থেকে থাকে কেউ সাফল্য অর্জন করে কেউ সাফল্য অর্জন করে না। আর এভাবে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষের প্রেম কাহিনী।

সত্যি আপু কলেজ লাইফের সময় গুলো অনেক মধুর ভাবেই কেটে যায়। অনেক সময় ভালোবেসেও ভালোবাসার কথাগুলো বলা যায় না।

মাঝে মাঝে ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। এমনকি ভালোবাসার কথাটাও আর বলা হয় না। তবে সারা জীবন মনের মাঝে তার জন্য ভালোবাসা থেকে যায়। অসাধারণ লিখেছেন আপনি। গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

অনেক সময় ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। একদম ঠিক বলেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে সত্যি ভাই অনেক সময় আমাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। তখন প্রিয়জনের প্রতি মন থেকে ভালোবাসা রয়ে যায়। আপনার গল্পটা অনেক সুন্দর ছিলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। বিদিশা এবং সৌরভ দুজনে ভালোবাসার পূর্ণতা পেল না সত্যি খুবই খারাপ লাগছে। আসলে বিয়ে হচ্ছে বিধাতার হাতে। এতো সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

একদম ঠিক বলেছেন ভাই অনেক সময় ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। অপূর্ণই থেকে যায় ভালোবাসা গুলো।