|| বাবুই পাখির বাসা || ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাকঁ এর জন্য ||

in hive-129948 •  3 years ago 

আমার বাংলা ব্লগের সকল কে
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন


আমার বাংলা ব্লগের সবাই আশাকরি সকলেই ভালো আছেন ঈশ্বরের কৃপায়। আজকে আবারো একটি বিষয় নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আজকে আমি বাবুই পাখির বাসা নিয়ে কিছু কথা বলবো। এই তো সেদিন একটা হালকা ঝড়ের মত হয়ে গেল । বাতাসে একটি বাবুই পাখির বাসা পড়ে গেল।বাসা টি প্রায় তৈরী করে ফেলেছিল কিন্তু ঝড়ো হাওয়ায় বাসা টি পরে গেল। যাইহোক আজ শুধু বাবুই পাখি এবং বাবুই পাখির বাসা নিয়ে কথা বলবো।

IMG20220505170621.jpg


আমরা সবাই একটি কবিতা জানি । বাবুই পাখি ও চড়াই এর মধ্যে কথোপকথন । আমি বাবুই পাখির বাসা টি হাতে নিয়ে কিছুক্ষন চিন্তা করলাম কিভাবে এত সুন্দর একটি বাসা তৈরী করতে পারে পাখিরা। তখন কবিতা টি মনে পড়ে গেল।

স্বাধীনতার সুখ

রজনীকান্ত সেন


বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
"কুঁড়ে ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পড়ে
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।"
বাবুই হাসিয়া কহে, "সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।"


IMG20220505170640.jpg


আমি যে বাসাটি পেয়েছি সেই বাসা টি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট। বাবুই মূলত কয়েক ধরনের বাসা তৈরী করতে পারে। বাবুই হচ্ছে প্লুসিয়াডি গোত্রের অন্তর্গত একদল প্যাসারাইন পাখি। খুব সুন্দর বাসা বুনতে পারে বলে এদের কে তাতি পাখি বলেও অনেকে ডাকে। কিছু প্রজাতির বাবুই পাখি আছে যারা একাধিক কক্ষ বিশিষ্ট বাসা তৈরী করতে সক্ষম।এরা মূলত বীজ ভোজী পাখি।যে কারনে এদের ঠোটের গঠন খুবি সুন্দর আকৃতির হয়ে থাকে।যে কারনে এরা বাসাও সুন্দর ভাবে বুনতে পারে। তবে কয়েকটি প্রজাতি এশিয়ায় স্থায়ী তাদের মধ্যে তিন ধরনের জাতি বাংলাদেশে দেখা যায়। দেশি বাবুই, বাংলা বাবুই , দাগি বাবুই।

IMG20220505170650.jpg


বাকি প্রজাতি গুলো সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাস করে। আমাদের দেশে বাংলা ও দাগি বাবুই এর প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। তবে দেশি বাবুই কিছু চোখে পড়ে গ্রামাঞ্চলে। ওরা নারিকেল , তাল, খেজুর গাছে বাসা বাঁধে। এরা পোকা , সস্য দানা, ফুলের মধু , বীজ, ধান, ভাত, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের রেণু খেয়ে জীবনধারন করে। আমি সেদিন অবাক হয়েছি এই বাসা টি দেখে। এত কাছ থেকে বাবুই পাখির বাসা কখনও দেখা হয়নি। দূর থেকে বোঝা কঠিন। বাসাটির বাহিরের আকৃতি এবং বুনোন এতটাই জটিল যে বোঝাই যায় না কিভাবে এটি তৈরী করলো।


আবার কিছু বাসা তৈরী করেছে উপরের দিকে মোটা নিচের দিকে সরু। অর্থাৎ কলস উল্টে দিলে যেমন হয় । এরা দলবদ্ধ ভাবে বাসা তৈরী করে । এবং কলোনীর মত করে থাকে। বিষয়টি কিন্তু খুবি দারুন যে ওরা সংঘবদ্ধ । সকলে মিলেমিশে থাকে। আর আমারা মানুষ আলাদা আলাদা বাড়ী করেও একে অপরের সাথে ঝগড়া বিবাদ করি। ওদের শিল্প জ্ঞান দেখে আমি আবাক হয়েছি।


IMG20220505170715.jpg


বাসাটির ভিতরের দিকে এত সুন্দর বুনন যে দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবে যে কেউ। এগুলো মূলত নাড়াকুটো দিয়ে তৈরী করেছে। তবে এই নাড়াকুটো আস্ত নয় এগুলো কে ছিড়ে পাতলা করে একটির সাথে আরেকটি কে ভাজে ফেলে তৈরী হয়েছে বাসাটি। একটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে বাসাটির ছবি তুলেছি।


IMG20220505170829.jpg


ওরা যে গাছে বাসা বেধেঁছে সেই গাছটি ছিল তাল গাছ। তাল গাছের নিচে খরের গাদা যেখান থেকে ওরা বাসার তৈরীর রসদ সংগ্রহ করেছে।


IMG20220505170218.jpg

বাবুই.jpg

যাই হোক আজ এখানেই শেষ করবো ।আশাকরি আপনাদের ভাল লেগেছে। বাবুই পাখি থেকে আমরা অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহন করতে পারি। যদি কোন ভুল কিংবা জিজ্ঞাসা থাকে তবে মন্তব্য করতে ভুলবেন না কিন্তু। আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে।আমার বাংলা ব্লগের সকলে ভাল থাকবেন এই কামনায় এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

সকল ছবি একই লোকেশন থেকে তোলা বিধায় একটি লিংক লোকেশন দিয়ে দিলাম

লিংক

ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র - অপপো এ৫ ২০২০

2.2.png

020.png

2.2.png

4.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দারুন একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ভাই।
বাবুই পাখি সত্যিই তাতি বা শিল্পী পাখি 🐦
কি চমৎকার বাসা তৈরি করে। অনেকগুলো পাখি একসাথে কি চমৎকারভাবে বসবাস করে ভাবা যায়। যাক সব উপর ওয়ালার সৃষ্টি।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য 🥀

হ্যাঁ সবকিছুই ঈশ্বরের দান। আমি আপনার সাথে একমত। ভালো থাকবেন।

প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য বাবুই পাখির বাসা এবং এরা অনেক পরিশ্রমী ও শিল্পী ও বটে। কেননা খুব সুন্দর করে তার ক্ষুদ্র শিল্পের মাধ্যমে কি সুন্দর একটি বাসা বানিয়ে ফেলে। আপনাকে ধন্যবাদ বাবুই পাখির বাসার সুন্দর কিছু ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

ঠিক বলেছেন ভাই ওরা অনেক পরিশ্রমী। মূলত প্রানী কুলের প্রায় সব প্রানীই পরিশ্রম করে থাক।

হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছেন সব প্রাণী পরিশ্রম করে থাকে। তবে বাবুই পাখি অনেক বেশি পরিশ্রম করে ধন্যবাদ আপনাকে।

বাবুই পাখির বাসা অনেকদিন হয়ে গেল দেখিনি। আগে আমাদের এখানে রাস্তার ধারে তালগাছ ছিল আর সেই তালগাছে বাবুই পাখির বাসা দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন রাস্তা প্রশস্ত করার কারণে তাল গাছ গুলো কেটে ফেলেছে আর তাই তালগাছও নেই বাবুই পাখির বাসা ও নেই। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে বাবুই পাখির বাসা দেখে খুবই ভালো লাগলো। বাবুই পাখির বাসাটি কে নিয়ে আপনি খুবই সুন্দর বর্ণনা করে পোস্ট সাজিয়েছেন এ জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

চেষ্টা করেছি শুধুমাত্র কতটুকু পেরেছি জানি না তবে আপনার ভালো লেগেছে এজন্য আমি খুবই খুশি।

এই পাখিকে নিয়ে অনেক কবিতা রয়েছে, ছোটবেলায় গান ও শুনেছি,

খর কুটার এক বাসা বাধলাম বাবুই পাখির মত।

এই পাখির বাসা বানানোর দক্ষতার সবাইকে মুগ্ধ করে, যদিও আমার কখনো কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি, তবে আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো।

যাক আজকে দেখিয়ে দিলাম। ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।

কতদিন বাবুই পাখি দেখি না। শুধু বাসাই দেখালেন দাদা। পাখিও দেখতে চাই। যাইহোক অনেক দক্ষ এরা নিজের বাসা তৈরীর ক্ষেত্রে । কত নিপুন ভাবে বাসা তৈরী করে এরা। আপনি যে কবিতার লাইনগুলো প্রথমে লিখেছেন তা অনেক দিন পরে পড়লাম। ভাল লাগলো।

গুগোল এ সার্চ দিলে দেখতে পাবেন। হা হা। পাখির দেখা পায়নি কাছাকাছি তাই তুলতে পারিনি ছবি।

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক হলো বাবুই পাখির বাসা। যেটা এখন বিলুপ্তির পথে আগে তাল গাছের পাতায় এই ধরনের বাবুই পাখির বাসা দেখা যেতো এখন সেটা কম দেখা যায়।

মানুষের কারণেই প্রকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আগে বেশিরভাগ তালগাছে দেখা যেত কিন্তু এখন অন্যান্য গাছে দেখা যায় কারণ তালগাছ দিন দিন কেটে ফেলা হচ্ছে।

কি দেখালেন ভাইয়া অনেক দিন পর বাবুই পাখির বাসা দেখতে পেলাম। অনেক দিন আগে আমাদের বাসায় সুপারির গাছে ঝুলন্ত বাবুই পাখির বাসা অনেক ছিল। তবে এখন আর নেই। ঝুলন্ত বাবুই পাখির বাসা গুলো দেখতে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর বাবুই পাখির বাসা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। হ্যা বাসা গুলো দেখতে খুবি ভাল লাগে।

আগে ঝড়ের সময় আমিও বাবুই পাখির বাসা কুড়াতাম আমাদের বাসার সামনে নারিকেল গাছে বাসা ছিলো। তবে নারিকেল গাছটি কেটে ফেলার পর আর বাবুই পাখির বাসা দেখি না।

ঝড়ে ওদের বাসা পড়ে যায় গাছ থেকে। ধন্যবাদ।

আমাদের বাড়ির সামনে একটি তাল গাছ ছিল আর সেই তালগাছে দেখতাম অনেক বাবুই পাখির বাসা। কিন্তু আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকলাম তখন এই তাল গাছ কেটে ফেলা ফেলা হয়েছে আরে বাবুই পাখি ও হারিয়ে গিয়েছে। আপনি আজকে বাবুই পাখির বাসা নিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি এবং কথা শেয়ার করেছেন খুবই ভালো লাগছে আপনার পোস্টটি।

এভাবেই বাবুই পাখির বাসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাবুই পাখি গুলো বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।

বাবুই পাখির বাসা আমার কখনই এত কাছ থেকে দেখা হয়নি। অসম্ভব সুন্দর করে ওরা বাসা গুলো বাঁধে এবং কতটা মজবুত সেটা দেখে বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর বর্ণনা সহ এত সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে পোস্টটি করার জন্য। ভালো লাগলো আপনার পুরো পোস্টটি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ওরা খুব পরিশ্রমী যে কারণে ভালোবাসা গুলো খুব শক্তপোক্ত হয়। ধন্যবাদ আপু।

ঠিক বলেছেন দাদা আসলেই বাবুই পাখিকে দেখে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত
নিজের যা কিছু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার। অন্যের জিনিস নিয়ে বড়াই করার মাঝে কোনো গর্ববোধ নেই।
বাবুই পাখির সম্বন্ধে কিছু না জানা তথ্য জানতে পারলাম।
বাবুই পাখির বাসা এত কাছ থেকে কখনোই দেখিনি। কি সুন্দর নিখুঁত ভাবে তারা নিজেদের বাড়ি নিজেরাই তৈরি করে নেয়। ধন্যবাদ দাদা পাখির বাসা গুলো এত কাছ থেকে আমাদের দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপু। ভাল লাগলো। সত্যি বলতে প্রানি কুলের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহন করা উচিত।

এখন বুঝতে পারলাম, এই সেই আপনার বাবুই পাখির বাসা। যা শখ করে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারকে উপহার দিলেন ।আপনার আগ্রহ কে স্বাগত জানাই।

আমার কাছে ওদের কর্মকান্ড ভাল লেগেছে বলেই শেয়ার করেছি। ওরা যে অনেক পরিশ্রমী এবং আত্ম নির্ভরশীল ।

সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা হোক প্রগাঢ় এই কামনা করি।