ব্যানার ক্রেডিটঃ @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগের আয়োজন রবিবারের আড্ডার নতুন সংযোজন হচ্ছে এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা । মূলত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে তাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরা হয়। যে সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়, তাদের নিয়েই মূলত এই অনুষ্ঠানটা পরিচালিত করা হয়।
তাছাড়া এই অনুষ্ঠানটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেহেতু চার-পাঁচজন অতিথি থাকে প্রথমত দুইবারে সকল অতিথির মতামত শোনা হয়, দ্বিতীয়তঃ কিছুটা বিরতি দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং নিজেদের পছন্দের গান শোনা হয়। সর্বশেষে উপস্থিত সকল দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য থাকে শুভেচ্ছা পুরস্কার।
শৈশবের শীতের স্মৃতিচারণ
প্রথম অতিথিঃ @ah-agim
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃআমরা তখন অনেক ছোট ছিলাম, আমাদের এলাকায় শীতের সময় প্রতিনিয়ত হাঁস দিয়ে পিকনিক হতো। একবার আমরা ৫ বন্ধুরা মিলে হাঁস খাব কিন্তু কাছে টাকা পয়সা ছিল না। অতঃপর মানুষের পুকুর থেকে হাঁস ধরে নিয়ে এসে, সেটা দিয়েই পিকনিকের ব্যবস্থা করেছিলাম। যেহেতু পাঁচজন ছিলাম, তাই আমাদের ভিতরে একেকজনের একেক রকম দায়িত্ব পড়েছিল। কেউ লাকড়ি,হাঁড়ি পাতিল, কেউবা মসলা ব্যবস্থা করেছিল আর আমার দায়িত্ব ছিল রান্না করা। যেহেতু রান্না করতে গিয়ে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল, তাই হলুদের পরিবর্তে ঝাল অনেক বেশি দিয়ে ফেলেছিলাম তরকারিতে, দুঃখের বিষয় সেই তরকারি আমরা কেউ খেতে পারিনি অত্যাধিক ঝালের কারণে। এখনো বন্ধু মহলে শীতের দিনের কথা উঠলেই, সেই রান্নার কথা মনে পড়ে।
দ্বিতীয় অতিথিঃ @neelamsamanta
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃআজিম ভাইয়ের কথা শুনে আমারও এমন একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল,আমি একবার পালং শাকের তরকারিতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টির রস দিয়েছিলাম। যাইহোক মূল গল্পে আসি। যখন আমি স্কুলে পড়তাম, সেই সময় স্কুল থেকে একবার পিকনিকে গিয়েছিলাম, যেহেতু সেবারই প্রথম তিন দিনের সফরে বিহার গিয়েছিলাম, তাছাড়া পিকনিক থেকে ফিরে এসেই আবার আমাদের স্কুলের জন্মদিন ছিল, তাই বলা যায় অনেকগুলো গান আমি আগে থেকেই প্র্যাকটিস করে রেখেছিলাম। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পিকনিকে গিয়ে বেশি চিল্লাচিল্লি করাতে গলা ভেঙে গিয়েছিল। তাছাড়া পিকনিক থেকে বাড়িতে এসে অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম , এমন ঘুম দিয়েছিলাম যেন একদিন পরে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। অবশেষে অনুষ্ঠানের দিন সকালবেলা স্কুলে গিয়েছিলাম তবে আমার গলার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, কোনভাবেই এতগুলো গান গাওয়া সম্ভব হতো না। অবশেষে মাকে আমার সমস্যাগুলো বলেছিলাম, ভাগ্যিস মা আমার গানগুলো আগে থেকেই টেপ রেকর্ড করে রেখেছিল। তাই অবশেষে বলেছিল, যখন তোর গান যাওয়ার সময় হবে আমি রেকর্ড গুলো বাজিয়ে দিব।
তৃতীয় অতিথিঃ @selinasathi1
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃএখন থেকে বহু বছর আগের ঘটনা, দিনটা ছিল ২৩ শে জানুয়ারি। সেদিন প্রচুর ঠান্ডা পড়েছিল। সন্ধ্যার পরে যখন দোকানের ছেলেগুলো বাড়িতে খেতে এসেছিল , তখন থেকেই তলপেটে ভীষণ ব্যাথা অনুভব করছিলাম। সেই কথাটা আমি আমার শাশুড়িকে জানানোর ব্যবস্থা করেছিলাম, অবশেষে আমাকে মাতৃ-সদনে নিয়ে যাওয়া হয়, আমি কোন অবস্থাতেই সদর হসপিটালে যেতে চাইনি। কেননা আমি এমনিতেই ছোট মানুষ ছিলাম, তার ভিতরে সেখানকার ডাক্তাররা আমার পরিচিত, বয়সে ছোট মানুষের পেটে বাচ্চা ব্যাপারটা কেমন হবে এটা ভেবেই যাইনি। অবশেষে ভোর রাতের দিকে আমাকে ডেলিভারির রুমে নিয়ে যাওয়া হয়, আমাদের আত্মীয়-স্বজন সেখানে কেউ ছিলনা। ভীষণ একাকী লাগছিল, তারপরে অবশেষে একদম শেষ রাতের দিকে সিয়ামের জন্ম হয়। সেদিনটা আমার কাছে চিরস্মরণীয়। তারপর তো আমাকে বেশ বিভিন্ন কুসংস্কারের শিকার হতে হয় শ্বশুরবাড়িতে। ভীষণ কষ্ট করতে হয়েছিল সেই সময় শীতের দিনে।
চতুর্থ অতিথিঃ @rme
প্রতিষ্ঠাতা , আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ আমার ছোটবেলা কেটেছিল মূলত গ্রামে। আমি শহরে আসি ক্লাস ফোর কি ফাইভে পড়ার সময়। শীতকালে বেশি মজা তো গ্রামেই,যেহেতু আমাদের প্রচুর খেজুর গাছ ছিল তাই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই রস খেতে পেতাম। এমনও হয়েছে যে, মুখ হাত ধোয়ার আগেই দু গ্লাস খেজুরের রস খেয়ে ফেলেছি। সেই সময় অবশ্য নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছিল না। যেহেতু সেসময় স্কুল বন্ধ থাকতো, তাই পড়াশুনার চাপ খুব একটা বেশি ছিল না। প্রচুর পরিমাণে ক্রিকেট খেলতাম, তাছাড়া বিকেল বেলার দিকে গোল্লাছুট, খড়ের গাদায় লুকোচুরি, পুকুরে মাছ ধরা, পুকুর পাড়ে বসে গল্প করা, তাছাড়া বাড়িতে বিভিন্ন রকমের খাবার আয়োজন তো হতোই। এছাড়া মাঝে মাঝে বিকেল বেলার দিকে ফুল বাবু সেজে ঘুরে বেড়াতাম। সন্ধ্যার পরে কখনো ক্যারাম বোর্ড, দাবা কিংবা ব্যাডমিন্টন খেলা চলতোই , তাছাড়া অধিক ঠান্ডার ভিতরে সন্ধ্যার পরে লেপের ভিতরে আমি গল্পের বই নিয়ে ঢুকে যেতাম। তাছাড়া পাখির মাংস খেতাম সেসময় খুব, হাটে বাজারে কিনতে পাওয়া যেত অতিথি পাখি। তখন অবশ্য অতিথি পাখি ধরা নিয়ে এত কঠিন নিয়ম ছিল না । তবে সময়ের পরিবর্তনে সবকিছু এখন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে, গ্রাম আর শহরের মধ্যে এখন তেমন কোন পার্থক্য নেই। মোবাইল সহজলভ্য হয়ে সবাই এখন মোবাইলে আসক্ত হয়ে গিয়েছে, ছোটরা এখন পর্ন আসক্তিতে ভুগছে। মোবাইল কিংবা ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার করছে না। তাছাড়া গ্রামের রাজনীতি এখন প্রচুর জঘন্য। পশু পাখির জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল এখন আর গ্রামেও নেই। আমাদের শৈশব সময়টা এখন শুধুই স্মৃতি।
তাৎক্ষণিক অতিথি ও শ্রোতার মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কারের স্পন্সর কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদা
মূলত এভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা। আমাদের চিন্তাধারা প্রতিনিয়তই ব্যতিক্রম, তাই সব ব্যতিক্রম চিন্তা-ভাবনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই প্রতিনিয়ত সামনের দিকে। আশাকরি আমাদের সঙ্গে সকলেই থাকবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
উন্মুক্ত আড্ডায় আজিম ভাই নিলাম আপু সেলিনা সাথী আপু এবং শ্রদ্ধেয় বড় দাদার শৈশবের মজার মজার ঘটনাগুলি খুবই মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করছিলাম। প্রত্যেকেই খুবই সুন্দর এবং গোছানোভাবে কথা বলেছিল। উন্মুক্ত আড্ডার বিষয়গুলি পুনরায় আপনার পোষ্টের মাধ্যমে লিখিতভাবে দেখতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের আড্ডার ১০০ তম পর্বটি আসলেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ দাদা অতিথি ছিলেন এই বিশেষ পর্বে। দাদার শৈশবের স্মৃতি গুলো শুনে ভীষণ ভালো লেগেছে। যাইহোক এই রিপোর্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের আড্ডার সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। পুরো মুহূর্তটা অনেক ভালোভাবেই উপভোগ করেছিলাম। আমার কাছে তো অনেক ভালো লেগেছিল। রবিবারের আড্ডার একশ তম পর্বটা অনেক স্মরণীয়। সবার শৈশবের স্মৃতিগুলো খুবই সুন্দর ছিল। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, এটা এত সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ব্যস্ত থাকার কারণে এবারের রবিবারের উন্মুক্ত আড্ডায় যুক্ত থাকতে পারিনি। তবে দাদা অতিথি হিসেবে ছিলেন এটা দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। আসলে শৈশবের প্রত্যেকটা মুহূর্ত অনেক বেশি আনন্দের। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার এই পোস্ট দেখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গতকালের রবিবারের আড্ডায় আমরা সকলেই খুবই সুন্দর একটি সময় উপভোগ করেছিলাম। সকলের কাছে থেকে খুবই সুন্দর সুন্দর গল্প শুনেছিলাম।আর প্রতি সপ্তাহে এরকম সকলেই মিলে এক সাথে সময় কাটাতে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে দাদার কথা গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের আড্ডার সুন্দর মুহূর্ত এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করা হয়েছে দেখে অনেক ভালো লাগলো। সবার শৈশবের স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো জেনে অনেক ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের সবার শৈশবের প্রতিটা মুহূর্ত অনেক বেশি আনন্দময় ছিল। অনেক সুন্দর করে মুহূর্তটা সবার মাঝে শেয়ার করে নিলেন দেখে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের শততম আড্ডাটা মিস করে গিয়েছি। তবে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে পুরো বিষয়টা জানতে পেরেছি বিশেষ করে দাদা অতিথি ছিলেন এটা জানলে যত কষ্টই হোক উপস্থিত থাকতাম। তবে দাদার কথাগুলো আপনার পোষ্টের মাধ্যমে পড়ে নিতে পেরে বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit