ছুটির দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা

in hive-129948 •  2 years ago 

শুক্রবারের দিনটাতে আমি এমনিতেই অন্যান্য দিনের থেকে দীর্ঘ সময় বিছানাতেই থাকি। যেহেতু বৃহস্পতিবার রাতে লম্বা সময় হ্যাংআউট শো থাকে তারপর আবার নিজের কাজ গুলো শেষ করে মোটামুটি বিছানায় গিয়ে ঘুমোতে ঘুমোতে প্রায় ভোর হয়ে যায়। আজকেও ঠিক একই অবস্থা ।

20230113_170054.jpg

কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি তা মনে নেই। তবে হঠাৎ একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আজকের পুরো দিনটা আমার ভেস্তে দিয়েছে । দুপুরের দিকে আমার শাশুড়ি হঠাৎ ফোন দিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিয়েছে এবং বলছে তাদের প্রতিবেশীরা নিজেদের ভিতরে ঝগড়াঝাটি করার সময় তাকেও আঘাত করেছে এবং সে অনেকটাই আহত হয়েছে ।

20230113_154709.jpg

এমন কথা হঠাৎ করে শোনার পরে কোনভাবেই আর বিছানাতে থেমে থাকা যায় না। কিভাবে যে বিছানা থেকে উঠেছি এবং সঙ্গে সঙ্গে মুঠোফোনে লোকাল থানার ওসিকে ফোন দিয়ে ব্যাপারটা জানালাম এবং তারপরেও আমার এক পরিচিত বড় ভাই পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাকেও মেসেঞ্জারে একটা খুদেবার্তা পাঠিয়ে দিলাম যে, আমি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি, যে কোন সময় আপনার সহযোগিতা লাগতে পারে ।

20230113_154709.jpg

আসলে গ্রামের লোকজন গুলোর সমস্যা হচ্ছে, তারা এত তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নিজেদের ভিতরে গোলমাল পাকিয়ে ফেলে, যা পরবর্তীতে অনেক বড় রকমের অবস্থার সৃষ্টি হয়। আমি আসলে মূলত এই ঘটনার তেমন কোন কিছুই জানিনা আর আমার জানার তেমন কোন আগ্রহ নেই। তবে আমার একটাই কথা, কেন তারা আমার নিরপরাধ শাশুড়ির গায়ে হাত তুলেছে আর তাছাড়া একজন পুরুষ মানুষ কিভাবে এতো গুলো মেয়ে মানুষের গায়ে হাত তোলে। এটা ভাবতেই আমি অনেকটা অবাক হয়ে গিয়েছি ।

আর তাছাড়া গ্রামের মানুষজনের ভিতরে এখনো সেই আগের যুগের কিছু গণ্ডিবাধা নিয়মকানুন থেকেই গিয়েছে। যার কারণে আসলে তারা অযৌক্তিক কার্যকলাপ গুলোই বেশি করে থাকে । আমার শাশুড়ির একটাই সমস্যা ছিল, তার চোখের সামনে অন্য মানুষদেরকে অহেতুক লাঠি দিয়ে আঘাত করছিল। আমার শাশুড়ি প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল বিধায় সেও পরিস্থিতির শিকার।

20230113_155412.jpg

১০ মিনিটের মধ্যে আমি সম্ভবত থানায় গিয়ে উপস্থিত এবং ডিউটিরত অফিসারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। আসলে আমাদের দেশের আইন-কানুন ও পুলিশের সেবা নিয়ে নতুন করে কোন কিছুই বলতে চাই না। এই জন্যই বলতে চাইনা কারন আমি জানি, এই ব্যাপারগুলোর সঙ্গে কমবেশি সকলেই অভ্যস্ত। তারপরেও যেহেতু আমার পরিচিত কিছু মানুষজন ছিল,তাই হয়তো সবকিছু খুব দ্রুত সম্ভব হয়েছিল ।

20230113_162332.jpg

অতঃপর এক পিকআপ ভর্তি পুলিশ নিয়ে রওনা দিলাম ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে এবং আমার শাশুড়িকে উদ্ধার করে সেখান থেকে হসপিটালে ভর্তি করানোর জন্য। যাইহোক হসপিটাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সেখান থেকে পুলিশ কেসের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে, তারপরে আবারও থানায় যোগাযোগ করলাম।

সত্যি বলতে কি, মাথার উপরে যে কি পরিমান একটা মানসিক চাপ কাজ করছিল তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। এমনিতেই ঘুম হয়নি, তার ভিতরে সারাদিন কিছুই খেতে পারিনি। সব মিলে একটা বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।

20230113_181808.jpg

হয়তো যদি আমার সেই পরিচিত পুলিশ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকতো, তাহলে হয়তো আমাকে মুদ্রার উল্টাপিঠ দেখতে হতো আর নিজে যদি মেডিকেল পার্সন না হতাম, তাহলে হয়তো হসপিটাল থেকেও মেডিকেল সার্টিফিকেট পেতেও বেশ বেগ পেতে হতো।

তারপরেও রাত্রিবেলা যখন আবারও থানায় গেলাম শাশুড়িকে সঙ্গে করে নিয়ে অভিযোগ পত্র দেওয়ার জন্য, তখনো ডিউটিরত অফিসার একটু গড়িমসি করার চেষ্টা করছিল। তবে পরবর্তীতে যখন আমার সেই পুলিশ ভাইয়ের কথা তাদের সামনে আবারও শক্তভাবে উপস্থাপন করলাম, তখন দেখলাম অনেকটা বিদ্যুৎ গতিতে কাজ শুরু হয়ে গেল ।

Screenshot_20230113_214953_Gallery.jpg

সর্বোপরি বলব ছুটির দিনের অভিজ্ঞতা একদম ভালো ছিল না এবং আমি ভীষণ ক্লান্ত এবং মানসিকভাবেও অনেকটা ভেঙে পড়েছি। কারণ আমি যে মানুষটা আসলে কখনোই কারো সঙ্গে দুটো কথা নিয়ে ঝামেলায় জড়াতে চাই না, তার সঙ্গে যখন এমন কিছু হয়ে যায়,সেটা আসলেই নিজের জন্যই নিজের কাছে অনেকটাই কষ্টকর হয়ে যায় । তারপরেও সারাদিন পুলিশের সঙ্গে থেকে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা হয়তো দীর্ঘ সময় মনে থাকবে ।

Banner-5.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হুম ভাই এর আগে আপুর পোষ্টে এ বিষয়ে শুনেছি ৷ যা হোক আপনি এটা সত্য বলেছেন ৷ যে গ্রামের ক্ষেত্রে একটু বিষয়ে মাতামাতি আর পরে হয়ে যায় মারামারি তে ৷ তবে সর্বোপরি আপনি খবর পেয়ে পুলিশে ইনর্ফম করেছেন ৷
তবে একজন পুরুষ কোনো ভাবেই একজন নারী গায়ে আঘাত করা উচিত হয় নি ৷
জানি না কি বিষয়ে এতো বড় কিছু ৷ তবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাক এমনটাই প্রতার্শা ৷

সত্যি বলতে ভাই কি আর বলবো গ্রামে এ বিষয়গুলো সচরাচর ঘটতে থাকে। আপনার শাশুড়ির মানবিক লোক ছিল তাই তিনি অন্যকে বাঁচাতে গিয়েছেন।আর বাঁচাতে গিয়ে উনাকেও অকারনে আঘাত করেছে। সত্যি বলতে এই টাইপের কিছু লোক খুবই খারাপ হয়ে থাকে। আর পুলিশের কথা যেটা বলেছেন তার চাইতে আরো খারাপ পুলিশ। যদিও দুই একটা ভালো থাকে, বিদায় আমরা এ পর্যন্ত আছি। যাই হোক আসলে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল, যেটি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।

এমন ঘটনা গ্রামের দিকে নতুন কিছুনা।প্রতিদিন চলছেই এভাবে।
সৌভাগ্য যে,পুলিশ আর হসপিটাল দুই জায়গাতেই একটা অপরচুনিটি ছিল।ওনার সুস্থতা কামনা করি।

কালকে আপুর পোস্টে পড়েছিলাম এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা টা।আসলেই পুরুষ মানুষ হয়ে কেন অন্যবাসার মহিলাদের গায়ে হাত তুলবে আমি তাই বুঝি না।আসলেই আমাদের দেশ পুলিশ কথা না বা বললাম।

বিষয়টি অনেক খারাপ লাগলো,এখনকার সমাজ আর সমাজের মানুষ এতটাই বাজে হয়েছে যে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু করে আর সাথে সাথে মারামারি তো আছেই ,তবে আপনি না থাকলে বিষয়টা আরো খারাপ হতো।

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল।আসলে ভাইয়া বর্তমান সত্যি কথা বললেই বিপদ আরো বেড়ে যায়। আপনার শাশুড়ি প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজেই আঘাত খেয়েছে।আর আইন তো আইনি, এদেরকে নিয়ে বলার কিছুই নেই। আপনার ভাইয়ের পরিচয় দিয়েছেন দেখে হয়তো অনেকটা সহজ হয়েছে।আন্টির সুস্থতা কামনা করছি।ধন্যবাদ আপনাকে।

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। আপনার উপর দিয়ে খুব মানুষিক চাপ যাচ্ছে।কাল আপুর পোস্ট পড়ে কিছুটা জেনেছিলাম।তবে আমার একটাই কথা, এরা কেমন মানুষ অন্য বাড়ির মহিলার গায়ে হাত তোলে?? সবার সুস্থতা কামনা করছি।ধন্যবাদ ভাইয়া।।

সত্যি বলতে ভাইয়া এখনো গ্রাম গঞ্জের মানুষের মধ্যে একটা জিনিস অনেক ভালোভাবে লক্ষ্য করা যায় সেটা হচ্ছে তারা তুচ্ছ একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতে করতে সেটা অনেক বড় একটা পর্যায়ে নিয়ে যায়। আবার এই পর্যায়ে যেতে যেতে সেটা বড় ধরনের মারামারি সৃষ্টি হয় যার কারণে আশেপাশের মানুষজন অনেক রকম ভাবেই আহত হয় আপনার শাশুড়ি হতে চেয়ে তাদের মধ্যেই একজন। বর্তমান সময়ে পুলিশদের নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই তবে পরিচিত কেউ যদি থাকে তাহলে নিজেদের আর তেমন একটা সমস্যায় পড়তে হয় না। যাই হোক অবশেষে মেডিকেল সার্টিফিকেট সহ সকল কাজ ভালোভাবেই সমাধান হয়েছে। তবে আপনার ছুটির দিন টা একদমই মাটি হয়ে গিয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।