উষ্ণ অভ্যর্থনা

in hive-129948 •  2 years ago 

20221118_125354.jpg

এই ঘটনাটা গত সপ্তাহের। ঐদিন মূলত গিয়েছিলাম কল্লোলের গ্রামের বাড়িতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সকাল বেলায় আমি ওকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম যে, ওদের ওখানে বেড়াতে যাব। কিন্তুু প্রতিউত্তরে, ও শুধু আমাকে বলল, আমি তো বাড়িতে নেই।

20221118_123236.jpg

ব্যাপারটা জানার পরে আমার একটু খারাপ লেগেছে। তবে আমি নাছোড়বান্দা, বললাম তুই বাড়িতে নেই তো কি হয়েছে। আমি তাও যাবো,তুই শুধু আন্টিকে বলে রাখিস। কল্লোল জানে যে, আমি যেটা বলার চেষ্টা করি, সেই কাজটা কমবেশি করেই থাকি।

20221118_143757.jpg

ও আমাকে অবশেষে কিছুক্ষণ পরে আবারো ফোন দিয়ে বললো, তোর কোন সমস্যা নেই। তুই আমাদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারিস। আর কোন সমস্যা হলে, আমার বাবার কথা বলিস, তাহলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমি ওর কথা গুলো শুনে বললাম, আমার কোন সমস্যা হবে না, তুই নিশ্চিন্তমনে থাক।
20221118_123856.jpg

অতঃপর সকাল বেলার নাস্তা করে বেরিয়ে গেলাম ওর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে। শহর থেকে বেশ ভালোই দূরে, তাও তো কম করে হলেও দশ কিলোমিটারের মতো হবে ।

20221118_123654.jpg

সাম্প্রতিক সময়ে কল্লোলের চাকরি হয়েছে। যাইহোক বেচারা বেশ ভালোই হতাশার ভিতরে সময় পার করছিল, সেই হতাশাটা এখন আর ওর নেই। ওর নতুন পোস্টিং হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ।

20221118_123622.jpg

মূলত আমার ওদের ওখানে যাওয়ার একটাই উদ্দেশ্য, সেটা হচ্ছে গ্রামীণ পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য । তাছাড়াও এর আগে ওদের বাড়িতে বহুবার গিয়েছি, সেই যখন কলেজ জীবনে পড়তাম তখন। তবে এবারের যাওয়াটা ছিল বেশ দীর্ঘদিন পরেই।

20221118_123613.jpg

আমি আসলে ওর অনুপস্থিতির ব্যাপারটাকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছি। আমি ইচ্ছা করেই দেখতে চেয়েছি, দেখি ওর অনুপস্থিতে ওর বাড়ির লোকজন আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করে।

20221118_151606.jpg

অবশেষে ঠিক দুপুরের আগেই আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম কল্লোলের বাড়িতে। গিয়ে দেখি মোটামুটি আগের মতোই বাড়িটা ফাঁকা, এমনিতেই গ্রামের শেষের দিকে তার ভিতরে অনেক বড় বাড়ি। আর বাড়িতে লোকজন খুব একটা বেশি থাকে না বললেই চলে। আঙ্কেল আন্টি আমাদের কে দেখে বেশ ভালোই খুশি হয়েছে। বিশেষ করে কল্লোলের বোন তুবা, বাবু কে পেয়ে যেন আনন্দে আত্মহারা ।

20221118_151606.jpg

অনেকটা নিজের বাড়ির মতই মনে হচ্ছিল ওখানকার পরিবেশটা। আমি ভুলেও বুঝতে পারিনি যে, বন্ধু আমার বাড়িতে নেই। তারপরেও তাদের বাড়ির লোকজন আমাদের কে বেশ আপ্যায়ন করেছে। তাছাড়াও এখন এই মানুষগুলো এমনিতেই বেশ হাসি খুশি। কারণ তাদের বাড়ির একমাত্র ছেলের চাকরি হয়েছে। এটা আসলেই সুসংবাদ। কারণ বেকার পদবীটা কল্লোলের উপর থেকে সরে গিয়েছে ।

20221118_151544.jpg

যাওয়া মাত্রই প্রথমে হরেক রকমের নাস্তা দিয়ে আপ্যায়ন। তারপরে দুপুরের পরে আবারো মধ্যান্ন ভোজের আয়োজন ছিল। আমরা তো বিকাল পর্যন্ত ছিলাম। আমি ওদের গ্রাম অঞ্চলটা বেশ ভালোই ঘুরিয়ে বেরিয়েছি। তবে বাবু আর হীরা ছিল ওদের বাড়িতেই। হীরার কাছে শুনলাম, ওরা ভালোই যত্ন করেছে।

আমি আসলে অনেকটা উদাসীন স্বভাবের মানুষ, ঐ যে গ্রামে গিয়েছি, গিয়েই মোটামুটি সেখানকার লোকজনের সঙ্গে ঘোরাফেরা করে প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় কাটিয়ে দিয়েছি। এদিকে গিন্নি আমাকে বারবার ফোন দিয়ে অস্থির করে ফেলেছে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য। ভালই লাগলো খাওয়া দাওয়া করে, সাদা ভাত সঙ্গে ওদের নিজস্ব পুকুরের মাছের তরকারি আর সবজি, সবমিলিয়ে একদম সুস্বাদু খাবার ।

20221118_123220.jpg

এই তো হবেই ৫-৬ বছর পরে এখানে আসলাম। দীর্ঘদিন পরে মানুষ গুলোকে দেখে ঠিক আগের মতোই লাগলো, তবে সকলের শুধু বয়সের পরিবর্তনটা হয়ে গিয়েছে। আমার তো সত্যিই মাঝে মাঝে ভীষণ ইচ্ছে করে, আপন মানুষ গুলোর অনুপস্থিতিতে তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য, কারণ এমন উষ্ণ অভ্যর্থনা গুলো আমার প্রতিনিয়ত পেতে ভালোই লাগে।

Banner-6.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি জানতে আজ আপনার বন্ধু তার বাসায় থাকবে না। আপনি তবুও আজ তার বাসায় গিয়েছেন। তবে একটা বিষয় ভালো লাগলো আপনার বন্ধু বাড়িতে না থাকাতেও আপনাদের আপ্যায়নের কমতি করেননি। আপনার বন্ধুর পরিবারের সবাই অনেক অতিথি পরায়ণ। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভাইয়া আপনি আসলেই নাছোড়বান্দা, কল্লোল থাকবে না জেনে ও তাদের বাড়িতে গিয়ে ছাড়লেন☺️।তবে ভালো লাগলো কল্লোল না থাকলে তারা আপনাদেরকে বেশ ভালোই যত্ন নিয়েছে।আসলে গ্রামের মানুষ গুলো এমনই সহজ সরল।বাবু ধান শুকাচ্ছে😂,বেশ মজা পেয়েছে মনে হচ্ছে।গ্রামীন পরিবেশের গল্প আর ছবি দেখে গ্রামের কথা মনে পড়ে গেলো।

সময় সুযোগ পেলে আপু ঘুরে আসুন গ্রাম থেকে, ভালো অনুভতি কাজ করবে।

আপনি তো দেখছি সত্যিই নাছোড়বান্দা। বন্ধু থাকবে না জেনেও একেবারে যাওয়ার কথা বললেন। তবে ভালোই হয়েছে বন্ধু না থাকাতে তার পরিবারের লোকজন কিরকম আপ্যায়ন করে সেটা ভালোভাবে দেখে নিলেন। আপনার কথা শুনে দেখছি ওরা বেশ ভালোই আপ্যায়ন করেছে। তাছাড়া গ্রামে পরিবেশ উপভোগ করতে বেশ ভালই লাগে। অনেকদিন পরে গেলেও লোক গুলো সেই একই রকম আছে। আসলে মানুষের বয়সের পরিবর্তন হলেও মানুষগুলো কিন্তু সেম থাকে। বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত বেশ ভালোই লাগলো।

আসলে বন্ধু বাড়িতে থাকলে হয়তো আপ্যায়নটা আগের মতো হতো, তবে আমি চাচ্ছিলাম আসলে তারা আমাকে প্রকৃতপক্ষে কতটুকু সমাদর করে এইটা দেখার জন্য।

গ্রামীণ পরিবেশটা আমার কাছেই ভীষণ ভালো লেগেছে ভাইয়া। বাড়ির উঠোনে ধান শুকাচ্ছে। এ দৃশ্যগুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগে। কল্লোল বাড়িতে না থাকা সত্বেও বাড়ির সবাই আপনাদের আপ্যায়ন করে নিয়েছে। বাড়ির মানুষগুলোর হয়তো বয়স বেড়ে গেছে, কিন্তু অতিথিপরায়ণতা আগের মতোই আছে 🌼🦋

ভাইয়া আপনি সত্যিই নাছোড়বান্দা, আসলে বন্ধু বাড়িতে নেই জেনে ও বেরাতে গিয়েছেন।তবে আপনার বন্ধুর চাকরি হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগল। আসলে বেকারত্ব একটা বড় সমস্যা। যাইহোক আপনার বন্ধুর বাড়ির লোকজন আপনার বন্ধুর অনুপস্থিত বুঝতে দেয়নি জেনে অনেক ভালো লাগল।। শায়ান বাবুকে দেখছি উঠানের ধান গুলো কি সুন্দর করে নেড়ে দিচ্ছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার বন্ধুর বাড়ি কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আসলে শায়ান পুরো ফাঁকা বাড়ি পেয়ে বেশ খুশি হয়েছিল, ও তো শুধু নিজের মতো করে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়িয়ে ছিল।

আপনি জানতেন আপনার বন্ধু কল্লোল আজ বাসায় থাকবে না৷ তবুও আপনি আজ তার বাসায় গিয়েছেন। তবে একটা বিষয় আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো আপনার বন্ধু না থাকাতেও আপনার আপ্যায়নের কমতি হয় নাই। আপনার বন্ধুর পরিবারের মানুষ গুলো অনেক অতিথিপরায়ণ। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করবার জন্য।

অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া পড়ে। বন্ধু কল্লোলের বাড়িতে তার অনুপস্থিতিতে আপনাদের আপ্যায়নের কমতি তারা করেনি।সত্যি কথা বলতে খাওয়াটা কিছুই না, আমরা সবাই কম বেশি ভাল খাবার খেয়েই থাকি।কিন্তু হাসি মুখে বরন করাটা বড় ব্যাপার।গ্রামের মানুষ গুলো সহজ সরল হয়। উঠানে ধানগুলো দেখে খুব ইচ্ছে করছিল নেড়ে দিতে।আপনি সব সময় ঘুরে বেড়ান,এটা আমার কাছে খুব ই ভাল লাগে 😍অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। সবার জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।

আপনার বন্ধু কল্লোলের বাড়িতে গিয়ে ভালোই সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। যেহেতু আপনার বন্ধু বাড়িতে নেই তাই তার পরিবারের লোক গুলো আপনাদের আপ্যায়নে কোন কমতি রাখেনি। আসলে যখন একটি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব হয় তখন তাদের পরিবারের মানুষগুলোর সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সাথে তাদের পরিবারের মানুষগুলো আপন হয়ে যায়। মনে হয় যেন তারাও নিজের পরিবারের মানুষ। আপনার বন্ধু কল্লোলের চাকরি হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। গ্রামীণ পরিবেশে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এবং সেই অনুভূতি আমাদের মাঝে তুলেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।

হুম আপু বন্ধু বাড়িতে না থাকাতেও তারা বেশ ভালোই আপ্যায়ন করেছে।

গ্রামের সেই পুকুর ভরা মাছ আর লম্বা চালের ভাত আহা ৷ বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় খাবার ৷
যা হোক অনেক দিন পর বন্ধু কল্লোলের গ্রামে তাদের বাড়িতে গিয়েছেন৷ বন্ধু নেই তবুও গিয়েছেন৷ আসলে ভাই গ্রামে একটা সততা ঠিক যে কোনো আন্তীয় আসুক না কেন ৷ আদর যত্ন করতে কোনো কমতি করে না ৷ আর এটাই গ্রামের সবচেয়ে বড় সততা ৷ যা হোক ভাবি শায়ন মিলে বেশ চমৎকার সময় পার করেছেন ৷ আর শায়ন বাবু তো ধানের সাথে খেলা করেছে৷
সব মিলে অনেক ভালো লাগলো ৷

আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আপনার মত প্রকৃতির টানে গ্রামে ঘুরে আসি। বন্ধু নেই তাও আপনি পরিবারসহ বন্ধুর বন্ধুর বাড়িতে চলে গেলেন। আর আজকাল তো কেউ বন্ধু না থাকলে তাদের বাড়িতে ঢুকতেই চায় না। এই পোস্টটি পড়লে সবাই বুঝতে পারবে আসলে ভালোবাসা জিনিসটা লুকোচুরি নয়। ভালবাসলে তার উপস্থিতিতে ভালবাসতে হয় না।

যেই মানুষগুলো অতিথি বৎসল হয়, তাদের সেই আপ্যায়ন পদ্ধতি কখনওই পাল্টায় না। প্রায় একই থাকে। আর মাঝে মাঝে হঠাৎ করে পুরোনো মানুষগুলোর সাথে দেখা করতে, দু চারটে সুখ দুঃখের কথা বলতে বেশ ভালোই লাগে। অনেক স্মৃতি রোমন্থন হয়ে যায়।আর পুচকু তো দেখছি ধানের সমুদ্র পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে। 😃

ভাইয়া আপনি তো আসলেই নাছোড়বান্দা। বন্ধু নেই মানে সে মনে হয় চাচ্ছিল যে আপনারা যাতে না যান। আপনার জোরাজুরি দেখে পরে ঠিকই রাজি হল। গিয়ে অবশ্য আপ্যায়ন ভালোই পেয়েছেন বন্ধু না থাকাতেও। অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। গ্রামীন পরিবেশে যাওয়া সার্থক হয়েছে আপনাদের। কল্লোলের পরিবারের লোকজন আপনার পূর্ব পরিচিত ছিল জন্যই গিয়ে ভালো লেগেছিল। সায়ান বাবু তো খুব মজা করেছে মনে হচ্ছে।