রবিবারের আড্ডা - পর্ব ১০৬ | জীবনের গল্প - পর্ব ১৪

in hive-129948 •  4 days ago 

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JNtCu4gnLgjCAoeFLeGcMBiMGewp5npKN9VgJEvyvGBqxGQDof2xSZS4gxZu8rL7Wmmk63QUXrffMu9LuQxoa8dYVMhei1ta.png

ব্যানার ক্রেডিট @hafizullah

সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের নতুন আয়োজন জীবনের গল্পের শো-তে । মূলত আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই বলেছিলাম, রবিবারের আড্ডার কিছুটা ভিন্নতা হবে, ঠিক সেই ভিন্নতার জায়গা থেকেই, এই সংযোজন। মানুষের জীবনে কত গল্পই তো থাকে, কত সুখস্মৃতি থাকে, থাকে পাওয়া না পাওয়ার অভিজ্ঞতা কিংবা হারিয়ে ফেলার তিক্ততা কিংবা থাকে সফলতার হাজারো গল্প, যা হয়তো অনায়াসেই, অন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করে ফেলে মুহূর্তেই। এই গল্পগুলো হয়তো অজানাই থেকে যায়, আমরা আসলে কান পেতে থাকি, এই গল্পগুলো শোনার জন্য। এইজন্য বাংলা ব্লগ আয়োজন করেছে, জীবনের গল্প। যেখানে অতিথি তার নিজের জীবনের গল্প অন্যদের সামনে অনায়াসেই বলে ফেলবে এবং অতিথি নিজের থেকেও বেশ হালকা হবে, সেটা হয়তো মনের দিক থেকে।

dsds.PNG

আজকের অতিথিঃ @mohinahmed
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ

ফেলে আসা জীবন থেকে স্মৃতিচারণ।



আজকে যে ঘটনাটা শেয়ার করব, তা মূলত আমার জীবনে ঘটে যাওয়া তিক্ত অভিজ্ঞতা। বিগত সময়ে আমি বলেছি, একসময় আমি সাউথ কোরিয়াতে থাকতাম। যেহেতু কোরিয়াতে দীর্ঘ সময় থেকেছি, তাই ঘটনাটা প্রবাস জীবনের। প্রবাস জীবনে প্রচুর পরিমাণে কাজের ভেতরে থাকতে হয় , তারপরেও মাঝে মাঝে টুকটাক ছুটি পাওয়া যায়। যেহেতু আমি ঘুরতে ভালবাসতাম, তাই ছুটি পেলেই আশেপাশের কান্ট্রি গুলোতে ঘোরার চেষ্টা করতাম। ১৯ সালের দিকে একবার নতুন বর্ষ উপলক্ষে বর্ষপূর্তির চার দিনের ছুটি পেয়েছিলাম। তাছাড়া কোরিয়াতে থাকার সময়ই আমার পার্শ্ববর্তী ফ্ল্যাটে বাংলাদেশী আরো দুই ভাই থাকতো, তাদের সঙ্গে আমার বয়সের তফাৎ থাকলেও সম্পর্কটা ছিল অনেকটা বন্ধুত্বপূর্ণ। যেহেতু চার দিনের ছুটি পেয়েছি, তাই আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম পার্শ্ববর্তী কান্ট্রি জাপানে ঘুরতে যাব। আমরা মূলত যে এজেন্সির কাছ থেকে জাপানে যাওয়া আসার ভিসা এবং এয়ার টিকেট কিনেছিলাম, তারা আমাদেরকে শুরুতেই বলে দিয়েছিল এই সময় জাপানের নারিতা এয়ারপোর্ট দিয়ে জাপানে ঢোকা ঠিক হবে না, কেননা সেখানে কিছু নিষেধাজ্ঞা চলছে । তবে হানেদা এয়ারপোর্ট দিয়ে জাপানে প্রবেশ সহজ হবে। যেহেতু, নারিতা এয়ারপোর্ট এর পাশেই আমাদের ভ্রমণ স্থানগুলো ছিল এবং হোটেল বুকিং সেখানেই করেছিলাম, তাই আর অন্য এয়ারপোর্টে আমরা যেতে চাইনি । এটাই মূলত আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আমরা আসলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। অবশেষে যখন আমরা নারিতা এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছালাম, সেখানে গিয়েই ইমিগ্রেশন সেন্টারে আমাদের তিনজনকে আটকে দেওয়া হলো। তারা আমাদের আলাদা রুমে নিয়ে গিয়ে নানা রকম প্রশ্ন করা শুরু করে দিয়েছিল, যদিও আমি এয়ারপোর্টে নামার পরেই কিছু জাপানি মুদ্রা সংগ্রহ করেছিলাম আর বাকি টাকা ক্রেডিট কার্ডে ছিল। তবে আমার সঙ্গে যে দুজন ছিল তাদের কাছে তেমন কিছুই ছিল না শুধুমাত্র ফিরে যাওয়ার টিকিট ছাড়া। আমরা আসলে চিন্তা করেছিলাম, যা খরচ হবে আমি নিজের পক্ষ থেকে দেব, তারপর কোরিয়াতে ফিরে গিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেব। অবশেষে ইমিগ্রেশন রুমে আমাদেরকে আলাদা করে নানাভাবে প্রশ্ন করা শুরু করে দিয়েছিল, কেননা তারা ভেবেছিল সব কাজ যেহেতু আমি একাই করছি ওদের দুইজনের হয়ে, তাই ওরা আমাকে অনেকটা মানব পাচারকারী ভেবেছিল। তাছাড়া ওরা দুজন তেমনটা ইংলিশ এবং কোরিয়ান ভাষা ভালোভাবে বলতে পারত না এবং আমার সঙ্গে ওদের কবে পরিচয় হয়েছে সেটা বলতেও ওরা ভুল করেছে, এজন্যই মূলত ইমিগ্রেশন অফিসাররা আমাদেরকে বেশি সন্দেহ করেছিল। যদিও আমি অনেক ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম এবং আমাদের কোরিয়ার কর্মস্থলের আইডি কার্ড দেখিয়েছিলাম এবং আমার বিগত সময়ে অন্যান্য দেশের ভ্রমণের ছবি দেখিয়ে ছিলাম, তারপরেও তারা বিশ্বাস করেনি। অবশেষে তারা আমাদেরকে, জাপানে আর কোন ভাবেই ঢুকতে দেয়নি এবং ঐদিনই ফ্লাইট ধরে ফেরত পাঠিয়েছিল কোরিয়াতে। এটাই ছিল মূলত ঘটনা, আমার জীবনে ঘটে যাওয়া তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে, শুধু একটা কথাই বলতে চাই, জীবনে আত্মবিশ্বাসী হওয়া ভালো তবে তা অতিরিক্ত নয়।

অতিথি ও উপস্থিত দর্শকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ।

Screenshot_20250217_010453_Chrome.jpg

jilapi.PNG

পুরস্কার বিতরণের সম্পূর্ণ অবদান @rme দাদার

উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা বেশ ভালই উপভোগ করেছিল অতিথির জীবনের গল্প। তারা বেশ ভালই প্রশ্ন রেখেছিল এবং উত্তরগুলো খুঁজেও পেয়েছিল, অতিথির গল্পের মাঝে।

সব মিলিয়ে জীবনের গল্প চলছে, একদম দুর্বার গতিতে । পরবর্তীতে আমরা আসছি কিন্তু আপনার দরজায়, আপনি প্রস্তুত তো।

ধন্যবাদ সবাইকে।


2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAr2C8nYkd2N.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW787kzcgWYkwvNtA2hFHjZmHJF7T9cU9fuNnktTXyjPQrbBYfZq5mcrxbtVXjuouLjrPEViYtkZQyE2bNmeVzsXTft.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

রবিবারের আড্ডায় অতিথি হিসেবে মহিন ভাইকে পেয়ে বেশ ভালো লাগছিল। ভাইয়া খুব সুন্দর করে ও গুছিয়ে আমাদের মাঝে তার ফেলে আসা জীবনের স্মৃতিচারণগুলো তুলে ধরেছিল। জীবনের গল্প থেকে আমরা অনেক কিছুই শিক্ষা নিতে পারি । অনেক ধন্যবাদ দারুন একটি রিপোর্ট আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য।

ধন্যবাদ আপু আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

আসলে রবিবারের আড্ডা আমার কাছে সবসময় খুব ভালো লেগে। বিশেষ করে এই আড্ডার মাধ্যমে আমরা একজন ব্যক্তিকে খুব কাছে থেকে চিনতে পারি আর সেটি বিভিন্ন আলোচনা ও বিভিন্ন রকম প্রশ্নের মাধ্যমে।ভালো থাকবেন সব সময় এই কামনা করি।্

আশা করি পরবর্তীতে আপনার সঙ্গেও একদিন আড্ডা হবে আপু।

তবে হানেদা এয়ারপোর্ট দিয়ে জাপানে প্রবেশ সহজ হবে।

ভাই আমরা হানেদা এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেছিলাম, তবে নারিতা এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলে কোনো সমস্যা হতো না। যাইহোক জীবনের গল্পের অতিথি হয়ে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। চেষ্টা করেছি আমার জীবনের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

আপনার অভিজ্ঞতা কিন্তু আমাদেরকে বাস্তবতা শিখিয়ে দিয়েছে ভাই। আমি নিজেও, আপনার গল্প থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। আসলে আমি মনে করি এমন বাস্তব ঘটনা গুলো শুনলে, কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। আর সেটা ভেবেই এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন সবসময়।

মহিন আহমেদ ভাইয়ের সাথে রবিবারের আড্ডাটা বেশ ভালোই জমে ছিল। কোরিয়া থেকে জাপান যাওয়ার সময় তার সাথে ঘটে যাওয়া কিছু কথা সে আমাদের সাথে শেয়ার করেছিল।

মহিন ভাইয়ের গল্পের মধ্যে আমাদের জন্যে আছে কিছু শিক্ষা, যদি ঘটনাটা ছিল উনার জন্যে তিক্তকর!

১। অভিজ্ঞদের কথা ফলো করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। যারা যে লাইনে অভিজ্ঞ, সেই লাইনের বিষয়ের তাদের পরামর্শ মেনে চলাটা জরুরী।
২। যেকোন এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন ক্রস করাটা সব সময়ই স্ট্রেসফুল কাজ। একটু উনিশ-বিশ হলেই আটকে দিতে পারে!

যাহোক। ভাল লাগলো গল্প শুনে।

আপনার পুরো মন্তব্যের সঙ্গে, আমি সহমত পোষণ করছি ভাইয়া, এটা সত্য কারো জীবনের তিক্ততা আবার অন্যদের জন্য উপদেশ বার্তা বয়ে আনে।

রবিবারের আড্ডার মুহূর্তটা এত সুন্দর করে তুলে ধরেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। মহিন আহমেদ ভাইয়ার জীবনের গল্প জেনে ভালো লাগলো। পুরো পোস্ট পড়ে ভালোভাবেই পুরোটা জেনে নিতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে এটি সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।