ফ্লেক্সিলোড

in hive-129948 •  2 years ago 

mobile-g2842a8c03_1920.jpg
source

রাত তখন ১ টার কাছাকাছি। হঠাৎ এক পরিচিত ছোট ভাই মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়েছে এবং তাতে লিখেছে ভাইয়া আমার ১০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড লাগবে। জরুরি একটু কথা বলতাম, এই জন্য মুঠোফোনে পয়সা দরকার। যদি তুমি একটু ম্যানেজ করে দিতা, তাহলে আমি উপকৃত হইতাম। যেহেতু একদম পরিচিত ছোট ভাই, তাই তার এমন অনুরোধ মধ্যরাতে ফেলা অনেকটাই মুশকিল হয়ে গেল।

সে আমাকে তো বলেই ফেলল, ভাইয়া তোমার যদি বিকাশ বা নগদে টাকা থাকে তাহলে সেখান থেকে আমাকে দাও। এছাড়া এই রাত্রিবেলা, আমি আর কোন উপায় দেখছি না।

সেই ছোট ভাইয়ের জায়গায় হুট করে নিজেকে একবার বসিয়ে দেখলাম। বয়স কত হবে, সম্ভবত ১৭-১৮ এর মতো । সবেমাত্র কলেজে উঠেছে। পড়াশোনা জন্য বাহিরে থাকে। মুঠোফোনে পয়সার দরকার হতেই পারে, সেটা যে কোন সময়ে। কখন কোন প্রয়োজনে কার সঙ্গে কথা বলতে হয়, তা তো আর ঠিক নেই। যেহেতু প্রয়োজনে আমার শরণাপন্ন হয়েছে, তাই বললাম দেখি আমার মোবাইল ব্যাংকিং এর একাউন্ট গুলো চেক করে, পয়সা আছে কিনা।

সত্যি বলতে কি,আমি নিজেই তেমন একটা আমার মুঠোফোনে খুব একটা বেশি পয়সা রাখি না। আসলে মুঠোফোনে খুব একটা পয়সার দরকার পড়ে না বললেই চলে । তাছাড়া এখন যার সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়, তার সঙ্গে ইন্টারনেটের সহযোগিতায় মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলে নেই।

যেহেতু অপরপ্রান্ত থেকে সেই ছোট ভাই আমার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছিল, তাই আমি দ্রুত চেক করলাম মোবাইল ব্যাংকের একাউন্ট গুলো।ঘেঁটেঘুঁটে দেখলাম বিকাশে ৪০ টাকার বেশি নেই। যাইহোক তার নাম্বারে সেটাই পাঠিয়ে দিলাম এবং মেসেঞ্জারে ছোট্ট একটা খুদেবার্তাও সঙ্গে পাঠিয়ে দিলাম, বললাম যা ছিল তাই পাঠিয়ে দিয়েছি ভাই,এটা দিয়েই কাজ চালিয়ে নাও।

ও হয়তো যাকে ফোন করবে, তার হয়তো মেসেঞ্জার নেই বা নতুবা তার স্মার্ট ফোন নেই। তাই বাধ্য হয়ে পয়সা খরচা করে মুঠোফোনে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে হয়তো অনেকটা নিজের প্রয়োজন থাকতেই পারে। তাই আমি ব্যাপারটাকে একটু স্বাভাবিকভাবেই দেখার চেষ্টা করেছি।

আমারও ফ্লেক্সিলোড নিয়ে ফেলা আসা জীবনে কতো অতীত আছে, সেটা হয়তো ঐ কলেজ জীবনে পড়ার সময়েই ঘটেছিল। তখন তো আর এরকম মেসেঞ্জার বা ইন্টারনেট সর্বত্র ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই পয়সা খরচা করে প্রিয় মানুষ গুলোর সঙ্গে মুঠোফোনেই কথা বলতে হতো।

হয়তো এরকম রাত-বিরাতে, আমিও কত বন্ধু-বান্ধবকে বা নিজের পরিচিত বড় ভাইদেরকে মুঠোফোনের ফ্লেক্সিলোডের জন্য কত বায়না ধরেছিলাম। হয়তো কখনো নিজের মতো করে কাঙ্খিত উত্তর পেয়েছিলাম আবার কখনো প্রত্যাশা পূর্ণ হয়নি।

আসলে এই বয়সটা এরকমই, তারপরেও যত কিছুই হোক, ফোন আলাপে তো কত কথাই হয়ে থাকে । কথায় কথা বাড়ে, সেই কথায় আবার আবেগ, ভালোবাসা ও অনুভূতি জড়িয়ে থাকে। হয়তো সেই সঙ্গে মুঠোফোনের খরচাটা ম্যানেজ করার জন্য, এমন আবদার গুলো আমাদের মত কাছের বড় ভাইদের কাছে হুটহাট এসে থাকে।

দীর্ঘদিন পরে এমন অনুরোধ, মুহুর্তেই আমার ফেলা আসা জীবনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। অনেকটা সময় একা একাই হাসতেছিলাম। তবে এক প্রকার প্রশান্তিই পেয়েছি, সেই ছোট ভাইকে সঠিক সময়ে ফ্লেক্সিলোড করতে পেরে।

Banner-9.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই বয়সটা আসলে এমন না যা আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয় ৷ আমার কথাই যদি বলি তবে মাঝে মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে ৷ যদিও বাজারের ফ্লেক্সিলোডের দোকানওলার সাথে পরিচিত ৷ তাই বলেলই দিয়ে দেয় ৷
যা হোক ভালো লাগলো যে সেই ছোট ভাইকে ফ্লেক্সিলোড করে সাহায্য করেছেন ৷

ফেলে আসা অতীতের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল ভাইয়া। হয়তো হুটহাট করে ফোনের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় কথাগুলো থেকেই যায়। তাই সেই সময় উপায় না পেয়ে কাছের মানুষগুলোকে বলা হয় লোড দিয়ে দিতে। ভাগ্যিস আপনার বিকাশে টাকা ছিল। হয়তো সেই টাকাতে তার প্রয়োজন মিটেছে। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে।

হুটহাট অতীত মনেপরে গেলে কিন্তু খারাপ লাগে না, বরং ভালোই লাগে। ধন্যবাদ আপু আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য।

ভাইয়া আমিও আপনার মত এ ধরনের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। যার কারণে এখন নিজের বিকাশের কিছুটা টাকা রেখে দেই। নিজের বলেন আর অন্যের বলেন কখন যে টাকা প্রয়োজন হয় তা বুঝা বড় মুশকিল। মোবাইল কোম্পানিতে আর সময় অসময় বুঝবে না। নির্ধারিত সময়েই ব্যালেন্স অফ হয়ে যাবে। তাই বুদ্ধি করে আগে থেকে বিকাশে টাকা ভরে রাখাই ভালো নয় কি? ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

অবশ্যই ভালো, এই জন্য টুকটাক কিছু টাকা মোবাইল ব্যাংক একাউন্টে রাখা ভালো।

আসলে ভাই ছাত্র জীবনে এরকম পরিস্থিতিতে যারা হয়তো ফোন ব্যবহার করেছে মোটামুটি সবাই কোন না কোন দিন এমন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে। যখন ফোনে টাকা থাকবে না এবং নিজে কোথাও থেকে ভরতেও পারবে না তখনই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আপনি ছোট ভাইকে হেল্প করে ভালোই করেছেন। ১০০ টাকা চেয়েছিল সেখানে আপনার বিকাশে যা ছিল তাই দিয়েছেন বেশ ভালো লাগলো। ফেলে আসা অতীত মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

এমনটা কমবেশি আমি মনেকরি সবার জীবনেই ঘটেছে, যা আসলেই ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করেছিল। তবে তা আলোকপাত করতে পেরে ভালোইবোধ করছি। ধন্যবাদ ভাই, আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

আমার মন্তব্যের সুন্দর একটি ফিডব্যাক দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

১৭-১৮ বছরের বয়স যখন তখন তো এমন অস্থিরতা থাকাটাই স্বাভাবিক। যেহেতু তার রাত ১টার দিকে ফ্লেক্সিলোডের প্রয়োজন পড়েছে সেহেতু ব্যাপারটা গুরুতর, বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে। আর তাই নিরুপায় হয়েই এত রাত্রিতে ও আপনাকে ফোন করতে বাধ্য হয়েছে। এরকম বয়সে হয়তোবা এমন ঘটনা অনেকের জীবনেই আসে। আমিও ঠিক এরকম একটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম। তাই তার এত রাত্রিতে ফ্লেক্সিলোড চাওয়াটাকে আমি অনর্থক মনে করতে পারছি না। তবে ভাইয়া, আপনি যে আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে যা ছিল তাই পাঠিয়ে দিয়েছেন, জেনে খুবই ভালো লাগলো। আমার বিশ্বাস আপনার এই ৪০ টাকা তার অবশ্যই কাজে লেগেছে। ভাইয়া আপনার মন মানসিকতাকে সব সময় আমি শ্রদ্ধা করি। আপনার চিন্তাভাবনা গুলো সব সময় পজেটিভ মাইন্ডের হয়, এটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ

ধন্যবাদ ভাই আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য।

ঠিক বলেছেন ভাই ফোন আলাপে কত কথায় থাকে। কথায় কথা বাড়ে ভালোবাসা বাড়ে। মাঝে মাঝে আমিও আমার বন্ধুদের থেকে এইরকম আবদার পেয়ে থাকি। প্রায়ই পেয়ে থাকি। সেজন্য এই বিষয়টি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা আছে। আমার কাছে থাকলে কখনোই না করি না তাদের। যদিও মুটোফোনে কথা বলার জেনারেশনে আমি না। আমি তো ফেসবুক ম‍্যাসেনজার এর যুগের ছেলে হা হা।।

যাক আপনার সম্মুখে যে আগের জেনারেশনের কিছু কথা আলোকপাত করতে পেরেছি, এটাই তো অনেক বেশি। ধন্যবাদ ভাই।

যাহোক ভাইয়া, শেষ পর্যন্ত যে আপনার বিকাশ একাউন্টে ৪০ টাকা ছিল। আর বর্তমান সময়ে টাকা খরচ করে কথা বলাটা অনেকটাই কমে গেছে। কারণ অনেকের বাড়িতে এখন ইন্টারনেটের ওয়াইফাই লাইন আছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব কথা হয়ে যাচ্ছে এখন। রাত একটার কাছাকাছি অর্থাৎ মধ্য রাতে ছোট ভাইয়ের একটি ক্ষুদে বার্তা পাওয়ার সাথে ৪০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে দিতে পেরেছেন এটাই তো অনেক কিছু। ফ্লেক্সিলোড দিয়ে আপনার অনুভূতির কথাগুলো খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এমন ঘটনার আলোকপাত করতে পেরে, আমি চেয়েছি কিছু অতীত সামনে নিয়ে আসার জন্য।