আধ্যাত্মিক নিরাময় || Spiritual Healing || @shy-fox 10% beneficiary

in hive-129948 •  2 years ago 

শিশু ডাক্তারের কাছ থেকে যখন পরামর্শ নিয়ে বাসায় ফিরছি তখনো বাবুর শরীরের ঐ ফোসকা পড়ার ক্ষত চিহ্ন গুলো যেন বারবার আমাকে রক্তাক্ত করে যাচ্ছিল । আমি যেন কোনভাবেই নিজেকে সামলে নিতে পারছিলাম না ।

গত দুদিন বেশ ভালোই শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম গিয়েছে । বেশ ভালোই দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল হসপিটালে বাবুকে নিয়ে । ভেবেছিলাম সবকিছুই হয়তো নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে । তবে আজকের দিনটাও বেশ ভিন্ন রকম ভাবে শুরু হয়ে গিয়েছিল ।

20220926_143215-01.jpeg

ঘুম থেকে উঠেই যখন কমিউনিটিতে সকলের সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছিল তখনও সবকিছু ঠিকই ছিল । মুহূর্তেই কান্নার আওয়াজ তবে সেটা ক্রমাগত বেড়েই চলছিল । তখনো বাবুকে দেখিনি কিন্তু যখন কান্নার শব্দটা খুব তীব্র হচ্ছে তখন নিজেই বিছানা থেকে উঠে পাশের রুমে গিয়ে ওকে দেখার চেষ্টা করলাম । পরিস্থিতি একদম হিতে-বিপরীত ।

এইদিকে আজ সন্ধ্যায় আবার টিনটিনের জন্মদিন উপলক্ষে স্পেশাল হ্যাংআউট আছে কমিউনিটিতে । সেখানে আবার দীর্ঘ সময় অনবরত কথা বলতে হবে এবং পুরো অনুষ্ঠানটাকে একপ্রকার গুছিয়ে পরিচালিত করতে হবে । তার জন্যও একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার।

20220926_143142-01.jpeg

যাইহোক ছোট্ট করে একটা বার্তা লিখে দিলাম সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে । বললাম সন্ধ্যার আগেই যেভাবেই হোক ফ্রি হয়ে যাব । বাবুর শারীরিক অবস্থার বেশ ভালোই অবনতি হয়েছে, আমাকে শিশু ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে । যদিও আমার সহযোদ্ধারা বেশ ভালোভাবেই আমাকে মানসিক সাপোর্ট দিয়েছিল । অতঃপর বেরিয়ে গেলাম শিশু ডাক্তারের পরামর্শের জন্য ।

দুপুরের পরে বাহিরে বসেই মোবাইলে টুকটাক কিছু কাজ সেরে নিয়েছি । কারণ তখনও শিশু ডাক্তার আসেনি ক্লিনিকে । অবশেষে সবকিছু দেখা শেষে ডাক্তার বলে দিল , এটা সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রত্যেকটা বাচ্চারই হচ্ছে এবং পূর্বেকার যে ওষুধগুলো অন্যান্য ডাক্তাররা দিয়েছে, সেই গুলো সে একটু দেখার চেষ্টা করলো । তবে সে শুধু বলল যে, সব কিছুই ঠিকই আছে তবে আমি দুটো ওষুধ যুক্ত করে দিচ্ছি । যেহেতু ভাইরাস জনিত রোগ এটি । তাই virux সিরাপটা আধা চামচ করে ছয় ঘন্টা পর পর খাওয়াবেন আর সঙ্গে virux মলমটা লাগাবেন ক্ষতস্থান গুলোতে আর পূর্বেকার ওষুধ গুলো চলবেই কমপক্ষে সাতদিন।

20220926_143208-01.jpeg

অতঃপর বাসার উদ্দেশ্যে ফেরত । কিন্তু এত বড় শহরটাতে এই ছোট ওষুধ দুটো যেন কোনোভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না । অনেকটা হন্যে হয়ে খুঁজছিলাম এই দোকান থেকে ঐ দোকানে । আমার অস্থিরতা দেখে রিক্সাওয়ালা ভদ্রলোক হয়তো আমার মনের অবস্থা একটু হলেও আন্দাজ করতে পেরেছিল। পৃথিবীটা আসলে বড্ড আধ্যাত্মিক একটা জায়গা । যদিও এখানে কেউ কারো ব্যথা বোঝেনা । তারপরেও কিছু মানুষ হালকা করে অনুভব করার চেষ্টা করে ।

আমার মূলত যে কয়টা পরিচিত ওষুধের দোকান ছিল সব কয়টাতেই খোঁজ নিলাম কিন্তু মলমটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল তবে সিরাপটা যেন কোনভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না । মূলত সিরাপটাই দরকার আর মলমটা বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য ।

এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে রিক্সা নিয়ে ঘুরছি বিভিন্ন দোকানগুলোতে । অনেকটাই নাজেহাল হয়ে গিয়েছি তাও যেন ওষুধ গুলো খুঁজেই পাচ্ছিলাম না । যখন একদম শেষমেষ হাল ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম । তখন সাইফুল ভাই আমাকে বলল, তার কিছু পরিচিত ওষুধের দোকান আছে, তবে সেটা শহর থেকে একটু বাহিরে । আমি যদি চাই , তাহলে সে আমাকে সেই দিকটাতে নিয়ে যেতে পারে ।

আমার আসলে মূলত ওষুধ পাওয়া দিয়ে কথা । আমি তাকে বলে ফেললাম, আমার কোন সমস্যা নেই । আমি যেতে রাজি আছি । শহরের বাহিরের দিকেও যে আজকাল বেশ ভালো ভালো ওষুধের দোকান হয়েছে তা আসলে আমার জানা ছিল না । তবে খুব একটা বেশি ঘোরাঘুরি করা লাগেনি । খানিক দূর যেতেই পাড়া-মহল্লার ছোট ফার্মেসীতেই ওষুধটা পেয়ে গিয়েছিলাম।

20220926_143154.jpg

যে সিরাপটা আমি শহরের মেইন ফার্মেসীর দোকানগুলোতে খুঁজে পেলাম না । সেই সিরাপটা আমি খুঁজে পেলাম পাড়া-মহল্লার ফার্মেসীর দোকানে । দোকানদার তো আমাকে বলেই ফেলল, আসলে এই ওষুধগুলো মূলত খুব একটা সকলের দরকার পড়ে না । তাছাড়া সব সময় তো আর এই সমস্যাগুলো হয় না । যার কারণে সকলে আসলে এই ওষুধগুলো দোকানে খুব একটা রাখে না । যদিও আমি ভাবিনি যে , এই পাড়া-মহল্লার ফার্মেসিতে এসে এই ওষুধ খুঁজে পাব । তবে তারপরেও পেয়ে ভালই লাগছে । সাইফুল ভাইয়ের প্রতি যেন আলাদা একটা কৃতজ্ঞতা মনের ভিতর থেকে প্রকাশ পাচ্ছে ।

দুটো একশো টাকার নোট হাতে ধরিয়ে দিয়ে যখন বলে ফেললাম, সাইফুল ভাই আমার বাসায় আসেন । অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যান । কথাটা শুনে, অদ্ভুত রকমের একটা চাহনিতে তাকিয়ে ছিল সাইফুল ভাই আমার দিকে । সেই অদ্ভুত চাহনির ভিতরে অব্যক্ত কিছু ভাষা লুকিয়ে ছিল ।

20220926_143342.jpg

সে হাসি মুখেই বলল, ভাই আপনি অনেক ছোটাছুটির পরে ওষুধ পেয়েছেন, তাতেই আমি খুশি হয়েছি । আপনার বাসাটা চিনে রাখলাম, যদি কখনো সময় সুযোগ হয়, তাহলে অন্য একদিন এসে চা খেয়ে যাবো । আজ আরও ভাড়া মারতে হবে,সময় বড্ড কম । আপনার বাবুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি ।

সাইফুল ভাইয়ের কথা গুলো শুনে মুহূর্তেই যেন মনের ভিতরে আলাদা একটা প্রশান্তি বয়ে গেল । যেটা অনেকটাই আধ্যাত্মিক । আজ বড্ড উপকার করছে সে আমার। তার সহযোগিতার কথা বহুদিন মনে থাকবে ।

Banner-3.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সারাদিন বাচ্চাকে নিয়ে এত ছোটাছুটি করার পরও রাতের বেলায় এত চমৎকারভাবে হ্যাং আউটটি পরিচালনা করেছেন ভাইয়া সত্যি আপনার প্রশংসা না করে পারছি না। যাইহোক অনেক ঘোরাঘুরির পর সাইফুল ভাইয়ের কথামতো দোকানে গিয়ে ওষুধটি পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আশা করি এই ওষুধ খেয়ে এবং মলম লাগিয়ে সায়ান বাবুর একটু হলেও আরাম হয়েছে। কি অবস্থা এখন জানাবেন ভাইয়া।

এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি আপু । সময় লাগবে ।

বাবুর শরীরের কথা শুনে খুবই খারাপ লেগেছে ভাইয়া। বাবুর শরীরে ফোসকা পড়ার ক্ষতর কথা আসলেই খুব খারাপ লাগার কথা। কিন্তু আবার খারাপ লেগেছে ডাক্তারের দুইটি ওষুধ দিয়েছে কিন্তু শহরে সেগুলো পেলেন না অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর। পাডার ওষুধ দোকানে ওষুধ খুঁজে পেয়েছেন। এত মানসিক সাপের মধ্যেও আপনি যে এত সুন্দর ভাবে স্পেশাল হ্যাংআউট পরিচালনা করেছেন। আমি মনে করেছিলাম গতকালকে আপনি অনেক খুশিতে ছিলেন। আপনি আপনার কাজকে অনেক সম্মান করেন তা আজকের পোস্ট দেখেই বুঝতে পেরেছি। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখার আছে ভাইয়া। দোয়া করি যেন বাবুটা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। এবং বাবুর দীর্ঘ হায়াত কামনা করি।

সবার জীবন থেকেই কমবেশি শিক্ষার নেওয়ার বিষয় থাকে আপু । আমি নিজেই শিখছি প্রতিনিয়ত।

শায়ান বাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কথা জানতে পেরে খুবই খারাপ লাগলো ভাইয়া।শায়ান বাবু যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই প্রার্থনা করছি। ভাইয়া, গতকাল আপনি ফুল এনার্জি নিয়ে যেভাবে হ্যাংআউট পরিচালনা করলেন তাতে করে কোনভাবেই বোঝার উপায় নেই সারাদিন আপনার উপর দিয়ে ঠিক কতটা ধকল গিয়েছে। আজ যখন আপনার পোস্ট পড়লাম তখন বেশ বুঝতে পারছি আপনার ঠিক কতটা মানসিক চাপ ছিল। এতকিছুর পরেও আপনি কিভাবে সবকিছু সামলিয়ে ওঠেন তা বুঝে উঠতে পারি না। সত্যি ভাইয়া, আপনাকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে। ভাইয়া আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

কর্মই যেখানে প্রধাণ মুখ্য বিষয় সেখানে আসলে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা গুলোর প্রাধান্য সময় কই ।

ভাই শায়নের কমে নি শুনে খুবই খারাপ লাগছিল ৷ আমি বুঝতে পারতেছি আপনার উপর দিয়ে কী চাপ চাচ্ছে ৷ এদিকে কমিউনিটির কাজ আবার শায়ন বাবার সমস্যা ৷
যা হোক সমস্যা যেহেতু সমাধান তো করতে হবে ৷ তবে ভাইয়া একটা বিষয় খুবই ভাবাচ্ছে সেটা হলো ৷ যখন যেটা প্রয়োজন সেটা আসলে সহজে পাওয়া যায় না ৷ যেমনটা আপনি সারা শহর ঘুরেও দুটো ওষুধ পান নি ৷

তবে ভাইয়া একটা কথা বলে চেষ্টা আর ধৈর্য রাখলে উপায় পাওয়া যায়৷ ঠিক যখন আপনি. ওষুধ পাওযার আশা ছেরে দিলেন ৷ তখনই সাইফুল ভাই আসলে বিপদে কখন কার মাধ্যমে উপকার পাওয়া যায় তা বলে বলা মুশকিল ৷
হয়তো বা সেই ঈশ্বর তাকে পাঠিয়েছে ৷
যা হোক পরিশেষে ওষুধ পেয়েছেন অনেকটা স্বস্থি পেলাম ৷
আসলেই ভাই দুনিয়াটা বড় অদ্ভুত ৷
সর্বোপরি শায়ন বাবা তরকারি সুস্থ হোক এই কামনা ৷

শায়ানটা কবে যে সুস্থ হয়ে উঠবে,অন্তত এমন মানুষের দোয়ায় হলেও বাচ্চাটা সেড়ে উঠুক,ভাবলেই খারাপ লাগছে আসলে।

বাচ্চারা অসুস্থ হলে এটা অনেক বড় সমস্যা।ওরা তো কিছু বলতে পারে না কী সমস্যা হচ্ছে। একটা ঔষধের জন্য এতো দৌড়াদৌড়ি। সাইফুল ভাই আপনার অবস্থা বুঝে ঠিকই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। আপনার পোস্ট পড়ে বেশ অনেক কিছু শিখলাম ভাই। শত ঝামেলার মধ‍্যেও নিজের দায়িত্বে অটল থাকা।।

পৃথিবীটা আসলে বড্ড আধ্যাত্মিক একটা জায়গা । যদিও এখানে কেউ কারো ব্যথা বোঝেনা । তারপরেও কিছু মানুষ হালকা করে অনুভব করার চেষ্টা করে ।

সাইফুল ভাই আপনার কষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। তাইতো তিনি আপনাকে ঔষধ খুঁজতে সাহায্য করেছিলেন। আসলে এমন কিছু মানুষ আমাদের চারপাশে আছে যারা আমাদের আপনজন নয়। তবুও আমাদের কষ্টগুলো অনুমান করতে পারে। তারা আপনজনের মতই আমাদের পাশে দাঁড়ায়। আশা করছি শায়ান বাবু দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।🤲🤲

এই যাত্রায় আসলে সাইফুল ভাইয়ের প্রতি বেশ কৃতজ্ঞ আমি আপু ।

সন্তানদের কিছু হলে পিতা মাতার মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তাতে আরো শিশুসন্তান, আপনি কি যে হেজিটেশন ও যন্ত্রণার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তা বলার অবকাশ রাখে না। যাইহোক সাইফুল ভাইয়ের মাধ্যমে বাবুর ওষুধটি পাওয়ার জন্য সাইফুল ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে বাবুর দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করছি।

ঈশ্বর আপনার আশীর্বাদ কবুল করুক ভাই ।

ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে সত্যি খারাপ লাগছে ,আসলে বাচ্চাদের এই একটা সমস্যা হুটহাট কখনো যে কি হয়ে যায় বলা যায়না। তবে দোয়া করছি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক। তবে ভাইয়া সত্যি বলতে আপনার এই ভালো মনমানসিকতার জন্যে আপনার সাথে ভালো কিছুই হবে।

আসলে বাচ্চারা এমন অসুস্থ হয়ে গেলে সব বাবা মা যেন পাগল পাগল হয়ে যায়, সায়ানের জন্য সুস্থতা কামনা করছি। সে ওষুধের সিরাপটি পেয়েছেন দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। আসলে মাঝে মাঝে এমন কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ হাজার খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া যায় না। আশা করছি সায়ান খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবে।