ব্যানার ক্রেডিটঃ @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগের আয়োজন রবিবারের আড্ডার নতুন সংযোজন হচ্ছে এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা । মূলত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে তাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরা হয়। যে সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়, তাদের নিয়েই মূলত এই অনুষ্ঠানটা পরিচালিত করা হয়।
তাছাড়া এই অনুষ্ঠানটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেহেতু চার-পাঁচজন অতিথি থাকে প্রথমত দুইবারে সকল অতিথির মতামত শোনা হয়, দ্বিতীয়তঃ কিছুটা বিরতি দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং নিজেদের পছন্দের গান শোনা হয়। সর্বশেষে উপস্থিত সকল দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য থাকে শুভেচ্ছা পুরস্কার ।
শরতের শৈশব স্মৃতি বা পূজার মেলার স্মৃতি
প্রথম অতিথিঃ @neelamsamanta
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃযেহেতু গ্রামে বাড়ি ছিল, তাছাড়া আমার বাবার শাড়ির দোকান ছিল, তাই আমার বাবার দোকানের সামনেই পূজার মন্দির ছিল। তাছাড়া সেটা আমাদের দেওয়া জায়গার উপরেই মন্দির হয়েছিল। তাই বলা যায়, পূজাটা আমাদের বাড়ির ছিল। তাছাড়া যেহেতু এলাকায় একটাই পূজা হতো, তাই সন্ধ্যাবেলা করে প্রতিদিন আমরা মন্দিরে যেতাম। আমাদের পূজার আনন্দ শুরু হতো, মূলত যখন থেকে প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় ঠিক তখন থেকে। প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা করে মন্দিরে যেতাম আর প্রতিমা তৈরি দেখতাম। অবশেষে একটা সময় সবকিছু সম্পন্ন হয়ে যেত এবং পূজার দিন চলে আসতো। মেলায় রোজ বাবার সঙ্গে ঘুরতে যেতাম, তখন আনন্দটা অন্যরকম কাজ করতো। ৫০ পয়সার বেলুন কিনে দিলেই বেশ খুশি থাকতাম। আর যেদিন বাবা মেলা থেকে বড় বেলুন কিনে নিয়ে আসতো তখন আনন্দের মাত্রা আরও অতিরিক্ত বেড়ে যেত। তাছাড়া ছোটবেলায় টিনের কৌটাতে পয়সা জমাতাম, মূলত পূজা শেষ হয়ে গেলেই পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যেতাম। সবমিলিয়ে শৈশব স্মৃতি বেশ আবেগমাখা।
দ্বিতীয় অতিথিঃ @ah-agim
ভেরিফাইড সদস্য,আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃআমাদের এলাকায় খুব একটা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস ছিল না। পাশের এলাকায় আমার এক বন্ধু থাকতো, আমরা একসঙ্গেই স্কুলে পড়তাম। একবার পূজাতে, আমি ও আমার অন্য এক বন্ধু ওদের গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ও তো আমাদের দেখে সেই সময় বেশ খুশি হয়েছিল। তখন ওদের বাড়িতে ও আমাদের বেড়াতে নিয়ে যায়, বেশ ভালই আপ্যায়ন করেছিল ওদের পরিবার আমাদেরকে। সন্দেশ খেতে দিয়েছিল, তখন আমরা সন্দেশ খেতে খেতে কিছু সন্দেশ আবার পকেটে ঢুকাচ্ছিলাম, এইটা আমার বন্ধুর মা দেখেছিল। বলেছিল বাবা সন্দেশ পকেটে না ঢুকিয়ে বরং আমি তোমাদের পলিথিনে করে দিয়ে দিচ্ছি তোমরা বাড়িতে গিয়ে খেও। যেহেতু দুই বন্ধু ছোট ছিলাম তখন পকেটে কিছু টাকা ছিল, সন্দেশ যখন পলিথিনের ভিতর ঢুকাচ্ছিলাম, সেই সময় টাকাটাও পলিথিন এর ভিতরে পড়ে গিয়েছিল। অবশেষে আমরা সেখান থেকে উঠি এবং মেলা দেখতে যাই, মেলা দেখতে গিয়ে কিছু খেলনা পছন্দ হয় কিনতে গিয়ে দেখি পকেটে টাকা নেই। ভীষণ চিন্তায় পড়ে যাই, অবশেষে দুই বন্ধু, পরে পুরো মেলা খোঁজাখুঁজি করেও আর টাকাটা খুঁজে পাই নি। পরে যখন আমার বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম আবারও, তখন আমার বন্ধুর মা বলল তোমরা বাবা সন্দেশের পলিথিনে টাকা রেখে গিয়েছিলে। এই কথা যখন মনে হয় তখন মাঝে মাঝেই আমরা বেশ হাসি।
তৃতীয় অতিথিঃ @mohinahmed
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ আমরা মূলত পূজার মেলাতে গিয়ে বন্ধুরা মিলে পুঁতিওয়ালা পিস্তল কিনতাম। তারপর দুই গ্রুপ ভাগ হয়ে সেগুলো দিয়ে গোলাগুলি খেলতাম। যারা হেরে যেত, তাদেরকে লাল পিঁপড়ার ভিতরে বেঁধে রাখা হতো। প্রতিদিনই কমবেশি মেলায় যেতাম, বেশ ভালোই খাওয়া-দাওয়া ঘোরাফেরা হতো বন্ধুরা মিলে, তাছাড়া আমি মূলত ক্রিকেটারদের পোস্টার কিনতাম। যেহেতু অস্ট্রেলিয়া দলের সাপোর্ট করতাম, তাই অস্ট্রেলিয়ার জার্সি কিনেছিলাম। এছাড়া পানির মধ্যে কাঁচের জরির রকেট কিনেছিলাম, সেটা তো আমার একবার ঊরুতে গেঁথে গিয়েছিল। ভাগ্যিস টিটেনাস নিয়েছিলাম, নইলে খুব খারাপ কিছু হয়ে যেত। সব মিলিয়ে বলতে গেলে শৈশবে বেশ ভালই মজা করতাম পূজার মেলাতে।
চতুর্থ অতিথিঃ @kausikchak123
ভেরিফাইড সদস্য,আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃআমার বাড়ি ছিল সুন্দরবন থেকে স্বল্প কিছু দূরত্বে। যেহেতু গ্রামে থাকতাম, তাই বিশেষ করে দশমীর দিনে সন্ধ্যার দিকে বসে যেতাম বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায়, কেননা সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত শুধু প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হতো ট্রাকে করে। এতটা পরিমাণ রাস্তা ভিড় থাকতো যে, পায়ে হেঁটে রাস্তা অতিক্রম করা যেত না। সেসময় মা বাবা ৫০ পয়সা দিয়ে আইসক্রিম কিনে দিতো, তাই খেতাম আর প্রতিমা দেখতাম। তাছাড়া পূজার মেলাতে গিয়ে পুতুল নাচ দেখতাম, নাগরদোলায় চড়তাম কিংবা এক টাকা দুই টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ম্যাজিক শো দেখতাম,আমার বোনেরা কাচের চুড়ি কিনতো দোকান থেকে । সময়ের পরিবর্তনে মেলার সেই চেনা রূপ বড্ড পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। তবে আমি মনে করি শৈশবে যে সময়টা আমরা কাটিয়েছি, তার বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব এখন আর দেখা যায় না। আগেকার সময় এখন শুধুই স্মৃতি, যা হয়তো আর কোনভাবেই ফিরে পাওয়া যাবে না।
তাৎক্ষণিক অতিথি ও শ্রোতার মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কারের স্পন্সর কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদা
মূলত এভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা। আমাদের চিন্তাধারা প্রতিনিয়তই ব্যতিক্রম, তাই সব ব্যতিক্রম চিন্তা-ভাবনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই প্রতিনিয়ত সামনের দিকে। আশাকরি আমাদের সঙ্গে সকলেই থাকবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংকঃ
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/sharifShuvo11/status/1845765467283271721?s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের আড্ডা বেশ দারুন উপভোগ করেছি। আড্ডায় অতিথিদের কথাগুলো শুনে অনেক ভালো লেগেছিল।আড্ডায় পুরস্কার পেয়ে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আড্ডার রিপোর্টটি সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কাল বলতে বলতে অনেক কথাই মনে পড়ে যাচ্ছিল৷ ছোটবেলাটা তো আর এতোটুকু না৷ বড় আবেগে ঠাসা জীবন। আস্তে আস্তে সবই কেমন বদলে যায়৷ আপনার বর্ণনা বেশ ভালো লাগল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আহারে জীবন, শুধু ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এ সপ্তাহের রবিবারের উন্মুক্ত আড্ডা দারুণ উপভোগ করেছি। যারা অতিথি ছিলেন তারা খুব সুন্দর কথা বলেছেন। সব মিলিয়ে অসাধারণ কেটেছে আমাদের উন্মুক্ত আড্ডার সময়। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর করে গুছিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গতকালকে রবিবারের আড্ডার অতিথি হতে পেরে খুব ভালো লেগেছে। তাছাড়া শৈশবের পূজার মেলার স্মৃতিচারণ করতে পেরে আরও বেশি ভালো লেগেছে। বাকি অতিথিরাও দারুণভাবে স্মৃতিচারণ করেছেন। যাইহোক এই রিপোর্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনিও বেশ দারুণভাবে শৈশবের স্মৃতিচারণ করেছিলেন ভাই। শুভেচ্ছা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সকলের ছেলেবেলার মেলা স্মৃতি নিয়ে দারুণ একটি আড্ডা জমে গেছিল। আমিও বিভিন্নভাবে স্মৃতিচারণ করলাম আমার শৈশব নিয়ে। সুন্দরভাবে পুরো ডিটেলটা তুলে আনলেন ভাই। আবার পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। এই আড্ডা গুলো জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বেশ ভালই লেগেছিল আপনার কথাগুলো, কেননা আপনার শৈশবের সঙ্গে আমার শৈশবের অনেকটা মিল খুঁজে পেয়েছিলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের উন্মুক্ত আড্ডা মানেই অন্যরকমের আয়োজন। এবারের উন্মুক্ত আড্ডার টপিকটি সত্যি দারুন ছিল। আর শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছিল ভাইয়া। অতিথিরা সুন্দর করে নিজেদের স্মৃতিগুলো তুলে ধরেছিল। অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সবসময়ই রবিবারের আড্ডা খুব জমজমাট হয় তাইতো আড্ডায় অংশগ্রহণ করতে ভালো লাগে। এবারের আড্ডাও খুব ভালো লেগেছে। যারা অতিথি হিসেবে ছিলেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন। ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রবিবারের আড্ডার রিপোর্ট এত সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রবিবারের আড্ডার এই রিপোর্ট দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। যারা এই আড্ডায় উপস্থিত ছিল না, তারা পুরো পোস্ট পড়লে পুরোটা ভালোভাবেই জেনে নিতে পারবে। সবার শৈশবের স্মৃতি অনেক ভালো লেগেছে জেনে। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit