রুদ্ধশ্বাস দুই দিন-২

in hive-129948 •  5 months ago 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার মামাতো বোনকে খোজার দ্বিতীয় পর্ব

গত পর্বে:

সেখানে থাকা লোকজন কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, যে তারা দেখেছে।এক রুটির দোকানদার রুটি খাইয়েছে। এরপর সে গাইবান্ধার বাসে চড়ে।বাসওয়ালা ও প্রতিবন্ধী ভেবে কিছু বলে নি বা নামিয়ে দেয়নি বাস থেকে। এখন বগুড়া থেকে গাইবান্ধার যাত্রা শুরু।

বর্তমান পর্বে:

মামারা সাথে গাইবান্ধা রওনা দেয়। যদিও ততক্ষণে রাত হয়ে গেছে। ওখানে গিয়ে খোজাখুজি করেও দীপা কে পাওয়া যায় নি। সবার কপালে চিন্তার ভাজ গাঢ় হচ্ছিল। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় সবাই আবার বাসায় চলে আসল।কারন অত রাতে আর খোজাখুজি সম্ভব না৷

পরের দিন আবার খোজাখুজি শুরু হবে এমন সময় একটা ঘটনা ঘটে,মামা খুজতে বের হবে এমন সময় একজন ভদ্রলোক মামাকে ডাক দেয়,কিন্ত মামা চিন্তিত থাকায় তার ডাক শুনতে পায়নি।তখন সেই লোকটি পাশের আরেকজনকে জিজ্ঞেস করে, "আরে দাদার কি হইছে।দাদা তো এমন মানুষ না।"তখন পাশের লোকটি জানায়, উনার মেয়ে হারিয়ে গেছে।

তখন লোকটি বলে,আরে আমি তো উনার মেয়েকে দেখেছি। তখন লোকটি তারাতারি এসে মামাকে আটকায় আর জানায় বিস্তারিত। লোকটির নাম দিলীপ।উনি গাইবান্ধার বোনারপাড়া গিয়েছিলেন উনার এক আত্মীয়র শেষকৃত্যে। সেখানে থেকে ফেরার পথে উনি দীপাকে ঘুরতে দেখেন।উনি ভেবেছিলেন দীপা বুঝি ঘুরতে গেছে।তাই কিছু বলে নি।

এবার একটু আশার আলো দেখা গেল।মামারা সাথে সাথেই রওনা দিলেন বাইক নিয়ে।দিলীপ নামের ভদ্রলোক ও সাথে গেল।তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেল দীপা নেই। মামারা হাল ছাড়লেন না।আশেপাশের লোকজন কে ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাস করতে থাকে। তখন এক পান দোকানদার জানায় তিনি এই মেয়েকে দেখেছেন। তবে সে একটি অটোতে চড়ে কই যেন গেছে।মামারা হতাশ হয়েই পড়ছিলেন এমন সময় দোকানদার জানায় যে উনি অটোওয়ালা কে চেনে।

এবং একটু অপেক্ষা করলেই দেখা পাওয়া যাবে। মামারা সেখানে অপেক্ষা করতে লাগলেন।একটু পর সত্যই সেই অটোওয়ালা এল,তখন তাকে জিজ্ঞেস করলে জানায়, দীপা সত্যই তার অটোতে উঠেছিল।কিন্তু সব শেষ গন্তব্য যাবার পরেও যখন কোথাও নামে নি তখন অটো তে থাকা এক ভদ্রলোক ওকে নিয়ে যায়। সেখানেই আছে দীপা। আর অটোওয়ালা সেই লোককে চেনে। উনিই সাথে করে মামাদের সেই লোকের বাড়িতে নিয়ে যায়।

এবার ভগবান সহায় হল।দীপাকে ঐ ভদ্রলোকের বাড়িতেই পাওয়া গেল।মামারা যখন পৌছায় তখন ঐ ভদ্রলোকের বৌ দীপাকে খাওয়াচ্ছিল। অবশেষে দুই দিনের রুদ্ধশ্বাস মুহুর্ত কাটানোর পর অবশেষে দীপাকে পাওয়া গেল। মামারা ঐ ভদ্রলোককে উপহার দিতে চেয়েছিলেন।কিন্তু উনি নেন নি। উনার এই উদারতা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। অবশেষে উনাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে মামারা দীপাকে নিয়ে চলে আসে।

আজকের পোস্ট এখানেই সমাপ্ত। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ভাগ্য ভালো দিপার কোন রকম ক্ষতি ছাড়াই তাকে ফিরে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আমি ভাবছি বাস ওয়ালার কথা। এরকম প্রতিবন্ধী একটি মেয়েকে বাসে করেই কেনবা নিয়ে গেল। তাছাড়া ওই দিলিপ লোকটি উনার মেয়েকে না দেখতে পেলে খুজে পেতে আরো অনেক সময় লেগে যেত মনে হচ্ছে। আর ওই পরিবার আসলেই মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। কিছু কিছু মানুষ ভালো কাজ করে কোন কিছুর প্রতিদানের আশা ছাড়াই। যাইহোক ভালো লাগলো শেষে।

দিনশেষে এমন ঘটনাগুলোই প্রমাণ করে দেয় যে এই পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষের সংখ্যা ও কম না! বারবার যে জায়গায় আশাহত হচ্ছিলেন, সেখান থেকেই যেন উপরওয়ালার কৃপায় নতুন আশার আলোর দেখা পাচ্ছিলেন! কথায় আছে না, যার কেউ নেই, তার ভগবান আছে! ঠিক সেভাবেই যেন একের পর এক ক্লু এসে শেষমেশ মামতো বোনকে পাওয়া গেলো সুস্থভাবেই!

হ্যা মাসি। দুনিয়ায় এখনো ভালো মানুষ আছে দেখেই দুনিয়া টিকে আছে।নইলে সমাজ ব্যবস্থা অনেক আগেই ভেঙ্গে পড়ত। আর ভগবান সহায় না হলে যে কি হত বলা যায় না,ভগবান নিজ হাতে বাচিয়েছে ওকে।ধন্যবাদ মাসি সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

গত পর্ব পড়ি নাই আজকের পর্বটি পড়ে আমার নিজেরও শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলোএমন অবস্থা। একজন পরিবারের সদস্য হারিয়ে যাওয়া মানে বেশ চিন্তিত থাকা। যদিও শেষমেষ আপনারা পেয়ে গেলেন দীপাকে। ভাগ্য ভালো আপনাদের ভালো মানুষের হাতে পড়েছে তাই। কারণ আমাদের চারপাশে খারাপ মানুষের অভাব নেই। চাইলে অনেকেই হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা সহায় আছেন বলে আপনারা দীপাকে পেয়ে গেলেন। আপনার বিস্তারিত লেখাগুলো পড়ে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

যাইহোক শেষমেশ তাহলে পাওয়া গেল। ঐ ভদ্রলোকের প্রশংসা করতে হয়। উনি যদি বাড়িতে নিয়ে না যেতেন তাহলে না জানি কোথায় না কোথায় চলে যেত আবার। সত্যি এই দুইদিন কঠিন একটা সময় অতিবাহিত করেছেন আপানারা।

মানুষ যখন কোন বিষয়ে চিন্তিত থাকে তখন কেউ ডাকলেও সেটা বোঝা যায় না। আর যেখানে তার মেয়ে হারিয়ে গেছে তাহলে সে তো অনেক চিন্তিত থাকবে। তবে সর্বোপরি যে ভদ্রলোকটি তার বাড়িতে রেখেছে এবং তার বউ দীপাকে খাইয়ে দিচ্ছিল এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। এটা এক ধরনের মানবতা ও বটে। যাক অবশেষে দীপাকে পাওয়া গেল এটাই বড় বিষয়। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

  ·  5 months ago (edited)

আসলে পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে বলেই আপনারা দীপাকে খুঁজে পেয়েছেন। আসলে প্রথম পর্বটা আমার পড়া হয়নি কিন্তু দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে আমার নিজেরই খুব খারাপ লাগছে। পরিবারের একজন সদস্য হারিয়ে গেলে পরিবারের কেমন অবস্থা হয় তা সত্যি বলা খুবই কষ্টকর। দিলীপ বলে লোকটা যদি না দেখতো দীপা কে তাহলে খুঁজে পেতে আরো খুবই কষ্ট হতো। কোন খারাপ মানুষের সাথে পড়েনি এটাই অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আসলে ওই পরিবারের লোকজন সত্যি নিঃস্বার্থভাবে দীপার উপকার করল। দীপার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

হ্যা আপু। এই ভাল মানুষগুলো এবং দিলীপ নামের ভদ্রলোক না থাকলে খুবই কষ্ট হত।আদৌ পাওয়া যেত কিনা সন্দেহ।ধন্যবাদ আপু।

তোমার মামাতো বোন হারিয়ে যাওয়া ও পাওয়ার ঘটনাটি সিনেমাকেও হার মানাবে।সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পাওয়া গেছে এটাই অনেক বেশি। পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে বলেই তো পৃথিবীটা এখনো টিকে আছে।ধন্যবাদ তোমাকে পোস্ট টি ভাগ করে নিয়ে মামাতো বোন কে খুঁজে পাওয়ার খুটিনাটি সব শেয়ার করার জন্য।