জ্বীনের বাদশা||আপরাধ জগৎ -১

in hive-129948 •  last year  (edited)
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব অন্ধকার জগতের কিছি বাসিন্দা দের সম্পর্কে।

IMG_20230526_211111.jpg

প্রথম আলো ফেসবুক পেজ

কি থাম্বনেইল দেখে অনেকেই অবাক হয়ে গেছেন হয়ত।যে জ্বীনের কাজ মানুষ কে ভয় দেখানো,ঘরের জিনিস এদিক ওদিক করা,মাঝে মাঝে আড়াল থেকে ঢিল মারা।কিন্তু একেমন জ্বীন যে আবার টাকা গয়না ছিনতাই করতেছে? আর জ্বীন জাতির মত অদৃশ্যজাতি যদি এমন অপরাধে লেগে পড়ে তাইলে তো আর রক্ষা নেই। হ্যা আজ এই জ্বীনদের নিয়েই কথা বলব।যারা ভূত প্রেতে বিশ্বাস করে না তারা হয়ত নাক সিটকাচ্ছেন আর ভাবছেন জ্বীন ভূত বলে কিছু হয়না,তাদের বলি হয় কি হয়না তা নিজেই বুঝতে পারবেন পোস্ট শেষে।

এখন জ্বীন নিয়ে আপনাদের কাউকেই নতুন করে কিছু বলতে হবে না, আপনারা সবাই মোটামুটি জানেন।কিন্তু তারা যে এমন মানুষের মত এই ধরনের অপরাধ করতে পারে তা হয়ত আপনাদের জানা ছিল না। অস্থির হবেন না এখনই শুরু করব

এই অদ্ভুত অপরাধের শুরু হয় আমার পাশের গ্রামে। ঠিকই বলছি, আমার পাশের গ্রামে। তাই খুব কাছে থেকে এদের দেখা আছে আমার,কিছু তো আমাদের অতিপরিচিত ছিল।তাই আজ যা শুনবেন তার কোনটাই মিথ্যা নয়।১০০%সত্য।

এই অপরাধের প্রধান হাতিয়ার কিন্তু গুলি,বন্দুক চাকু নয় বরং মানুষের লোভ আর ভয়। মানুষ তার লোভের জন্য এই অপরাধের শিকার হত। এখন আমি ধাপের ধাপের বলব অপরাধের প্রক্রিয়া।

প্রথমে করা হত ভিক্টিম সিলেকশন।এজন্য কোন এক এলাকার ধনী,ধর্মভীরু,সমস্যায় পতিত,কুসংস্কারাছন্ন এমন ধরনের মানুষ কে সিলেক্ট করা হত। সিলেক্ট করার জন্য আলাদা ধরনের লোক থাকত।ভিক্টিম সিলেক্ট করার পর তার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা চলত।যেমন:তার ছেলে মেয়ে আছে কিনা,যদি থাকে তাইলে আর সংখ্যা কয়জন,ব্যবসা করে নাকি চাকুরি করে,পারিবারিক জীবন কেমন,তার দুর্বলতা কি।

এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করার পর তার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করা হয়।তার একদিন গভীর রাতে তাকে কল দেওয়া হয়।কল দিয়ে তাকে প্রথমে সালাম দেওয়া হয়,তারপর কলার নিজের পরিচয় দেন জ্বীনের বাদশা নামে,যিনি কোন একটি মাজারে থাকেন।এটা দ্বিতীয় ধাপের শুরু। এই পরিচয় শুনেই অনেকে কেটে দেয়। যাদের ঘটে নূন্যতম বুদ্ধি আছে তারা বুঝে ফেলে,গালিগালাজ করে কেটে দেয়।সেক্ষেত্রে অপরাধীদের লস নেই,তারা অন্য ভিক্টিম কে ফোন দেয়।

এখন আপনি যদি এতটা শোনার পরেও কেটে না দেন তখন তারা আপনার সম্পর্কে সংগ্রহ করা তথ্যগুলো এক এক করে বলতে শুরু করবে।এখন আপনি চিন্তা করুন আপনি একজন কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ,মাত্র ঘুম থেকে উঠেছেন আর কেউ একজন আপনাকে জ্বীনের বাদশা পরিচয় দিয়ে আপনাকে আপনার সব ডিটেইলস দিচ্ছে।আপনি স্বভাবতই ভয় পাবেন।এখান থেকেই আসল খেলা শুরু। এখন আপনাকে টোপ দেওয়া হবে।

এই টোপ আবার দুই প্রকার।প্রথম ধরনের টোপ হল আপনার যদি কোন সমস্যা থাকে যেমন:সন্তান হচ্ছে না,ব্যবসায় ক্রমাগত লস হচ্ছে,জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ।তখন আপনাকে সেই সমস্যা অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে সমাধান করে দেওয়ার টোপ দেওয়া হবে। বলা হবে তুমি অমুক জায়গায় এসো, তবে খালি হাতে আসলে হবে না মাজারের শিন্নি হিসাবে এত কেজি বাতাসা,এত প্যাকেট আগরবাতি,গরীব দের খাওয়ানোর জন্য খাসি,পোলাও চাল আর মাজারের উন্নতির জন্য এত টাকা নিয়ে এসো।

এখন আপনারা ভাবছেন,মানুষ তো না গেলেই পারে। তাদের জন্য বলি এখনো কথা শেষ হয়না। অপরাধীরা এতটাই চালাক যে আপনি যাতে আপনার মনে না যাওয়ার কথা আনতেই না পারেন সেজন্য আপনাকে ভয় দেখানো হয়।এই ভয় দেখানো ভিক্টিমের উপর নির্ভর করে,কারো একটি মাত্র সন্তান থাকলে তাকে এই বলে ভয় দেখানো হয় যে তার সন্তান কে মেরে ফেলা হবে,কাউকে বলা হয় তার বাবা মাকে মেরে ফেলা হবে।এখন আপনি ভাবতেছেন আরে এগুলো কেউ বিশ্বাস করে নাকি?

আরে ভাই ফোনটা তো আপনাকে দেয়নি আপনি জানেন এটা সম্ভব নয় তাই আপনি ভিক্টিম হননি। যে ভিক্টিম সে এসব বিশ্বাস করে।না করলে তো জ্বীন যে ফোনে কল করতে পারে এটাই তো সে বিশ্বাস করত না।

এখন আপনাদের বলি ভিক্টিম ধরার দ্বিতীয় পদ্ধতি।নাহ পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে।আজকে আর না বাকি অংশ দ্বিতীয় পর্বে থাকবে...............

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ। নতুন কোন তথ্য জেনে থাকলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

জ্বীনের বাদশা‌ অনেক সুন্দর লিখেছেন। আমাদের গ্রামে প্রায় ৫-৭ বছর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে বিভিন্ন ধরণের লোক জন জিনের বাদশা সেজে ফোন দিতো। আর ওদের ফাঁদে পরে বিভিন্ন ধরণের লোকজন অনেক টাকা পয়সা হারিয়েছে। আজকে আপনার পোস্ট ভিজিট করে মনে পড়ে গেলো।

হ্যা ভাইয়া ঠিক বলেছেন ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

জি ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন এই জিনের বাদশা নামের যে অপরাধটা এটা আসলে আমাদের সকলের সাথে পরিচিত। এটা শুধু আপনার পাশের গ্রাম না আমাদের এদিকেও বেশ কয়েকজনের সাথে এরকম ঘটনা ঘটেছিল। যদিও এরকম একটি ঘটনা নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের একটি নাটক তৈরি করা হয়েছিল সেই নাটকের মধ্যেও আপনার লেখার মত হুবহু সেরকম তারা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলো। আসলে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে লোভ আর ভয় এবং ধর্মভীরু সে যে বিষয়ের উপর দুর্বল ছিল সেই ধরনের লোকদের টার্গেট করে এই ধরনের অপকর্মগুলা করত। যাই হোক ভাই আপনার পোস্টের মাধ্যমে আবারো জানতে পেরে ভালো লাগলো পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

এখন আপনি ভাবতেছেন আরে এগুলো কেউ বিশ্বাস করে নাকি?

না না আমি আসলে ব্যাপারটা সেই ভাবে চিন্তা করছি না। এখনো গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা এই ব্যাপারগুলোতে বিশ্বাস করে এবং এই কথাগুলো শুনলে প্রচন্ড পরিমাণে ভয় পায়। বিশেষ করে যখন বলা হয় যে আপনার সন্তানের মৃত্যু অবধারিত, যদি এটা না করেন। তবে এই ব্যাপারগুলো এখন হয় কিনা সেটা সম্পর্কে আমার একটু সন্দেহ আছে।

তবে আমি অবশ্যই আশায় থাকবো কেউ একজন আমাকে ফোন করে বলুক সে জ্বীনের বাদশা। কারণ
জ্বীনের বাদশারও যে একটা ফোন নাম্বার আছে সেটা আমার জানা দরকার।

দাদা সামনে পর্বে যে চমক থাকবে তা দেখলে মাথা ঘুরবে।