ফুলপুকুরিয়া পার্কে একদিন

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের ঘোরাঘুরির কিছু মুহুর্ত

IMG_20230304_132742.jpg

আপনি যতই প্ল্যান করুন না কেন।সব কিছু আপনার প্ল্যান অনুযায়ী কখনোই যাবে না।যেমন গতকালকের দিনটি আমার এমন গিয়েছে।তবে প্ল্যান অনুযায়ী না গেলেও যে একদম খারাপ গেছে তা বলা যায় না।তবে পোস্ট পর্যন্ত করতে পারিনি কাল।

গতকাল সারাদিন লোডশেডিং থাকবে,তা আগে থেকেই জানতাম।এই আধুনিক জীবনে পুরো একদিন বিদ্যুৎ না থাকা মানেই মনে হয় সেদিন মনে হয় সেই আদিম যুগে ফিরে গেছি।আমাদের মোটরের জলের উপর ভরসা করতে হয়।তাই প্রথমেই ভেবেছিলাম সকাল সকাল উঠেই জলের ট্যাংক ভরিয়ে নেব।

IMG_20230304_164544.jpg

কিন্তু আপনি ভাববেন এক হবে আরেক।সকালে উঠে মোটর দিতেই দেখি মোটর অন হয়না।অর্থাৎ মোটর নষ্ট। আমার তো মাথায় হাত।কতখানি জল আছে জানিনা।আর তাতে সারা দিন যাবে কিনা এটা একটি প্রশ্ন।যাই হোক,কি আর করার।

তো আসল গল্পে ফিরে যাই।বিদ্যুৎ নেই,তাই কিছুই যেন করার নেই দুনিয়ায় এই মনে করে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম তখন আমার ভার্সিটির ক্লাসমেট রাজ কল দিল।দিয়ে বলল জলদি বের হ।আমি আর রাকিব তোর এলাকায় এসেছি।

IMG_20230304_150853.jpg

আমি ভার্সিটি খুব একটি যাইনা।গেলেই ক্লাসে উপস্থিতি কম।তার থেকেও বন্ধুবান্ধব আরো কম।তাই ক্লাসমেট কল দেওয়াতে কিছুটা অবাক হয়ে গেলাম।গিয়ে দেখা করলাম ওদের সাথে।তারপর সব খোজ খবর নেওয়ার পর জানলাম মোটর সাইকেল কাস্টোমাইজ এর জন্য ওরা এসেছে।কিন্তু আজ সারাদিন বিদ্যুৎ থাকবে না,তাই সার্ভিসিং ও সম্ভব না। ওরা প্রায় ৫০কিমি পাড়ি দিয়ে এসেছে।

তখন শোরুমের মেকানিক দের থেকে শুনলাম সার্ভিস করতে প্রায় ৫ঘন্টা লাগবে।বিদ্যুৎ দিয়ে শুধু ওয়েল্ডিং করতে হবে,বাদ বাকি কাজ বিদ্যুৎ ছাড়াই করা যাবে।তখন তাদের কাজ শুরু করার কথা বললাম।এরপর ওদের নিয়ে গিয়ে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করলাম।

IMG_20230304_150130.jpg

যেহেতু কাজ সারতে অনেক সময় লাগবে,আর বিদ্যুৎ কখন আসবে তার কোন ঠিক নেই তাই ওদের বললাম থেকে যাবার প্রস্তুতি নিতে।ওরাও সব বুঝতে পেরে বলল," তাইলে তাই সই।" বিদ্যুৎ নেই তাই বাসায় বসে থেকেও লাভ নেই।তাই তাদের নিয়ে চলে গেলাম ফুলপুকুরিয়া পার্কে।

ফুলপুকুড়িয়া আমাদের শহর থেকে বেশ কিছুটা বাইরের দিকে। সি এন জি তে যেতে প্রায় ১৫মিনিট লাগে। এটিকে পার্ক বলা হলেও এটি প্রকৃতপক্ষে পার্ক নয়।এটি মূলত একটি বড় পুকুর কে ঘিরে থাকা কিছুটা জায়গা।

IMG_20230304_132420.jpg

পুকুরটি আমাদের মাছ ভালো বাসা বাঙালী জাতির মাছের চাহিদা মেটায়।কিন্তু পুকুরের মালিক বেশ শৌখিন মানুষ। উনি পুকুরের পাড়ে বেশ কিছুটা জায়গা ফাকা রাখেন।তারপর বাধ দিয়ে রাস্তা বানানো হয়েছে।তারপর সেই রাস্তার দুইপাশে ঝাউগাছ দিয়ে সুন্দর লাইন তৈরি করা। আর লাইন গুলোর পাশে আবার বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো আছে।

তবে পার্কে বিনোদনের সামগ্রী কিছু নেই।শুধু প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো যদি আপনার একমাত্র ইচ্ছা হয় তবে যেতে পারেন।।পার্কের পাশেই রয়েছে সবুজ চাষের জমি আপনার জুড়িয়ে দেবে।

IMG_20230304_150034.jpg

আর আপনি যদি প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতে চান সেটাতেও কেউ বাধা দেবে না। তবে শালীনতা বজায় রাখতে হবে।তাইলেই কেউ কিছু বলবে না। পার্কে অন্য কোন উৎপাৎ নেই। এলাকার মানুষ বেশ বন্ধুসুলভ, কোন সমস্যা হলে তারা সব সময় সাহায্যের জন্য প্রস্তুত।

এছাড়া বসে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ছোট ছোট বসার জায়গা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।উপরে ছাতার মত করে ছাউনি বানানো থাকায় রোদ বৃষ্টি নিয়ে ভাবতে হবেনা।

IMG_20230304_150436.jpg

এখন আসি আমাদের ভ্রমনের ব্যাপারে।আমরা পার্কে গিয়েছিলাম ভর দুপুর বেলা।ভেবেছিলাম প্রেমিক যুগলদের থেকে বাচা যাবে। কারন আমরা চার জনের দুজন বিবাহিত আর দুজন সিংগেল।তাই যুগল দেখলেই কষ্ট হয়।কিন্তু হায়! আমরা কি জানতাম, প্রেমের কোন সময় হয়না।গিয়ে দেখি যুগলে ভর্তি। তাই তাদের বিরক্ত না করে একটি বসার জায়গায় গিয়ে চুপচাপ বসলাম।

তারপর শুরু করলাম আড্ডা। ডিপার্টমেন্ট এর ছেলেমেয়েদের প্রেম থেকে শুরু করে সে গল্প যে কিভাবে রাশিয়ার ইউক্রেনের অর্থনীতি ও যুদ্ধ কৌশলে গিয়ে ঠেকল তার কিছুই বুঝলাম না।এর মাঝেই তিনঘন্টা কেটে গেছে তার ও হুশ নেই।মৃদুমন্দ বাতাসে বেশ লাগছিল আড্ডা দিতে।

IMG_20230304_133018.jpg

এর মাঝে পেটে আবার ক্ষুধা ক্ষুধা ভাব জাগছিল। আমি সেটা বলতেই সবাই আমার সাথে একমত পোষণ করল।পার্কের আশে পাশে ভাল খাবারের রেস্টুরেন্ট নেই। তাই আবার শহরে ফিরে আসলাম।দারুন সময় কেটেছে।

ফটোগ্রাফারবৃত্ত
ডিভাইসপোকো এক্স২
লোকেশনফুলপুকুরিয়া পার্ক
আজকের পোস্ট এপর্যন্তই।কেমন লাগল আমাদের ঘোরাঘুরি? কমেন্ট করে জানাবেন। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ফুলপুকুরিয়া পার্কে একদিন সবাইকে নিয়ে চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনাদের সবাইকে একসাথে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

এটা একদম ঠিক প্ল্যান করে কোন কিছু হয়না,প্ল্যান ছাড়া যা হয় তাই ভালো হয়।আর বলিয়েন না গরম কাল আসছে লোডশেডিং এর কবলে পড়তে তো হবেই।সামনে হয়ত আরো খারাপ দিন আসতেছে। যাই হোক পার্কে কয়দিন প্রেমিকা নিয়ে গিয়েছেন তাই বলেন🤣🤣।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

প্রেমিকা নেই,ভাড়া তেও পাওয়া যায়না।তাই একদিনও যাওয়া হয়ে ওঠে নি। ধন্যবাদ আপু।

প্রেমিকা না থাকলে আপনি এত কিছু জানেন কেমনে🤣🤣?আপনি ভাড়া তেও পান না,তাহলে মনে হয় আপনি আন রোমান্টিক😉😉

এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন ভাইয়া প্ল্যান অনুযায়ী কোনো কাজই করা হয়ে ওঠেনা। ফুলপুকুরিয়া পার্কে প্ল্যান ছাড়া যেয়েও বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা। একেতে বিদ্যুৎ থাকবেনা আবার মটর নষ্ট বেশ ঝামেলায় তো পরেছিলেন তাহলে।বিদ্যুৎ ছাড়া এখন চলা দায় বলা যায়।প্রেমিক যুগলের ভয়ে দুপুরে যেয়েও একই ঘটনা হাহা।আপনারা চারজন তিনঘন্টা ছিলেন পার্কে তারপর চলে এসেছিলেন কারণ কোনো রেস্টুরেন্ট ছিলনা।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আমাদের মাঝে।

আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

প্লান করে কত কিছুই না করতে চাই কিন্তু প্লান অনুযায়ী সব সময় এসব কাজ করা সম্ভব হয় না এটাই ঠিক।। তবে হুটহাট করে কোন কাজ হলে সেটাও কিন্তু মন্দ হয় না পরিকল্পনা সঠিক থাকলে।।
আপনি পার্ক ভ্রমণ করে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলেন সেই সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি করে আমাদেরকে দেখার সুযোগ করে দিলেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।।

আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।

প্রথমে তো ভেবেছিলাম আজকের পোস্টে হয়তো বৌদির দেখা পাবো😒।
ভাবলাম কি আর হলো কি!পার্কে গেছেন ফ্রেন্ডদের সাথে😴।
বিস্তারিত জেনে ভালো লাগলো,নেক্সট টাইম বৌদির সাথে ডেটে যাওয়ার গল্প শুনতে চাই😇।শুভ কামনা রইলো 💝।

বিয়ের ৭-৮বছর দেরি আছে ভাই,আর গার্লফ্রেন্ড জোটানো সম্ভব নয়। তাই অপেক্ষা করতে হবে ভাই ৭-৮বছর। হাহাহাহা

আপনি তো তাও মাঝেমধ্যে ভার্সিটিতে যান, আমি তো ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করেছি অনেক আগেই। শুধুমাত্র পরীক্ষা দিতে যাই।

প্ল্যান এর কথা বলছেন, আমি তো জীবনেও প্লান করে আজ অব্দি সাকসেসফুল হয়নি। হঠাৎ হঠাৎ করে প্লান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই।

আর বাংলাদেশে কি নিয়মিতই এরকম লোডশেডিং হয় নাকি... আগেও কার একটা পোস্টে যেন পড়েছিলাম।

না দাদা ঝড় বৃষ্টির সিজন আসতেছে,তাই গাছের ডালপালা কাটার জন্য কাল অফ ছিল।আমি তিন বছরে একদিনও ক্লাস করি নি।

বাহ ভাই আপনি দেখছি ফুলপুকুরিয়া পার্কে বেশ ভালো সময় অতিবাহিত করেছেন আপনার বন্ধুদের সাথে। আর আসলেই প্লান করে সবকিছু হয়না বন্ধুদের সাথে প্লান ছাড়া কোন কিছু করা বা ঘুরতে যাওয়াটাই বেশি মজাদার।

বেশ ভাল সময় কেটেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।

ভাইয়া সত্যিই বলেছেন প্ল্যান করে কোন কাজ করা যায় না। আমি এই রকম প্রাকৃতিক পার্কগুলো ঘুরতে খুব পছন্দ করি। আপনি ফুলপুকুরিয়া পার্কে অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। পার্কটি দেখতে অনেক সুন্দর এবং নিরিবিলি। এত নিরিবিলি এবং সুন্দর বসার জায়গা থাকলে প্রিয়জনকে নিয়ে আসলেই সুন্দর সময় কাটানো যাবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

এই সময়টা পার্কে ঘোরাঘুরের সময়। তবে নতুন একটি স্থান সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম আপনার আজকের এই পোস্টের মধ্য দিয়ে। যেখানে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখলাম। প্রথমের জিরাফের সুন্দর মূর্তি এছাড়াও বর্ণনা সহকারে অনেক বিষয় উপস্থাপন করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো আমার।

ধন্যবাদ ভাইয়া।