প্যারেন্টিং||ভবিষ্যত গড়ে উঠুক আজকে

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার কিছু চিন্তা ভাবনা।

pexels-vidal-balielo-jr-1682497.jpg
সোর্স

প্রথমে একটি ঘটনা শেয়ার করি।ঘটনাটি সম্পুর্ণ কাল্পনিক বাস্তবের সাথে মিল পাওয়া গেলে তা সম্পূর্ণ কাকতালীয়।

ঘটনাটি একটি স্কুলের। এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা পালাক্রমে নিজেদের শ্রেণীকক্ষ পরিষ্কার করত। এভাবে ক্রমে পালা আসে নামের একটি মেয়ের(আসল নাম বলছি না)।তার মা আবার বিচারক।তার পালা আসলে সে ক্লাসরুম পরিস্কার করতে অস্বিকৃতি জানায়।এতে তার সহপাঠিরা তার প্রতি বিরক্ত হয় এবং এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হয়।

সে বাড়িতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সহপাঠিদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এবং নিজের মায়ের ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে তাদের ছোট করে।এখন আপনি চিন্তা করুন আপনি সেই নামক মেয়েটির মা,আপনি একজন বড় প্রাশাসনিক কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে আপনি কি করতেন? নিশ্চয় আপনার মেয়েকে শাসন করতেন। তাকে বুঝাতেন সবাই সমান। আর নিয়ম সবার জন্য সমান।নিয়ম যেহেতু সবার শ্রেণীকক্ষ পরিষ্কার করার।তাই তার অবশ্যই শ্রেণীকক্ষ পরিষ্কার করা উচিৎ। আর সে তার সহপাঠিদের ছোট করেছে তাই তার তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।

কি বিষয়টি এমনই হওয়ার কথা না? ছোট থেকে তো আমরা এভাবেই শিখেছি।নাকি? কিন্তু এক্ষেত্রে হল তার ব্যতিক্রম। এর মা বিদ্যালয়ে যান। সেই সহপাঠিদের অভিভাবক দেরও ডেকে আনেন।তারপর তাদের মামলার ভয় দেখান।এখন আপনি তো চাইবেন না আপনার সন্তান এই ছোট বয়সেই আইন আদালতে চক্কর লাগাক।তাই আপনি মাফ চাইলেন সেই মহামাণ্য সেই প্রাশাসনিক কর্মকর্তা মহোদয়ার কাছে।

এখানে আমি মহামাণ্য প্রাশাসনিক কর্মকর্তা মহোদয়ার ক্ষমতার অপব্যবহারের অপকারিতার বিষয়ে যাব না।না তার সন্তানের মায়ের নাম ভাঙ্গিয়ে খাওয়া নিয়ে বলব।আমি এখানে বলব তার প্যারেন্টিং নিয়ে। (আমার ভাষ্য বুঝাতে এই ঘটনার উল্লেখ করার প্রয়োজন ছিল)

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। অর্থাৎ একটি দেশের ভবিষ্যত কেমন হবে তা নির্ভর করবে এই শিশুদের উপর। এই শিশুরা যদি সৎ,নিষ্ঠ,মানবিক হয়ে গড়ে ওঠে তবে দেশ হয়ে উঠবে সুন্দর, সুখী ও উন্নত। আর এই শিশুদের ভবিষ্যত কেমন হবে তা নির্ভর করে তাদের প্রাপ্ত শিক্ষার উপর।

প্রতিটি শিশুই নরম কাদার মত। নরম কাদা কে যেমন মৃৎশিল্পীরা যেমন ইচ্ছা তেমন আকার দিতে পারেন,গড়ে নিতে পারেন নিজের মনমত আকারে।তেমনি প্রতিটা শিশুকেও গড়ে নেওয়া যায় নিজের ইচ্ছামত। তবে এজন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা।আর একটি শিশুর সব থেকে বড় শিক্ষাক্ষেত্র হল তার পরিবার।আরো সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে তার বাবা মা।

পরিবার এর থেকে বড় শিক্ষাক্ষেত্র আর নেই। কারন একটি শিশু তার বেশিরভাগ সময় কাটায় পরিবারের সাথে।বর্তমানে একক পরিবারের সংখ্যাই বেশি।তাই শিশুরা শুধু বাবা মা কেই কাছে পায়। তাই তারা আদব কায়দা যা শেখে তা বাবা মার থেকেই শেখে।

একটি শিশু যদি ছোট থেকেই এটা দেখতে দেখতে বড় হউ যে তার বাবা মা অন্য মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে,তাহলে সে এটাকেই স্বভাবিক হিসেবে ধরে নেবে এবং ভবিষ্যতে মানুষের সাথে তেমনই খারাপ ব্যবহার করবে। আবার আপনি যদি আপনার সন্তানের অপরাধে তাকে শাসন না করেন তবে কিন্তু সে বুঝতে পারবে না সে অপরাধ করেছে। ফলে সে ভবিষ্যতে সেই কাজটি বিনাদ্বিধায় চালিয়ে যাবে।যা দেশ দশ সবের জন্যই ক্ষতিকর।

তাই এখন থেকেই সচেতন হয়ে উঠুন।সন্তান কে সুব্যবহার এর শিক্ষাদিন।কোনটি ভাল কোনটি মন্দ তা ছোট থেকেই শেখাতে থাকুন।ছোট বেলা থেকে তাকে না শেখালে, যখন তাকে শেখানোর প্রয়োজন অনুভব করবেন তখন তা শেখানোর জন্য অনেক দেরি হয়ে যাবে।যেমনটা হয়েছে আমাদের এর ক্ষেত্রে।তার মা যদি তাকে প্রথমেই শাসন করতেন তাইলে তার এত কিছু করার সাহসই হত না।

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই।এই চিন্তাধারা গুলো সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত।আপনি এর সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন।আপনার মতামত কেও আমি শ্রদ্ধা জানাই। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আসলে সবাইকে শুধু শিক্ষা গ্রহণ করলে চলবে না। সুষ্ঠু শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আসলে ছোটো বেলা হলো সকল শিশুদের শেখার সুষ্ঠু সময়। এই সময় তারা যা শেখে তা তাদের ভবিষ্যত জীবনে প্রতিফলিত হয়। আসলে ক এর মা একজন বিচারক হলেও তার বিচারে অবশ্যই ভুল আছে। আর এই ভুল বিচারের ফলে তার মেয়ে পর খুবই খারাপ প্রভাব পড়তে পারে তার ভবিষ্যতে।

আপনি ঠিকই বলেছেন।ধন্যবাদ।

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে ভাইয়া শুধু শিক্ষিত হলেই ভালো মানুষ হওয়া যায় না। সত্যিই তো বাচ্চারা ছোটবেলা থেকে যা দেখবে তাই বড় হলে আরো বেশি রূপ নেবে।যাইহোক বাচ্চাদের প্রধান শিক্ষক হলে বাবামা। তারা বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকে যেভাবে গরবে ঠিক সেই ভাবেই হবে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।

আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন একটা শিশু যদি ছোটবেলা থেকে তার বাবা-মাকে অন্য মানুষদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে দেখে তাহলে সে বড় হলে তার কাছে ব্যবহার গুলো একেবারে স্বাভাবিক মনে হবে এবং সেও সবার সাথে এরকম খারাপ ব্যবহার করবে। বেশ ভালোই শিক্ষণীয় ছিল আপনার আজকের এই পোস্ট। প্রত্যেকটা লাইন আপনি সবাইকে খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলেছেন। যাই হোক এক কথায় অসাধারণ ছিল।

ধন্যবাদ আপু উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্য।

আপনি ঠিকই বলেছেন শিশুদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নির্ভর করে তাদের প্রাপ্ত শিক্ষার উপর। আসলে পরিবারের থেকে বড় শিক্ষাক্ষেত্র আর কোথাও নেই। একটা শিশু তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে এরকম আচরণগুলো শিখে। কারণ তার বাবা-মা যে আচরণগুলো করে সে আচরণগুলো সে ছোটবেলা থেকে দেখে আসে। যার জন্য তার কাছে এই আচরণগুলো একেবারেই সিম্পল ব্যাপার মনে হয়। এই পোস্টটিতে বেশ শিক্ষনীয় ব্যাপার ছিল। যা পড়তে ভীষণ ভালো লেগেছে।

ধন্যবাদ ভাইয়া সহমত প্রকাশ করার জন্য।

ঠিকই বলেছেন ভাই প্রতিটা শিশু নরম কাঁদার মতো তাদের যেমন শিক্ষা দেওয়া যায় তারা তেমনটাই শিক্ষা পাই। কিছুদিন ধরেই স‍্যোসাল মিডিয়ায় এই ঘটনা টা দেখছি। সত্যি বলতে ঐ মেয়ের মা যতই শিক্ষিত হোক বিচারক হোক উনার মধ্যে বিবেক বলতে কিছু নেই। যদি থাকত তাহলে অন্য শিক্ষার্থীদের বাবা মা কে দিয়ে ঐরকম কাজ করাতেন না। এখানে পারিবারিক শিক্ষার অনেক বড় একাট গুরুত্ব আছে।।

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

খুব সুন্দর চিন্তা ভাবনা আপনার আর লিখেছেন ও দারুন। বর্তমান সমাজেও "ক" এর মত কিছু ছেলেমেয়ে আর বাবা,মা আছে যেটা সত্যিই হতাশাজনক।যাইহোক সবার সু বুদ্ধির উদয় হোক সবাই সচেতন হোক এমনটা আমারও চাওয়া।

ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক উৎসাহিত হলাম আপনার মন্তব্য থেকে।