প্রযুক্তি বনাম মানুষ

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন, আমিও ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি জেনারেল পোস্ট।

pexels-lisa-fotios-1092644.jpg
সোর্স

আপনারা জানেন আমার পরীক্ষা চলছে। তবে আমি পরীক্ষা দিচ্ছি কিন্তু বাড়িতে থেকে।পরীক্ষা শুরু হয় ১২টা থেকে তাই একটু সকাল সকাল বের হতে হয় তারপর বাসে করে সেই বগুড়া। যথারিতী কাল ও তাই করছিলাম। বাসে উঠে আমি আর নূর ফোনে তুলে রাখা ছবিতে ব্রিফ প্রশ্ন পড়ছিলাম।

একটু পর পাশের এক কাকু বলে উঠল এই মোবাইল ফোনই বর্তমান প্রজন্মকে শেষ করে দিল।যাকে দেখি সবাই সব সময় ফোনে মুখ গুজে পড়ে থাকে।ফোনটাই যত নষ্টের গোড়া।কথাগুলো আমাদের উদ্দেশ্য করেই বলা, গায়ে লাগলেও কিছু বললাম না।কারন সিনিয়র মানুষ।

কিন্তু তারপর এমন একটা কথা বলল যা আর সহ্য করা গেল না।উনি বলতেছেন এই ফোনই সব পাপের কারন।এখন মানুষ যত মিথ্যা বলে তা এই ফোনের জন্যই। বাড়িতে থেকেই বলে দোকানে,শুয়ে থেকেই বলে ব্যস্ত।আর কত খারাপ কিছু তো আছেই। এটা শুনে নিজেকে আর থামাতে পারলাম না।

বললাম আপনার হয়ে কি আপনার ফোন কথা বলে? নাকি ফোন আপনাকে মিথ্যা বলতে জোর করে? আপনি যদি মিথ্যা না বলতেন তাইলে ফোন কি আপনাকে গুলি করত? তখন উনার যুক্তি হল ফোন না থাকলে কি মিথ্যা বলতাম? ফোন দেখেই তো মিথ্যা বলতেছি। মোক্ষম যুক্তি, কি আর বলি চুপ করে ছিলাম। তারপর বাসের হেল্পার ও এসে তার সাথে যোগ দিল।বলল হ্যা সব দোষ মোবাইলের বাচ্চা ছেলেপেলেরা মোবাইল ছাড়া খাওয়াদাওয়া পর্যন্ত করেনা।

এরপর উনাকে জিজ্ঞেস করলাম বাচ্চা ছেলের হাতে টা দিয়েছিল কে? বাচ্চা ছেলে খাচ্ছে না তার হাতে ফোন দাও,কান্না করছে তার হাতে ফোন দাও তাইলে সে শিখবে কি? মনে করুন আপনি একটি ছেলেকে নেশার উপকরণ ধরিয়ে দিলেন তারপর নিয়মিত তাকে সেটা সময় অসময়ে হাতে দিলেন।তারপর যেই নেশা হল ওমনি সেটা সেই নেশাজাতীয় বস্তুর দোষ নাকি আপনার দোষ?

তখন হেল্পার সাহেব বিষয়টা বুঝলেন,কিন্তু সেই আঙ্কেল তার বক্তব্য থেকে সরার নাম নেই,তিনি তখনো গো ধরে বসে রইলেন। তখন বুঝলাম উনি জ্ঞান পাপী লোক তাই উনার সাথে আর তর্ক করলাম না।

ঐ আঙ্কেল এর সাথে কিন্তু আমাদের সমাজের অনেক লোকজন একমত হবেন। কিন্তু আমি বরাবরই তাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করব৷ যন্ত্র শুধু একটি যন্ত্রই, আপনি তাকে যা নির্দেশ করবেন সে সেটিই করবে। আপনার নির্দেশ এর বাইরে তার কিছু করার সামর্থ্য নাই।

প্রত্যেকটি যন্ত্র এক একটি বিশাল সম্ভাবনার ধারক।সেটা ভাল দিকে হোক আর খারাপ দিকেই হোক প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে প্রতিটি যন্ত্রের। এখন সেই যন্ত্রের থেকে আপনি ভাল ফলাফল আনবেন নাকি খারাপ ফলাফল আনবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার উপর।নিউক্লিয়ার শক্তির কথা চিন্তা করুন। এই নিউক্লিয়ার শক্তি যদি আপনি ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করেন তাইলে মূহুর্তেই একটি পুরো দেশকে মুহুর্তেই পুরো দেশকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে আবার যদি আপনি ভাল কাজে ব্যবহার করেন তাইলে পুরো দেশকে আলোকিত করতে পারেন।

এটা সব যন্ত্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।মোবাইল ফোনও তার ব্যতিক্রম নয়। আপনি ফোনের নিয়ন্ত্রণ কর্তা,কিন্তু যখন বুঝলেন ফোন আপনাকে নিয়ন্ত্রন করছে তখন বুঝবেন আপনি আর মানুষ নেই৷ আপনিও একটি যন্ত্র হয়ে গেছেন।আপনার জীবন টা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।নিজের কাজ এ মনোনিবেশ করতে হবে। আর একটা কথা ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে ফোন তুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।যতদিন না পর্যন্ত তার ভাল মন্দ বোঝার বয়স হয়েছে ততদিন পর্যন্ত তার হাতে ফোন দেবেন না।

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই। একটু রূক্ষ্ম পোস্ট,জানিনা কেমন লাগবে আপনাদের। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করলেন। খুব ভালো লাগলো পড়ে। আপনার এক্সাম চলে। আর আজকাল সবকিছু ই মোবাইলে থাকে।যার জন্য বই হাতে না নিয়েও মোবাইলে পড়া যায়।আসলে প্রযুক্তির কোন দোষ নেই, দোষটা আসলে আমাদের আমরা কোনটা গ্রহন করবো কোনটা করবনা। বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে মোবাইলে আসক্ত এটা সত্যি। আর তাদের কারনে বাকিদের দোষ দেয়া ঠিক নয়।প্রযুক্তি থেকে আমাদের ভালোটাই গ্রহন করা উচিত।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।