হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন।আমিও বেশ ভাল আছি।আজ আপনাদের মাঝে পরিচয় করে দেব এক নতুন গোয়েন্দার।
আপনারা গোয়েন্দা হিসেবে ব্যোমকেশ,ফেলুদার নাম অনেক শুনেছেন।কিন্তু কর্নেল এর নাম হয়ত অনেকেই জানেন না। আজ আপনাদের সাথে সেই কর্নেল কেই পরিচয় করিয়ে দেব।কর্নেল মূলত সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের সৃষ্ট এক অনবদ্য গোয়েন্দা চরিত্র।
কর্নেল নীলাদ্রি সরকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন কর্নেল ছিলেন।বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন।বর্তমানে তিনি একজন প্রকৃতিপ্রেমী।অর্কিড এবং প্রজাপতির খোজে তিনি পাড়ি দেন দুর্গম বিভিন্ন জায়গায়।তার সঙ্গী জয়ন্ত চৌধুরীও প্রাইভেট ডিটেক্টিভ কে. কে. হালদার ওরফে হালদার মশায়।হালদার মশায় পুলিশের অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং জয়ন্ত দৈনিক সত্যসেবক পত্রিকার সাংবাদিক।লেখক জয়ন্তের কলমে গল্প ফুটিয়ে তুলেছেন।আজ তারই একটি গল্প আপনাদের মাঝে তুলে ধরব।
বইয়ের নাম | পরগাছা |
---|---|
লেখক | সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ |
জনরা | ডিটেকটিভ উপন্যাস |
ব্যক্তিগত রেটিং | ৯/১০ |
গল্পের প্লটঃ
একদিন "মঞ্চ নাটক" দেখে জয়ন্তের বাড়ি ফিরছিলেন জয়ন্ত এবং কর্নেল।উল্লেখ্য তাদের দেখা এই নাটক টির নাম "পরগাছা" এবং পরিচালক ইন্দ্রজিৎ। এই কথা গুলো বলছি কারন গল্পে তাদের বেশ বড় ভূমিকা আছে।বাড়ি ফেরার সময় একটি মেয়ে তাদের থেকে লিফট চায় এবং জানায় তার পেছনে গুন্ডা লেগেছে। এরপর কর্নেল তাকে লিফট দেয় এবং পরে জয়ন্ত কে জানান মেয়েটি একটি কর্লগার্ল।কিন্তু জয়ন্ত তা মানতে নারাজ তাই কর্নেল বলেন মেয়েটির বাড়ির মালিক তার সাথেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ছিলেন এবং তাকে ভালভাবেই চেনেন।
এরপর তারা বাড়ি ফিরে দেখতে পান তাদের জন্য একজন অপেক্ষা করছেন।এই ব্যক্তির নাম **অমরেন্দ্র রায় সাহেব।তার বাড়ি রাঙাটুলি।তিনি জানান তার বাড়িতে রহস্যময় কিছু ঘটনা ঘটছে এবং তিনি একটি কাগজ
কুড়িয়ে পেয়েছেন যাতে লেখা "চাইচিচিংফাক"।কর্নেল তাকে আশ্বাস দেন তিনি যত শীঘ্র সম্ভব রাঙাটুলি যাবেন এবং রহস্য ফাস করবেন।
এরপর দ্বিতীয় দিন জয়ন্ত তার গাড়িতে একটি মেয়েদের পার্স দেখতে পায় এবং সেটা নিয়ে সে কর্নেল এর বাড়িতে যায়।কর্নেল তাকে জানান গত রাতে লিফট দেওয়া সেই মেয়েটি খুন হয়েছে।মেয়েটির নাম চন্দ্রিকা এবং বাড়ি রাঙাটুলি।এই খুনের তদন্তের জন্য গোয়েন্দা বিভাগের উপরমহল থেকে তার সাহায্য চাওয়া হয়েছে।সেই সুবাদে কর্নেল পার্সটি খুলে তল্লাসী চালান এবং সেখানে বিশেষ কোড লেখা একটি কাগজ দেখতে পান।কর্নেল এরই মাঝে জানতে পেরেছেন চন্দ্রিকা ইন্দ্রজিৎ এর নাটকের দলে কাজ করত এবং ইন্দ্রজিৎ এর অনুরোধেই ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ কর্নেল কে এই কেসে তদন্তের অনুরোধ জানায়।এখানে ইন্দ্রজিৎ জানায় ডিস্কো নামের একজন তাকে চন্দ্রিকার থেকে দূরে থাকতে বলেছিল এবং কথা না শুনলে তার প্রাণ নেওয়ার পর্যন্ত হুমকি দিয়েছে।
এরপর দৃশ্যে আসেন হালদার মশায় এবং কর্নেল কে জানান মেয়েটি তাকে একটি তদন্তের জন্য ভাড়া করেন।তিনি বলেন " মেয়েটি কে কেউ বিরক্ত করছিল ফোনে চাইচিচিংফাক বলে এবং তদন্ত করে তিনি জানতে পারেন এই কলগার্ল দের গার্জিয়ান ছিল ডিস্কো নামের রহস্যময় এক লোক।তাকে কেউ কখনো দেখে নি এমনকি তার অস্তিস্ত্ব আদৌ আছে কিনা তা কেউ জানেনা। বারবার ডিস্কোর নাম আসছে তাই কর্নেল তাকেই খুনী ধরে তদন্ত শুরু করেন।এখান থেকেই শুরু হয় ডিস্কো ও কর্নেল এর ইদুর বিড়াল খেলা।এই গল্পের মেইন ভিলেন এই ডিস্কো।কে এই ডিস্কো? কি তার আসল পরিচয়?
কর্নেল এর তদন্ত এগোতে থাকে এবং আস্তে আস্তে অনেক বড় রহস্যের সম্মুখীন হন তারা।এই তদন্তে বেরিয়ে আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইংল্যান্ড সেনাবাহিনীর একটি গোপন অপারেশন অপারেশন অর্কিড। ব্রিটিশ সেনারা বিপুল পরিমান ধনরত্ন একটি পরিত্যক্ত খনি তে লুকিয়ে রাখে,কিন্তু তার নকশা অলৌকিক ভাবে চুরি হয়ে যায়।
কিন্তু একজন কলগার্ল এর সাথে ব্রিটিশবাহিনীর গোপন অপারেশন কিভাবে জড়িত।আবার যে শব্দ বলে কলগার্ল কে বিরক্ত করা হত অমরেন্দ্র বাবুর বাড়িতেও সেই একই শব্দ কেন? তবে কি এসব পরস্পর যুক্ত? কর্নেল কি পারবেন খুনী কে খুজে বের করতে?"চাইচিচিংফাক" বলতে কি বুঝানো হয়েছে? চন্দ্রিকার পার্স থেকে পাওয়া সেই অদ্ভুত কোডটিই বা কিসের? কেন খুন হল চন্দ্রিকা। কর্নেল কি বের করতে পারবেন ডিস্কোর আসল পরিচয়?
ব্যক্তিগত মতামতঃ
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ আমার অনেক পছন্দের একজন লেখক।তার লেখা রম্য রচনা পড়লে হাসতে হাসতে আপনার পেটে খিল লাগতে বাধ্য।ঠিক সেই দক্ষতার সাথেই তিনি কর্নেল কে ফুটিয়ে তুলেছেন।তাদের তিনমূর্তিকে আপনারা অত্যন্ত উপভোগ করবেন।প্রতি মূহুর্তেই রয়েছে টান টান উত্তেজনা।সময় থাকলে পড়ে ফেলুন পরগাছা রহস্য।
পরগাছা-কর্নেল এর দুর্দান্ত ডিটেকটিভ উপন্যাস টা আমি আজও কখনো পড়িনি তবে আপনি অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে উপন্যাসটা আমাদের মাঝে রিভি করার চেষ্টা করেছেন এমন পোস্ট আপনার কাছ থেকে আরো প্রত্যাশা রইল ভাই আশা করি খুব শীঘ্রই এমন অনেকগুলা পোস্ট আমাদেরকে উপহার দিবেন এভাবেই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit