টাকা। পৃথিবীর সার সত্য হল টাকা। পৃথিবীতে বেচে থাকার জন্য বায়ু,পানি,খাবার যেমন দরকার তার থেকে টাকার প্রয়োজন কোন অংশেই কম নয়। বরঞ্চ টাকা না থাকলে আপনার বাতাস,জল,খাবারের ব্যবস্থাই বন্ধ হয়ে যাবে। কি বিশ্বাস হল না? দুই মাস পানি,বিদ্যুৎ আর গ্যাসের বিল দেওয়া বন্ধ করে দেখুন,আপনার পানি,বাতাস আর খাবার বন্ধ হয়ে যাবে।হাহাহা।
আমাদের পৃথিবীতে এই যে এত কাজ,এত ব্যস্ততা এর সব কিছু হল এই পাপী পেটের জন্য। চিন্তা করুন আপনার যদি খাওয়া না লাগত তাইলে আপনার এই যে সকালে উঠে অফিসে দৌড়ানো লাগতনা,ভোর বেলা উঠে রান্না করা লাগত না। ব্যাস খালি শুয়ে বসে থাকো। কোন চিন্তা নেই।
কিন্তু সে তো হবার যো নেই। ফলে পেট এর ধান্দায় আমাদের বিভিন্ন কাজ কর্মে ব্যস্ত থেকে সময় নষ্ট করতে হয়। যাই হোক ধান ভানতে অনেক শীবের গীত গেয়ে ফেললাম।এখন আসল বিষয়ে ফিরি। আমাদের এবারের প্রতিযোগীতার টপিক প্রথম অনলাইন ইনকাম। আমার ফর্মাল অনলাইন ইনকাম শুরু হয় স্টিমিট থেকেই।
আমাদের মহানুভব বড় দাদার বদান্যতায় প্রথমবার আসল ইনকামের মুখ দেখি। আসল ইনকাম বললাম, কারন এটি আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম নয়৷ কিছু দিন আগে আপনারা আমার একটি পোস্ট দেখেন এমটিএফই নিয়ে৷ এই সাইট গুলো কে MLM সাইট ও বলা হয়। আমার প্রথম ইনকাম ও এরকম একটি MLM। কি হাসি আসতেছে? মনে হচ্ছে না,যে নিজে MLM নিয়ে এত বড় জ্ঞানগর্ভ পোস্ট দিলো সে নিজেই এগুলা করে? হ্যা মনে হওয়া টাই স্বাভাবিক।
কিন্তু দাড়ান আগে পুরো ঘটনা শুনুন তারপর না হয় বিচার করবেন।এটি অনেক পুরোনো ঘটনা।আসল গল্পে যাওয়ার আগে আর দুই একটি কথা বলে নেই৷ আমি ছোট থেকেই বেশ স্বাধীনচেতা ছিলাম।হাত খরচের টাকার বাড়ি থেকে নেওয়া টা পছন্দ করতাম না। তাই সর্বদা আয়ের রাস্তা খুজতাম যাতে নিজের খরচ নিজে চালাতে পারি।
আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম যখন করি তখন আমি ক্লাস নাইনে অথবা এইট এ পড়ি৷ হাতে নতুন স্মার্ট ফোন এসেছে।এম্বি কেনার জন্যও টাকার দরকার। এমন একদিন আমার বন্ধু রিফাত ফোন দিল৷ দিয়ে বলল ওর কাছে একটি কাজ আছে।বিনিময়ে ভাল টাকা পাওয়া যাবে।আমার মনে কৌতুহল জাগল। আমি বললাম টাকা তো বুঝলাম।কিন্তু কাজটা কি? ও বলল শুধু এড দেখতে হবে দিনে ২৫টা তাইলে দিনে ৫০টাকা দেবে৷ এভাবে ১০০০টাকা হলে উঠাতে পারব।আর যদি মেম্বার এড করতে পারি তাইলে আরো বেশি টাকা পাব।
আমি বুঝলাম এর মাঝে একটা কিন্তু আছে,তাই ওকে বললাম এভাবে ফ্রি ফ্রি কেউ এড দেখে টাকা দেয় নাকি? খুলে বলতো সবটা। তখন ও বলল এক হাজার টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। আমি বললাম কোম্পানী পালিয়ে গেলে যে আমার টাকা যাবে।তখন ও বলল টাকার দায়িত্ব ওর। কোম্পানী গেলে ও টাকা দেবে। এই প্রস্তাবে রাজি হলাম। ওকে টাকা দিলাম ও অ্যাকাউন্ট খুলল। আমার এম্বি না থাকায় আমার এড ও দেখত। আমি বাড়ি এসে বিষয়টা নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করি।পরে জানতে পারি এই সাইট গুলোকে বলা হয় ptc অর্থাৎ pay to click. এগুলো mlm এর ই মাসতুতো ভাই। ৫/৬মাস থাকে তারপর সবার টাকা মেরে গায়েব হয়ে যায়।
এভাবে ২০দিন পর আমার ইনভেস্টমেন্ট এর টাকা উঠে আসে। ও টাকা টা আবার ইনভেস্ট করতে বলে,তাইলে দিনে ৭০টাকা পাওয়া যাবে।আমি বললাম কুমিড়ের মুখ থেকে যখন মুন্ডু বের করেছি তখন আর দিচ্ছি না। আমার দিনে ৫০টাকাই আসুক।তুই টাকা বের করে নে। এভাবে আসল ফেরত পাই।এরপর আবার ২০দিন পর লাভের টাকা জমা হয়৷ রিফাত বলতেছিল দুইদিন পর ওর টাকাও জমা হবে তখন একসাথে বের করবে। কিন্তু আমি জোর করেই টাকা টা বের করে নেই। টাকা বের করে অবশ্য রিফাত কে ট্রিট দিয়েছিলাম।এরপরেও আমার কাছে ছিল ৮০০টাকার মত।এটাই ছিল অনলাইন থেকে আমার প্রথম ইনকাম।
এখন মজার ঘটনা শুনুন।আমি টাকা বের করার পরেরদিন থেকেই কোম্পানী গায়েব।আমাকে যে ঢুকিয়েছিল সে বেশি লাভের আশায় কোন টাকাই বের করে নি। ফলে ওর সব টাকা লস।ও পরের দিন এসে বলতেছে ভাই তোর কথা শুনলে এই লস হত না। আমি আর কি বলি,শান্তনা হিসেবে সকালের নাস্তাটা করিয়ে দেই।
আমি এই সাইট থেকে লাভ করেছি ঠিক আছে,কিন্তু বন্ধুর লস দেখে চরম শিক্ষা পেয়েছি। এবং এই শিক্ষাকেই কাজে লাগিয়ে আজ পর্যন্ত কোন mlm এর ফাদে পা দেই নি। এবং ঈশ্বরের কৃপায় বড় ধরনের কোন ক্ষতির মুখে পড়ি নি। এরপর আর অনলাইনে কিছু ট্রাই করি নি। অবশেষে গতবছর বৃষ্টিচাকি কাকিমার থেকে স্টিমিট ও আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির খোজ পাই। যা আমার জীবন কে পালটিয়ে দেয়৷ উপার্জন টা পরের বিষয় এখানে এসে আমার মধ্যে যে পরিবর্তন গুলো হয়েছে সেগুলো অমূল্য।
এজন্য প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাননীয় @rme দাদা কে। উনি এত সুন্দর কমিউনিটি না বানালে, আমি হয়ত নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতা কখনো খুজে পেতাম না। সেই সাথে মাননীয় এডমিন,মডারেরটর এবং সদস্যবৃন্দ কে ধন্যবাদ সব সময় উৎসাহ যোগানো ও শেখানোর জন্য।
গুলি একেবারে কানের গোড়া দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলো যা বুঝলাম! তবে ক্লাস এইট /নাইন থেকেই এমন স্বাবলম্বী চিন্তাভাবনা ছিলো এবং তার তাড়না থেকে কাজও করেছো জেনে ভালো লাগলো। আশা করি ভবিষ্যতে আরোও অনেক কিছু করবে। তোমার জন্য শুভকামনা
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভাল লাগলো আপনার অনলাইন ইনকামের গল্প পরে।আসলে এড দেখা এই কাজটা সবার সাথে পরিচিত আমার এক বন্ধু এসব করতো আমি বিশ্বাস করতাম না আদোও টাকা আসে ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তোমার পোস্ট পড়তে পড়তে যখনি এড দেখতে হবে টাকা ইনকাম হবে লেখাটা দেখলাম তখনি বুক ফেটে হাসি পাচ্ছি ও শেষ অবদি শুধু হেসেই গেছি কারন আমার বর এই এড দেখার চক্করে 50হাজার টাকা ধরা খেয়ে বসে আছে।সে বিশ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেছিলো। আমিও বলেছিলাম আমি ইনভেস্ট করবো এর মাঝেই উধাও।ভাগ্যিস তোমার বড়ো ধরনের ইনভেস্ট ছিলো না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন জানাই তোমাকে।তোমার অনলাইন ইনকামের অনুভূতি গুলো পড়ে যেমন ভালো লাগলো ঠিক তেমনি খারাপও লাগলো।এখনকার দিনে এরকম বিভিন্ন লোভনীয় কিছু এ্যাপসের মাধ্যমে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছে।তোমার কপাল ভালো যে অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেছো।ভালো মন্দ অনুভূতি গুলো সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই।শুভকামনা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যা কাকিমা। তবে সব থেকে বড় কথা ঐ যে শিক্ষা পেয়েছি সেটা মনে রেখেছিলাম দেখে এখন বড় কোন ক্ষতির সম্মুক্ষীন হইনি। ধন্যবাদ কাকিমা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিষয়টা মজার আবার দুঃখজনক। এসব সাইটে বেশি লোভ করতে গেলে আপনার ওই বন্ধুর মতই হয় । আসলে এখানে লোক ঢুকানোর বিষয়টা পিরামিডের মতো কাজ করে আর এটাই ওদের বড় ফাদ। আরেকটা জাল রয়েছে ওই যে আবার পুনরায় ইনভেস্ট করে আর্নিং বাড়ানো।
এগুলোর জন্যই লাস্ট স্টেজের বিশাল সংখ্যার ইউজার সবাই একসাথে বাঁশ খায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যা ভাইয়া।যারা প্রথম দিকে ঢোকে তাদের দুই একজন লাভ করে,কিন্তু লসে পড়ে এই যারা শেষে ঢোকে তারা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit