বন্ধুর সাথে ঘোরাঘুরি

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে একটি ছোট খাট ভ্রমনের পোস্ট শেয়ার করব।

IMG_20221223_171816.jpg

ডিসেম্বর মাস।স্কুল কলেজের শীতকালীন ছুটি।শুধু আমার মত টিউশন টিচার দের ছুটি নেই। ভেবেছিলাম ডিসেম্বরের ১৫তারিখের মাঝেই সব ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে।তারপর বেশ কিছু দিন বিশ্রাম নেব।

কিন্তু মানুষ ভাবে এক,হয় আরেক।শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিলেন পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি হবে।ঘোষণা টি একদম হঠাৎ। শিক্ষার্থীরা জানত শুধু মূল্যয়ন পরীক্ষা হবে তাই সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিল।কিন্তু হঠাৎ করেই এই ঘোষণা।তার উপর সিলেবাস টাও একদম নতুন।বাচ্চারা এই সিলেবাস আগে পড়েনি।তাই আমার দায়িত্ব পড়ে গেল তাদের সিলেবাস কমপ্লিট করার

IMG_20221223_170918.jpg

অবশেষে ছুটি মাথায় উঠল।হয়ত বেতন পাব সম্পূর্ণ।কিন্তু বেতনই সব না।একটু মানষিক শান্তির দরকার। বিশেষ করে আমারা যারা শিক্ষক আছি তারা জানি কি পরিমান চাপ যায় ব্রেইনের উপর দিয়ে।ফলে একটু মানসিক শান্তির দরকার হয়ে পড়ে বছরের শেষের দিকে।কিন্তু এই বৃত্তি পরীক্ষার জন্য তা সম্ভব হল না।

যাই হোক গতকাল শুক্রবার ছিল।ছুটির দিন তাই বন্ধু নাহিদ কে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম মানসিক শান্তির খোজে।আর শহরের ইট,কাঠ পাথরের জঙ্গলে শান্তি পাওয়া অসম্ভব।তাই যেতে থাকলাম গ্রামের দিকে।

IMG_20221223_170733.jpg

গ্রামের মেঠোপথ, সবুজ ফসলের মাঠ চোখ জুড়িয়ে দেয়।সাথে চলে আসে মানষিক প্রশান্তি।গ্রামের দিকে যেতে একজায়গায় দেখলাম ছেলেরা ফুটবল খেলছে।এই শীতের মাঝে খালি পায়ে কিভাবে খেলছে তা ভেবে অবাক হয়ে যাই।যারা ফুটবল খেলেন তারা বুঝবেন। যাই হোক বেশ খানিকক্ষণ খেলা টা উপভোগ করার পর নদীর দিকে রওনা দিলাম।

আহা এই সেই নদী। করতোয়া নদী।সেই ছোট বেলায় ঘন্টার ঘন্টার পর লাফালাফি করেছি এই নদীতে। কত মার খেয়েছি এর জন্য। আমাদের এই নদী কিন্তু সেই প্রাচীন মঙ্গলকাব্যেও জায়গা পেয়েছে।কি মনে পড়ছে না? আরে সেই যে বেহুলা-লক্ষীন্দর এর গল্প।মনসা দেবী চাঁদ সওদাগর এর বানিজ্যের সপ্তডিঙ্গা এই করতোয়া নদীতেই ডুবিয়ে দিয়েছিল।প্রাচীন কালে এই নদী বিশাল বড় ছিল।এখন তা মৃতপ্রায়।

IMG_20221223_171828.jpg

তারউপর আবার শীতকাল হওয়ায় নদীতে জল প্রায় নেই বললেই চলে।অনেক দিন পর নদীর পাড়ে এসে মন ভাল হয়ে গেল।নদীর পাড়ে বসে বসে মানুষের পারাপার দেখছিলাম।আর ভাবছিলাম জীবন টাও এই নদীর মত।বয়ে যাচ্ছে আর কত মানুষ এপার থেকে ওপার যাচ্ছে।এখন আমাদের উচিত বয়ে যেত দেওয়া,কখনো কারো জন্য থেমে না যাওয়া।থেমে গেলেই বন্য বইবে চোখ দিয়ে।

IMG_20221223_171844.jpg

যাই হোক শীতের দিনে নদীর পাড়ে আলাদা রকমের শীতল বাতাস বয়।নাহিদ হালকা জামাকাপড় পড়ে গিয়েছিল তাই বেশিক্ষণ বসা যায়নি।তবে যতক্ষণ ছিলাম তাতেই মন একদম ফ্রেশ হয়ে গেছে।এই জালিম দুনিয়ায় আরো কয়েকটা দিন টিকে থাকার শক্তি পেয়েছি মনে।এরপর আসার সময় সিঙ্গারা খেতে খেতে বাড়ি ফিরলাম।

IMG_20221223_173734.jpg

সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।কেমন লাগল জানাবেন।ভুলত্রুটি মার্জনীয়।যে কোন পরামর্শ গ্রহনযোগ্য।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

করতোয়া নদী অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। আসলে এমন অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করলে মানসিক অস্থিরতা কিছুটা কমে যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশ বন্ধুর সাথে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর গঠণমূলক মন্তব্য করার জন্য।

টিউশন করাতে হলে অনেকটা প্রেসার নিয়েই পড়াতে হয়! ডিসেম্বরে সবকিছু অফ হওয়ার কথা। কিন্তু আপনার আর তেমন উপভোগ করার টাইম হলো না! যদিও করতোয়া নদীতে বন্ধু নাহিদকে নিয়ে ভালো সময় কাটিয়েছেন!

হ্যা ভাইয়া বেশ ভাল সময় কাটিয়েছি।ধন্যবাদ।

অসাধারণ লিখেছো দাদা ভাই। আসলে ঘুরতে সবারই ভালো লাগে, আমি নিজেও একটু সময় পেলে বেরিয়ে পড়ি সবুজেঘেরা শান্ত কোন এক জায়গার খোঁজে , যেখানে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।
তবে শত কর্মব্যস্ততার মাঝে এইটুকু প্রশান্তি শরীর এবং মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।

একদম।সবুজ প্রকৃতির মত শারিরীক মানসিক ক্লান্তি দূর করার ওষুধ নেই।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া মানসিক শান্তিরও দরকার আছে।ডিসেম্বর এলে আসলে স্কুলের এক্সাম শেষ হয়ে যায়, তাই এই সময়টা রিলাক্স কাটানো যায়। কিন্তু আপনি তা পারলেন না, কারন পঞ্চম শ্রেনীর বৃত্তি এক্সাম হবে সরকার ঘোষনা দেয়াতে আপনি আপনার স্টুডেন্টের সিলেবাস শেষ করাতে আবার সেই ব্যস্ততম দিন পার করছেন।যদিও তারা পুরো বেতন দেবে।কিন্তু একটু স্বস্তি তো আর হলো না।আপনি শুক্রবার ছুটির দিনে তাই বন্ধু নাহিদকে নিয়ে গ্রামের দিকে চলে গেলেন। করতোয়া নদীর পাড়ে সেই শীতল বাতাসে নিজেদের কে অনেকটাই ফ্রেস করে নিলেন।আপনার বন্ধু নাহিদ হালকা কাপড় পরে যাওয়াতে আপ্নারা সেখানে বেশি সময় আর বসেন নি। ফেরার পথে সিংগারা খেতে খেতে বাসায় চলে এলেন।খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আপনি ঠিক বলছেন ভাবনায় এক কিন্তু বাস্তবতায় অন্যকিছু কখনো মিল হয় না দুটির মধ্যে।তবে মাঝে মাঝে মানসিক প্রশান্তির জন্য একটু ছুটি নিয়ে ঘোরাফেরা করা ভালো।আপনি ঠিক বলছেন আসলে শহরের ইট পাথরের মধ্যে কোন আনন্দ নেই।আপনি গ্রামের দৃশ্য দেখতে গেছেন এবং নদীর পাড়ে অনেক আনন্দ উপভোগ করেছেন আপনার বন্ধুর সাথে।ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আসলেই দিন শেষে একটু মানসিক শান্তির প্রয়োজন আছে ৷ বর্তমান কর্মব্যস্তই জীবন হয়ে দারিয়েছে ৷ যাই হোক একটু ঘোরাঘুরির দরকার আছে ভালো থাকতে হলে ৷ আপনার বন্ধুর সাথে আপনি ভালো ঘোরাঘুরি করছেন ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ৷

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

শুধু আপনি কেন আমরা যারা চাকুরী জীবি তারাও কিন্তু কোন ছুটি পাই না। আর তাই তো মাঝে মাঝে সময়পেলেই ছুটে যাই প্রকৃতির কাছে। সত্যি বলেছেন, শহরের দালান কাঠের ভিড়ে ঘুরে বেড়িয়ে কোন লাভ নেই। কিন্তু করোতোয়া নদীর পারে গ্রামে বেড়িয়ে মনে হয় আপনার মনটা কিছুটা হলেও ভাল হয়েছে।

কিছুটা না আপু, অনেকটা ভাল হয়েছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

বেশ ভালো গুছিয়ে লিখেছেন দেখছি। ছোটবেলায় যখন আমি গ্রামে থাকতাম তখন এই ডিসেম্বর মাসের জন্য অপেক্ষা করতাম। কারণ এই সময়টাতে স্কুল ছুটি হয়ে যেত এবং বিভিন্ন উৎসব তাছাড়া মন খুলে খেলাধুলা করা যেত। ও আর একটা কথা, এক কাজ করেন, নদীতে নেমে পড়েন আর চাঁদ সওদাগর এর বানিজ্যের সপ্তডিঙ্গার কোনো গুপ্তধন পাওয়া যায় নাকি খুঁজে দেখেন।

পরে চাঁদ সওদাগর পুজো দেওয়ার দেবী মনসা সপ্তডিঙ্গা আবার ফেরত দেন চাঁদ সওদাগর কে।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

ভাইয়া শিক্ষামন্ত্রীর কারনে আপনার ছুটি বা রেস্ট নেওয়ার দিন গুলো গোল্লায় গেল। একটি কথা ঠিক বলেছেন আমরা চিন্তা করি এক আর বাস্তাবে হয় আরেক। যেটা আমি বেশ কয়েক মাস যাবৎ হারে হারে টের পাচ্ছি। আর করতোয়া নদীর কথা অনেক বই পুস্তকে পড়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।