বই পড়া আমার নেশা আপনারা জানেন ই। মাঝখানে পরীক্ষার ব্যস্ততায় বই থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম,মানে পড়ার বইয়ের কাছে কিন্তু সাহিত্য থেকে দূরে। পরীক্ষা শেষ হল,আমাদের লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু হল। তাই লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে আসব ভাবলাম। কিন্তু আমাদের লাইব্রেরি নতুন,তাই সেখানে বর্তমানে বইয়ের এর সংখ্যা কম। তারউপর আমার আবার থ্রিলার ছাড়া কিছু পড়তে ইচ্ছা হয়না। অনেক খুজেও মন মত বই থ্রিলার পেলাম না তখন চোখে পড়ল মহাভারত। আজ সেই মহাভারত এর রিভউ দেব।
বই পরিচিতি:
বইয়ের নাম | মহাভারত |
---|---|
লেখক | কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস |
অনুবাদক | রাজশেখর বসু |
ভাষা | বাংলা |
রেটিং | রেটিং দেওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। |
কাহিনী সংক্ষেপ:
হস্তিনাপুর ভরতবংশীয় রাজাদের রাজধানী। সর্বশেষ রাজা পান্ডুর মৃত্যুর পর, মহারাজা পান্ডুর বড় পুত্র যুধিষ্ঠির কে রাজা বানানো হয়।পান্ডুর পাচ জন পুত্র যুধিষ্টির, ভীম,অর্জুন, নকুল,সহদেব।অন্যদিকে পান্ডুর বড় ভাই ধৃতরাষ্ট্রের একশত ছেলে।ধৃতরাষ্ট্রের রাজা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জন্মান্ধ হওয়ায় তিনি রাজার পদ থেকে বঞ্চিত হন।ধৃতরাষ্ট্রের শত ছেলেকে বলা হয় কৌরব আর পান্ডুর পাচ পুত্র পান্ডব।মহাভারতের গল্পের মেইন ক্যারেক্টার ইনারাই। কৌরবরা ছোট থেকেই পান্ডবদের হিংসা করত এবং কয়েকবার হত্যা চেষ্টাও করে।
পান্ডুর মৃত্যুর পর রাজ্য নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়,তখন যুদ্ধের সম্ভাবনায় হস্তিনাপুর কে দুই ভাগ করে পান্ডব ও কৌরবদের দেওয়া হয়। পান্ডবরা নিজেদের গুণে,বীরত্বে এবং ধর্মপথে থাকার কারনে তারা দিন দিন নিজেদের রাজ্যের উন্নতি করতে থাকে,রাজ্যের সীমানা বাড়াতে থাকে।কিন্তু কৌরবরা এর উল্টো পথে হাটতে থাকে এবং পান্ডবদের উপর তাদের হিংসা আরো বাড়তেই থাকে।
কৌরবদের প্রধান দুর্যোধন,সে তখন কৌরব বংশের রাজা।তার মামার নাম শকুনি। শকুনি পাশা খেলায় খুবই পারদর্শী ছিল।এদিকে যুধিষ্ঠির এর আবার পাশা খেলার শখ।তখন দুর্যোধন আর শকুনি মিলে প্ল্যান করেন যুধিষ্টির কে পাশা খেলায় ডাকবেন এবং জুয়ায় তাদের সব জিতে নিয়ে তাদের বনে পাঠাবেন। তাদের এই প্ল্যান সফল হয়,শেষ পর্যন্ত তারা পান্ডবদের বারো বছর বনবাস এবং এক বছর অজ্ঞাতবাসে পাঠায়।
এই বনবাসে থাকা কালীন পান্ডবরা শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শে মিত্র ও অস্ত্র সংগ্রহ করতে থাকেন।এবং আগের তুলনায় আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। একসময় তাদের বনবাস ও অজ্ঞাতবাস শেষ হয়।তারা ফিরে এসে তাদের রাজ্য ফেরত চায়,কিন্তু দুর্যোধন তখন জানায় সে বিনাযুদ্ধে একটু সুইয়ের আগা যতটুকু মাটিকে বিদ্ধ করতে পারে ততটুকু মাটিও পান্ডবদের দেবে না। সবাই দূর্যোধন কে বুঝায় কিন্তু সে নিজের জায়গায় অনর থাকে। ফলে শুরু হয় বিখ্যাত কুরুক্ষেত্রের ১৮ দিনের যুদ্ধ।যেখানে বড় বড় রথী মহারথী বীরগতি প্রাপ্ত হন।
ব্যক্তিগত মতামত
অনেকেই ভাবতে পারেন মহাভারত ধর্মীয়গ্রন্থ,তাই শুধু হিন্দুদের জন্য। বিষয়টা এমন না। এই বইটি সবার জন্য উপযুক্ত।আপনি এখান উপদেশ পাবেন,মোটিভেশন পাবেন,কর্তব্য সম্পর্কে উপদেশ পাবেন। আর এসব যদি বাদ দেই,যদি আপনার প্রাচীন রাজা-বাদশাহ,যুদ্ধ, কূটনীতী পড়তে আগ্রহ থাকে তাহলেও এর থেকে ভাল বই কোথাও আর পাওয়া যাবে না৷ একবার হাতে নেওয়ার পর আগ্রহ বাড়তেই থাকবে শুধু।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মহাভারতের রিভিউ কখনোই একটা ব্লগে লেখা সম্ভব না৷ তাও আপনি সংক্ষিপ্ত আকারে গল্পটা লিখেছেন৷ অনেক খুঁটিনাটি আছে, যা জীবনদর্শন বদলে দেবার ক্ষমতা রাখে। প্রতিটা চরিত্রের অনেক অনেক দিক৷ বেদব্যাস আমার চোখে সৃষ্টির সেরা লেখক। রামায়ণেও এই জিনিস নেই।
আপনার কথার ওই প্যারা সম্পর্কে বলি, মহাভারত যে যুগে লেখা হয় সেই যুগে কোন ধর্ম ছিল না৷ হিন্দু মুসলিম খ্রীস্টান কিছুই ছিল না৷ এটি আপামর জনতার জন্য লেখা হয়েছিল, সামাজিক অবস্থান ও।ঘটনাবলীর ওপর নির্ভরকরে। পরবর্তীকালে যখন নতুন নতুন ধর্ম তৈরি হল তখন যা প্রাচীন ছিল তা আগলেছে কিছু মানুষ।
বর্তমানে আমেরিকার বেশ কিছু ইউনিভার্সিটিতে সংস্কৃত পড়া অত্যাবশকীয় করা হয়েছে। এবং বিশ্বের নানান নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাভারত শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য হিসেবে গবেষণাধীন। প্রচুর ছেলে মেয়ে ভারতীয় প্রাচীন গ্রন্থাবলি নিয়ে কাজ করছে৷ তাই ধর্মের আওতায় ফেলে এটিকে ক্ষুদ্র করে দেওয়া হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কথাটি ঠিক। মহাভারত সারা বিশ্বের সম্পদ। রাশিয়াতেও মহাভারত পড়ানো নিয়ে একটি তীব্র বাদানুবাদ বেঁধেছিল। পরে কোর্ট রায় দেয় মহাভারত পড়ানোয় কোন অন্যায় নেই। কথাতেই বলা হয় জানি ভারতে তা নেই ভারতে। অর্থাৎ মহাভারতে নেই এমন কোন বস্তু ভারতবর্ষেও নেই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি অনেক কিছুই জানি,কিন্তু সব কথা সব খানে লেখা যায় না। আমি এখানে রিভিউ লিখতেছি,বইয়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখলে বিষয়গুলো ইনক্লুড করতাম। ধন্যবাদ সুন্দর ইনফরমেটিভ মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বেশ সংক্ষেপে মহাভারতটা রিভিউ করে দিলেন তো। যে মহাকাব্য পৃথিবীর সব থেকে বড় মহাকাব্য তাকে এত ছোট পরিসরে রিভিউ করা সত্যিই বড় কঠিন ব্যাপার। তবে রিভিউ করার বই হিসাবে মহাভারতকে পছন্দ করা সত্যিই কিন্তু অভিনব একটি বিষয়। ভালো লাগলো সামগ্রিকভাবে পোষ্টের বিষয়খানি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা উৎসাহিত করার জন্য। অনেক চেষ্টার পরে এত ছোট হয়েছে।আর একদম যাদের কথা না বললেই নয় তাদের কথা বলা হয়েছে।সবাইকে নিয়ে ২লাইন করে লিখতে গেলেও বিশাল হয়ে যেত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি চাই আপনি রামায়ণ নিয়েও এমন একটি রিভিউ করুন। আপনার বই পড়ার অভ্যাস আমার খুব ভালো লাগে। আর বই পড়লে যে কত জ্ঞান অর্জন করা যায় তার উদাহরণ আমরা কুইজ সেগমেন্টেই দেখতে পাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাল আইডিয়া দিয়েছেন দাদা। আনতে হবে লাইব্রেরি থেকে। ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মহাভারত আমি পড়েছি ভাই। জানার জন্য পড়েছি। মহাভারতের আমার সবচাইতে পছন্দের চরিত্র ছিল কর্ণ। পান্ডবদের বড় ভাই ছিল সে। যদিও কখনোই স্বীকৃতি সে পাইনি। বেশ চমৎকার একটা রিভিউ দিয়েছেন। ভালো লাগল পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit