আমি ছোট থেকে শিক্ষক পেশা টা সব থেকে কম পছন্দ করতাম। কারন আমার ধৈর্য ছিল সব থেকে কম। মায়ের ধমক খেয়ে মাঝে মাঝে বিন্দুকে পড়াতে বসাতাম বটে।তবে সে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হত। তাই কয়েকবারের পর মাও আর কখনো পড়াতে বলে নাই। শুনলে অবাক হবেন, আমি অনেক স্টুডেন্ট পড়ালেও বিন্দু কখনোই আমার কাছে পড়ে নি।
তাই বলে আবার ভাববেন না,এই রে অনেক বাজে টিচার। নিজের বোন ই পড়ে না।কিন্তু আসলে তা না,আমার স্টাইলের সাথে ওর স্টাইল যায় না।যাই হোক এই কয়েকবছরে অনেক স্টুডেন্ট পড়ালাম।সবাই মোটামুটি সফল। আমি মোটামুটি ক্লাস ফাইভ থেকে পড়াই। ছোট দের সাধারণত ইগনোর করি।
কিন্তু বিন্দুর পরীক্ষার সময় মা বিন্দুর ওখানে যায়,তাই মায়ের টিউশন গুলো আমার দায়িত্বে আসে। সেই একমাস পড়িয়েছি।এরপর মা চলে আসে মায়ের স্টুডেন্ট মায়ের কাছে ব্যাক যায়। কিন্তু একটি স্টুডেন্ট চলে আসে আমার কাছে। এই স্টুডেন্ট নিতে আপত্তি করি নাই,কারন স্টুডেন্ট বোঝে ভাল এবং কথাও কম বলে।তাই আমার বেশি মাথা খাটাতে হয়না।
যাই হোক স্টুডেন্টের নাম ঋত্বিকা। ক্লাস থ্রির স্টুডেন্ট। আমার কাছে পড়েছে মাত্র ৩মাস। তিনমাসেই ওকে থ্রির ম্যাথের বই কমপ্লিট করে ফোর এর ও অর্ধেক শেষ করেছে। ওকে বললাম তুমি ক্লাস ফাইভে ভর্তি হও। সুন্দরভাবেই কমপ্লিট করতে পারবা।আমার কনফিডেন্স ছিল ওর উপর। কিন্তু বান্ধবীর মায়ায় ফাইভে ভর্তি হল না।
কয়েকদিনে আগে আমাদের এখানকার কোচিং সেন্টারে একটি প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা নেওয়া হয়। যথারিতী ঋত্বিকা অংশগ্রহণ করে। ওর উপর কনফিডেন্স ছিল প্রথম হবে।কিন্তু রেজাল্ট এ দেখা যায় তৃতীয় হয়েছে।তারপরেও আমরা খুশি,যদিই ঋত্বিকা বার বার বলছিল ভাইয়া আমি প্রথম হব।ওর অংকে নাম্বার কম আসে।তাই বলছিল যে অংকে আমি কোন ভুল করি নি। আমি শান্তনা দিয়েছিলাম যে তৃতীয় ও খারাপ না। কারন ১০০ এর মাঝে ৯৫ পেয়েছিল।
যাই হোক সেদিনই ঐ কোচিং থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়।ঋত্বিকাই ফার্স্ট হয়েছে,রেজাল্ট একটু মিক্স আপ হয়ে গিয়েছিল। এই খুশিতে ছাত্রী আমাকে দাওয়াত দেয় শুক্রবারে।যদিও আমি আপত্তি জানিয়েছিলাম,কিন্তু আন্টি আমার কথা শুনতে রাজি নন।শুক্রবার দুপুরে আন্টির বাসায় খাওয়াদাওয়া করতে হবে।
তো গেলাম শুক্রবার দুপুরে। গিয়ে দেখি এলাহী কান্ড। মুরগীর মাংস,ডিম,আলু ভাজি,বেগুন ভাজি আর ডেজার্টে দুধপুলি। বেশ পেট ভরেই খেলাম,কিন্তু আন্টি তো মায়ের জাত এতে মন ভরবে কেন? আরো খানিকটা পাতে দিলেন।আমি আবার খাবার নষ্ট করতে পারি না।।খুব খারাপ লাগে।তাই কষ্ট করে বাকিটা খেলাম। এরপর আর উঠতে পারি না,তাই ওখানেই বসে আড্ডা দিলাম খানিকক্ষণ।এরপর আন্টিকে বেশ করে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে এলাম।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্টুডেন্টের বাসায় দাওয়াতে ভালোই খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে দেখছি। আপনার স্টুডেন্ট ফার্স্ট হওয়াতে খুব সুন্দর খাবারের আয়োজন করেছে আপনার জন্য। ভালো লাগলো দেখে। প্রত্যেকটা খাবার বেশ লোভনীয় ছিল। মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit