এক কাল রাত্রির ইতিহাস||পর্ব-১

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি।আজ ইতিহাস কুখ্যাত কাল রাত্রি নিয়ে

IMG_20230325_215314.jpg

আমরা আজ স্বাধীন জাতি। কিন্তু চিরদিনই কিন্তু আমরা স্বাধীন ছিলাম না।নানা সময়ে নানা বহিশক্তির হাতে আমাদের পরাধীনতা বরণ করে নিতে হয়েছে।নিকট অতীতে যার শুরু হয় মীর জাফরের হাত ধরে।তার বিশ্বাস ঘাতকতার কারনে আমাদের বরণ করে নিতে হয় প্রায় দু'শো বছরের পরাধীনতা। আমরা হয়ে পড়ি ইংরেজ দের অধীন।

এরপর অনেক সংগ্রাম রক্তপাতের পর ইংরেজরা ১৯৪৭ সালে এদেশ ত্যাগ করে। কিন্তু তারপরেও আমরা অর্জন করতে পারিনি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।আমাদের আবার পরাধীনতা বরণ করে নিতে হয় পাকিস্তানীদের কাছে।তারা সেই ১২০০কিমি দূরে বসে আমাদের উপর ছড়ি ঘুরাত।যার শুরু হয় উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাওয়ার মাধ্যমে।

কিন্তু বাঙালী বীরের জাতি,তারা এই ছড়ি ঘুরানো পছন্দ করবে কেন? শুরু হয় আন্দোলন,যা প্রতিরোধ করতে পাকিস্তানী জান্তা সরকার গুলি চালায়।কিন্তু এতে আরো গতি পায় আন্দোলন,সে আন্দোলনের তীব্রতায় পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী বাধ্য হয় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে।তখনই তারা বুঝে যায় বাঙ্গালীকে দাবিয়ে রাখা কঠিন। তারপরেও কিন্তু তারা সেই বাঙ্গালীকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায়।

কিন্তু বাংগালীরাও বারবার তাদের সেই চেষ্টা ব্যার্থ করে দেয়।এরপরে বাংগালীর দাবিতে বাধ্য হয়ে ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক নির্বাচণ এর ঘোষণা দেয় এবং এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।কিন্তু এতে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীরা ক্ষমতার সুষ্ঠ হস্তান্তর না করে শুরু করে তালবাহানা।কিন্তু বীর বাঙালী তা মেনে নেব কেন?

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দেন অসহযোগ আন্দোলনের।তার ডাকে সারা দেয় সমস্ত দেশের মানুষ।৭মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেন তার রক্তগরম করা ভাষণ। তিনি সমগ্র দেশের মানুষ কে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে বলেন,যার হাতে যা আছে তাই নিয়েই শত্রুর মোকাবিলা করতে বললেন।

তার এই আন্দোলনে ভয় পেয়ে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে আসে আলোচনা করতে। তারা আলোচনার নামে প্রহসন চালিয়ে যায়। আলোচনার নামে সবার মনযোগ সরিয়ে রাখে। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সিভিল ড্রেসে পাকিস্তান বাহিনীর জাওয়ানদের আনতে থাকে,চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হতে থাকে অস্ত্রবোঝাই জাহাজ।

পাকিস্তানী ইন্টালিজেন্স শনাক্ত করে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরোধ আসতে পারে এমন জায়গা গুলো। ফলাফল হিসেবে পাকিস্তানী সশস্ত্রবাহিনীর বাঙ্গালী সদস্যদের পশ্চিম পাকিস্তানে ট্রান্সফার করা হয়,অনেক কে নিরস্ত্র করা হয়।বাঙ্গালি পাইলটদের গ্রাউন্ডেড করা হয়(গ্রাউন্ডেড অর্থ তাদের বিমান উড্ডয়ন থেকে দূরে রাখা হয়)।বাঙ্গালী নাবিকদের জাহাজ থেকে এনে অফিস ডিউটি তে বসানো হয়।......

আজকের ইতিহাস পাঠ এপর্যন্তই। অনেকেই হয়ত এসব ইতিহাস জানেন।তবুও নতুন প্রজন্মের জন্য লিখে রেখে গেলাম। তারা জানতে পারবে তাদের জাতীর বীরত্বের ইতিহাস।কেমন লাগবে জানাবেন। সম্পুর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ইতিহাস কখনো মুছে যাওয়ার নয় ৷ ইতিহাস আছে থাকবে ভবিষ্যতে ও থাকবে ৷ এটা সত্যি যে হয়তো এদেশ স্বাধীনতা লাভ করতো না ৷ পেতাম না একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র পেতাম না আমরা এই মায়ের ভাষা বাংলা কে ৷ তবে এখন কি জাতি ভুলে গেছে সেই রক্ত রঞ্জিত ইতিহাসের কথা ৷

দাদা ভাই ভালো ছিল এতো সুন্দর ইতিহাস তুলে ধরার জন্য৷ পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷

২৫ মার্চের কালরাত্রিতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আপনি আপনার লেখায় আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসের বাক গুলো সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বঙ্গবন্ধু ওইসময় যেভাবে অসহযোগ আন্দোলন এর ডাক দেন ঠিক এইসময়ে এসেও এমন একটা আন্দোলন এর দরকার। মাঝে মধ্যে মনে হয় এখনো মনে হয় পরাধীন এই আছি,সেই পুরোনো খাঁচায় বন্দী।