[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
আমার সাধারণত হিন্দি ওয়েব সিরিজ গুলো খুব একটা দেখা হয়না।তবে কিছুদিন মুভি লাভারস গ্রুপ গুলোতে নতুন একটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে খুব মাতামাতি দেখছিলাম।ওয়েব সিরিজটির নাম ফারজি।ফারজি শব্দটির বাংলা অর্থ হল জাল বা নকল। সবার রিভিউ দেখে ও কাস্টিং দেখে ডাউনলোড করে ফেললাম।কেমন লাগল ওয়েব সিরিজটি? চলুন দেখা যাক।
সংক্ষিপ্ত তথ্য
সিরিজের নাম | ফারজি |
---|---|
জনরা | ক্রাইম,থ্রিলার |
ইন্ডাস্ট্রি | বলিউড |
ott | অ্যামাজন প্রাইম |
ভাষা | হিন্দি |
অভিনয়ে | শাহেদ কাপুর,বিজয় সেতুপতি,কে কে মেনন |
রিলিজ ডেট | ১০-২-২০২৩ |
রেটিং | ৯/১০ |
প্রথম পর্বের প্লট
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
পর্বের প্রথমেই আমরা দেখতে পাই রাতের অন্ধকারে দুইটি গাড়ি একটি গন্তব্যে যাচ্ছে।গাড়ির পেছনে মুখ বাধা অবস্থায় ২জন কে দেখি। তখনই বুঝতে পারি এই দুইজন কে বেধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।তারপর তাদের নিয়ে একটি বাংলো বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে নেওয়ার পর তাদের মুখ খুলেই একটি টাকার নোট দেখানো হয় আর বলা হয় এটা কে বানিয়েছে?
সেখানেই নায়ক চলে যায় ফ্ল্যাশ ব্যাকে।তাদের এই অবস্থা কেন হল সেটাই দেখব।গল্পটা সানি ও ফিরোজ নামের দুই বন্ধুর।সানি একজন চিত্রশিল্পী।সে অনেক জিনিয়াস যে কোন জিনিসের হবহু নকল করতে পারে।যে কোন বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের হুবহু নকল করতে পারে।তবে আপনারা তো জানেনই আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের শীল্প বোধ।তাই তার রোজগার বেশি হয়না।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
তবে তার একটি গার্লফ্রেন্ড আছে। তার গার্লফ্রেন্ড আবার বড়লোক বাবার মেয়ে। সানির গার্লফ্রেন্ড তাকে একটি বারের নিউইয়ার পার্টির দাওয়াত দেয়। তখন সানি ফিরোজ কে নিয়ে সেই বারে যায় টিকেটের জন্য।কিন্তু গিয়ে শোনে টিকেটের দাম অনেক। যা তার সাধ্যের বাইরে,তখন সে ম্যানেজার কে বলে একটু ডিস্কাউন্ট দিতে।কিন্তু ম্যানেজার তাকে অপমান করলে সে ম্যানেজার এর সাথে মারামারি লাগায়।তখন ফিরোজ তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসে।
এরপর ফিরোজ তাকে সেই মেয়ের সাথে রিলেশন করতে নিষেধ করে।কারন সেই মেয়ে কখনো তাকে বিয়ে করবে না।অনেক বুঝায়।কিন্তু সানি তা বুঝতে চায়না।এরপর সানি আর ফিরোজ মিলে তার নানার কাছে যায়। সানি নানা অনেক ভাল একজন আর্টিস্ট।তার থেকেও বড় কথা উনি একটি প্রেসের মালিক। উনি ক্রান্তি নামের একটি পত্রিকা ছাপান।কিন্তু মানুষ সেই পত্রিকা পছন্দ করে না তাই উনি বরাবর লস করেন।ফলে তার ধার করতে হয়।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
একদিন সানি প্রেসে এসে দেখে প্রেস বন্ধ।তখন সে নানার রুমে গিয়ে জানতে চায় প্রেস বন্ধ কেন? তখন তার নানা জানায় উনি যার থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন সে মাত্র একমাসের সময় দিয়েছে। না দিতে পারলে প্রেস বন্ধ হয়ে যাবে। এই প্রেস টাই সানির নানার বেচে থাকার অবলম্বন।তার সাধনা।তাই সে আর ফিরোজ সেই ধার দাতার কাছে যায়। কিন্তু উনি তাদের আর সময় বাড়িয়ে দিবেন না বলে জানান।
তারপর তারা তাদের সব সঞ্চয় একত্রিত করে দেখে তা এতই কম যে প্রেসের একটা মেশিন পর্যন্ত ছাড়ানো যাবে না।তখন ফিরোজ তার এক বন্ধুর কথা জানায় যে নকল সব কিছু বানায়। তার কাছে থেকে নকল ছবি বানানোর অর্ডার নেয়।কিন্তু সানি বলে টাকার জন্যই তো নকল করা,তাইলে চল টাকা কেই নকল বানাই।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
তখন ফিরোজ রাজি হচ্ছিল না।সানি তাকে অনেক করে বুঝালে রাজি হয়। সানি আর্টে দক্ষ আর ফিরোজ প্রিন্টিং এ।আর তাদের তো প্রেস আছেই। ফলে দুইজন লেগে যায় নকলের কাজে।অনেক চেষ্টার পর তারা নকল করতে সক্ষম হয়৷ সেটা নিয়ে তারা যায় পরীক্ষা করতে। একটি দোকান থেকে জিনিস কিনে সেই নকল নোট দিয়ে দাম পরিশোধ করে। কিন্তু দোকান দার বুঝে ফেলে তাদের দৌড়ানি দেয়৷ সেখান থেকে সানি ও ফিরোজ একটুর জন্য বেচে ফেরে।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
তখন ফিরোজ বলে সে এগুলো আর করবে না।কিন্তু সানি বলে সে ধরতে পেরেছে সমস্যা কই।সমস্যা আসলে কাগজে।তখন তারা টাকা বানানোর কাগজ এর বিকল্প খুজতে থাকে।এবং একপর্যায়ে পেয়েও যায়।এছাড়া আরো যে টুকটাক সমস্যা ছিল সেগুলোও সমাধান করে ফেলে।এবার তারা আবার যায় পরীক্ষা করতে। এবার কিন্তু তারা সফল হয়। দোকানদার বুঝতেও পারে না।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
এরপর দৃশ্য চলে যায় নেপালে। আমরা দেখি একজন বিমান থেকে নামছে।এর নাম মনসুর।এ জাল নোট চক্রের একজন রাঘব বোয়াল।সে যায় একটি মিটিং এ।কিন্তু এই মনসুর যে ধরতে ভারতের একটি বিশেষ দল নেপালে অবস্থান করছে।এই দলের লিডার হল মাইকেল।মাইকেল মনসুর কে ধরতে সক্ষম হয়। কিন্তু তাকে নিয়ে বাইরে আসার সাথে সাথেই একটি সশস্ত্র দল হামলা করে মনসুর কে নিয়ে পালিয়ে যায়।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
এরপর দেখতে পাই মেঘা নামের একটি মেয়ে জাল টাকা শনাক্ত করার মেশিন নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছে।কিন্তু তার কথা কেউ মনযোগ দিয়ে শোনে না।তখন সেখানে মাইকেল চলে আসে। মাইকেল মন্ত্রীকে বলে তাকে একটি স্পেশাল টিম দিতে।কারন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে তার কাজ পিছিয়ে যায়।কিন্তু মাইকেল এর দাবি মন্ত্রী ফিরিয়ে দেয় আবার মেঘার মেশিনটিও অ্যাপ্রুভ হয়না।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
এরপর সানি আর ফিরোজ জাল নোট নিয়ে একটি গ্রাহক এর কাছে যায়। সে প্রথমে সানির নোট নিতে চায়না।পরে সানি তাকে দুটি আসল নোটের সাথে একটি নকল নোট মিশিয়ে দিলে সেই গ্রাহক চিনতে পারেনা কোনটি নকল।তাই খুশি হয়ে সেই গ্রাহক তাকে ২কোটি টাকার অর্ডার দেয়।
[সোর্স](স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার)
এরপর দৃশ্য চলে আসে বর্তমানে, সেখানে দেখি যে সানির সামনে নোট টি ধরে ছিল সে আর কেউ না।সে হল মনসুর।মনসুর সানিকে বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকে এটি কে বানিয়েছে।তখন সানি স্বীকার করে নেয়।তখন মনসুর সানিকে রেখে ফিরোজকে গুলি করতে বলে।এবং বাবর নামে একজন গুলি করে। তবে কি ফিরোজ মারা গেছে? আর কি চায় মনসুর ফিরোজের থেকে?
জানতে চাইল দেখে ফেলুন দুর্দান্ত ওয়েব সিরিজটি।
ব্যক্তিগত মতামত
ফারজি অর্থ জাল।নাম থেকেই বুঝতে পারছেন পুরো মুভিটিই জালটাকা নিয়ে। জাল টাকার পেছনে যে এর কারিকুরি এবং এত কাহিনী তা কে জানত? আমি বরাবরই বলি প্রথম পর্বের কাজই হচ্ছে ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট।অর্থাৎ প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যারেক্টার সম্পর্কে বোঝানো,তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড জানানো ও তাদের ব্যক্তিগত লাইফ সম্পর্কে ধারনা দেওয়া। যা এই পর্ব খুব ভালভাবে করতে পারে।আমার অসাধারণ লেগেছে পর্বটি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit