আপনারা জানেন হয়ত আমার পরীক্ষা চলছে।পরীক্ষার পড়া নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে দিন দুনিয়ার কোন খবর ছিল না। কাল হঠাৎ খবর পেলাম পরিক্ষা ক্যান্সেল।এমন হঠাৎ পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় অবাক হয়ে গেলাম। পরে কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখলাম যে বঙ্গোপসাগরে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে।ফলাফল পরীক্ষা স্থগিত।
অনেকের মনেই কৌতুহল রয়েছে এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে। এটি কিভাবে সৃষ্টি হয়,ঘূর্ণিঝড় টাই বা কি জিনিস,এর নামকরণ হয় কিভাবে,আর নাম গুলোই বা দেয় কে?আজ তা নিয়েই আলোচনা করব।আবার অনেকে ঘূর্ণিঝড় আর টর্নেডো কে গুলিয়ে ফেলেন। আশা করি আজকের পর আর কৌতুহল থাকবে না।
ঘূর্ণিঝড় জিনিসটা কি?
ঘূর্ণিঝড় হল একধরনের সামুদ্রিক ঝড়। তবে এর বিস্তৃতি হয় বিশাল অঞ্চল জুড়ে।এই ঝড় সৃষ্টির পেছনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে বায়ুচাপ ও তাপমাত্রা।
কিভাবে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড়?
ঘূর্ণিঝড় কিভাবে সৃষ্টি হয় তা বোঝার আগে আমাদের আরো কয়েকটি জিনিস বুঝতে হবে আগে সেগুলো সম্পর্কে ধারনা দিয়ে নিই। আপনাদের আশা করি নতুন করে এটা জানাতে হবে না যে, আমরা। বায়ুর সমুদ্রে ডুবে আছি। সাগরে যেমন ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় তেমনি বাতাসেও ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়।এটাই মূলত বায়ুপ্রবাহ।
তবে আমি ঢেউয়ের সাথে তুলনা দিলাম বটে,কিন্তু সমুদ্রের ঢেউ সৃষ্টি হবার প্রক্রিয়া আর বায়ুর প্রবাহ সৃষ্টির প্রক্রিয়া আলাদা।সমুদ্রের ঢেউ সৃষ্টিই হয় বাতাসের প্রবাহের জন্য।তাইলে বাতাসের ঢেউ কিভাবে সৃষ্টি হয়?
বাতাসের ঢেউ বা প্রবাহ সৃষ্টি হয় তাপমাত্রার পার্থক্যের কারনে। দিনের বেলা পৃথিবীর জলভাগ স্থল ভাগের থেকে বেশি উত্তপ্ত হয়।আর রাতে এটার উলটো হয়।রাতে জলভাগ তাপ বিকিরণ করে তারাতারি ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু স্থলভাগ তা পারে না। স্থলভাগ ধীরে ধীরে তাপ বিকিরণ করতে থাকে ফলে জলভাগ এর থেকে বেশি গরম থাকে।
সোর্স
এখানেই শুরু হয় আসল খেলা। এই তাপের কারনে বায়বীয় পদার্থ গরম হয়ে উপরে উঠে যায়। এখন আগেই বলেছি আমরা বাতাসের সমুদ্রে ডুবে আছি। এখন এই যে বায়বীয় পদার্থ গরম হয়ে উপরে উঠে গেল ফলে সেই অংশ ফাকা হয়ে গেছে। এই ঘটনাকেই বলে নিম্নচাপ। কিন্তু প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না। তাই সেই ফাকা জায়গা পূরণের জন্য বিপরীত অংশ থেকে বাতাস এসে সেই ফাকা জায়গা পূরণ করে। অর্থাৎ ফাকা জায়গা সমুদ্রে সৃষ্টি হলে সেটি পূরণের জন্য স্থল ভাগে থেকে বাতাস সেদিকে দৌড় দেয়,আর যদি শূণ্যস্থান টি স্থলে সৃষ্টি হয় তখন বাতাস জলভাগ থেকে দৌড় দেয়। এভাবেই বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।
তবে যখন এমন হয় সমুদ্রের তাপ বিকিরিত হবার পরেও তা যদি না কমে।তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরের বায়ু ক্রমাগত হালকা হয়ে উপরে দিকে উঠে যেতেই থাকে আর এই শূণ্যস্থান পূরণের জন্য স্থলভাগ থেকে বায়ুপ্রচন্ড বেগে সেখানে যেতে থাকে।আবার পৃথিবীর ঘূর্ণের ফলে সেখানে এই প্রচন্ড বেগে গতিশীল বাতাস একটি ঘূর্ণির সৃষ্টি করে। এই ঘূর্ণিটিই মূলত ঘূর্ণিঝড়। তবে এটি কিন্তু বিশাল এলাকা ব্যপি বিস্তৃত হয়। আর বাতাসের বেগ ও থাকে প্রচন্ড। বাতাসের এই বেগের ফলে সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যায়।ফলে জলোচ্ছাস ও দেখা দেয় একই সাথে।
ঘুর্ণিঝড় আর টনের্ডোর মাঝে পার্থক্য?
ঘূর্ণিঝড় আর টনের্ডোর ব্যাসিক পার্থক্য হল এটি সৃষ্টির স্থান ও বিস্তারের এলাকার উপর। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় সমুদ্রে কিন্তু টর্নেডো জলে বা স্থলে দুই জায়গাতেই হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বিশাল এলাকাজুড়ে তার ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। কিন্তু টর্নেডোর ধ্বংস যজ্ঞ চালানোর এলাকা খুবই সিমীত। টর্নেডো অনেকটা ব্রেক ছাড়া গাড়ির মত। যেদিকে যায় শুধু তার সীমানার মাঝে ক্ষতি করে। টর্নেডো কে অনেকটা হাতির শুড়ের মত দেখতে।এটি কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ি হয়না।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ:
ঘূর্ণিঝড় এর নাম কিন্তু অঞ্চল ভেদে আলাদা হয়। যেমন:ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলে সাইক্লোন,আটলান্টিক মহাসাগরে যে ঘুর্ণিঝড় হয় তাকে বলে হারিকেন,আর যখন প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় তখন তাকে বলে টাইফুন। এগুলো হল সাধারণ নামকরণ এলাকাভেদে।কিন্তু এই যে মোকা,ক্যাটরিনা, ফণী এগুলো নাম কিভাবে আসে?
এই নাম গুলো বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আগে থেকেই বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে রাখে। তারপর সেখানে থেকেই পর্যায়ক্রমে নামকরণ করা হয়।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আশাকরি ভালো পরীক্ষা দিচ্ছেন,বাকি গুলোও ভালো হবে। ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে তথ্য সমৃদ্ধ পোস্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। এগিয়ে আসছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা।কক্সবাজারে চলছে ১০ নং মহাবিপদ সংকেত। সমুদ্র উপকূলের মানুষ-পশু-পাখি-ফসল-বাড়ীঘর নিরাপদ হোক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার দোয়া কবুল হোক এই প্রার্থনা করি। হ্যা পরীক্ষা ভালই হচ্ছে আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit